পরিচ্ছেদঃ ১৭২. ইমামের পিছনে আমীন বলা প্রসঙ্গে
৯৩৬। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (সালাতে সূরাহ ফাতিহা পাঠের পর) ইমাম যখন ’’আমীন’’ বলবে তখন তোমরাও ’’আমীন’’ বলবে। কেননা যে ব্যক্তির আমীন বলা মালায়িকাহ (ফিরিশতার) আমীন বলার সাথে মিলবে তার পূর্বেকার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সূরাহ ফাতিহা শেষে) ’’আমীন’’ বলতেন।[1]
সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।
[1] বুখারী (অধ্যায় : আযান, অনুঃ ইমামের সশব্দে আমীন বলা, হাঃ ৭৮০), মুসলিম (অধ্যায় : সালাত, অনুঃ তাসবীহ, তাহমীদ ও আমীন বলা) উভয়ে মালিক হতে।
-
ফায়িদাহঃ হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, এ হাদীস ইমামের আমীন বলার ব্যাপারে সুস্পষ্ট। ইবনু ‘আবদুল বার ‘আত-তামহীদ’ গ্রন্থে (৭/১৩) বলেন, এটিই হচ্ছে অধিকাংশ মুসলিমের বক্তব্য, তাদের মধ্যে মদীনাহবাসীদের বর্ণনা অনুযায়ী ইমাম মালিকও একজন।
উল্লেখ্য, ‘আমীন’ বলার পক্ষে ১৭টি হাদীস বর্ণিত হয়েছে- (রওযাতুন নাদিয়্যাহ ১/২৭১)। তন্মধ্যে ‘আমীন’ আস্তে বলার পক্ষে শু‘বাহ হতে একটি হাদীস এসেছে। কিন্তু শু‘বাহর হাদীসটি দুর্বল, মুযতারিব এবং সহীহ হাদীসসমূহেরও বিরোধী। ইমাম বুখারী সহ অন্যান্য ইমামগণ শু‘বাহর হাদীসকে দুর্বল বলেছেন। তাই সহীহুল বুখারী ও সহীহ মুসলিম সহ বিভিন্ন সহীহ হাদীসে বর্ণিত জেহরী ক্বিরাআতের সালাতে সশব্দে ‘আমীন’ বলার বিশুদ্ধ সুন্নাতের আমল করাই উত্তম।
মুক্তাদীর সশব্দে আমীন বলাঃ
(ক) ‘আত্বা (রহঃ) বলেনঃ ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর (রাঃ) সশব্দে ‘আমীন’ বলতেন। তাঁর সাথে মুক্তাদীদের ‘আমীন’ -এর আওয়াজে মাসজিদ গুঞ্জরিত হয়ে উঠত। [সহীহুল বুখারী তা‘লীক্ব, (১/১০৭) পৃঃ; ফাতহুল বারী হা/৭৮০-৭৮১, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব, হাদীস সহীহ]
(খ) আবূ রাফি‘ বলেনঃ আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) মারওয়ান ইবনু হাকামের আযান দিতেন। ... মারওয়ান যখন ওয়ালাদ্দোয়াল্লীন বলতেন তখন আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) দীর্ঘ আওয়াজে ‘আমীন বলতেন। [বায়হাক্বী (২/৫৯) সহীহ সনদে]
(গ) ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইহুদীরা তোমাদের সবচেয়ে বেশি হিংসা করে তোমাদের ‘সালাম’ ও ‘আমীন’ বলার কারণে। (আহমাদ, ইবনু মাজাহ, ইবনু খুযাইমাহ, ত্বাবারানী। এ হাদীস মুক্তাদীর সশব্দে আমীন বলার অন্যতম প্রমাণ)
এছাড়া আবূ দাউদের আলোচ্য (৮৩৫-৮৩৬ নং) হাদীস দু’টিও মুক্তাদীর সশব্দে আমীন বলা প্রমাণ করে।
-
কতিপয় মাসআলাহঃ
(১) মুক্তাদী ইমামের আগে ‘আমীন’ বলবেন না বরং ইমামের ‘আমীন’ বলার সাথে সাথে ‘আমীন’ বলবেন।
(২) জেহরী ক্বিরাআতের সালাতে ইমাম যদি সশব্দে ‘আমীন’ না বলেন, কিংবা নীরবে বলেন, তবুও মুক্তাদী সশব্দে ‘আমীন’ বলবেন।
(৩) যদি কেউ ‘আমীন’ বলার সময় জামা‘আতে যোগদান করেন, তবে তিনি প্রথমে ‘আমীন’ বলে নিবেন ও পরে চুপে চুপে সূরাহ ফাতিহা পাঠ করবেন। (সালাতুর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃঃ ৬০-৬১, ও অন্যান্য)
باب التَّأْمِينِ وَرَاءَ الإِمَامِ
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَأَبِي، سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُمَا أَخْبَرَاهُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا أَمَّنَ الإِمَامُ فَأَمِّنُوا فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ تَأْمِينُهُ تَأْمِينَ الْمَلَائِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ " . قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " آمِينَ " .
- صحيح : ق