পরিচ্ছেদঃ ১৩৬. সালাতে কেউ সূরাহ্ পড়া ছেড়ে দিলে
৮২৫। ইবনু জাবির, সাঈদ ইবনু ’আবদুল ’আযীয এবং ’আব্দুল্লাহ ইবনু আ’লা সূত্রে বর্ণিত। তাঁরা মাকহুল হতে ’উবাদাহ (রাঃ) সূত্রে আর-রাবী’ ইবনু সুলাইমানের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তাঁরা বলেন, ইমাম মাকহুল (রহঃ) মাগরিব, ’ইশার ও ফজর সালাতে (ইমামের পিছনে) প্রত্যেক রাক’আতেই নিঃশব্দে সূরাহ ফাতিহা পড়তেন।
ইমাম মাকহুল (রহঃ) বলেন, যে সালাতে ইমাম উচ্চস্বরে কিরাত পড়েন এবং থামেন তুমি তখন সূরাহ ফাতিহা নীরবে পড়ে নিবে। আর ইমাম যদি বিরতিহীনভাবে কিরাত করেন, তাহলে তুমি হয় ইমামের আগে, পরে বা ইমামের সাথেই সূরাহ ফাতিহা পড়ে নিবে এবং কোন অবস্থাতেই তা পাঠ করা ছেড়ে দিবে না।[1]
দুর্বল।
[1] মাকহুল শামী হাদীসটি ‘উবাদাহ থেকে শুনেননি। তিনি তার সূত্রে এটি মুরসালভাবে বর্ণনা করেছেন। অনুরূপ বলেছেন ইবনু হাজার ‘তাহযীবুত তাহযীব’ (১০/২৫৯) গ্রন্থে।
ইমাম মাকহুলঃ ইমাম যাহাবী বলেনঃ তিনি একজন মুদাল্লিস, ক্বাদরিয়া মতবাদে বিশ্বাসী বলে অভিযুক্ত (মিযানুল ই‘তিদাল, ৪/১৭৭)। ত্বাবাক্বাতে ইবনু সায়াদে (৭/৪৫৪) রয়েছেঃ ‘‘আহলি ‘ইলমের কেউ কেউ বলেছেন, মাকহুল কাবিলী বংশের ছিলেন, তার জবাবে বাঁধো বাঁধো ছিলো এবং ক্বাদরিয়া ফিরকার সাথে সম্পর্ক ছিলো। আর বর্ণনার দিক দিয়ে তিনি যঈফ ছিলেন।’’ কিন্তু ইবনু সায়াদ ইমাম মাকহুল সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তা কয়েকটি কারণে গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথমতঃ ইবারাতের মধ্যে রয়েছে, ‘আহলি ইলমের কেউ কেউ’ এটা একটা অস্পষ্ট কথা। কারা এই আহলি ইলম তা কারো জানা নেই। অর্থাৎ ইবনু সায়াদ তাদের পরিচয় দেননি। আর এ ধরণের কথা মুহাদ্দিসগণের নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। দ্বিতীয়তঃ ইমাম মাকহুল সম্পর্কে এরূপ ত্রুটি বর্ণনায় ইবনু সায়াদ একক হয়ে গেছেন। তার বিপক্ষে রয়েছেন জমহুর। অন্য দিকে ইবনু সায়াদ বর্ণনাকারীদের মধ্যে এতো নিম্ন স্তরের বর্ণনাকারী যে, মুহাদ্দিসগণ তার সম্পর্কে এভাবে মন্তব্য করেছেনঃ ইবনু সায়াদ ত্রুটি ধরার ক্ষেত্রে যদি একাকী হয়ে যান তবে তার ত্রুটি ধরা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ রিজালবিদগণের নিকট ইবনু সায়াদ ওয়াক্বিদী। অর্থাৎ তিনি মিথ্যুকদের অনুসরণ করেন বলে পরিচিত। (দেখুন, হাদীউস সারী, ৪১৭-৪২৩, ৪৪৮ পৃঃ এবং ক্বাওয়ায়িদু ফী ‘উলূমিল হাদীস ৩৯০ পৃঃ)
