৫০৭

পরিচ্ছেদঃ ৫৬: উপবাস, রুক্ষ ও নীরস জীবন যাপন করা, পানাহার ও পোশাক ইত্যাদি মনোরঞ্জনমূলক বস্তুতে অল্পে তুষ্ট হওয়া এবং প্রবৃত্তির দাসত্ব বর্জন করার মাহাত্ম্য

১২/৫০৭। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ’আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সেই আল্লাহর কসম, যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই! আমি ক্ষুধার জ্বালায় মাটিতে কলিজা (পেট) লাগাতাম এবং পেটে পাথর বাঁধতাম। একদিন লোকেরা যে রাস্তায় বের হয়, সে রাস্তায় বসে গেলাম। কিছুক্ষণ পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে অতিক্রম করা কালীন সময়ে দেখে মুচকি হাসলেন এবং আমার চেহারার অবস্থা ও মনের কথা বুঝে ফেলে বললেন, ’’আবূ হির্র্!’’ আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, ’’আমার পিছন ধর।’’

সুতরাং তিনি চলতে লাগলেন এবং আমি তাঁর অনুসরণ করতে লাগলাম। তিনি (নিজ ঘরে) প্রবেশ করলেন। অতঃপর তিনি আমার জন্য অনুমতি চাইলেন। তারা আমার জন্য অনুমতি দিলে আমি প্রবেশ করলাম। ঘরে এক পিয়ালা দুধ (দেখতে) পেলেন। তিনি বললেন, ’’এ দুধ কোত্থেকে এল?’’ তারা বলল, ’আপনার জন্য অমুক লোক বা মহিলা উপঢৌকন পাঠিয়েছে।’ তিনি বললেন, ’’আবূ হির্র্!’’ আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, ’’আহলে সুফফাদের ডেকে আন।’’ তাঁরা ইসলামের মেহমান ছিলেন, তাঁদের কোন আশ্রয় ছিল না। ছিল না কোন পরিবার ও ধন-সম্পদ বা অন্য কিছু। (সাদকাহ ও হাদিয়াতে তাঁদের জীবন কাটত।) তাঁর নিকট কোন সাদকাহ এলে তিনি সবটুকুই তাঁদের নিকট পাঠিয়ে দিতেন। তা থেকে তিনি কিছুই গ্রহণ করতেন না। আর কোন হাদিয়া বা উপঢৌকন এলেও তাঁদের নিকট পাঠাতেন। কিন্তু তা থেকে কিছু গ্রহণ করতেন এবং তাঁদেরকে তাতে শরীক করতেন।

(তিনি যখন তাঁদেরকে ডাকতে বললেন,) তখন আমাকে খারাপ লাগল। আমি (মনে মনে) বললাম, ’এই টুকু দুধে আহলে সূফ্ফাদের কী হবে? আমিই তো বেশী হকদার যে, এই দুধ পান করে একটু শক্তিশালী হতাম। কিন্তু যখন তাঁরা আসবেন এবং তিনি আমাকে আদেশ করলে আমি তাঁদেরকে দুধ পরিবেশন করব। তারপর আমার ভাগে এই দুধের কতটুকুই বা জুটবে!’ অথচ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথা মান্য করা ছাড়া অন্য কোন উপায়ও ছিল না।

সুতরাং আমি তাঁদের নিকট এসে তাঁদেরকে ডাকলাম। তাঁরা এসে প্রবেশ অনুমতি নিয়ে বাড়ীতে প্রবেশ করে নিজ নিজ আসন গ্রহণ করলেন। তিনি বললেন, ’’আবূ হির্র্!’’ আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, ’’পিয়ালা নাও এবং ওদেরকে দাও।’’ সুতরাং আমি পিয়ালাটি নিয়ে এক একজনকে দিতে লাগলাম। তিনি তৃপ্তিসহকারে পান করে আমাকে পিয়ালা ফেরৎ দিলেন। অতঃপর আর একজনকে দিলাম। তিনি তৃপ্তিসহকারে পান করে আমাকে পিয়ালা ফেরৎ দিলেন।

