লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৮৭৭-[১০] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধের শুরুতে আমরা পরিখা খনন করছিলাম। এ সময় এক খণ্ড শক্ত পাথর দেখা দিল। তখন লোকেরা এসে নবী (সা.) -কে বলল, খাল খননকালে একটি শক্ত পাথর দেখা দিয়েছে (যা কোদাল কিংবা শাবল দ্বারা ভাঙা যাচ্ছে না)। তখন নবী (সা.) বললেন, আচ্ছা, আমি নিজেই গর্তে নামব। অতঃপর তিনি (সা.) দাঁড়ালেন, সে সময় তার পেটে পাথর বাধা ছিল। আর আমরাও তিনদিন যাবৎ কিছুই খেতে পাইনি। এমতাবস্থায় নবী (সা.) কোদাল হাতে নিয়ে পাথরটির উপর আঘাত করলে তা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে বালুকণায় পরিণত হয়। জাবির (রাঃ) বলেন, [নবী (সা.)-কে ক্ষুধার্ত অবস্থায় পেয়ে] আমি আমার স্ত্রীর কাছে এসে বললাম, তোমার কাছে কি খাওয়ার মতো কিছু আছে? কেননা আমি নবী (সা.) -কে ভীষণ ক্ষুধার্ত দেখেছি। তখন সে একটি চামড়ার পাত্র হতে এক সা’ পরিমাণ যব বের করল আর আমাদের পোষা একটি বকরির ছানা ছিল। তখন আমি সেই ছানাটি যাবাহ করলাম এবং আমার স্ত্রীও যব পিষল। অবশেষে আমরা হাঁড়িতে মাংস চড়ালাম। অতঃপর নবী (সা.) -এর কাছে এসে তাকে চুপে চুপে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আমাদের ছোট একটি বকরির বাচ্চা যাবাহ করেছি। আর এক সা যব ছিল, আমার স্ত্রী তা পিষেছে। অতএব আপনি আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে চলুন। (এ কথা শুনে) নবী (সা.) উচ্চৈঃস্বরে সকলকে ডেকে বললেন, হে খাল খননকারীগণ! আসো, তোমরা তাড়াতাড়ি চল, জাবির তোমাদের জন্য খাবার প্রস্তুত করেছে।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমি যাও, কিন্তু আমি না আসা পর্যন্ত মাংসের ডেকচি নামাবে না এবং খামিরগুলো নবী (সা.) -এর সামনে আগিয়ে দিলে তিনি তাতে মুখের লালা মিশালেন এবং বরকতের জন্য দু’আ করলেন। অতঃপর ডেকচির কাছে অগ্রসর হয়ে তাতেও লালা মিশিয়ে বরকতের জন্য দু’আ করলেন। এরপর তিনি (আমার স্ত্রীকে লক্ষ্য করে) বললেন, তুমি আরো রুটি প্রস্তুতকারিণীকে আহ্বান কর, যারা তোমাদের সাথে রুটি বানায় এবং চুলার উপর হতে ডেকচি না নামিয়ে তা হতে নিয়ে পরিবেশন কর। (জাবির রা. বলেন) সাহাবীদের সংখ্যা ছিল এক হাজার। আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, সকলে তৃপ্তি সহকারে খেয়ে চলে যাওয়ার পরও তরকারি ভর্তি ডেচকি ফুটছিল এবং প্রথম অবস্থার মতো আটার খামির হতে রুটি প্রস্তুত হচ্ছিল। (বুখারী ও মুসলিম
الفصل الاول (بَاب فِي المعجزا)
وَعَن جَابر قا ل إِنَّا يَوْمَ الْخَنْدَقِ نَحْفِرُ فَعَرَضَتْ كُدْيَةٌ شَدِيدَةٌ فجاؤوا الْنَبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا: هَذِهِ كُدْيَةٌ عَرَضَتْ فِي الْخَنْدَقِ فَقَالَ: «أَنَا نَازِلٌ» ثُمَّ قَامَ وَبَطْنُهُ مَعْصُوبٌ بِحَجَرٍ وَلَبِثْنَا ثَلَاثَةَ أَيَّام لانذوق ذوقا فَأَخَذَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمِعْوَلَ فَضَرَبَ فَعَادَ كَثِيبًا أَهْيَلَ فَانْكَفَأْتُ إِلَى امْرَأَتِي فَقُلْتُ: هَلْ عِنْدَكِ شَيْءٌ؟ فَإِنِّي رَأَيْتُ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَمْصًا شَدِيدًا فَأَخْرَجَتْ جراباً فِيهِ صاعٌ من شعير وَلنَا بَهْمَةٌ دَاجِنٌ فَذَبَحْتُهَا وَطَحَنَتِ الشَّعِيرَ حَتَّى جَعَلْنَا اللَّحْمَ فِي الْبُرْمَةِ ثُمَّ جِئْتُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فساررتُه فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ ذَبَحْنَا بُهَيْمَةً لَنَا وَطَحَنْتُ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ فَتَعَالَ أَنْتَ وَنَفَرٌ مَعَكَ فَصَاحَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أهلَ الخَنْدَق إِن جَابِرا صَنَعَ سُوراً فَحَيَّ هَلًا بِكُمْ» فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تُنْزِلُنَّ بُرْمَتَكُمْ وَلَا تَخْبِزُنَّ عَجِينَكُمْ حَتَّى أَجِيءَ» . وَجَاءَ فَأَخْرَجْتُ لَهُ عَجِينًا فَبَصَقَ فِيهِ وَبَارَكَ ثُمَّ عَمَدَ إِلَى بُرمْتنا فبصقَ وَبَارك ثمَّ قَالَ «ادعِي خابزة فلتخبز معي وَاقْدَحِي مِنْ بُرْمَتِكُمْ وَلَا تُنْزِلُوهَا» وَهُمْ أَلْفٌ فَأَقْسَمَ بِاللَّهِ لَأَكَلُوا حَتَّى تَرَكُوهُ وَانْحَرَفُوا وَإِنَّ بُرْمَتَنَا لَتَغِطُّ كَمَا هِيَ وَإِنَّ عَجِينَنَا لَيُخْبَزُ كَمَا هُوَ. مُتَّفق عَلَيْهِ متفق علیہ ، رواہ البخاری (4101 ۔ 4102) و مسلم (141 / 2039)، (5315) ۔ (مُتَّفق عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে মুহাম্মাদ (সা.)-এর বরকতময় একটি মুজিযাহ সম্পর্কে যেমন আলোচনা করা হয়েছে তেমনি তার সাথে তুলে ধরা হয়েছে তার পবিত্র জীবনের একটি কষ্টের কথা মুসলিমরা মুশরিক দলগুলো থেকে আত্মরক্ষা করার জন্য পরিখা খনন করেন। তাদের মাঝে রাসূল (সা.) নিজেও অংশগ্রহণ করে কাজ করেছেন। তখন অভাব এতটাই ছিল যে, তারা কয়েকদিন অনাহারে থেকে কাজ করেছেন। এমনকি রাসূল (সা.) নিজেও ক্ষুধার তাড়নায় পেটে পাথর বেঁধেছেন। ফাতহুল বারীর প্রণেতা রাসূল (সা.) -এর ক্ষুধার কারণে পেটে পাথর বাধার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। যেমন ক্ষুধার কারণে পেট সংকুচিত হয়ে যায় আর এতে পিঠ বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে যেন পিঠ বেঁকে না যায়। এজন্যই তিনি পেটে পাথর বেঁধেছেন। যাতে পিঠ সোজা থাকে।
কিরমানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সম্ভবত পাথরের শীতলতার মাধ্যমে ক্ষুধার জ্বালা থেকে প্রশান্তি লাভ করার জন্য পাথর বেঁধেছেন। (ফাতহুল বারী হা. ৪১০১)
বর্ণনাকারী জাবির (রাঃ), হাদীসের একটি অংশে বলেন, (ثُمَّ جِئْتُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فساررتُه) অর্থাৎ, তারপর আমি রাসূল (সা.) -কে কানে কানে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা ছোট একটি ছাগী যাবাহ করেছি। আর আমাদের এক সা যব আছে।
মিরক্বাত প্রণেতা তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেন, ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন: এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, প্রয়োজনে অনেক লোকের উপস্থিতিতে একজনের সাথে আলাদা করে কানে কানে বা চুপে চুপে কথা বলা বৈধ। আর অন্য হাদীসে কানে কানে কথা বলা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। তবে তার ক্ষেত্র ভিন্ন। সেটি হলো যদি তিনজন ব্যক্তি উপস্থিত থাকে তাহলে একজনকে বাদ দিয়ে বাকী দু’জনে চুপে চুপে কথা বলা। কারণ এতে তৃতীয় ব্যক্তি কষ্ট পায়। উক্ত হাদীসে জাবির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে চুপে চুপে দা'ওয়াতের কথা বলেছেন। কারণ খাবারের আয়োজন ছিল অল্প কিন্তু লোকজন ছিল অনেক বেশি, প্রায় হাজারের মতো। তাই জাবির (রাঃ) রাসূল (সা.) -কে চুপে চুপে বলেছেন, আপনি এবং আপনার কয়েকজন লোক নিয়ে আসুন। যেমন হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে।
