৫২২০

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৫২২০-[৬৬] মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। লুকমান ’আলায়হিস সালাম নিজ পুত্রকে লক্ষ্য করে বললেন: হে বৎস! মানুষের সাথে যে সমস্ত বিষয়ে অঙ্গীকার করা হয়েছে, (যথা- মৃত্যুর পরে পুনরুত্থান, হিসাব-নিকাশ, পুরস্কার বা শাস্তি) তার দীর্ঘসময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। আর তারা পরকালের দিকে অতি দ্রুত চলে যাচ্ছে। হে বৎস! তুমি যেদিন জন্ম নিয়েছ সেদিন হতে তুমি দুনিয়াকে পিছনে ছেড়ে আসছ এবং ক্রমশ পরকালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর নিশ্চয় যে ঘরের দিকে (পরকালের দিকে) তুমি যাচ্ছ, তা ঐ ঘর অপেক্ষা তোমার অতি নিকটবর্তী, যে ঘর হতে তুমি বের হচ্ছ (দুনিয়া হতে)। (রযীন)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ لُقْمَانَ قَالَ لِابْنِهِ: «يَا بُنَيَّ إِنَّ النَّاسَ قَدْ تَطَاوَلَ عَلَيْهِمْ مَا يُوعَدُونَ وَهُمْ إِلَى الْآخِرَةِ سرَاعًا يذهبون وَإنَّك قداستدبرت الدُّنْيَا مُنْذُ كُنْتَ وَاسْتَقْبَلْتَ الْآخِرَةَ وَإِنَّ دَارًا تسيرإليها أقربُ إِليك من دارٍ تخرج مِنْهَا» . رَوَاهُ رزين لم اجدہ ، رواہ رزین (لم اجدہ) ۔ (ضَعِيف)

ব্যাখ্যা : আরবী ভাষায় ছোট ছেলেকে (يَا بُنَىَّ) বলে ডাকা হয়, এ ডাকে রয়েছে স্নেহবাৎসল্য ও অত্যধিক ভালোবাসা। ইয়াকূব আলায়হিস সালাম তার ছেলেকে বলেছিলেন, (یٰبُنَیَّ لَا تَقۡصُصۡ رُءۡیَاکَ عَلٰۤی اِخۡوَتِکَ) “হে বৎস! তুমি তোমার স্বপ্নের কথা ভাইদের কাছে প্রকাশ করো না...”- (সূরাহ্ ইউসুফ ১২ : ৫)। আল্লাহ তা'আলা এ ভাষাকে আল কুরআনে চয়ন করেছেন, অতএব এটি এখন কুরআনী ভাষা।
আদাম 'আলায়হিস সালাম থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত প্রতিটি মানুষের নিকট আল্লাহর প্রতিশ্রুতি রয়েছে। সেই প্রতিশ্রুতির মেয়াদ দীর্ঘ হয়ে গেছে। তাদের প্রতি প্রতিশ্রুত বিষয়গুলো হলো পুনরুত্থান, হিসাব, হিসাবান্তে তার বিনিময় (সাওয়াব কিংবা শাস্তি)।
‘আল্লামাহ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন : যে বিষয়ে তাদের ওয়াদা দেয়া ছিল তা দীর্ঘ হয়ে গেছে। আর তারা আখিরাতের দিকে দ্রুত রওয়ানা হয়েছে কিন্তু তাদের সে অনুভূতি নেই।
হাদীসের বাণী : (وَهُمْ إِلَى الْآخِرَةِ سرَاعًا) বাক্যটির ব্যাখ্যা হলো, “প্রতিশ্রুতির পর মানুষের দীর্ঘসময় অতিবাহিত হয়ে গেছে আর প্রতিশ্রুত সময় নিকটবর্তী হয়ে পড়েছে, প্রত্যেকেই দ্রুত সেদিকে দৌড়ে চলছে কিন্তু নৌকার আরোহীর মতো ভ্রমণরত কাফেলার সে অনুভূতি নেই।” লুকমান 'আলাইহিস সালাম আরো বলেন, হে প্রিয় বৎস! তুমি এ দুনিয়া ধরার জন্য যে দৌড় দিচ্ছ তাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাকে পিছনেই ফেলে আসছ। আর ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় তুমি এগিয়ে যাচ্ছ আখিরাতের দিকে। তুমি আরো জেনে রেখ, তোমার সামনের ঘর অতি নিকটে আর পিছনের ঘর অনেক দূরে পড়ে গেছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ; আল কাশিফ লিত্ব ত্বীবী ১০ম খণ্ড, ৩৩০৫ পৃষ্ঠা)