অতঃপর আর একজনকে দিলাম। তিনি তৃপ্তিসহকারে পান করে আমাকে পিয়ালা ফেরৎ দিলেন। এইভাবে পরিশেষে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে উপস্থিত হলাম। সে পর্যন্ত তাঁদের সবাই পান করে পরিতৃপ্ত হয়ে গেছেন। অতঃপর তিনি পিয়ালাটি নিয়ে নিজের হাতে রাখলেন এবং আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন, ’’আবূ হির্র্!’’ আমি বললাম, ’খিদমতে হাযির, হে আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, ’’এখন বাকী আমি আর তুমি।’’ আমি বললাম, ’ঠিকই বলেছেন হে আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, ’’বসো এবং পান কর।’’ আমি বসে পান করলাম। তিনি আবার বললেন, ’’পান কর।’’ সুতরাং আমি আবার পান করলাম।

অতঃপর তিনি আমাকে পান করার কথা বলতেই থাকলেন। পরিশেষে আমি বললাম, ’না। (আর পারব না।) সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, এর জন্য আমার পেটে আর কোন জায়গা নেই!’ অতঃপর তিনি বললেন, ’’কৈ আমাকে দেখাও।’’ সুতরাং আমি তাঁকে পিয়ালা দিলে তিনি মহান আল্লাহর প্রশংসা করলেন এবং ’বিসমিল্লাহ’ বলে অবশিষ্ট দুধ পান করলেন। (বুখারী) [1]

بَابُ فَضْلِ الْجُوْعِ وَخُشُوْنَةِ الْعَيْشِ وَالْاِقْتِصَارِ عَلَى الْقَلِيْلِ مِنَ الْمَأْكُوْلِ وَالْمَشْرُوْبِ وَالْمَلْبُوْسِ وَغَيْرِهَا مِنْ حُظُوْظِ النَّفْسِ وَتَرْكِ الشَّهَوَاتِ - (56)

وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: وَاللهِ الَّذِي لاَ إِلٰهَ إِلاَّ هُوَ، إنْ كُنْتُ لأَعْتَمِدُ بِكَبِدِي عَلَى الأَرْضِ مِنَ الجُوعِ، وَإنْ كُنْتُ لأَشُدُّ الحَجَرَ عَلَى بَطنِي مِنَ الْجُوعِ . وَلَقَدْ قَعَدْتُ يَوماً عَلَى طَرِيقِهِمُ الَّذِي يَخْرُجُونَ مِنْهُ، فَمَرَّ بِي النِّبيُّ صلى الله عليه وسلم، فَتَبَسَّمَ حِيْنَ رَآنِي، وَعَرَفَ مَا فِي وَجْهِي وَمَا فِي نَفْسِي، ثُمَّ قَالَ: «أَبَا هِرٍّ » قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْحَقْ » وَمَضَى فَاتَّبَعْتُهُ، فَدَخَلَ فَاسْتَأذَنَ، فَأَذِنَ لِي فَدَخَلْتُ، فَوَجَدَ لَبَنَاً في قَدَحٍ، فَقَالَ: « مِنْ أَيْنَ هَذَا اللَّبَنُ ؟ » قَالُوا: أهْدَاهُ لَكَ فُلانٌ -أَو فُلانَةٌ- قَالَ: « أَبَا هِرٍّ » قُلتُ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْحَقْ إِلَى أهْلِ الصُّفَّةِ فَادْعُهُمْ لِي » قَالَ: وَأهْلُ الصُّفَّةِ أضْيَافُ الإِسْلاَمِ، لاَ يَأوُونَ علَى أهْلٍ وَلاَ مَالٍ وَلاَ عَلَى أحَدٍ، وَكَانَ إِذَا أتَتْهُ صَدَقَةٌ بَعَثَ بِهَا إلَيْهِمْ، وَلَمْ يَتَنَاوَلْ مِنْهَا شَيْئاً، وَإِذَا أتَتْهُ هَدِيَّةٌ أرْسَلَ إلَيْهِمْ، وَأصَابَ مِنْهَا، وأشْرَكَهُمْ فِيهَا . فَسَاءَنِي ذَلِكَ، فَقُلْتُ: وَمَا هَذَا اللَّبَنُ في أهْلِ الصُّفَّةِ ! كُنْتُ أحَقُّ أنْ أُصِيبَ مِنْ هَذَا اللَّبَنِ شَرْبَةً أتَقَوَّى بِهَا، فَإذَا جَاءُوا وَأمَرَنِي فَكُنْتُ أنَا أُعْطِيهِمْ ؛ وَمَا عَسَى أنْ يَبْلُغَنِي مِنْ هَذَا اللَّبَنِ . وَلَمْ يَكُنْ مِنْ طَاعَةِ اللهِ وَطَاعَةِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم بُدٌّ، فَأَتَيْتُهُمْ فَدَعَوْتُهُمْ، فَأقْبَلُوا وَاسْتَأذَنُوا، فَأَذِنَ لَهُمْ وَأخَذُوا مَجَالِسَهُمْ مِنَ الْبَيْتِ، قَالَ: «يَا أَبَا هِرٍّ » قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «خُذْ فَأعْطِهِمْ » قَالَ: فَأخَذْتُ القَدَحَ، فَجَعَلْتُ أُعْطِيهِ الرَّجُل فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى، ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ، فَأُعْطِيهِ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى، ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ، فَأُعْطِيهِ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى، ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى النَّبيِّ صلى الله عليه وسلم، وَقَدْ رَوِيَ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ، فَأخَذَ الْقَدَحَ فَوَضَعَهُ عَلَى يَدِهِ، فَنَظَرَ إليَّ فَتَبَسَّمَ، فَقَالَ: «أَبَا هِرٍّ » قُلْتُ: لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: « بَقيتُ أنَا وَأنْتَ » قُلْتُ: صَدَقْتَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ:«اقْعُدْ فَاشْرَبْ » فَقَعَدْتُ فَشَرِبْتُ، فَقَالَ« اشْرَبْ » فَشَرِبْتُ، فَمَا زَالَ يَقُولُ: «اشْرَبْ » حَتَّى قُلْتُ: لاَ، وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ لاَ أجِدُ لَهُ مَسْلكاً ! قَالَ:« فَأرِنِي » فَأعْطَيْتُهُ الْقَدَحَ، فَحَمِدَ الله تَعَالَى، وَسَمَّى وَشَرِبَ الفَضْلَةَ . رواه البخاري

وعن ابي هريرة رضي الله عنه، قال: والله الذي لا اله الا هو، ان كنت لاعتمد بكبدي على الارض من الجوع، وان كنت لاشد الحجر على بطني من الجوع . ولقد قعدت يوما على طريقهم الذي يخرجون منه، فمر بي النبي صلى الله عليه وسلم، فتبسم حين راني، وعرف ما في وجهي وما في نفسي، ثم قال: «ابا هر » قلت: لبيك يا رسول الله صلى الله عليه وسلم، قال: «الحق » ومضى فاتبعته، فدخل فاستاذن، فاذن لي فدخلت، فوجد لبنا في قدح، فقال: « من اين هذا اللبن ؟ » قالوا: اهداه لك فلان -او فلانة- قال: « ابا هر » قلت: لبيك يا رسول الله صلى الله عليه وسلم، قال: «الحق الى اهل الصفة فادعهم لي » قال: واهل الصفة اضياف الاسلام، لا ياوون على اهل ولا مال ولا على احد، وكان اذا اتته صدقة بعث بها اليهم، ولم يتناول منها شيىا، واذا اتته هدية ارسل اليهم، واصاب منها، واشركهم فيها . فساءني ذلك، فقلت: وما هذا اللبن في اهل الصفة ! كنت احق ان اصيب من هذا اللبن شربة اتقوى بها، فاذا جاءوا وامرني فكنت انا اعطيهم ؛ وما عسى ان يبلغني من هذا اللبن . ولم يكن من طاعة الله وطاعة رسول الله صلى الله عليه وسلم بد، فاتيتهم فدعوتهم، فاقبلوا واستاذنوا، فاذن لهم واخذوا مجالسهم من البيت، قال: «يا ابا هر » قلت: لبيك يا رسول الله صلى الله عليه وسلم، قال: «خذ فاعطهم » قال: فاخذت القدح، فجعلت اعطيه الرجل فيشرب حتى يروى، ثم يرد علي القدح، فاعطيه الرجل فيشرب حتى يروى، ثم يرد علي القدح، فاعطيه الرجل فيشرب حتى يروى، ثم يرد علي القدح حتى انتهيت الى النبي صلى الله عليه وسلم، وقد روي القوم كلهم، فاخذ القدح فوضعه على يده، فنظر الي فتبسم، فقال: «ابا هر » قلت: لبيك يا رسول الله صلى الله عليه وسلم، قال: « بقيت انا وانت » قلت: صدقت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم، قال:«اقعد فاشرب » فقعدت فشربت، فقال« اشرب » فشربت، فما زال يقول: «اشرب » حتى قلت: لا، والذي بعثك بالحق لا اجد له مسلكا ! قال:« فارني » فاعطيته القدح، فحمد الله تعالى، وسمى وشرب الفضلة . رواه البخاري