(وَإِنَّ عَجِينَنَا لَيُخْبَزُ كَمَا هُوَ) অর্থাৎ আমাদের খামীর দিয়ে রুটি বানানো হচ্ছিল। শেষে ঐ পরিমাণই রয়ে গেল যে পরিমাণ ছিল। মিরকাত প্রণেতা বলেন, যে পাত্রে খামির রেখে রুটি বানানো হচ্ছিল সে পাত্রে ঐ পরিমাণই থেকে গেল যে পরিমাণ দিয়ে রুটি বানানো শুরু করা হয়েছিল।
ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর বিশেষ মু'জিযার কারণে অল্প জিনিস বৃদ্ধি পাওয়া পানি বেশি হয়ে উথলিয়ে উঠা, খাবারের তাসবীহ পাঠ করা ইত্যাদি বিষয় সংক্রান্ত হাদীসগুলো সুপ্রসিদ্ধ যার ফলে হাদীসগুলো মুতাওয়াতীর পর্যায়ে পৌছে গেছে। অতএব এ বিষয়গুলো অকাট্যভাবে প্রমাণিত। অনেক ‘আলিমগণ নুবুওয়্যাতের প্রমাণে বিভিন্ন নিদর্শন তাদের কিতাবে একত্রিত করেছেন। যেমন আবূ আবদুল্লাহ আল হালিমী তাঁর (الْقَفَّالِ الشَّاشِي) নামক কিতাবে, আবূ বাকর আল বায়হাক্বী তার (كِتَابُ الْبَيْهَقِيِّ) -তে।
অতএব সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি বিভিন্ন মু'জিযার মাধ্যমে আমাদের নবী (সা.) -এর প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। এবং এসবের মাধ্যমে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় ফাতহুল বারীতে আরো কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে।
যেমন- হাসান সানাদে ইমাম আহমাদ ও নাসায়ী বারা ইবনু ‘আযিব থেকে বর্ণনা করেন। খন্দক যুদ্ধের সময় যখন রাসূল (সা.) আমাদেরকে পরিখা খনন করার আদেশ করলেন তখন খনন করা অবস্থায় একটি শক্ত পাথর বের হলো। যে পাথর কোদাল দিয়ে কাটা যাচ্ছিল না। তখন আমরা রাসূল (সা.) এ-কে এ বিষয়টি জানালাম। তারপর তিনি (সা.) এসে বিসমিল্লাহ বলে কোদাল নিয়ে আঘাত করলেন। এতে সেই পাথরের এক তৃতীয়াংশ ভেঙ্গে গেল। আর তখন রাসূল (সা.) বললেন, আল্লা-হু আকবার! আমাকে সিরিয়ার চাবিকাঠি দেয়া হয়েছে। আল্লাহর শপথ! অবশ্যই আমি এ সময়ে সিরিয়ার লাল প্রাসাদগুলো দেখতে পাচ্ছি।
তারপর দ্বিতীয়বার রাসূল (সা.) সেই পাথর আঘাত করলেন। ফলে পাথরের দুই-তৃতীয়াংশ কেটে গেল। তারপর তিনি (সা.) বললেন, আল্ল-হু আকবার! আমাকে পারস্যের চাবিকাঠি দেয়া হয়েছে। আল্লাহর শপথ! আমি মাদায়িনের সাদা প্রাসাদগুলো দেখতে পাচ্ছি। তারপর বিসমিল্লাহ বলে তৃতীয়বার উক্ত পাথরে আঘাত করলেন। তখন পাথরের অবশিষ্ট অংশও কেটে গেল। এ সময় রাসূল (সা.) বললেন, আল্ল-হু আকবার আমাকে ইয়ামানের চাবিকাঠি দেয়া হয়েছে। আল্লাহর কসম! আমি এ মুহূর্তে এই জায়গায় থেকে সানার তোরণগুলো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।
ইমাম বায়হাক্কী (রহিমাহুল্লাহ) খন্দকের যুদ্ধ সম্পর্কে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। তাতে রয়েছে, রাসূল (সা.) এই প্রত্যেক দশজন ব্যক্তির জন্য দশ হাত করে জায়গা খনন করার দায়িত্ব দিলেন। সেই হাদীসে রয়েছে, খনন করতে করতে একটি সাদা পাথর আমাদের সামনে এসে পড়ল। তাতে আঘাত করার কারণে আমাদের কোদাল ভেঙ্গে গেল। আমরা পাথরটি সেখান থেকে সরাতে চাইলাম। তখন আমরা বললাম, আগে আমরা রাসূল (সা.) -এর সাথে পরামর্শ করে নেই। তাই আমরা তাঁর কাছে সালমান আল ফারসী-কে পাঠালাম।
