২৮৬১

পরিচ্ছেদঃ বান্দাদের জন্য আল্লাহ্‌ তা'আলা প্রদত্ত উদাহরণ।

২৮৬১. মুহাম্মাদ ইবন বাশশার (রহঃ) ..... ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন ’ইশার সালাত (নামায) আদায় করে ফিরলেন এবং আবদুল্লাহ্ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু এর হাত ধরে তাঁকে নিয়ে বুতহায়ে মক্কায় দিকে বের হয়ে পড়লেন। অনন্তর এক স্থানে তাকে বসিয়ে চতুর্দিকে রেখা টেনে দিলেন এবং বললেনঃ তোমার এ রেখার মধ্যেই তুমি থাকবে। তোমার সীমা পর্যন্ত কিছু লোক অবশ্য আসবে। তুমি তাদের সাথে কথা বলবে না। তারাও তোমার সাথে কথা বলবে না।

তারপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানে যাওয়ার তাঁর ইচ্ছা ছিল চলে গেলেন। আমি আমার বৃত্তের ভিতর বসে রইলাম। হঠাৎ একদল লোক আমার কাছে আসল, দেখতে মনে হল (ভারতের) জাঠ জাতীয় তাদের চুল এবং শরীর সবই ছিল ওদের মত। এদের গায়ে কোন আচ্ছাদনও দেখছিলাম না আবার তাদের সতরও দেখা যাচ্ছিল না। এরা আমার কাছাকাছি আসল কিন্তু রেখা অতিক্রম করল না। এরপর তারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে ফিরে গেল। এমনি রাত্রির শেষ ভাগ হয়ে এল (তারা আর আসল না) কিন্তু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন আমি বসা ছিলাম তিনি বললেনঃ আমি দেখছি আজকের রাত ঘুমাতে পারি নি। এরপর তিনি আমার রেখার ভিতর প্রবেশ করে আমার উরুর উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমাতেন তখন জোরে জোরে শ্বাস ফেলতেন।

আমি বসে রইলাম আর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার উরুতে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলেন। হঠাৎ আমি কিছু লোক দেখতে পেলাম। তাদের পরনে ছিল সাদা পোষাক। আল্লাহ্ই জানেন কি সৌন্দর্য যে তাঁদের ছিল! তারা আমার কাছে বসে গেলেন। এরপর পরস্পর বললেনঃ এ নবীকে যা দেওয়া হয়েছে আর কোন বান্দাকে তদ্রুপ দিতে আমরা কখনও দেখিনি। তাঁর দুই আঁখি তো নিদ্রা যায় কিন্তু তাঁর হৃদয় হল জাগ্রত। তোমরা তাঁর একটা উদাহরণ বর্ণনা কর।

এক অধিকর্তা একটি প্রাসাদ বানালেন। এরপর তাতে খাদ্য ভর্তি খাঞ্চা রাখলেন এবং লোকদেরকে এ খাদ্য ও পানীয়ের দাওয়াত দিলেন। যে ব্যক্তি এ দাওয়াত গ্রহণ করবে সে এ খাদ্য আহার করবে এবং পানীয় পান করবে। আর যে তা গ্রহণ করবে না তাকে অধিকর্তা শাস্তি দিবেন।

তারপর তারা উঠে চলে গেলেন। আর এই সময় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও জেগে উঠলেন। বললেনঃ এঁরা যা বলেছেন সবই আমি শুনেছি। তুমি কি জান এরা কারা?

আমি বললামঃ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।

তিনি বললেনঃ এরা হলেন ফিরিশতা। তাঁরা যে উদাহরণটি দিয়েছেন তা বুঝতে পেরেছে?

