পরিচ্ছেদঃ ৭৮/৬০. মু’মিন কর্তৃক স্বীয় দোষ ঢেকে রাখা।
৬০৬৯. আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল। [মুসলিম ৫৩/৮, হাঃ ২৯৯০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৩০)
بَاب سَتْرِ الْمُؤْمِنِ عَلٰى نَفْسِهِ
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " كُلُّ أُمَّتِي مُعَافًى إِلاَّ الْمُجَاهِرِينَ، وَإِنَّ مِنَ الْمَجَانَةِ أَنْ يَعْمَلَ الرَّجُلُ بِاللَّيْلِ عَمَلاً، ثُمَّ يُصْبِحَ وَقَدْ سَتَرَهُ اللَّهُ، فَيَقُولَ يَا فُلاَنُ عَمِلْتُ الْبَارِحَةَ كَذَا وَكَذَا، وَقَدْ بَاتَ يَسْتُرُهُ رَبُّهُ وَيُصْبِحُ يَكْشِفُ سِتْرَ اللَّهِ عَنْهُ ".
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। মহান আল্লাহ অনুগ্রহ করে মুসলিম ব্যক্তির অনেক পাপ লুকিয়ে রাখেন। তাই প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষা হলো এই যে, মুসলিম ব্যক্তি যেন তার পাপগুলিকে সর্বদা গোপন রাখে মহান আল্লাহর গোপন রাখার সাথে সাথে। এবং সে যেন মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতার সহিত প্রশংসা করে; এই জন্য যে তিনি তাকে সুস্থতা এবং নিরাপত্তা প্রদান করেছেন। আর সে যেন মহান আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে ভবিষ্যতে পাপ না করার জন্য প্রতিজ্ঞা করে তওবা করে। কেননা যে ব্যক্তি আন্তরিকতার সহিত তওবা করবে, মহান আল্লাহ তার তওবা গ্রহণ করবেন এবং ইহকালে ও পরকালে তাকে ক্ষমা করবেন।
২। যে কোনো মুসলিম ব্যক্তির উচিত কাজ হলো এই যে, সে যেন নিজের পাপগুলিকে লুকিয়ে রাখে এবং অন্য কোনো লোকের কাছে বা কোনো শাসকের কাছে অথবা কোনো আদালতের বিচারক কিংবা বিচারপতির কাছে তার কোনো পাপের কথা স্বীকার না করে। কিন্তু সে নিজের অন্তরের মধ্যে সমস্ত পাপকে ঘৃণা করে আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে ভবিষ্যতে পাপ না করার জন্য দৃঢ়ভাবে সত্য প্রতিজ্ঞা করে তওবা করবে এবং তাতে অটল থাকবে। আর পাপের কথা স্বীকার না করে এটাই পন্থা অবলম্বন করবে। কেননা, এটাই পন্থা অবলম্বন করা তার জন্য বেশি ভালো। যেহেতু সত্য পন্থায় অনুতপ্ত হয়ে ভবিষ্যতে পাপ না করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে নিষ্ঠাবান হয়ে তওবা করলে তিনি অবশ্যই তওবা কবুল করবেন।
৩। মহান আল্লাহ যে ব্যক্তিকে সুস্থতা এবং নিরাপত্তা প্রদান করেছেন, সেই ব্যক্তি অমঙ্গল থেকে রক্ষা পাবে এবং সুখময় জীবন লাভ করবে। আর প্রকাশ্যভাবে পাপাচারী ব্যক্তি তাকেই বলা যেতে পারে, যে ব্যক্তি নিজের পাপগুলিকে নিজেই প্রকাশ করে এবং লোকের সামনে গর্বের সহিত তার বিবরণ পেশ করে। আর মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহিমাকে নিয়ে বিদ্রুপ করে ও উপহাস করে। তাই জেনে রাখা দরকার যে, যে ব্যক্তি প্রকাশ্যভাবে পাপ কাজ করে, সে ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহ ও তদীয় রাসূলকে অবজ্ঞা করে এবং তুচ্ছজ্ঞান করে। কিন্তু সে জানেনা যে, তার নিজের পাপগুলিকে লুকিয়ে রাখলে সে অমঙ্গল থেকে রক্ষা পাবে এবং নিরাপত্তা লাভ করবে।
Narrated Abu Huraira:
I heard Allah's Messenger (ﷺ) saying. "All the sins of my followers will be forgiven except those of the Mujahirin (those who commit a sin openly or disclose their sins to the people). An example of such disclosure is that a person commits a sin at night and though Allah screens it from the public, then he comes in the morning, and says, 'O so-and-so, I did such-and-such (evil) deed yesterday,' though he spent his night screened by his Lord (none knowing about his sin) and in the morning he removes Allah's screen from himself."