৩১৭৮

পরিচ্ছেদঃ ২৫. সূরা আন-নূর

৩১৭৮। সাঈদ ইবনু জুবাইর (রাযিঃ) কর্তৃক বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, মুস’আব ইবনুয যুবাইরের শাসনামলে আমাকে লি’আনকারী দম্পত্তি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলঃ তাদেরকে পৃথক করে দিতে হবে কি না? আমি এর কি উত্তর দিব তা বুঝতে পাচ্ছিলাম না। আমি আমার ঘর হতে উঠে ’আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাযিঃ)-এর ঘরের দিকে রওনা হলাম। আমি তার নিকট প্রবেশ করার অনুমতি চাইলাম। আমাকে বলা হল, তিনি বিশ্রাম নিচ্ছেন। তিনি আমার আওয়াজ শুনতে পেয়ে বললেন, ইবনু জুবাইর! ভিতরে এসো। নিশ্চয়ই তুমি কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়ে এসেছ।

তিনি বলেন, আমি ভিতরে ঢুকলাম। তিনি তার হাওদার চাটাই বিছিয়ে উহার উপর শুয়ে ছিলেন। আমি বললাম, হে আবূ আবদুর রহমান! লি আনকারী স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক শেষ করে দিতে হবে কি? তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ! হ্যাঁ। অমুকের ছেলে অমুকই এ সম্পর্কে সর্বপ্রথম প্রশ্ন করেছিল। সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কি মত, যদি আমাদের কোন লোক তার স্ত্রীকে অশ্লীল কাজে (ব্যভিচারে) লিপ্ত দেখে তখন সে কি করবে? সে যদি মুখে তা বলে, তবে সে একটা মারত্মক বিষয়ে (যিনার অপবাদে) মুখ খুলল। আর সে যদি চুপ থাকে তাহলেও সে একটা চরম গৰ্হিত বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখল।

বর্ণনাকারী বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ থাকলেন এবং তাকে কিছুই বলল না। লোকটি আবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, ইতোপূর্বে যে বিষয়ে আপনার নিকট জিজ্ঞেস করছিলাম, এখন আমি নিজেই সে পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা সূরা আন-নূরের আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ (অনুবাদ) “আর যারা নিজেদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে যিনার অভিযোগ উত্থাপন করে, অথচ তাদের দলে তারা নিজেরা ব্যতীত আর কোন প্রমাণ নেই, তাদের প্রত্যেকের কথা হবে যে, সে চারবার আল্লাহ তা’আলার নামে শপথ করে বলবে, সে যদি মিথ্যাবাদী হয় তবে তার উপর আল্লাহ তা’আলার আযাব পতিত হোক"(সূরা আন-নূর ৬-৭)। তিনি আয়াতের শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করলেন।

বর্ণনাকারী বলেন, তিনি লোকটিকে ডেকে এ আয়াতগুলো পড়ে শুনান, তাকে ওয়াজ-নাসীহাত করে বুঝান এবং তাকে আরো অবহিত করেন যে, আখিরাতের শাস্তির তুলনায় দুনিয়ার শাস্তি অনেক হালকা ও সহজ।

সে বলল, না, সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য দীন সহকারে পাঠিয়েছেন! আমি তার ব্যাপারে মিথ্যা অপবাদ আনিনি। তারপর তিনি স্ত্রীলোকটিকে ডাকেন, তাকে ওয়াজ-নসীহাত করে শুনান এবং বুঝান যে, আখিরাতের কষ্টের তুলনায় দুনিয়ার কষ্ট খুবই হালকা। স্ত্রীলোকটি বলল, না, সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য দীন সহ পাঠিয়েছেন। সে সত্য কথা বলেনি।

তারপর তিনি পুরুষ লোকটিকে ডাকলেন। সে আল্লাহ তা’আলার নামে শপথ করে চারবার সাক্ষ্য দিল যে, সে সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত এবং পঞ্চম বারে বলল, সে যদি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হয় তাহলে তার উপর আল্লাহ তা’আলার অভিশাপ পতিত হোক। তিনি স্ত্রীলোকটিকেও এভাবে শপথ করান। সে আল্লাহ তা’আলার নামে প্রতিজ্ঞা করে চারবার বলল, সে (স্বামী) মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত এবং পঞ্চম বারে বলল, সে (স্বামী) যদি সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হয় তাহলে তার (স্ত্রীর) উপর আল্লাহ তা’আলার গযব পতিত হোক। তারপর তিনি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক শেষ করে দিলেন।

সহীহঃ মুসলিম (২০৬, ২০৭)

এ অনুচ্ছেদে সাহল ইবনু সা’দ (রাযিঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।

حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ سُئِلْتُ عَنِ الْمُتَلاَعِنَيْنِ، فِي إِمَارَةِ مُصْعَبِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا فَمَا دَرَيْتُ مَا أَقُولُ فَقُمْتُ مِنْ مَكَانِي إِلَى مَنْزِلِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ فَاسْتَأْذَنْتُ عَلَيْهِ فَقِيلَ لِي إِنَّهُ قَائِلٌ فَسَمِعَ كَلاَمِي فَقَالَ لِي ابْنَ جُبَيْرٍ ادْخُلْ مَا جَاءَ بِكَ إِلاَّ حَاجَةٌ قَالَ فَدَخَلْتُ فَإِذَا هُوَ مُفْتَرِشٌ بَرْدَعَةَ رَحْلٍ لَهُ فَقُلْتُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُتَلاَعِنَانِ أَيُفَرَّقُ بَيْنَهُمَا فَقَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ نَعَمْ إِنَّ أَوَّلَ مَنْ سَأَلَ عَنْ ذَلِكَ فُلاَنُ بْنُ فُلاَنٍ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ أَحَدَنَا رَأَى امْرَأَتَهُ عَلَى فَاحِشَةٍ كَيْفَ يَصْنَعُ إِنْ تَكَلَّمَ تَكَلَّمَ بِأَمْرٍ عَظِيمٍ وَإِنْ سَكَتَ سَكَتَ عَلَى أَمْرٍ عَظِيمٍ قَالَ فَسَكَتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يُجِبْهُ فَلَمَّا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ الَّذِي سَأَلْتُكَ عَنْهُ قَدِ ابْتُلِيتُ بِهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ هَذِهِ الآيَاتِ فِي سُورَةِ النُّورِ ‏:‏ ‏(‏والَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلاَّ أَنْفُسُهُمْ ‏)‏ حَتَّى خَتَمَ الآيَاتِ قَالَ فَدَعَا الرَّجُلَ فَتَلاَهُنَّ عَلَيْهِ وَوَعَظَهُ وَذَكَّرَهُ وَأَخْبَرَهُ أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ فَقَالَ لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا كَذَبْتُ عَلَيْهَا ‏.‏ ثُمَّ ثَنَّى بِالْمَرْأَةِ وَوَعَظَهَا وَذَكَّرَهَا وَأَخْبَرَهَا أَنَّ عَذَابَ الدُّنْيَا أَهْوَنُ مِنْ عَذَابِ الآخِرَةِ فَقَالَتْ لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا صَدَقَ ‏.‏ فَبَدَأَ بِالرَّجُلِ فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الصَّادِقِينَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ لَعْنَةَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ ثُمَّ ثَنَّى بِالْمَرْأَةِ فَشَهِدَتْ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ إِنَّهُ لَمِنَ الْكَاذِبِينَ وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ ثُمَّ فَرَّقَ بَيْنَهُمَا ‏.‏ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏


Narrated Sa'eed bin Jubair: "I was asked about those who were involved in the case of Li'an and if they are to be separated, during the leadership of Mus'ab bin Az-Zubair. I did not know what to say. So I went to the house of 'Abdullah bin 'Umar and I sought permission to enter. I was told he was taking a nap, but he heard me taking and he said: 'Is it Ibn Jubair? Enter. You would not have come except for a need.'" He said: "So I entered and found him laying on a saddlecloth from his mount. I said: 'O Abu 'Abdur-Rahman! Are those involved in Li'an separated?' He said: 'Glorious is Allah! Yes. The first who asked about hat was so-and-so the son of so-and-so. He came to the Prophet (ﷺ) and said "O Messenger of Allah! If one of us saw his wife committing adultery, what should he do? If he were to say anything, his statement would be a horrible matter, and if he were to remain silent, his silence about the matter would be horrible." He said: 'So the Prophet (ﷺ) remained silent and did not answer him. Afterwards he came to the Prophet (ﷺ) and said: "The one who asked you about it has been tried by it." So Allah revealed these Ayat from Surat An-Nur: 'And those who accuse their wives and have no witnesses except themselves, let the testimony of one of them be four testimonies by Allah (24:6-10)' - until the end of those Ayat. He said: 'So he called for the man and recited the Ayat to him and admonished him, reminded him, and he told him: "Indeed the punishment of the world is less than the punishment of the Hereafter." So he said: "Nay! By the One Who sent you with the Truth! I did not lie about her." Then he (ﷺ) did the same with the woman, admonishing her and reminding her and he told her: "Indeed the punishment of the world is less than the punishment of the Hereafter." She said: "Nay! By the One Who sent you with the Truth! He is not telling the truth.'" "He said: 'So he started with the man: He testified four times, by Allah that he is one of the truthful, and the fifth time that the curse of Allah be upon him if he was one of the liars. Then the same with the woman: She testified four times by Allah, that he was one of the liars, and the fifth time that the wrath of Allah be upon her if he was one of the truthful. Then he separated the two of them.'"