লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব
৩৬৯-[৩৬] আবূ আইয়ূব, জাবির ও আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। যখন এ আয়াত নাযিল হয়, অর্থাৎ- ’’সেখানে (মসজিদে কু’বায়) এমন কিছু লোক রয়েছে যারা পবিত্রতা অর্জন করাকে পছন্দ করে এবং আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন’’- (সূরাহ্ আত্ তওবা্ ৯: ১০৮) তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আনসারগণ! এ আয়াতে আল্লাহ পবিত্রতার ব্যাপারে তোমাদের প্রশংসা করেছেন। তোমাদের পবিত্রতা কী? তাঁরা বললেন, আমরা সালাতের জন্য উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করি, নাপাকী হতে পবিত্র হবার জন্য গোসল করি, পানি দিয়ে পবিত্রতা লাভ করে থাকি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটাই (পবিত্রতা), যার জন্য আল্লাহ তোমাদের প্রশংসা করেছেন। সুতরাং তোমরা সবসময় এটা করতে থাকবে। (ইবনু মাজাহ্)[1]
وَعَن أبي أَيُّوب وَجَابِر وَأنس: أَن هَذِه الْآيَة نَزَلَتْ (فِيهِ رِجَالٌ يُحِبُّونَ أَنْ يَتَطَهَّرُوا وَاللَّهُ يحب المطهرين) قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَثْنَى عَلَيْكُمْ فِي الطَّهُورِ فَمَا طَهُورُكُمْ قَالُوا نَتَوَضَّأُ لِلصَّلَاةِ وَنَغْتَسِلُ مِنَ الْجَنَابَةِ وَنَسْتَنْجِي بِالْمَاءِ قَالَ فَهُوَ ذَاك فعليكموه» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা: قوله (فَهُوَ ذَاكَ) এখানে সালাতের জন্য উযূ, অপবিত্রতার গোসল ও পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা)- তিনটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ থাকলেও هو সর্বনাম দ্বারা উদ্দেশ্য পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) কর। কেননা তা সবচেয়ে নিকটবর্তী শব্দ এবং এজন্যেই আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রশংসা করেছেন। অন্যথায় উযূ (ওযু/ওজু/অজু) গোসল মুহাজিরগণও করতেন কিন্তু তাদের প্রশংসা করেননি।
হাকিম-এর বর্ণনায় এটি আরও স্পষ্টভাবে এসেছে যথাঃ (فَقَالُوْا تَوَضَّأُ الصَّلَاةُ وَنَغْتَسِلُ لِلْجَنَابَةِ فَقَالَ هَلْ مَعَ ذلِكَ غَيْرُه؟ فَلَاواِلَّا إلا أَنْ اَحَدُنَا) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রশ্নের উত্তরে তারা বললো- আমরা সালাতের জন্য উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করি এবাং জানাবাতের গোসল করি। তিনি বললেন, এর সাথে আর কিছু কি কর? তারা বললো, না, তবে আমাদের কেউ পায়খানা-প্রস্রাবের পর পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করতে পছন্দ করে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এটিই সেই কাজ যার জন্য আল্লাহ তোমাদের প্রশংসা করেছেন। পরে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের জন্য পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করাই আবশ্যক। এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, তারা পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করাই যথেষ্ট মনে করতেন, ঢিলা ব্যবহারের প্রয়োজন মনে করতেন না।
কিন্তু ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বাযযার যে বর্ণনাটি এনেছেন যথাঃ (أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ سَأَلَ أَهْلُ قُبَاءٍ فَقَالَ إِنَّ اللهَ يَثْنى عَلَيْكُمْ فَقَلُوْا إِنَّا نَتَّبِعُ الْحِجَارَةَ الْمَاءِ) অর্থাৎ- ‘‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুবাবাসীকে জিজ্ঞেস করলেন তোমরা এমন কি ‘আমল কর যার জন্য আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের প্রশংসা করেছেন? তারা উত্তরে বলল, আমরা পায়খানা-প্রস্রাবের পর ঢিলার সাথে সাথে পানি দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করি’’। তার (সে বর্ণনাটির) সূত্রে ইমাম বুখারী, নাসায়ীসহ আরো অনেকের মতে দুর্বল হিসেবে অভিহিত। রাবী মুহাম্মাদ বিন ‘আবদুল ‘আযীয থাকায় তা য‘ঈফ। এছাড়াও মুয়াত্ত্বা মালিক গ্রন্থে অন্য একটি দুর্বল সানাদে এই বর্ণনা এসেছে। অথচ ইমাম হাকিম ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে যে মূল হাদীস বর্ণনা করেছেন তাতে শুধুমাত্র পানি দ্বারা ইসতিনজার উল্লেখ রয়েছে।
আবূ আইয়ূব (রাঃ)-এর এ হাদীসের মাধ্যমে পানি দ্বারা ইসতিনজা এবং যারা এ ‘আমল করে তাদের প্রশংসার বিষয়টি প্রমাণিত। যেহেতু এর মাধ্যমে পরিপূর্ণ পবিত্রতা অর্জিত হয়। ‘উলামাহগণ বলেছেনঃ ঢিলা দ্বারা ইসতিনজা করার চেয়ে পানি দ্বারা করা অধিক উত্তম। আর উভয়টি ব্যবহার করা সর্বসাকুল্যে উত্তম। কিন্তু আমীর আল্ ইয়ামানী বলেছেন, একসঙ্গে উভয়টির ব্যবহার আমরা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে পাইনি।