২৩৫

পরিচ্ছেদঃ ৪/২১. অসুখের কারণে ও সফরে যাওয়ার কারণে বা অন্য যে কোন কারণে সঙ্গত ওযর উপস্থিত হলে সালাতে অন্যকে ইমামের স্থলাভিষিক্ত করা

২৩৫. ’উবাইদুল্লাহ্ ইবনু ’আবদুল্লাহ্ ইবনু উতবাহ (রহ.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ’আয়িশাহ্ (রাযি.)-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে বললাম, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর (অন্তিম কালের) অসুস্থতা সম্পর্কে কি আপনি আমাকে কিছু শুনাবেন? তিনি বললেন, অবশ্যই। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারাত্মকভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লেন। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষারত। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি দাও। ’আয়িশাহ্ (রাযি.) বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করলেন। অতঃপর একটু উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর একটু হুঁশ ফিরে পেলে আবার তিনি জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ।

’আয়িশাহ্ (রাযি.) বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করলেন। আবার উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হুঁশ ফিরে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ। অতঃপর তিনি উঠে বসলেন, এবং গোসল করলেন এবং উঠতে গিয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হুঁশ ফিরে পেলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। ওদিকে সাহাবীগণ ’ইশার সালাতের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অপেক্ষায় মসজিদে বসে ছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর (রাযি.)-এর নিকট এ মর্মে একজন লোক পাঠালেন যে, তিনি যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে নেন।

সংবাদ বাহক আবূ বকর (রাযি.)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন যে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। আবূ বকর (রাযি.) অত্যন্ত কোমল মনের লোক ছিলেন, তাই তিনি ’উমার (রাযি.)-কে বললেন, হে ’উমার! আপনি সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করে নিন। ’উমার (রাযি.) বললেন, আপনিই এর অধিক যোগ্য। তাই আবূ বাক্র (রাযি.) সে কয়দিন সালাত আদায় করলেন। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটু নিজে হাল্কাবোধ করলেন এবং দু’জন লোকের কাঁধে ভর করে যুহরের সালাতের জন্য বের হলেন। সে দু’জনের একজন ছিলেন ’আব্বাস (রাযি.)। আবূ বকর (রাযি.) তখন সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। তিনি যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখতে পেলেন, পিছনে সরে আসতে চাইলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে পিছিয়ে না আসার জন্য ইঙ্গিত করলেন এবং বললেন, তোমরা আমাকে তাঁর পাশে বসিয়ে দাও। তাঁরা তাঁকে আবূ বকর (রাযি.)-এর পাশে বসিয়ে দিলেন।

বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আবু বাকর (রাযি.) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের ইক্তিদা করে সালাত আদায় করতে লাগলেন। আর সাহাবীগণ আবূ বকর (রাযি.)-এর সালাতের ইক্তিদা করতে লাগলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন উপবিষ্ট ছিলেন। উবায়দুল্লাহ্ বলেন, আমি ’আবদুল্লাহ্ ইব্নু ’আব্বাস (রাযি.)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্তিম কালের অসুস্থতা সম্পর্কে ’আয়িশাহ্ (রাযি.) আমাকে যে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তা কি আমি আপনার নিকট বর্ণনা করব না? তিনি বললেন, করুন। তাই আমি তাঁকে সে হাদীস শুনালাম। তিনি এ বর্ণনার কোন অংশেই আপত্তি করলেন না, তবে তাঁকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন যে, ’আব্বাস (রাযি.)-এর সাথে যে অপর এক সাহাবী ছিলেন, ’আয়িশাহ্ (রাযি.) কি আপনার নিকট তাঁর নাম উল্লেখ করেছেন? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তিনি হলেন, ’আলী ইবনু আবূ তালিব (রাযি.)।

