২৮৪৫

পরিচ্ছেদঃ সূর্য অথবা চন্দ্র গ্রহণের সময় দাস মুক্ত করার নির্দেশ, যে ব্যক্তি দাস মুক্ত করার সামর্থ রাখে

২৮৪৫. সামুরাহ বিন জুনদুব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, তিনি একদিন ভাষন দেওয়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়ান। অতঃপর তিনি খুতবায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় আমি এবং আনসারী কিছু বালক আমরা আমাদের লক্ষ্যবস্তুতে তীর নিক্ষেপ করছিলাম। দর্শকের চোখে যখন তা দুই বা তিন বর্শা পরিমাণ উঁচুতে উঠে, তখন তা কালো হয়ে যায়। তখন আমাদের একজন তার সঙ্গীকে বলেন, “চলো, আমরা মাসজিদে যাই। আল্লাহর কসম, অবশ্যই এই সূর্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতের ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে কোন নতুন হুকম নিয়ে আসবে।”

রাবী বলেন, “তারপর আমরা মাসজিদে যাই। আমরা দেখতে পাই যে, তিনি সাহাবীদের কাছে তাশরীফ এনেছেন। অতঃপর তিনি সোজাভাবে দাঁড়ান এবং সালাত আদায় করেন। তিনি আমাদের নিয়ে সবচেয়ে দীর্ঘ সালাত আদায় করেন, আমাদের নিয়ে তিনি এতো দীর্ঘ সালাত আর কখনই আদায় করেননি। আমরা তাঁর আওয়াজ শুনতে পারছিলাম না। তারপর তিনি দাঁড়ান অতঃপর তিনি দ্বিতীয় রাকা‘আতে অনুরুপভাবে সালাত আদায় করেন। তারপর তিনি বসেন। তাঁর বসার সময় সূর্য প্রকাশিত হয়। তারপর তিনি সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করেন। তারপর তিনি আল্লাহর প্রশংসা, গুণ-কীর্তন করেন এবং সাক্ষ্য দেন যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা‘বূদ নেই এবং তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। তারপর তিনি বলেন, “হে লোকসকল, নিশ্চয়ই আমি একজন মানুষ এবং রাসূল। আমি তোমাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলছি, যদি তোমরা জানো যে, আমি আমার প্রভুর বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে কোন ত্রুটি করেছি, তবে অবশ্যই তোমরা আমাকে তা জানাবে।”

তখন লোকজন বলেন, “আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আপনি আপনার প্রভুর বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন, আপনার উম্মতের কল্যাণ কামনা করেছেন এবং আপনার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন।”

অতঃপর তিনি বলেন, “আম্মা বা‘দ। নিশ্চয়ই কিছু লোক মনে করে যে, চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণ এবং নক্ষত্রসমূহ তাদের উদয়স্থল থেকে অপসারিত হওয়া পৃথিবীর কিছু মহান ব্যক্তির মৃত্যুর কারণে হয়ে থাকে। নিশ্চয়ই এ লোকগুলো মিথ্যা কথা বলেছে।  বস্তুত এসব হলো আল্লাহর নিদর্শনাবলী। আল্লাহর বান্দাগণ এসবের মাধ্যমে উপদেশ গ্রহণ করে। তিনি দেখতে চান যে, তাদের মাঝে কে নতুন করে তাওবা করে। আল্লাহর কসম, নিশ্চয়ই যখন থেকে সালাত আদায় করেছি, তখন থেকে আমি দেখেছি সেসব জিনিস, দুনিয়া ও আখেরাতের যেসব জিনিসের তোমরা মুখোমুখী হবে।

আল্লাহর কসম, নিশ্চয়ই ততক্ষন পর্যন্ত কিয়ামত কায়েম হবে না, যতক্ষন না ত্রিশজন চরম মিথ্যুক ব্যক্তির আবির্ভাব হবে। তাদের একজন কানা দাজ্জাল। তার বাম চোখ মুছানো। তার চোখ আনসারী গোত্রের বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি আবূ তিহইয়ার চোখের মতো। তার ও আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার হুজরার মাঝে একটি কাঠ রয়েছে।

