৭৩৬৯

পরিচ্ছেদঃ ৯৬/২৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা নিজেদের মাঝে পরামর্শের ভিত্তিতে নিজেদের কর্ম সম্পাদন করে। (সূরাহ আশ্-শূরা ৪২/৩৮)

وَأَنَّ الْمُشَاوَرَةَ قَبْلَ الْعَزْمِ وَالتَّبَيُّنِ لِقَوْلِهِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ فَإِذَا عَزَمَ الرَّسُولُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَكُنْ لِبَشَرٍ التَّقَدُّمُ عَلَى اللهِ وَرَسُولِهِ وَشَاوَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصْحَابَهُ يَوْمَ أُحُدٍ فِي الْمُقَامِ وَالْخُرُوجِ فَرَأَوْا لَهُ الْخُرُوجَ فَلَمَّا لَبِسَ لاَمَتَهُ وَعَزَمَ قَالُوا أَقِمْ فَلَمْ يَمِلْ إِلَيْهِمْ بَعْدَ الْعَزْمِ وَقَالَ لاَ يَنْبَغِي لِنَبِيٍّ يَلْبَسُ لاَمَتَهُ فَيَضَعُهَا حَتَّى يَحْكُمَ اللهُ وَشَاوَرَ عَلِيًّا وَأُسَامَةَ فِيمَا رَمَى بِهِ أَهْلُ الإِفْكِ عَائِشَةَ فَسَمِعَ مِنْهُمَا حَتَّى نَزَلَ الْقُرْآنُ فَجَلَدَ الرَّامِينَ وَلَمْ يَلْتَفِتْ إِلَى تَنَازُعِهِمْ وَلَكِنْ حَكَمَ بِمَا أَمَرَهُ اللهُ وَكَانَتْ الأَئِمَّةُ بَعْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَشِيرُونَ الْأُمَنَاءَ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي الْأُمُورِ الْمُبَاحَةِ لِيَأْخُذُوا بِأَسْهَلِهَا فَإِذَا وَضَحَ الْكِتَابُ أَوْ السُّنَّةُ لَمْ يَتَعَدَّوْهُ إِلَى غَيْرِهِ اقْتِدَاءً بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَأَى أَبُو بَكْرٍ قِتَالَ مَنْ مَنَعَ الزَّكَاةَ فَقَالَ عُمَرُ كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ فَإِذَا قَالُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّهَا وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللهِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَاللهِ لأُ×قَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ مَا جَمَعَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ تَابَعَهُ بَعْدُ عُمَرُ فَلَمْ يَلْتَفِتْ أَبُو بَكْرٍ إِلَى مَشُورَةٍ إِذْ كَانَ عِنْدَهُ حُكْمُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الَّذِينَ فَرَّقُوا بَيْنَ الصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ وَأَرَادُوا تَبْدِيلَ الدِّينِ وَأَحْكَامِهِ وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ بَدَّلَ دِينَهُ فَاقْتُلُوهُ وَكَانَ الْقُرَّاءُ أَصْحَابَ مَشُورَةِ عُمَرَ كُهُولاً كَانُوا أَوْ شُبَّانًا وَكَانَ وَقَّافًا عِنْدَ كِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ

এবং পরামর্শ করো তাঁদের সঙ্গে (দ্বীনী) কাজের ব্যাপারে। পরামর্শ হলো স্থির সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও লক্ষ্য নির্ধারণের পূর্বে। যেমন, আল্লাহর বাণীঃ ’’অতঃপর যখন তুমি দৃঢ়সংকল্প হও, তখন আল্লাহর উপর ভরসা কর’’- (সূরাহ আলে ’ইমরান ৩/১৫৯)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন বিষয়ে দৃঢ়সংকল্প হন, তখন আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের মতের বিপক্ষে যাওয়ার কারো কোন অধিকার থাকে না। উহূদের যুদ্ধের দিনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের সঙ্গে এ পরামর্শ করেন যে, যুদ্ধ কি মাদ্বীনাহ্য় থেকেই চালাবেন, না বাইরে গিয়ে? সাহাবাগণ মাদ্বীনাহ হতে বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করার রায় দিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধের পোশাক পরলেন এবং যখন যুদ্ধের জন্য দৃঢ়সংকল্প হলেন, তখন সাহাবীগণ আবেদন জানালেন, মাদ্বীনাহ হতেই অবস্থান করুন। কিন্তু তিনি দৃঢ়সংকল্প হবার পর তাঁদের এ মতামতের প্রতি ভ্রূক্ষেপ করলেন না। তিনি মন্তব্য করলেনঃ কোন নবীর সামরিক পোশাক পরার পর আল্লাহর পক্ষ থেকে হুকুম না পাওয়া পর্যন্ত তা খুলে ফেলা উচিত নয়।

