লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ৫২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - বৃষ্টির জন্য সালাত
১৫০৯-[১৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ), লোকেরা অনাবৃষ্টির কবলে পতিত হলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চাচা ’আব্বাস ইবনু ’আবদুল মুত্ত্বালিব-এর ওয়াসীলায় আল্লাহর নিকট বৃষ্টির জন্য দু’আ করতেন। তিনি বলতেন, হে আল্লাহ! তোমার নিকট এতদিন আমরা আমাদের নবীর মধ্যমতা পেশ করতাম। তুমি আমাদেরকে বৃষ্টি দিয়ে পরিতৃপ্ত করতে। এখন আমরা তোমার নিকট আমাদের নবীর চাচার ওয়াসীলা পেশ করছি। তুমি আমাদেরকে বৃষ্টি দান করো। (বুখারী)[1]
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ إِذْ قحطوا استسقى بالبعاس بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ: اللَّهُمَّ إِنَّا كُنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّنَا فَتَسْقِينَا وَإِنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِعَمِّ نَبِيِّنَا فَاسْقِنَا. قَالَ: فَيُسْقَوْنَ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ
ব্যাখ্যা: (استسقى بالعباس) ‘উমার (রাঃ) ইস্তিসক্বায় ‘আব্বাস (রাঃ)-এর দু‘আ ও সুপারিশের মাধ্যমে ওয়াসীলা করেছিলেন। মুল্লা ‘আলী ক্বারী বলেন, ইস্তিসক্বার দু‘আ ক্ষমা প্রার্থনার পরে তাঁর মাধ্যমে সুপারিশ করেছিলেন। আর ‘আব্বাস (রাঃ) ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাঝে ব্লাড কানেকশন বা আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং ‘উমার (রাঃ) তাঁর মর্যাদা বিবেচনা করে অনুরোধ করলেন তিনি যেন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করান, বিশেষ করে তার আত্মীয় সম্পর্ক রসূলের সাথে এটি যেন ওয়াসীলা হয় আল্লাহর রহমাত পাওয়ার। অন্য সানাদে হাদীসে এসেছে, ‘উমার (রাঃ) যখন ‘আব্বাস (রাঃ) এর নিকট ইস্তিসক্বার জন্য দু‘আ কামনা করলেন তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ! তিনি শুধু পাপের কারণে বালা-মুসীবাত প্রেরণ করেন আর তা তাওবার মাধ্যমে দূরীভূত করেন আর জাতি আমার (দু‘আর) মাধ্যমে আপনার প্রতি অভিমুখী হয়েছে আমার অবস্থান আপনার নাবীর কারণে। আমাদের এ হাতগুলো পাপ নিয়ে আপনার নিকট প্রসারিত করেছে আর আমাদের ভাগ্য আপনার কাছেই। সুতরাং আমাদেরকে সিক্ত করুন বৃষ্টির মাধ্যমে, অতঃপর আসমান পাহাড়ের মতো ঝুলিয়ে পড়ল তথা প্রচুর বৃষ্টি হল এমনকি জমিন প্রচুর উর্বর হল আর মানুষ তৃপ্তি সহকারে জীবন যাপন করল। ইবনু সা‘ঈদ আরও অনেকে বলেছেন অনাবৃষ্টির বৎসর ছিল ১৮ হিজরীতে। হাজ্জের (হজ্জের/হজের) শুরুতে আরম্ভ হয়েছিল এবং নয় মাস ধরে এ অনাবৃষ্টি ছিল।
(اَللّهُمَّ إِنَّا كُنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّنَا) হে আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে চাচ্ছি আপনার নাবীর দু‘আর মাধ্যমে।
(نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِعَمِّ نَبِيِّنَا) এখন আমরা আমাদের নাবীর চাচার দু‘আ ও সুপারিশের মাধ্যমে আপনার কাছে চাচ্ছি।
এ ঘটনাটি ভাল পরিবার ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিবারের নিকট সুপারিশ কামনা করা বৈধ তা প্রমাণ করে আর প্রমাণ করে ‘আব্বাস (রাঃ) ও ‘উমার (রাঃ)-এর মযার্দা বিশেষ করে ‘উমার (রাঃ) বিনয়ী ভাব ‘উমার (রাঃ)-এর স্বীকৃতি ‘আব্বাস (রাঃ)-এর সম্মান ও মর্যাদার ব্যাপারে। হাফিয ইবনু হাজার বলেন, কবর পূজারীরা এ হাদীস দ্বারা তাদের বিদ্‘আতী ওয়াসীলাকে দলীল হিসেবে গ্রহণ তা প্রত্যাখ্যানযুক্ত। হাদীসে উল্লেখিত ওয়াসীলা অন্বেষণ করা দ্বারা জীবিত ব্যক্তি সত্ত্বার কাছে বা মৃত ব্যক্তির কাছে বা নাম উল্লেখ করে ওয়াসীলা করা উদ্দেশ্য না বরং ওয়াসীলাটা জীবিত ব্যক্তির দু‘আ ও শাফা‘আতের মাধ্যমে যা ‘উমার (রাঃ) করেছেন। অনুরূপ মু‘আবিয়াহ্ (রাঃ) এবং তাঁর সাথে সাহাবীরা ও তাবি‘ঈরা ছিলেন তারা ইয়াযীদ বিন আস্ওয়াদ এর দু‘আর মাধ্যমে আল্লাহর নিকট চেয়েছিলেন। অনুরূপ ফুকাহারা, শাফি‘ঈ, আহমাদ আরও অনেকে বলেন ইস্তিসক্বায় ভাল ব্যক্তির দু‘আর মাধ্যমে ওয়াসীলা করা বৈধ বিশেষ করে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আত্মীয় হলে আরও ভাল। আর কোন বিদ্বানরা বলেননি যে, কোন ব্যক্তি বা নাবী বা নাবী ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির ওয়াসীলার দ্বারা আল্লাহর কাছে বৈধ।