সেই দাজ্জালের যখন আবির্ভাব হবে, সে নিজেকে আল্লাহ মনে করবে।  যে ব্যক্তি তাকে বিশ্বাস করবে, তাকে সত্যায়ন করবে, তার অনুসরণ করবে, তার পূর্বের কোন ভাল আমল কোন কাজে আসবে না। সে মক্কার হারাম ও বাইতুল মাকদিস  ব্যতীত সারা পৃথিবীতে বিচরণ করবে। সে মুসলিমদেরকে বাইতুল মাকদিসের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে। অতঃপর তাদেরকে কঠিন অবরোধ করা হবে।” [1]

আসওয়াদ রহিমাহুল্লাহ বলেন, “আমার ধারণা এটাও হাদীসে রয়েছে যে, ঈসা বিন মারইয়াম আলাইহিস সালামের এই সময়ে আবির্ভাব হবে। অতঃপর মহান আল্লাহ দাজ্জাল ও তার বাহিনীকে পরাস্ত করবেন। এসময় দেয়ালের ভিত্তি এবং গাছের মূল আহবান করবে, “হে মুমিন ব্যক্তি, এখানে কাফের ব্যক্তি আমার কাছে লুকিয়ে আছে। আসো এবং একে হত্যা করো।”

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “এমনটা ততক্ষন পর্যন্ত হবে না, যতক্ষন না তোমরা বড় বড় কিছু না প্রত্যক্ষ করেছো। সেগুলো তোমাদের কাছে খুবই গুরুতর মনে হবে। তোমরা পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করবে, “তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এব্যাপারে কোন কিছু আলোচনা করেছেন?”

এবং এমনটা ততক্ষন পর্যন্ত হবে না, যতক্ষন না পর্বতসমূহ নিজের স্থানচ্যুত হবে।”

তিনি বলেন, “তারপর ‍মুমিনদের রূহ কবজ করা হবে।”

তারপর বর্ণনাকারী আঙ্গুলের পার্শ্বসমূহ ধারণ করে পুণরায় বলেন, “তিনি যা বলেছেন, তা আমি মুখস্থ করেছি। তারপর তিনি এই হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি এর একটি শব্দও আগ-পিছ করেননি।”

ذِكْرُ الْأَمْرِ بِالْعَتَاقَةِ عِنْدَ رُؤْيَةِ كُسُوفِ الشَّمْسِ أَوِ الْقَمَرِ لِمَنْ قَدْرَ عَلَى ذَلِكَ

