১১৮১

পরিচ্ছেদঃ তিন তালাক প্রাপ্তা স্ত্রী (স্বামীর পক্ষ থেকে ) বাসস্থান পাবে না খোরপোষও পাবে না।

১১৮১. হান্নাদ (রহঃ) ..... শা’বী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, ফাতিমা বিনত কায়স রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমাকে আমার স্বামী তিন তালাক দিয়েছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছিলেন, তোমার জন্য বাসবাসের ঘরও নেই এবং খোরপোষও নেই। রাবী মুগীরা বলেন, আমি ইবরাহীমের নিকট এই রিওয়ায়াতটি উল্লেখ করলে তিনি বললেন, এই বিষয়ে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, একজন মহিলার কথায় এই ক্ষেত্রে আমরা আল্লাহর কিতাব ও নবীজীর সুন্নাহ পরিত্যাগ করতে পারি না। জানিনা এই মহিলা যথাযথভাবে স্মরণ রাখতে পেরেছে না ভূলে গিয়েছে। উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু এই ক্ষেত্রে স্ত্রীর জন্য জন্য বাসস্থান ও খোরপোষ সাব্যস্ত করেছেন।

আহমদ ইবনু মানী’ (রহঃ) শা’বী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ফাতিমা বিনত কায়স রাদিয়াল্লাহু আনহা এর কাছে গেলাম এবং তাঁর বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি ফায়সালা দিয়েছিলেন সে সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন যে, তাঁর স্বামী তাঁকে চুড়ান্ত (তিন) তালাক দিলে তিনি (ইদ্দতকালে) বাসস্থান ও খোরপোষ প্রদানের জন্য দাবী জানান। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য বাসস্থান ও খোরপোষের ফায়সালা দেননি। আবূ দাউদ (রহঃ)-এর বর্ণনায় আছে যে, ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ইবনু উম্মি মাকতূমের গৃহে ইদ্দত পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। - ইবনু মাজাহ ২০৩৫, ২০৩৬, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৮০ [আল মাদানী প্রকাশনী]

ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি হাসান-সাহীহ। হাসান বাসরী, আতা ইবনু আবূ রাবাহ, শা’বী (রহঃ) সহ কতক আলিম এই অভিমত পোষণ করেন। ইমাম আহমাদ ও ইসাহাক (রহঃ) এরও অভিমত ত-ই। তাঁরা বলেন স্বামী যদি তালাকের পর ইদ্দতের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার মালিক না থাকেন তবে এই ধরণের তালাক প্রাপ্তা স্ত্রী (স্বামীর পক্ষ থেকে ইদ্দতকালে) বাসস্থান ও খোরপোষ পাবে না। উমার ও আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা সহ কতক ফকীহ সাহাবী বলেন, তিন তালাক প্রাপ্তা স্ত্রী (ইদ্দতকালে) বাসস্থান ও খোরপোষ পাবে। এ হলো সুফইয়ান ছাওরী ও কূফাবাসী আলিমগণের অভিমত। কতক আলিম বলেন, সে (ইদ্দতকালে) বাসস্থান পাবে কিন্তু খোরপোষ পাবে না। এ হলো ইমাম মালিক ইবনু আনাস, লায়ছ ইবনু সা’দ ও শাফিঈ (রহঃ)-এর অভিমত।

ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ

لاَ تُخْرِجُوهُنَّ مِنْ بُيُوتِهِنَّ وَلاَ يَخْرُجْنَ إِلاَّ أَنْ يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُبَيِّنَةٍ

তাদের ঘর থেকে বের করে দিবেনা এবং তারাও বের হবেনা। যে পর্যন্ত না সুষ্পুষ্ট কোন অশ্লীলতায় তারা লিপ্ত হয়। (সূরা তালাক ৬৫:১)

এই আয়াতের কারণে আমরা এই ধরনের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীদের জন্য বাসস্থানের অধিকারের অভিমত প্রদান করি। আলিমগণ বলেন, এখানে فَاحِشَةٍ (অশ্লীলতা) এর অর্থ হলো অশ্লীল কথাবার্তা অর্থাৎ সে তার পরিবারের লোকদের সাথে গালিগালাজ করে। ইমাম শাফিঈ (রহঃ)-এর মতে ফাতিফা বিনত কায়স রাদিয়াল্লাহু আনহা-কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক বাসস্থানের সুযোগ না দেওয়ার কারণ হলো ফাতিমা পরিবারের লোকদের সঙ্গে কটূভাষী ছিলেন। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, কিন্তু এই (তিন তালাকপ্রাপ্ত) মহিলার মহিলার জন্য (ইদ্দতকালে) খোরপোষের বিধান না দেওয়ার কারণ হলো ফাতিমা বিনত কায়স রাদিয়াল্লাহু আনহা-এর ঘটনা সম্পর্কিত এ হাদীসটি।