তিনি ’আলী (রাঃ) ও উসামাহ (রাঃ)-এর সঙ্গে ’আয়িশাহর উপর যিনার মিথ্যা অপবাদ লাগানো সম্পর্কে পরামর্শ করেন। তাদের কথা তিনি শোনেন। অতঃপর কুরআনের আয়াত নাযিল হয়। মিথ্যা অপবাদকারীদেরকে তিনি বেত্রাঘাত করেন। তাঁদের পারষ্পরিক মতপার্থক্যের প্রতি লক্ষ্য না করে আল্লাহর নির্দেশনা মোতাবেক সিদ্ধান্ত নেন।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরে ইমামগণ মুবাহ্ বিষয়ে বিশ্বস্ত আলেমদের কাছে পরামর্শ চান, যেন তুলনামূলক সহজ পথ তারা গ্রহণ করতে পারেন। হাঁ, যদি কিতাব কিংবা সুন্নাহ্তে আলোচ্য ব্যাপারে কোন স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যেত, তখন তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথারই অনুসরণ করতেন, অন্য কারো কথার প্রতি ভ্রূক্ষেপ করতেন না।

(নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণেই) যাকাত যারা বন্ধ করেছিল, আবূ বকর (রাঃ) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। ’উমার (রাঃ) তখন বললেন, আপনি কিভাবে লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ততক্ষণ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষণ না তারা বলবে ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’। তারা যখন ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলবে তখন তারা আমার নিকট হতে তাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা লাভ করবে। তবে ইসলামের হকের ব্যাপার আলাদা। আর সে ব্যাপারে তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর উপর। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অবশ্যই করব, যারা এমন বিষয় বিচ্ছিন্ন করে যা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুসংহত করেছেন। অবশেষে উমর (রাঃ) তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নিলেন। আবূ বকর (রাঃ) এ ব্যাপারে (কারো সঙ্গে) পরামর্শ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। কেননা, যারা সালাত ও যাকাতের মধ্যে ফারাক সৃষ্টি করে এবং ইসলাম-এর নির্দেশাবলী পরিবর্তন ও বিকৃত করার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সিদ্ধান্ত তাঁর সামনে বিদ্যমান ছিল। কেননা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের দ্বীনকে পরিবর্তন করে তাকে হত্যা কর।

’উমার (রাঃ)-এর পরামর্শ সভার সদস্যগণ কুরআন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তারা অধিক বয়স্কই হোন কিংবা যুবক। আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে ’উমার (রাঃ) ছিলেন খুব ওয়াকেফহাল।


৭৩৬৯. ’আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। যখন মিথ্যা অপবাদকারীরা ’আয়িশাহর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অপবাদ রটিয়েছিল। তিনি বলেন, ওয়াহী আসতে বিলম্ব হচ্ছিল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী ইবনু আবূ তালিব ও উসামাহ ইবনু যায়িদের কাছে কিছু পরামর্শ করার জন্য তাদেরকে ডাকলেন। এবং তাঁর স্ত্রী ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে পৃথক করে দেয়া সম্পর্কে পরামর্শ চাইলেন। উসামাহ (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিবারের পবিত্রতার ব্যাপারে তাঁর যা জানা ছিল তা উল্লেখ করলেন। আর ’আলী (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ আপনার জন্য তো কোন সীমাবদ্ধতা রাখেন নি। স্ত্রীলোক তিনি ছাড়া আরও অনেক আছেন। আপনি বাঁদীটির কাছে জিজ্ঞেস করুন, সে আপনাকে সত্য যা, তাই বলবে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারীরাকে ডাকলেন।

তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি সন্দেহের কিছু দেখেছ? তিনি বললেন, আমি এছাড়া আর অধিক কিছু জানি না যে, ’আয়িশাহ (রাঃ) হচ্ছে অল্পবয়স্কা মেয়ে। তিনি নিজের ঘরের আটা পিষে ঘুমিয়ে পড়েন, এই অবস্থায় বক্রী এসে তা খেয়ে ফেলে। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে মুসলিমগণ! যে ব্যক্তি আমার পরিবারের অপবাদ রটিয়ে আমাকে কষ্ট দিয়েছে তার প্রতিকার করতে আমাকে সাহায্য করার মত কেউ আছ কি? আল্লাহর শপথ! আমি আমার পরিবারের ব্যাপারে ভালো ব্যতীত মন্দ কিছুই জানি না এবং তিনি ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর পবিত্রতার কথা উল্লেখ করলেন। [২৫৯৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬৬)