আমি বললামঃ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।

তিনি বললেনঃ তাদের উদাহরণটির ব্যাখ্যা হল, দয়াময় জান্নাত নির্মান করেছেন। এর দিকে তার বান্দাদের তিনি দাওয়াত দিয়েছেন। যে ব্যক্তি তাঁর ডাকে সাড়া দিবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে আর যে সাড়া দিবে না তাকে তিনি শাস্তি দিবেন।

হাসান সহীহ, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২৮৬১ [আল মাদানী প্রকাশনী]

হাদীসটি এ সূত্রে হাসান-গারীব-সহীহ। আবূ তামীমা হুজায়মী (রহঃ) এর নাম হল তরীফ ইবন মুজালিদ। আবূ উছমান নাহদী (রহঃ) এর নাম হল আবদুর রহমান ইবন মালল। সুলায়মান তায়মী (রহঃ) হলেন ইবন তারখান। তিনি মূলত তায়মী ছিলেন না। কিন্তু তিনি বনূ তায়ম গোত্রে অবস্থান করতেন বলে তাদের দিকে সম্পর্কিত করে তাঁকে তায়মী বলা হয়। আলী রাদিয়াল্লাহু আনহ বলেন যে, ইয়াহ্ইয়া ইবন সাঈদ (রহঃ) বলেছেনঃ সুলায়মান তায়মী অপেক্ষা বেশী আর কাউকে আমি আল্লাহকে ভয় করতে দেখিনি।

بَابُ مَا جَاءَ فِي مَثَلِ اللهِ لِعِبَادِهِ

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ أَبِي تَمِيمَةَ الْهُجَيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْعِشَاءَ ثُمَّ انْصَرَفَ فَأَخَذَ بِيَدِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ حَتَّى خَرَجَ بِهِ إِلَى بَطْحَاءِ مَكَّةَ فَأَجْلَسَهُ ثُمَّ خَطَّ عَلَيْهِ خَطًّا ثُمَّ قَالَ ‏"‏ لاَ تَبْرَحَنَّ خَطَّكَ فَإِنَّهُ سَيَنْتَهِي إِلَيْكَ رِجَالٌ فَلاَ تُكَلِّمْهُمْ فَإِنَّهُمْ لاَ يُكَلِّمُونَكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ثُمَّ مَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَيْثُ أَرَادَ فَبَيْنَا أَنَا جَالِسٌ فِي خَطِّي إِذْ أَتَانِي رِجَالٌ كَأَنَّهُمُ الزُّطُّ أَشْعَارُهُمْ وَأَجْسَامُهُمْ لاَ أَرَى عَوْرَةً وَلاَ أَرَى قِشْرًا وَيَنْتَهُونَ إِلَىَّ لاَ يُجَاوِزُونَ الْخَطَّ ثُمَّ يَصْدُرُونَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى إِذَا كَانَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ لَكِنْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ جَاءَنِي وَأَنَا جَالِسٌ فَقَالَ ‏"‏ لَقَدْ أَرَانِي مُنْذُ اللَّيْلَةَ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ دَخَلَ عَلَىَّ فِي خَطِّي فَتَوَسَّدَ فَخِذِي فَرَقَدَ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَقَدَ نَفَخَ فَبَيْنَا أَنَا قَاعِدٌ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُتَوَسِّدٌ فَخِذِي إِذَا أَنَا بِرِجَالٍ عَلَيْهِمْ ثِيَابٌ بِيضٌ اللَّهُ أَعْلَمُ مَا بِهِمْ مِنَ الْجَمَالِ فَانْتَهَوْا إِلَىَّ فَجَلَسَ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ عِنْدَ رَأْسِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَطَائِفَةٌ مِنْهُمْ عِنْدَ رِجْلَيْهِ ثُمَّ قَالُوا بَيْنَهُمْ مَا رَأَيْنَا عَبْدًا قَطُّ أُوتِيَ مِثْلَ مَا أُوتِيَ هَذَا النَّبِيُّ إِنَّ عَيْنَيْهِ تَنَامَانِ وَقَلْبُهُ يَقْظَانُ اضْرِبُوا لَهُ مَثَلاً مَثَلُ سَيِّدٍ بَنَى قَصْرًا ثُمَّ جَعَلَ مَأْدُبَةً فَدَعَا النَّاسَ إِلَى طَعَامِهِ وَشَرَابِهِ فَمَنْ أَجَابَهُ أَكَلَ مِنْ طَعَامِهِ وَشَرِبَ مِنْ شَرَابِهِ وَمَنْ لَمْ يُجِبْهُ عَاقَبَهُ أَوْ قَالَ عَذَّبَهُ - ثُمَّ ارْتَفَعُوا وَاسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ ذَلِكَ فَقَالَ ‏"‏ سَمِعْتَ مَا قَالَ هَؤُلاَءِ وَهَلْ تَدْرِي مَنْ هَؤُلاَءِ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ هُمُ الْمَلاَئِكَةُ أَفَتَدْرِي مَا الْمَثَلُ الَّذِي ضَرَبُوا ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ الْمَثَلُ الَّذِي ضَرَبُوا الرَّحْمَنُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى بَنَى الْجَنَّةَ وَدَعَا إِلَيْهَا عِبَادَهُ فَمَنْ أَجَابَهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ لَمْ يُجِبْهُ عَاقَبَهُ أَوْ عَذَّبَهُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَأَبُو تَمِيمَةَ هُوَ الْهُجَيْمِيُّ وَاسْمُهُ طَرِيفُ بْنُ مُجَالِدٍ وَأَبُو عُثْمَانَ النَّهْدِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مُلٍّ وَسُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ قَدْ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ عَنْهُ مُعْتَمِرٌ وَهُوَ سُلَيْمَانُ بْنُ طَرْخَانَ وَلَمْ يَكُنْ تَيْمِيًّا وَإِنَّمَا كَانَ يَنْزِلُ بَنِي تَيْمٍ فَنُسِبَ إِلَيْهِمْ ‏.‏ قَالَ عَلِيٌّ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ مَا رَأَيْتُ أَخْوَفَ لِلَّهِ تَعَالَى مِنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ ‏.‏


