লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - রুকূ‘
৮৭৩-[৬] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! আমাকে রুকূ-সাজদায় কুরআন তিলাওয়াত করতে নিষেধ করা হয়েছে। তাই তোমরা রুকূ’তে তোমাদের ’রবের’ মহিমা বর্ণনা কর। আর সাজদায় অতি মনোযোগের সাথে দু’আ করবে। আশা করা যায়, তোমাদের দু’আ ক্ববূল করা হবে। (মুসলিম)[1]
بَابُ الرُّكُوْعِ
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا إِنِّي نُهِيتُ أَنْ أَقْرَأَ الْقُرْآنَ رَاكِعًا أَوْ سَاجِدًا فَأَمَّا الرُّكُوعُ فَعَظِّمُوا فِيهِ الرَّبَّ وَأَمَّا السُّجُودُ فَاجْتَهِدُوا فِي الدُّعَاءِ فَقَمِنٌ أَنْ يُسْتَجَابَ لَكُمْ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তার উম্মাতের জন্যও রুকূ‘ ও সাজদায় কুরআন তিলাওয়াত নিষেধ যা ‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত মুসলিমের অন্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রুকূ' ও সাজদায় কুরআন তিলাওয়াত করতে নিষেধ করেছেন। রুকূ' সাজদায় কুরআন তিলাওয়াত করা হারাম হবার প্রমাণ এই হাদীস।
রুকূ' ও সাজদায় কুরআন তিলাওয়াত করলে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বাতিল বলে বিবেচিত হবে। নিষেধাজ্ঞার হিকমাত হলো রুকূ' এবং সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হলো বিনয় ও নম্রতার চূড়ান্ত রূপ। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র দু‘আই বেশী মানায়।
হাদীসের বাণীঃ (فَعَظِّمُوا فِيْهِ الرَّبَّ) তার পবিত্রতা ঘোষণা করো। তিনি সকল প্রকার ত্রুটি থেকে মুক্ত তা ঘোষণা করো এবং তার মর্যাদা ঘোষণা করো। আর বড়ত্ব এ ঘোষণার শব্দগুলো বিভিন্ন হাদীসে এসেছে যেমন ‘আয়িশাহ্, ‘উক্ববাহ্ ইবনু আমির, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ এবং ‘আওফ ইবনু মালিক-এর হাদীস।
(وَأَمَّا السُّجُودُ فَا) দু‘আতে তোমরা চূড়ান্ত বিনয়ভাবে প্রকাশ করো।
ইমাম সিন্দী (রহঃ) বলেনঃ আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা অন্যতম দু‘আ।
* আর এ হাদীসটি দলীল হিসেবে প্রমাণ করে সাজদায় দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের জন্য এবং দুনিয়া ও আখিরাতের অকল্যাণ থেকে বাঁচার জন্য যে কোন দু‘আ করা যাবে।
(فَقَمِنٌ) উল্লেখ্য যে, বাস্তবেই আল্লাহ দু‘আ কবূল করবেন। সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হচ্ছে আল্লাহর নিকটবর্তী হবার অন্যতম জায়গা, সুতরাং দু‘আ কবূল হওয়ারও অন্যতম জায়গা।
আর হাদীসটি উৎসাহ প্রদান করেছে সাজদায় দু‘আ করার জন্য যেহেতু সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হচ্ছে দু‘আ কবূলের স্থান। আর এ সংক্রান্ত অনেক পঠিত দু‘আ হাদীসে এসেছে যেমন আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর আগত হাদীস সাজদার ফাযীলাত সংক্রান্ত হাফিয ইবনু হাজার আল আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, সাজদায় দু‘আ করা উদ্বুদ্ধ করে সকল প্রকার প্রয়োজন মিটাতে আল্লাহর নিকট বেশি বেশি ধর্ণা দেয়। যেমনটি আনাস (রাঃ)-এর হাদীসে এসেছেঃ
‘‘তোমাদের প্রত্যেকেই যেন সকল প্রকার প্রয়োজন তার রবের কাছে চায় এমনকি তার জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলেও।’’ (তিরমিযী)
প্রয়োজনে একই চাওয়া বার বার চাইতে পারে আর আল্লাহ তার চাওয়ানুযায়ী সাড়া দিয়ে থাকেন।
আর এ হাদীসটি সুস্পষ্ট প্রমাণ করে রুকূ‘তে তাসবীহ পড়া এবং সাজদায় দু‘আ করা ওয়াজিব- এ মতে গেছেন ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল ও মুহাদ্দিস কিরামগণের একটি দল। তবে জমহূর ‘উলামারা বলেন, এটি মুস্তাহাব। কারণ সালাত ভুলকারীকে এটি শিক্ষা দেননি যদি ওয়াজিব হতো তাহলে অবশ্যই আদেশ করতেন। তবে এ মতটি গ্রহণযোগ্য না যা বিবেকবানের কাছে সুস্পষ্ট।