(56) Chapter: Excellence of Simple Living and being Content with Little


Abu Hurairah (May Allah be pleased with him) reported:
By Allah other than Whom there is none worthy of worship, I used to press my stomach against the earth owing to my hunger; I would tie a stone over it. One day, I was sitting on the way they usually take when the Prophet (ﷺ) passed by me. When he saw me he smiled at me and knew my condition and my feelings. He called me and I replied, "At your service, O Messenger of Allah." He said, "Follow me." So I followed him. Having arrived at home, he sought permission and entered. He allowed me in and I, too, entered. He found milk in a bowl and asked, "Where is this from?" He was told that it was a gift for him from so- and-so. He called me and I responded: "At your service, O Messenger of Allah." He said, "Go to the people of As-Suffah and usher them in." He Abu Hurairah (May Allah be pleased with him) explained: The people of As-Suffah were guests of Islam; they had no family, no property and no relations.
When Messenger of Allah (ﷺ) used to receive something in charity, he would send it to them without taking anything from it. When he received a present, he would send for them and share it with them. On this occasion, I disliked to give them anything. I said to myself: "This meagre quantity of milk will not be enough for all the people of As-Suffah! I am more deserving of it than anyone else. By drinking it I may attain some strength. When they come, he will order me to give it to them. I do not expect that anything will be left for me from this milk." As there was no alternative but to obey Allah and His Messenger (ﷺ). I went and called them. They came and sought permission which was granted. They took their seats.
The Prophet (ﷺ) called me and I responded, "At your service, O Messenger of Allah." He then said, "Take the milk and give it to them." I took the bowl and gave it to one man who drank his fill and returned it to me, and I gave it to the next and he did the same. I went on doing this till the bowl reached Messenger of Allah (ﷺ). By that time all had taken their fill. He (ﷺ) took the bowl, put it on his hand, looked at me, smiled and said, "Abu Hirr." I said, "At your service, O Messenger of Allah." He said, "Now you and I are left." I said, "That is true, O Messenger of Allah." He said, "Sit down and drink." I drank, but he went on saying, "Drink some more." I said, "By Him Who has sent you with the Truth, I have no room for it." He said, "Then give it to me." So I gave him the bowl. He praised Allah, uttered the Name of Allah and drank the remainder.

[Al- Bukhari].

Commentary: First, this Hadith indicates the miracle of the Prophet (PBUH) as well as his love and compassion for
Ahlus-Suffah, i.e., those poor people who used to stay at As-Suffah. Second, the Prophet (PBUH) would not accept
charity, but only gifts. Third, he would also let others share a gift given to him by somebody. Fourth, as seen in this incident, the leftovers of a Muslim, whether food or drink, is permissible to others to consume. Fifth, to persuade a guest to eat or drink more is commendable. Sixth, to eat or drink to one's fill, without extravagance, is also permissible.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
রিয়াযুস স্বা-লিহীন (রিয়াদুস সালেহীন)
বিবিধ (كتاب المقدمات)