Narrated Abu 'Uthman An-Nahdi: from Ibn Mas'ud who said: "The Messenger of Allah (ﷺ) performed 'Isha, then he turned and took the hand of 'Abdullah bin Mas'ud until he went with him to the wide valley of Makkah. He sat him down, then he drew a line around him. Then he said: 'Do not go beyond your line, for indeed there shall come some men to you, but do not speak to them for they shall not speak to you.'" He said: "Then the Messenger of Allah (ﷺ) went to where he wanted to go, and while I was sitting within the line, some men came to me that appeared as if they were from Az-Zut (A dark people, either from North Africa or India. See Tuhfat Al-Ahwadhi and An-Nihayah), both their hair and their bodies. I did not see nakedness nor covering. They ended up before me but they did not pass the line. Then they returned toward the Messenger of Allah (ﷺ) and when it was near the end of the night, the Messenger of Allah (ﷺ) came to me while I was sitting, and he said: "I have been awake watching all night' then he entered into the line with me and lay down on my thigh to sleep. And the Messenger of Allah (ﷺ) would snore when he slept. So while I was sitting there, and the Messenger of Allah (ﷺ) was sleeping (with his head resting) on my thigh, there appeared some men wearing white garments, and Allah knows best just how handsome they were. They came towards me, and a group of them sat at the head of the Messenger of Allah (ﷺ), and a group at his feet. Then they said to each other: 'We have not ever seen a slave (of Allah) who was given the likes of what this Prophet has been given. Indeed his eyes sleep but his heart remains awake. His parable is that of a chief who built a castle, then he placed a table-spread in it, and invited the people to eat from his food and drink. So whoever answers his invitation, he eats from his food and drinks from his drink. Whoever does not answer, he is punished - or he said - he is chastised.' Then they alighted and the Messenger of Allah (ﷺ) awoke at that time, and said: 'I heard what they were saying. Do you know who they were?' I said: 'Allah and His Messenger know better.' He said: 'They were the angels. Do you know the meaning of the parable they stated?' I said: 'Allah and His Messenger know better.' He said: 'The meaning is that Ar-Rahman [Most Blessed and Most High] built Paradise, and He invited His Slaves to it. Whoever replies he shall enter Paradise, and whoever does not reply, he shall be punished or chastised.'"