লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - উপার্জন করা এবং হালাল রুযী অবলম্বনের উপায় সন্ধান করা
২৭৬০-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা পুত-পবিত্র, তিনি পুত-পবিত্র জিনিসকেই গ্রহণ করেন। আল্লাহ তা’আলা যে কাজ করতে রসূলদের প্রতি নির্দেশ করেছেন তদ্রূপ এই একই কাজের নির্দেশ মু’মিনদেরকেও করেছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেছেন : ’’হে রসূলগণ! পাক-পবিত্র হালাল রুযী খাও এবং নেক আ’মাল কর’’- (সূরা আল মু’মিনূন ২৩ : ৫১)। আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ ’’হে মু’মিনগণ! আমি তোমাদেরকে যা উপজীবিকা স্বরূপ দান করেছি সেই পাক-পবিত্র বস্তুসমূহ ভক্ষণ কর’’- (সূরা আল বাকারা ২ : ১৭২)।
অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দৃষ্টান্ত হিসেবে এক ব্যক্তির অবস্থা উল্লেখ করে বলেন যে, এ ব্যক্তি দূর-দূরান্তের সফর করছে, তার মাথার চুল এলোমেলো, শরীর ধূলাবালুতে মাখা। এ অবস্থায় ঐ ব্যক্তি দু’ হাত আকাশের দিকে উঠিয়ে কাতর কণ্ঠে বলে ডাকছে, হে রব্! হে রব্! কিন্তু তার খাবার হারাম, পানীয় হারাম, পরনের পোশাক হারাম। আর এ হারামই সে ভক্ষণ করে থাকে। তাই এমন ব্যক্তির দু’আ কিভাবে কবুল হতে পারে? (মুসলিম)[1]
بَابُ الْكَسْبِ وَطَلَبِ الْحَلَالِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا وَأَنَّ اللَّهَ أَمَرَ المؤْمنينَ بِمَا أمرَ بِهِ المرسَلينَ فَقَالَ: (يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ واعْمَلوا صَالحا) وَقَالَ: (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ) ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ: يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ وَغُذِّيَ بِالْحَرَامِ فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
ব্যাখ্যা: (إِنَّ اللّٰهَ طَيِّبٌ) আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র, অর্থাৎ তিনি সকল প্রকার দোষ-ত্রুটিমুক্ত।
(لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا) তিনি পবিত্র ছাড়া কিছু গ্রহণ করে না। আল্লাহর রাস্তায় যা কিছু দান করা হয় তা যদি পবিত্র না হয়, শারী‘আতের দৃষ্টিতে হালাল না হয় এবং নিয়্যাতের মধ্যে অসৎ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে আল্লাহ তা‘আলা ঐ দান গ্রহণ করেন না। ‘আল্লামা ইমাম নববী বলেন, অত্র হাদীসে হালাল উপার্জন থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে এবং অসদোপায়ে উপার্জন করতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করা থেকে পরোক্ষভাবে নিষেধ করা হয়েছে। (শারহে মুসলিম ৭/৮ খন্ড, হাঃ ১০১৫)
(يُطِيلُ السَّفَرَ) ‘‘দীর্ঘপথ ভ্রমণ করে’’ অর্থাৎ আল্লাহর পথে ভ্রমণ করে যেমন হজ্জ/হজ, জিহাদ, আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপনের নিমিত্তে।
(أَشْعَثَ أَغْبَرَ) চুল এলোমেলো ও শরীর ধূলিমলিন করে। অর্থাৎ তার শরীরে ভ্রমণের ছাপ স্পষ্ট দেখা যায়।
(يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ : يَا رَبِّ! يَا رَبِّ!) আকাশপানে হাত তুলে ইয়া রব্, ইয়া রব্! বলে কান্নাকাটি করে। অর্থাৎ যে অবস্থায় আল্লাহর নিকট দু‘আ করলে তিনি তা কবুল করেন ঐ সকল অবস্থায়ই তার মধ্যে বিদ্যমান। এতদসত্ত্বেও তার দু‘আ কবুল হয় না, কারণ (مَطْعَمُه حَرَامٌ وَمَشْرَبُه حَرَامٌ) তার খাবার তার পানীয়, তার পোশাক সকল কিছুই হারাম উপায়ে অর্জিত।
(فَأَنّٰى يُسْتَجَابُ لِذٰلِكَ؟) অতএব কিভাবে তার দু‘আ কবুল করা হবে। এতে জানা গেল যে, দু‘আ কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত হলো হালাল উপায়ে অর্জিত খাবার খেতে হবে এবং হালাল উপায়ে অর্জিত পোশাক পরিধান করতে হবে। তাহলেই আল্লাহর কাছে দু‘আ গৃহীত হবে নচেৎ নয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)