استخلاف الإمام إِذا عرض له عذر من مرض وسفر وغيرهما من يصلي بالناس

حَدِيْثُ عَائِشَةَ عَنْ عُبَيْدِ الله بن عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَقُلْتُ أَلاَ تُحَدِّثِينِي عَنْ مَرَضِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ بَلَى ثَقُلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَصَلَّى النَّاسُ قُلْنَا لاَ هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ قَالَ ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ قَالَتْ فَفَعَلْنَا فَاغْتَسَلَ فَذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ صلى الله عليه وسلم أَصَلَّى النَّاسُ قُلْنَا لاَ هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ قَالَتْ فَقَعَدَ فَاغْتَسَلَ ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ أَصَلَّى النَّاسُ قُلْنَا لاَ هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللهِ فَقَالَ ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ فَقَعَدَ فَاغْتَسَلَ ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ أَصَلَّى النَّاسُ فَقُلْنَا لاَ هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللهِ وَالنَّاسُ عُكُوفٌ فِي الْمَسْجِدِ يَنْتَظِرُونَ النَّبِيَّ عَلَيْهِ السَّلَام لِصَلَاةِ الْعِشَاءِ الْآخِرَةِ فَأَرْسَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَبِي بَكْرٍ بِأَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ فَأَتَاهُ الرَّسُولُ فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُكَ أَنْ تُصَلِّيَ بِالنَّاسِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَكَانَ رَجُلًا رَقِيقًا يَا عُمَرُ صَلِّ بِالنَّاسِ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ أَنْتَ أَحَقُّ بِذَلِكَ فَصَلَّى أَبُو بَكْرٍ تِلْكَ الْأَيَّامَ
ثُمَّ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَجَدَ مِنْ نَفْسِهِ خِفَّةً فَخَرَجَ بَيْنَ رَجُلَيْنِ أَحَدُهُمَا الْعَبَّاسُ لِصَلَاةِ الظُّهْرِ وَأَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ فَلَمَّا رَآهُ أَبُو بَكْرٍ ذَهَبَ لِيَتَأَخَّرَ فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِأَنْ لاَ يَتَأَخَّرَ قَالَ أَجْلِسَانِي إِلَى جَنْبِهِ فَأَجْلَسَاهُ إِلَى جَنْبِ أَبِي بَكْرٍ قَالَ فَجَعَلَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي وَهُوَ يَأْتَمُّ بِصَلَاةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ بِصَلَاةِ أَبِي بَكْرٍ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَاعِدٌ
قَالَ عُبَيْدُ اللهِ فَدَخَلْتُ عَلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْتُ لَهُ أَلاَ أَعْرِضُ عَلَيْكَ مَا حَدَّثَتْنِي عَائِشَةُ عَنْ مَرَضِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ هَاتِ فَعَرَضْتُ عَلَيْهِ حَدِيثَهَا فَمَا أَنْكَرَ مِنْهُ شَيْئًا غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ أَسَمَّتْ لَكَ الرَّجُلَ الَّذِي كَانَ مَعَ الْعَبَّاسِ قُلْتُ لاَ قَالَ هُوَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ

حديث عاىشة عن عبيد الله بن عبد الله بن عتبة قال دخلت على عاىشة فقلت الا تحدثيني عن مرض رسول الله صلى الله عليه وسلم قالت بلى ثقل النبي صلى الله عليه وسلم فقال اصلى الناس قلنا لا هم ينتظرونك قال ضعوا لي ماء في المخضب قالت ففعلنا فاغتسل فذهب لينوء فاغمي عليه ثم افاق فقال صلى الله عليه وسلم اصلى الناس قلنا لا هم ينتظرونك يا رسول الله قال ضعوا لي ماء في المخضب قالت فقعد فاغتسل ثم ذهب لينوء فاغمي عليه ثم افاق فقال اصلى الناس قلنا لا هم ينتظرونك يا رسول الله فقال ضعوا لي ماء في المخضب فقعد فاغتسل ثم ذهب لينوء فاغمي عليه ثم افاق فقال اصلى الناس فقلنا لا هم ينتظرونك يا رسول الله والناس عكوف في المسجد ينتظرون النبي عليه السلام لصلاة العشاء الاخرة فارسل النبي صلى الله عليه وسلم الى ابي بكر بان يصلي بالناس فاتاه الرسول فقال ان رسول الله صلى الله عليه وسلم يامرك ان تصلي بالناس فقال ابو بكر وكان رجلا رقيقا يا عمر صل بالناس فقال له عمر انت احق بذلك فصلى ابو بكر تلك الايام ثم ان النبي صلى الله عليه وسلم وجد من نفسه خفة فخرج بين رجلين احدهما العباس لصلاة الظهر وابو بكر يصلي بالناس فلما راه ابو بكر ذهب ليتاخر فاوما اليه النبي صلى الله عليه وسلم بان لا يتاخر قال اجلساني الى جنبه فاجلساه الى جنب ابي بكر قال فجعل ابو بكر يصلي وهو ياتم بصلاة النبي صلى الله عليه وسلم والناس بصلاة ابي بكر والنبي صلى الله عليه وسلم قاعد قال عبيد الله فدخلت على عبد الله بن عباس فقلت له الا اعرض عليك ما حدثتني عاىشة عن مرض النبي صلى الله عليه وسلم قال هات فعرضت عليه حديثها فما انكر منه شيىا غير انه قال اسمت لك الرجل الذي كان مع العباس قلت لا قال هو علي بن ابي طالب رضي الله عنه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
আল-লুলু ওয়াল মারজান
৪/ সালাত (كتاب الصلاة)