2845 - أَخْبَرَنَا أَبُو يَعْلَى قَالَ: حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ هِشَامٍ الْبَزَّارُ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ الْأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ عَنْ ثَعْلَبَةَ بْنِ عَبَّادٍ عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ قَالَ: قَامَ يَوْمًا خَطِيبًا فَذَكَرَ فِي خُطبته حَدِيثًا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ سَمُرَةُ: بَيْنَا أَنَا وَغُلَامٌ مِنَ الْأَنْصَارِ نَرْمِي غَرَضًا لَنَا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى إِذَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ فَكَانَتْ ـ فِي عَيْنِ النَّاظِرِ ـ قِيدَ رُمِحٍ أَوْ رُمْحَيْنِ اسْوَدَّتْ فَقَالَ أَحَدُنَا لِصَاحِبِهِ: انْطَلَقَ بِنَا إِلَى مَسْجِدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فو الله لَتُحْدِثَنَّ هذه الشمس اليوم لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أُمَّتِهِ حَدِيثًا قَالَ: فَدَفَعْنَا إِلَى الْمَسْجِدِ فَوَافَقْنَا رسول الله صلى الله عليه وسلم حين خَرَجَ فَاسْتَقَامَ فَصَلَّى فَقَامَ بِنَا كَأَطْوَلِ مَا قَامَ فِي صَلَاةٍ قَطُّ لَا نَسْمَعُ لَهُ صَوْتًا ثُمَّ قَامَ فَفَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ بِالرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ ثُمَّ جَلَسَ فَوَافَقَ جُلُوسَهُ تَجَلِّي الشَّمْسِ فَسَلَّمَ وَانْصَرَفَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَشَهِدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّهُ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ ثُمَّ قَالَ: (يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ رَسُولٌ أذَكِّرُكُم بِاللَّهِ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ أَنِّي قَصَّرْتُ عَنْ شَيْءٍ بِتَبْلِيغِ رِسَالَاتِ رَبِّي ـ لَمَا أخبرتُمُوني) فَقَالَ النَّاسُ: نَشْهَدُ أَنَّكَ قَدْ بَلَّغْتَ رِسَالَاتِ رَبِّكِ وَنَصَحْتَ لِأُمَّتِكَ وَقَضَيْتَ الَّذِي عَلَيْكَ ثُمَّ قَالَ: (أَمَا بَعْدُ: فَإِنَّ رِجَالًا يَزْعُمُونَ أَنَّ كُسُوفَ هَذِهِ الشَّمْسِ وَكُسُوفَ هَذَا الْقَمَرِ وَزَوَالِ هَذِهِ النُّجُومِ عَنْ مَطَالِعِهَا لِمَوْتِ رِجَالٍ عُظَمَاءَ مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ وَإِنَّهُمْ كَذَبُوا وَلَكِنَّهَا آيَاتُ اللَّهِ يعتبرُ بِهَا عِبَادُهُ لِيَنْظُرَ مَنْ يُحَدِّثُ مِنْهُمْ تَوْبَةً وَإِنِّي ـ وَاللَّهِ ـ لَقَدْ رَأَيْتُ مَا أَنْتُمْ لَاقُونَ فِي أَمْرِ دُنْيَاكُمْ وَأَخِرَتِكُمْ مُذْ قُمْتُ أُصَلِّي وَإِنَّهُ ـ وَاللَّهِ ـ مَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَخْرُجَ ثَلَاثُونَ كَذَّابًا أَحَدُهُمُ الْأَعْوَرُ الدَّجَّالُ مَمْسُوحُ عَيْنِ الْيُسْرَى كَأَنَّهَا عَيْنُ أَبِي تِحْيى ـ شَيْخٍ مِنَ الْأَنْصَارِ بَيْنَهُ وَبَيْنَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ خَشَبَةٌ ـ وَإِنَّهُ مَتَى يَخْرُجُ فَإِنَّهُ سَوْفَ يَزْعُمُ أَنَّهُ اللَّهُ فَمَنْ آمَنَ بِهِ وصدَّقه واتَّبعه فَلَيْسَ يَنْفَعُهُ عملٌ صَالِحٌ مِنْ عَمِلٍ سَلَفَ وَإِنَّهُ سَيَظْهَرُ عَلَى الْأَرْضِ كُلِّهَا ـ غيرَ الحَرَمِ وَبَيْتِ الْمَقْدِسِ ـ وَإِنَّهُ يَسُوقُ الْمُسْلِمِينَ إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ فيُحاصرون حِصَارًا شَدِيدًا. قَالَ الْأَسْوَدُ: وَظَنِّي أَنَّهُ قَدْ حدَّثني أن عيسى بن مَرْيَمَ يَصِيحُ فِيهِ فَيَهْزِمُهُ اللَّهُ وَجُنُودَهُ حَتَّى إِنَّ أَصْلَ الْحَائِطِ أَوْ جِذْمَ الشَّجَرَةِ لَيُنَادِي: يَا مُؤْمِنُ هَذَا كَافِرٌ مستترٌ بِي تَعَالَ فَاقْتُلْهُ وَلَنْ يَكُونَ ذَلِكَ كَذَلِكَ حَتَّى تَرَوْا أُمُورًا عِظَامًا يَتَفَاقَمُ شَأْنُهَا فِي أَنْفُسِكُمْ وَتَسَاءَلُونَ بَيْنَكُمْ: هَلْ كَانَ نَبِيِّكُمْ ذِكْرُ لَكُمْ مِنْهَا ذِكْرًا وَحَتَّى تَزُولَ جِبَالٌ عَنْ مَرَاتِبِهَا قَالَ: ثُمَّ عَلَى إِثْرِ ذَلِكَ القبضُ ثُمَّ قَبَضَ أَطْرَافَ أَصَابِعِهِ ثُمَّ قَالَ مَرَّةً أُخْرَى: وَقَدْ حَفِظْتُ مَا قَالَ فَذَكَرَ هَذَا فَمَا قَدَّمَ كلمة عن منزلها ولا أخر أخرى. الراوي : سَمُرَة | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان الصفحة أو الرقم: 2845 | خلاصة حكم المحدث: ضعيف ـ ((ضعيف أبي داود)) (216)، ((الإرواء)) (662).