লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৩৫৫৮-[৪] ’উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার থেকে গ্রহণ কর! আমার থেকে গ্রহণ কর! আল্লাহ তা’আলা রমণীদের জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আর তা হলো, কোনো অবিবাহিত যুবক-যুবতী যিনা করলে একশত চাবুক মারা হবে এবং এক বছরের জন্য দেশান্তরিত হবে। আর কোনো বিবাহিতা নারী ও পুরুষ যিনা করলে একশত চাবুক মারা হবে এবং রজম (পাথর নিক্ষেপে হত্যা) করা হবে। (মুসলিম)[1]
اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: خُذُوا عَنِّي خُذُوا عَنِّي قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لَهُنَّ سَبِيلًا: الْبِكْرُ بالبكر جلد مائَة ووتغريب عَام وَالثَّيِّب بِالثَّيِّبِ جلد مائَة وَالرَّجم
ব্যাখ্যা: (قَدْ جَعَلَ اللّٰهُ لَهُنَّ سَبِيْلًا) এ বাক্যটি এ আয়াতের দিকে ইঙ্গিত করে:
فَأَمْسِكُوْهُنَّ فِي الْبُيُوْتِ حَتّٰى يَتَوَفَّاهُنَّ الْمَوْتُ أَوْ يَجْعَلَ اللهُ لَهُنَّ سَبِيْلًا
‘‘তবে সংশ্লিষ্টদেরকে গৃহে আবদ্ধ করে রাখো যতক্ষণ না মৃত্যু তাদেরকে তুলে নেয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য অন্য কোনো পথ নির্দেশ না দেন।’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ১৫)। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যাখ্যা করেছেন এটা সে পথে।
এ আয়াতের ব্যাপারে ‘উলামাগণ মতবিরোধ করেছেন এটা মুহকাম আয়াত আর এ হাদীস তা ব্যাখ্যা বা তাফসীরকারকের মতে সূরায় আন্ নূর-এর প্রথম আয়াত দিয়ে এটা মানসূখ। কারো মতে অবিবাহিতার ব্যাপারে সূরা নূর-এর আয়াত আর এই আয়াত বিবাহিত নারীদের ব্যাপারে আর ‘উলামার ইজমা হয়েছে অবিবাহিতা নারীর ব্যাপারে একশত বেত্রাঘাত আর বিবাহিত নারীর ব্যাপারে রজম। আহলে কিতাবরা কেউ এ ব্যাপারে মতানৈক্য করেনি। তবে কাযী ‘ইয়ায ও অন্যরা বর্ণনা করেছেন যে, খাওয়ারিজ আর কিছু মুতাযিলা সম্প্রদায় রজমকে অস্বীকার করেছে। মতানৈক্য হয়েছে বিবাহিত নারীদের ব্যাপারে রজমের সাথে বেত্রাঘাত। একদল ‘উলামাহ্ বলেন, দু‘টোই প্রয়োগ হবে প্রথমে বেত্রাঘাত পরে রজম। এ মতে আলী ইবনু আবূ ত্বালিব, হাসান বাসরী, ইসহক ইবনু রহাওয়াই, দাঊদ, আহলুয্ যাহির ও কিছু শাফি‘ঈরা। আর অধিকাংশ ‘উলামারা বলেন, শুধুমাত্র রজম প্রয়োগ হবে।
কাযী ‘ইয়ায আহলে ক্বিবলার (মুসলিম উম্মাহর) মত থেকে বর্ণনা করেন যে, দু’ এর মাঝে সমাধান হলো যদি বয়স্ক বিবাহিত পুরুষ হয় তাহলে বেত্রাঘাত ও রজম আর যদি বিবাহিত যুবক হয় তাহলে শুধুমাত্র রজম। এটা বাতিল মত যার কোনো ভিত্তি নেই।
আর জুমহূরদের দলীল হলো শুধুমাত্র রজম। এ ব্যাপারে প্রচুর হাদীসের ঘটনা এসেছে, যেমন মা‘ইয এবং গামিদী মহিলার ঘটনা। আর সমাধান হলো বেত্রাঘাত এবং রজম মানসূখ হয়েছে তা প্রথম দিকে ছিল।
আর تغريب سنة ‘এক বছর দেশান্তর’ শাফি‘ঈ ও জুমহূরের মতে চাই পুরুষ হোক বা নারী হোক। আর হাসান বলেন, দেশান্তর ওয়াজিব নয়। মালিক ও আওযা‘ঈ বলেন, মহিলাদের দেশান্তর নেই। অনুরূপ মত ‘আলী থেকে এবং তারা বলেন, নারী হলো পর্দার বিষয় আর দেশান্তরে তা নষ্ট হবে, এজন্য মহিলাদের মাহরাম ব্যতিরেকে সফর করা নিষেধ।
আর দাসী ও দাসের ক্ষেত্রে তিনটি মত। শাফি‘ঈদের মতে প্রথমতঃ হাদীসের ভাষ্যমতে প্রত্যেককে এক বৎসর দেশান্তর করতে হবে। এ ব্যাপারে সুফ্ইয়ান সাওরী, আবূ সাওর, দাঊদ ও ইবনু জারীর একমত প্রকাশ করেছেন।
দ্বিতীয়তঃ অর্ধেক বৎসর দেশান্তর করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলার বাণী : ‘‘যদি তারা অশ্লীল কাজ করে তবে তাদেরকে স্বাধীন নারীদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ২৫)। আর এটা সহীহ মত এবং এ আয়াতটি খাস ও ‘আম্ হাদীসের দৃষ্টিতে। (শারহে মুসলিম ১১ খন্ড, হাঃ ১৬৯০)