৬০৭৫

পরিচ্ছেদঃ ৭৮/৬২. সম্পর্ক ত্যাগ।

৬০৭৩-৬০৭৪-৬০৭৫. ’আওফ ইবনু মালিক ইবনু তুফায়ল ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর বৈপিত্রেয় ভ্রাতুষ্পুত্র হতে বর্ণিত। ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে জানানো হলো যে, তাঁর কোন বিক্রীর কিংবা দান করা সম্পর্কে ’আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র(রাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! ’আয়িশাহ অবশ্যই বিরত থাকবেন, নতুবা আমি নিশ্চয়ই তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবো। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ সত্যিই কি তিনি এ কথা বলেছেন? তারা বললেনঃ হাঁ। তখন ’আয়িশাহ(রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি আমার উপর মানৎ করে নিলাম যে, আমি ইবনু যুবায়রের সাথে আর কখনও কথা বলবো না। যখন এ বর্জনকাল লম্বা হলো, তখন ইবনু যুবায়র ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর নিকট সুপারিশ পাঠালেন। তখন তিনি বললেনঃ না, আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে আমি কখনো কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না। আর আমার মানৎও ভাঙ্গব না।

এভাবে যখন বিষয়টি ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এর জন্য দীর্ঘ হতে লাগলো, তখন তিনি যহুরা গোত্রের দু’ব্যক্তি মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ ও ’আবদুর রহমান ইবনু আসওয়াদ ইবনু আবদ ইয়াগুসের সাথে আলোচনা করলেন। তিনি তাদের দু’জনকে বললেনঃ আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি যে, তোমরা দু’জন আমাকে ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর কাছে নিয়ে যাও। কারণ আমার সাথে তাঁর বিচ্ছিন্ন থাকার মানৎ জায়িয নয়। তখন মিসওয়ার ও ’আবদুর রহমান উভয়ে চাদর দিয়ে ইবনু যুবায়রকে ঢেকে নিয়ে এলেন এবং উভয়ে ’আয়িশাহ (রাঃ)-এর কাছে অনুমতি চেয়ে বললেনঃ আসসালামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু’ আমরা কি ভেতরে আসতে পারি? ’আয়িশাহ (রাঃ) বললেনঃ আপনারা ভেতরে আসুন। তাঁরা বললেনঃ আমরা সবাই? তিনি বললেনঃ হাঁ, তোমরা সবাই প্রবেশ কর।

তিনি জানতেন না যে, এদের সঙ্গে ইবনু যুবায়র রয়েছেন। তাই যখন তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করলেন, তখন ইবনু যুবায়র পর্দার ভেতর ঢুকে গেলেন এবং ’আয়িশাহ (রাঃ)-কে জড়িয়ে ধরে, তাঁকে আল্লাহর কসম দিতে লাগলেন এবং কাঁদতে শুরু করলেন। তখন মিসওয়ার ও ’আবদুর রহমান (রাঃ)-ও তাঁকে আল্লাহর কসম দিতে শুরু করলেন। তখন ’আয়িশাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এর সঙ্গে কথা বললেন এবং তার ওযর গ্রহণ করলেন। আর তাঁরা বলতে লাগলেনঃ আপনি তো নিশ্চয়ই জানেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্ক বর্জন করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেনঃ কোন মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন রাখা অবৈধ।

যখন তাঁরা ’আয়িশাহ -কে অধিক বুঝাতে ও চাপ দিতে লাগলেন, তখন তিনিও তাদের বুঝাতে ও কাঁদতে লাগলেন এবং বললেনঃ আমি ’মানৎ’ করে ফেলেছি। আর মানৎ তো কঠিন ব্যাপার। কিন্তু তাঁরা বারবার চাপ দিতেই থাকলেন, অবশেষে তিনি ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এর সাথে কথা বললেন এবং তার নযরের জন্য (কাফফারা হিসেবে) চল্লিশ জন গোলাম মুক্ত করে দিলেন। এর পরে, যখনই তিনি তাঁর মানতের কথা মনে করতেন তখন তিনি এত অধিক কাঁদতেন যে, তাঁর চোখের পানিতে তাঁর ওড়না ভিজে যেত। [৩৫০৩] (আধুনিক প্রকাশনী-৫৬৩৭ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩৩)