باب مَا جَاءَ فِي الْمُطَلَّقَةِ ثَلاَثًا لاَ سُكْنَى لَهَا وَلاَ نَفَقَةَ ‏

حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مُغِيرَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، قَالَ قَالَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ قَيْسٍ طَلَّقَنِي زَوْجِي ثَلاَثًا عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ سُكْنَى لَكِ وَلاَ نَفَقَةَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ مُغِيرَةُ فَذَكَرْتُهُ لإِبْرَاهِيمَ فَقَالَ قَالَ عُمَرُ لاَ نَدَعُ كِتَابَ اللَّهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّنَا صلى الله عليه وسلم لِقَوْلِ امْرَأَةٍ لاَ نَدْرِي أَحَفِظَتْ أَمْ نَسِيَتْ ‏.‏ وَكَانَ عُمَرُ يَجْعَلُ لَهَا السُّكْنَى وَالنَّفَقَةَ ‏.‏ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَنْبَأَنَا حُصَيْنٌ، وَإِسْمَاعِيلُ، وَمُجَالِدٌ، قَالَ هُشَيْمٌ وَحَدَّثَنَا دَاوُدُ، أَيْضًا عَنِ الشَّعْبِيِّ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ فَسَأَلْتُهَا عَنْ قَضَاءِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِيهَا فَقَالَتْ طَلَّقَهَا زَوْجُهَا الْبَتَّةَ فَخَاصَمَتْهُ فِي السُّكْنَى وَالنَّفَقَةِ فَلَمْ يَجْعَلْ لَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سُكْنَى وَلاَ نَفَقَةً ‏.‏ وَفِي حَدِيثِ دَاوُدَ قَالَتْ وَأَمَرَنِي أَنْ أَعْتَدَّ فِي بَيْتِ ابْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَهُوَ قَوْلُ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْهُمُ الْحَسَنُ الْبَصْرِيُّ وَعَطَاءُ بْنُ أَبِي رَبَاحٍ وَالشَّعْبِيُّ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ ‏.‏ وَقَالُوا لَيْسَ لِلْمُطَلَّقَةِ سُكْنَى وَلاَ نَفَقَةٌ إِذَا لَمْ يَمْلِكْ زَوْجُهَا الرَّجْعَةَ ‏.‏ وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ عُمَرُ وَعَبْدُ اللَّهِ إِنَّ الْمُطَلَّقَةَ ثَلاَثًا لَهَا السُّكْنَى وَالنَّفَقَةُ ‏.‏ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ ‏.‏ وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لَهَا السُّكْنَى وَلاَ نَفَقَةَ لَهَا ‏.‏ وَهُوَ قَوْلُ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَاللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ وَالشَّافِعِيِّ ‏.‏ وَقَالَ الشَّافِعِيُّ إِنَّمَا جَعَلْنَا لَهَا السُّكْنَى بِكِتَابِ اللَّهِ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى‏:‏ ‏(‏لاَ تُخْرِجُوهُنَّ مِنْ بُيُوتِهِنَّ وَلاَ يَخْرُجْنَ إِلاَّ أَنْ يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُبَيِّنَةٍ ‏)‏ قَالُوا هُوَ الْبَذَاءُ أَنْ تَبْذُوَ عَلَى أَهْلِهَا ‏.‏ وَاعْتَلَّ بِأَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ قَيْسٍ لَمْ يَجْعَلْ لَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم السُّكْنَى لِمَا كَانَتْ تَبْذُو عَلَى أَهْلِهَا ‏.‏ قَالَ الشَّافِعِيُّ وَلاَ نَفَقَةَ لَهَا لِحَدِيثِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي قِصَّةِ حَدِيثِ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ ‏.‏


Fatimah bint Qais said: "My husband divorced me three times during the time of the Prophet. So the Messenger of Allah said: 'There is no housing for you nor maintenance.'" Al-Mughirah (one of the narrators) said: "I mentioned that to Ibrahim and he said: Umar said: "We do not leave the Book of Allah and the Sunnah of our Prophet for the saying of a woman, and we do not know if she remembered or forgot." And Umar used to give her (the divorced woman) housing and maintenance.'"