সেই হাদীসে আরো উল্লেখ আছে আল্লাহর রাসূল (সা.) সেই পাথরটিতে আঘাত করলেন। ফলে তা চৌচির হয়ে গেল এবং তা চমকিয়ে উঠল। তখন রাসূল (সা.) তাকবীর দিলেন এবং মুসলিমেরাও তার সাথে তাকবীর দিয়ে উঠলো। উক্ত হাদীসে আরো উল্লেখ আছে, সাহাবীরা রাসূল (সা.) -কে বললেন, আমরা আপনাকে তাকবীর দিতে দেখেছি, তাই আমরাও আপনার সাথে তাকবীর দিয়েছি। তখন রাসূল (সা.) বললেন, প্রথম চমকানোটা সিরিয়ার প্রাসাদগুলোকে আলোকিত করে দিয়েছে। তারপর জিবরীল আলায়হিস সালাম আমাকে সংবাদ দিলেন যে, আপনার উম্মত তাদের ওপর বিজয় লাভ করবে। উক্ত হাদীসের শেষ অংশে রয়েছে, তারপর মুসলিমগণ খুশি হলো এবং সুসংবাদ গ্রহণ করল।
(قَالَتْ هَلْ سَأَلَكَ قَالَ نَعَمْ فَقَالَ ادْخُلُوا) অর্থাৎ জাবির (রাঃ)-এর স্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করল, আল্লাহর রাসূল (সা.) তাকে কি জিজ্ঞেস করেছেন? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারপর জাবির (রাঃ) বললেন, আপনারা প্রবেশ করুন।।
এখানে বিষয়টি সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এর বিস্তারিত বিবরণ ইউনুস-এর একটি বর্ণনায় আছে। আর তা হলো, জাবির (রাঃ) বলেন, আমি সেদিন অনেক লজ্জার সম্মুখীন হয়েছি যা কেবল আল্লাহই জানেন। তাদের সবাইকে দেখে আমি মনে মনে বললাম। তারা সাবই চলে এসেছেন। অথচ আমার আছে মাত্র এক সা' যব আর একটি ছাগলের বাচ্চা। তারপর আমি আমার স্ত্রীর কাছে গিয়ে বললাম, আমি লজ্জায় পড়ে গেছি। আল্লাহর রাসূল (সা.) খন্দকের সবাইকে নিয়ে তোমার দাওয়াতে চলে এসেছেন। তখন তার স্ত্রী বলল, আল্লাহর রাসূল কি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছেন যে, তোমার কাছে কি পরিমাণ খাবার আছে? তখন আমি বললাম, হ্যাঁ, তারপর আমার স্ত্রী বলল, তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। আমরা তো তাকে জানিয়েই দিয়েছি যে, আমাদের কাছে কি পরিমাণ খাবার আছে। তখন আমি সেই ভীষণ চিন্তা থেকে মুক্ত হলাম।
জাবির (রাঃ)-এর অন্য আরেকটি বর্ণনায় আছে যে, তার স্ত্রী তাকে বলল, আপনি আল্লাহর রাসূলএর কাছে আবার ফিরে গিয়ে বিষয়টি বর্ণনা করুন। তারপর আমি তার কাছে গিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল। আমাদের কাছে শুধু একটি ছাগলের বাচ্চা ও এক সা' যব আছে। তখন রাসূল (সা.) বললেন, তুমি ফিরে যাও কিন্তু আমি না আসা পর্যন্ত চুলা থেকে পাতিল নামাবে না এবং পাতিল থেকে কোন কিছু নাড়াবেও না। বরং তা চুলার উপরই আচ পেতে থাকবে।
এরপর অপর আরেকটি বর্ণনায় আছে, জাবির (রাঃ), বলেন: আমি আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে খামির বের করে দিলাম। তখন তিনি তাতে একটু থুথু দিলেন এবং বরকতের দু'আ করলেন। তারপর পাতিলের কাছে আসলেন এবং তাতে হালকা থুথু দিয়ে বরকতের দু'আ করলেন।
ইউনুস ইবনু বুকায়র-এর বর্ণনায় আছে। রুটি তৈরি করে লোকেদেরকে দেয়া হচ্ছিল আর তারা খাচ্ছিল। এক পর্যায়ে তারা সকলেই পরিতৃপ্ত হয়ে গেল। তারপরেও দেখা গেল যে, পাতিলে ঐ পরিমাণই খাবার রয়েছে যে, পরিমাণ আগে ছিল। অতএব, এসব ঘটনা থেকে বুঝা যায় যে, এটি ছিল মুহাম্মাদ (সা.) -এর বিশেষ মু'জিযার একটি। (ফাতহুল বারী ৭/৪১০১)