তাহযীবুত তাহযীব’ (১/১০৮) রয়েছেঃ ‘‘ইমাম মাকহুল শাম দেশের একজন নাম করা তাবেঈ এবং সহীহ মুসলিমের একজন বুনিয়াদী বর্ণনাকারী এবং জমহুর মুহাদ্দিসীনে কিরামের নিকট সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত।’’
ইমাম নাববী (রহঃ) বলেনঃ ইমাম মাকহুল বিশ্বস্ত হওয়ার ব্যাপারে সকলেই একমত- (দেখুন, আসমাউল লুগাত, ২/১১৪)। এছাড়া ইমাম তিরমিযী, ইমাম দারাকুতনী, ইবনু খুযাইমাহ, ইবনু হিব্বান, ইমাম আবূ দাঊদসহ আরো অনেকে ইমাম মাকহুলের হাদীস সহীহ বলেছেন। আর ইমাম যাহাবী যদিও ইমাম মাকহুরকে মুদাল্লিস বলেছেন কিন্তু ইমাম মাকহুলের আন্ আন্ শব্দ দ্বারা বর্ণিত হাদীস ইমাম বুখারী, মুসলিম, আবূ দাঊদ, তিরমিযী, বায়হাক্বী, ইবনু হিববান, ইবনু খুযাইমাহ, দারাকুতনী, ইমাম খাত্তাবী, ইমাম হাকিম প্রমূখ ইমামগণ তাঁদের নিজ নিজ গ্রন্থে স্থান দিয়েছেন।
উল্লেখ্য হানাফী মাযহাবে ইমাম মাকহুলের এ বর্ণনাটি গ্রহণযোগ্য। কারণঃ প্রথমতঃ ইমাম মাকহুল একজন প্রসিদ্ধ তাবেঈ এবং তিনি ইমাম আবূ হানিফার অন্যতম উস্তাদ। (দেখুন, কিতাবুল আসার, ৩৫০ পৃঃ)।
দ্বিতীয়তঃ ইলাউস সুনান (১/৩১৩) গ্রন্থে রয়েছেঃ ‘‘কুরুনে সালাসাহ (অর্থাৎ সাহাবা, তাবেঈ ও তাবে তাবেঈন- এই তিন যুগ) এর তাদলীস ও ইরসাল আমাদের (হানাফীদের) দৃষ্টিতে কোনো ক্ষতি নেই।’’ উক্ত গ্রন্থে আরো রয়েছেঃ ‘‘আমি বলতে চাই, যদি কুরুনে সালাসার ভিতরের বিশ্বস্ত লোক হয় তাহলে তার তাদলীস ঐভাবে গ্রহণযোগ্য, যেভাবে তার মুরসাল বর্ণনা গ্রহণযোগ্য- (দেখুন, ঐ ১/৩০)।
بَابُ مَنْ تَرَكَ الْقِرَاءَةَ فِي صَلَاتِهِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ سَهْلٍ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنِ ابْنِ جَابِرٍ، وَسَعِيدِ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ، وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْعَلَاءِ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ عُبَادَةَ، نَحْوَ حَدِيثِ الرَّبِيعِ بْنِ سُلَيْمَانَ، قَالُوا: فَكَانَ مَكْحُولٌ، يَقْرَأُ فِي الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ وَالصُّبْحِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ سِرًّا، قَالَ مَكْحُولٌ: اقْرَأْ بِهَا فِيمَا جَهَرَ بِهِ الْإِمَامُ إِذَا قَرَأَ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ، وَسَكَتَ سِرًّا فَإِنْ لَمْ يَسْكُتِ اقْرَأْ بِهَا قَبْلَهُ وَمَعَهُ وَبَعْدَهُ لَا تَتْرُكْهَا عَلَى كُلِّ حَالٍ
- ضعيف