بَاب الْهِجْرَة

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ حَدَّثَنِي عَوْفُ بْنُ مَالِكِ بْنِ الطُّفَيْلِ ـ هُوَ ابْنُ الْحَارِثِ وَهْوَ ابْنُ أَخِي عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لأُمِّهَا ـ أَنَّ عَائِشَةَ حُدِّثَتْ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الزُّبَيْرِ قَالَ فِي بَيْعٍ أَوْ عَطَاءٍ أَعْطَتْهُ عَائِشَةُ وَاللَّهِ لَتَنْتَهِيَنَّ عَائِشَةُ، أَوْ لأَحْجُرَنَّ عَلَيْهَا‏.‏ فَقَالَتْ أَهُوَ قَالَ هَذَا قَالُوا نَعَمْ‏.‏ قَالَتْ هُوَ لِلَّهِ عَلَىَّ نَذْرٌ، أَنْ لاَ أُكَلِّمَ ابْنَ الزُّبَيْرِ أَبَدًا‏.‏ فَاسْتَشْفَعَ ابْنُ الزُّبَيْرِ إِلَيْهَا، حِينَ طَالَتِ الْهِجْرَةُ فَقَالَتْ لاَ وَاللَّهِ لاَ أُشَفِّعُ فِيهِ أَبَدًا، وَلاَ أَتَحَنَّثُ إِلَى نَذْرِي‏.‏ فَلَمَّا طَالَ ذَلِكَ عَلَى ابْنِ الزُّبَيْرِ كَلَّمَ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الأَسْوَدِ بْنِ عَبْدِ يَغُوثَ، وَهُمَا مِنْ بَنِي زُهْرَةَ، وَقَالَ لَهُمَا أَنْشُدُكُمَا بِاللَّهِ لَمَّا أَدْخَلْتُمَانِي عَلَى عَائِشَةَ، فَإِنَّهَا لاَ يَحِلُّ لَهَا أَنْ تَنْذُرَ قَطِيعَتِي‏.‏ فَأَقْبَلَ بِهِ الْمِسْوَرُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ مُشْتَمِلَيْنِ بِأَرْدِيَتِهِمَا حَتَّى اسْتَأْذَنَا عَلَى عَائِشَةَ فَقَالاَ السَّلاَمُ عَلَيْكِ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، أَنَدْخُلُ قَالَتْ عَائِشَةُ ادْخُلُوا‏.‏ قَالُوا كُلُّنَا قَالَتْ نَعَمِ ادْخُلُوا كُلُّكُمْ‏.‏ وَلاَ تَعْلَمُ أَنَّ مَعَهُمَا ابْنَ الزُّبَيْرِ، فَلَمَّا دَخَلُوا دَخَلَ ابْنُ الزُّبَيْرِ الْحِجَابَ، فَاعْتَنَقَ عَائِشَةَ وَطَفِقَ يُنَاشِدُهَا وَيَبْكِي، وَطَفِقَ الْمِسْوَرُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ يُنَاشِدَانِهَا إِلاَّ مَا كَلَّمَتْهُ وَقَبِلَتْ مِنْهُ، وَيَقُولاَنِ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَمَّا قَدْ عَلِمْتِ مِنَ الْهِجْرَةِ، فَإِنَّهُ لاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ‏.‏ فَلَمَّا أَكْثَرُوا عَلَى عَائِشَةَ مِنَ التَّذْكِرَةِ وَالتَّحْرِيجِ طَفِقَتْ تُذَكِّرُهُمَا نَذْرَهَا وَتَبْكِي وَتَقُولُ إِنِّي نَذَرْتُ، وَالنَّذْرُ شَدِيدٌ‏.‏ فَلَمْ يَزَالاَ بِهَا حَتَّى كَلَّمَتِ ابْنَ الزُّبَيْرِ، وَأَعْتَقَتْ فِي نَذْرِهَا ذَلِكَ أَرْبَعِينَ رَقَبَةً‏.‏ وَكَانَتْ تَذْكُرُ نَذْرَهَا بَعْدَ ذَلِكَ فَتَبْكِي، حَتَّى تَبُلَّ دُمُوعُهَا خِمَارَهَا‏.‏