بَاب قَوْلِ اللهِ تَعَالَى: وَأَمْرُهُمْ شُورَى بَيْنَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الأَمْر

الْأُوَيْسِيُّ عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ حَدَّثَنِي عُرْوَةُ وَابْنُ الْمُسَيَّبِ وَعَلْقَمَةُ بْنُ وَقَّاصٍ وَعُبَيْدُ اللهِ عَنْ عَائِشَةَ حِينَ قَالَ لَهَا أَهْلُ الإِفْكِ مَا قَالُوا قَالَتْ وَدَعَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ وَأُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ حِينَ اسْتَلْبَثَ الْوَحْيُ يَسْأَلُهُمَا وَهُوَ يَسْتَشِيرُهُمَا فِي فِرَاقِ أَهْلِهِ فَأَمَّا أُسَامَةُ فَأَشَارَ بِالَّذِي يَعْلَمُ مِنْ بَرَاءَةِ أَهْلِهِ وَأَمَّا عَلِيٌّ فَقَالَ لَمْ يُضَيِّقْ اللهُ عَلَيْكَ وَالنِّسَاءُ سِوَاهَا كَثِيرٌ وَسَلْ الْجَارِيَةَ تَصْدُقْكَ فَقَالَ هَلْ رَأَيْتِ مِنْ شَيْءٍ يَرِيبُكِ قَالَتْ مَا رَأَيْتُ أَمْرًا أَكْثَرَ مِنْ أَنَّهَا جَارِيَةٌ حَدِيثَةُ السِّنِّ تَنَامُ عَنْ عَجِينِ أَهْلِهَا فَتَأْتِي الدَّاجِنُ فَتَأْكُلُهُ فَقَامَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِينَ مَنْ يَعْذِرُنِي مِنْ رَجُلٍ بَلَغَنِي أَذَاهُ فِي أَهْلِي وَاللهِ مَا عَلِمْتُ عَلَى أَهْلِي إِلاَّ خَيْرًا فَذَكَرَ بَرَاءَةَ عَائِشَةَ

الاويسي عبد العزيز بن عبد الله حدثنا ابراهيم بن سعد عن صالح عن ابن شهاب حدثني عروة وابن المسيب وعلقمة بن وقاص وعبيد الله عن عاىشة حين قال لها اهل الافك ما قالوا قالت ودعا رسول الله صلى الله عليه وسلم علي بن ابي طالب واسامة بن زيد حين استلبث الوحي يسالهما وهو يستشيرهما في فراق اهله فاما اسامة فاشار بالذي يعلم من براءة اهله واما علي فقال لم يضيق الله عليك والنساء سواها كثير وسل الجارية تصدقك فقال هل رايت من شيء يريبك قالت ما رايت امرا اكثر من انها جارية حديثة السن تنام عن عجين اهلها فتاتي الداجن فتاكله فقام على المنبر فقال يا معشر المسلمين من يعذرني من رجل بلغني اذاه في اهلي والله ما علمت على اهلي الا خيرا فذكر براءة عاىشة


Narrated `Aisha:

After the slanderers had given a forged statement against her, Allah's Messenger (ﷺ) called `Ali bin Abi Talib and Usama bin Zaid when the Divine Inspiration was delayed. He wanted to ask them and consult them about the question of divorcing me. Usama gave his evidence that was based on what he knew about my innocence, but `Ali said, "Allah has not put restrictions on you and there are many women other than her. Furthermore you may ask the slave girl who will tell you the truth." So the Prophet (ﷺ) asked Barira (my salve girl), "Have you seen anything that may arouse your suspicion?" She replied, "I have not seen anything more than that she is a little girl who sleeps, leaving the dough of her family (unguarded) that the domestic goats come and eat it." Then the Prophet (ﷺ) stood on the pulpit and said, "O Muslims! Who will help me against the man who has harmed me by slandering my wife? By Allah, I know nothing about my family except good." The narrator added: Then the Prophet (ﷺ) mentioned the innocence of `Aisha.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৯৬/ কুরআন ও সুন্নাহকে শক্তভাবে ধরে থাকা (كتاب الاعتصام بالكتاب والسنة)