লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪৬-[৫৯] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জিহাদ দু’ প্রকারের হয়ে থাকে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের প্রত্যাশায় জিহাদ করে, ইমামের (নেতার) আনুগত্য প্রদর্শনের সাথে সাথে স্বীয় ধন-সম্পদ খরচ করে, সহচরদের সাথে সদাচরণ করে এবং অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা হতে দূরে থেকে জিহাদে শরীক হয়- তাহলে ঐ ব্যক্তির নিদ্রা-জাগরণ সবই সাওয়াবে পরিণত হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অহংকার, বীরত্ব প্রকাশ ও সুনাম-সুখ্যাতি লাভের জন্য জিহাদ করে, আর ইমামের আনুগত্যের খিলাফ করে এবং জমিনে অনিয়ম-অরাজকতা সৃষ্টি করে, সে জিহাদ থেকে ন্যূনতম সাওয়াব নিয়েও ফিরবে না। (মালিক, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَنْ مُعَاذٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْغَزْوُ غَزْوَانِ فَأَمَّا مَنِ ابْتَغَى وَجْهَ اللَّهِ وَأَطَاعَ الْإِمَامَ وَأَنْفَقَ الْكَرِيمَةَ وَيَاسَرَ الشَّرِيكَ واجتنبَ الْفساد فَإِن نَومه ونهبه أَجْرٌ كُلُّهُ. وَأَمَّا مَنْ غَزَا فَخْرًا وَرِيَاءً وَسُمْعَةً وَعَصَى الْإِمَامَ وَأَفْسَدَ فِي الْأَرْضِ فَإِنَّهُ لَمْ يَرْجِعْ بِالْكَفَافِ» . رَوَاهُ مَالِكٌ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে অংশগ্রহণকারীদের অবস্থার ভিন্নতা বর্ণনা করা হয়েছে। তাছাড়া এখানে লোক দেখানোর জন্য বা পার্থিব কোনো মর্যাদা লাভের উদ্দেশে যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে এবং এর কঠিন পরিণতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
হাদীসের প্রথমাংশে বর্ণিত উক্তি (اَلْغَزْوُ غَزْوَانِ) তথা ‘‘যুদ্ধ দুই প্রকারের’’, এ বাক্যের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কাযী ইয়ায বলেনঃ ‘‘এখানে যুদ্ধের দু’টি প্রকারের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে: একটি হচ্ছে ফরয তথা আবশ্যকীয় এবং অপরটি নফল তথা ঐচ্ছিক। কিন্তু পরবর্তী বাক্যে এ আলোচনা থেকে সরে গিয়ে যোদ্ধা বা মুজাহিদদের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে’’। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
(وَأَنْفَقَ الْكَرِيْمَةَ) তথা ‘‘সে উত্তম বস্তু আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছে’’ এখানে ‘‘কারীমাহ্’’ বলতে প্রতিটি বস্তুর সর্বোৎকৃষ্ট অংশকে বুঝানো হয়েছে। মুল্লা ‘আলী কারী বলেনঃ এখানে ঐ ব্যক্তি উদ্দেশ্য যে তার সম্পদের মধ্য হতে উৎকৃষ্ট অংশ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে এবং নিজে স্বশরীরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
(وَاجْتَنَبَ الْفَسَادَ) এখানে উদ্দেশ্য হলো, সে যুদ্ধের ময়দানে হত্যা করা ও কোনো কিছু বিনষ্ট করার ক্ষেত্রে শারী‘আতে বর্ণিত সীমা অতিক্রম করে না। আর এমন কোনো কাজ করে না, যার কারণে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা ফাসাদ সৃষ্টি হবে। কারণ মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ অর্থাৎ- ‘‘তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না’’। (সূরা আল বাকারা ২ : ৬০)
এর ভাবার্থ হলো, কেউ যদি উপরোল্লিখিত ত্রুটিগুলো থেকে যুদ্ধের ময়দানে মুক্ত থাকতে না পারে, তাহলে সে সেখান থেকে সমান সমান তথা নেকী অর্জন করেনি এবং পাপও হয়নি এমন অবস্থায়ও ফিরে আসতে পারবে না। বরং সে জিহাদের কোনো প্রতিদান তো পাবেই না, উল্টো গুনাহ উপার্জন করে ফিরবে। কারণ কোনো ক্ষেত্রে যদি আনুগত্য পুরোপুরি করা না যায়, তাহলে সেটা অবাধ্যতায় পরিণত হয়। আর আল্লাহর অবাধ্য ব্যক্তি নিঃসন্দেহে পাপী। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫১২)