حدثنا ابو اليمان، اخبرنا شعيب، عن الزهري، قال حدثني عوف بن مالك بن الطفيل ـ هو ابن الحارث وهو ابن اخي عاىشة زوج النبي صلى الله عليه وسلم لامها ـ ان عاىشة حدثت ان عبد الله بن الزبير قال في بيع او عطاء اعطته عاىشة والله لتنتهين عاىشة، او لاحجرن عليها‏.‏ فقالت اهو قال هذا قالوا نعم‏.‏ قالت هو لله على نذر، ان لا اكلم ابن الزبير ابدا‏.‏ فاستشفع ابن الزبير اليها، حين طالت الهجرة فقالت لا والله لا اشفع فيه ابدا، ولا اتحنث الى نذري‏.‏ فلما طال ذلك على ابن الزبير كلم المسور بن مخرمة وعبد الرحمن بن الاسود بن عبد يغوث، وهما من بني زهرة، وقال لهما انشدكما بالله لما ادخلتماني على عاىشة، فانها لا يحل لها ان تنذر قطيعتي‏.‏ فاقبل به المسور وعبد الرحمن مشتملين بارديتهما حتى استاذنا على عاىشة فقالا السلام عليك ورحمة الله وبركاته، اندخل قالت عاىشة ادخلوا‏.‏ قالوا كلنا قالت نعم ادخلوا كلكم‏.‏ ولا تعلم ان معهما ابن الزبير، فلما دخلوا دخل ابن الزبير الحجاب، فاعتنق عاىشة وطفق يناشدها ويبكي، وطفق المسور وعبد الرحمن يناشدانها الا ما كلمته وقبلت منه، ويقولان ان النبي صلى الله عليه وسلم نهى عما قد علمت من الهجرة، فانه لا يحل لمسلم ان يهجر اخاه فوق ثلاث ليال‏.‏ فلما اكثروا على عاىشة من التذكرة والتحريج طفقت تذكرهما نذرها وتبكي وتقول اني نذرت، والنذر شديد‏.‏ فلم يزالا بها حتى كلمت ابن الزبير، واعتقت في نذرها ذلك اربعين رقبة‏.‏ وكانت تذكر نذرها بعد ذلك فتبكي، حتى تبل دموعها خمارها‏.‏


Narrated `Aisha:

(the wife of the Prophet) that she was told that `Abdullah bin Az-Zubair (on hearing that she was selling or giving something as a gift) said, "By Allah, if `Aisha does not give up this, I will declare her incompetent to dispose of her wealth." I said, "Did he (`Abdullah bin Az-Zubair) say so?" They (people) said, "Yes." `Aisha said, "I vow to Allah that I will never speak to Ibn Az-Zubair." When this desertion lasted long, `Abdullah bin Az-Zubair sought intercession with her, but she said, "By Allah, I will not accept the intercession of anyone for him, and will not commit a sin by breaking my vow." When this state of affairs was prolonged on Ibn Az-Zubair (he felt it hard on him), he said to Al- Miswar bin Makhrama and `Abdur-Rahman bin Al-Aswad bin 'Abu Yaghuth, who were from the tribe of Bani Zahra, "I beseech you, by Allah, to let me enter upon `Aisha, for it is unlawful for her to vow to cut the relation with me." So Al-Miswar and `Abdur-Rahman, wrapping their sheets around themselves, asked `Aisha's permission saying, "Peace and Allah's Mercy and Blessings be upon you! Shall we come in?" `Aisha said, "Come in." They said, "All of us?" She said, "Yes, come in all of you," not knowing that Ibn Az- Zubair was also with them. So when they entered, Ibn Az-Zubair entered the screened place and got hold of `Aisha and started requesting her to excuse him, and wept. Al-Miswar and `Abdur Rahman also started requesting her to speak to him and to accept his repentance. They said (to her), "The Prophet (ﷺ) forbade what you know of deserting (not speaking to your Muslim Brethren), for it is unlawful for any Muslim not to talk to his brother for more than three nights (days)." So when they increased their reminding her (of the superiority of having good relation with Kith and kin, and of excusing others' sins), and brought her down to a critical situation, she started reminding them, and wept, saying, "I have made a vow, and (the question of) vow is a difficult one." They (Al-Miswar and `Abdur-Rahman) persisted in their appeal till she spoke with `Abdullah bin Az- Zubair and she manumitted forty slaves as an expiation for her vow. Later on, whenever she remembered her vow, she used to weep so much that her veil used to become wet with her tears.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন)
৭৮/ আচার-ব্যবহার (كتاب الأدب)