হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৫৭৬২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৬২-[২৪] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কতিপয় সাহাবী এক স্থানে বসে কথাবার্তা বলছিলেন। এ সময় রাসূল (সা.) সে দিকে বের হলেন এবং তাদের কাছে পৌছে তাদের কথাবার্তা ও আলোচনাগুলো শ্রবণ করলেন। তাদের একজন বললেন, আল্লাহ তা’আলা ইবরাহীম আলায়হিস সালাম-কে খলীল বানিয়েছেন। আরেকজন বললেন, মূসা ’আলায়হিস সালাম (কালিমুল্লাহ) ছিলেন এমন, আল্লাহ তা’আলা যার সাথে বিনা মধ্যস্থতায় কথা বলেছেন। অপর একজন বললেন, “ঈসা আলায়হিস সালাম ছিলেন কালিমাতুল্লাহ ও রূহুল্লাহ এবং আরেকজন বললেন, আদম ’আলায়হিস সালাম-কে আল্লাহ তা’আলা সফীউল্লাহ বানিয়েছেন।
এ সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের সামনে উপস্থিত হয়ে বললেন, আমি তোমাদের কথাবার্তা এবং তোমরা যে বিস্ময় প্রকাশ করেছ তা শুনেছি। ইবরাহীম আলায়হিস সালাম যে খলীলুল্লাহ ছিলেন তা সত্যই। মূসা আলায়হিস সালাম যে বিনা মধ্যস্থতায় আল্লাহর সাথে কথাবার্তা বলেছেন এটাও সত্য কথা। ঈসা আলায়হিস সালাম যে রূহুল্লাহ ও কালিমাতুল্লাহ ছিলেন এটাও প্রকৃত কথা এবং আদম ’ আলায়হিস সালাম যে আল্লাহর নির্বাচিত, মর্যাদাসম্পন্ন ছিলেন, এটাও সম্পূর্ণ বাস্তব। তবে জেনে রাখ, আমি হলাম আল্লাহর হাবীব’, এতে গর্ব নয় এবং কিয়ামতের দিন আমিই হামদের পতাকা উত্তোলন ও বহনকারী হব আদম ও অন্যান্য নবীগণ উক্ত পতাকার নীচেই থাকবেন, এতে গর্ব নয়। কিয়ামতের দিন আমিই হব সর্বপ্রথম শাফা’আতকারী এবং সর্বপ্রথম আমার সুপারিশই গ্রহণ করা হবে এতে গর্ব নয়। আমিই সর্বপ্রথম জান্নাতের দরজার কড়া নাড়া দেব। তখন আল্লাহ তা’আলা আমার জন্য তা খুলে দেবেন এবং আমাকে তাতে প্রবেশ করাবেন। আর আমার সাথে থাকবে দরিদ্র ঈমানদারগণ, এতে গর্ব নয়। পরিশেষে কথা হলো, আর আমিই পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের চেয়ে মর্যাদাবান, এটাও গর্ব নয়। (তিরমিযী ও দারিমী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَن ابْن عَبَّاس قَالَ: جَلَسَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخَرَجَ حَتَّى إِذَا دَنَا مِنْهُمْ سَمِعَهُمْ يَتَذَاكَرُونَ قَالَ بَعْضُهُمْ: إِنَّ اللَّهَ اتَّخَذَ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلًا وَقَالَ آخَرُ: مُوسَى كَلَّمَهُ اللَّهُ تَكْلِيمًا وَقَالَ آخَرُ: فَعِيسَى كَلِمَةُ الله وروحه. وَقَالَ آخَرُ: آدَمُ اصْطَفَاهُ اللَّهُ فَخَرَجَ عَلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: «قَدْ سَمِعْتُ كَلَامَكُمْ وَعَجَبَكُمْ أَنَّ إِبْرَاهِيمَ خَلِيل الله وَهُوَ كَذَلِكَ وَآدَمُ اصْطَفَاهُ اللَّهُ وَهُوَ كَذَلِكَ أَلَا وَأَنَا حَبِيبُ اللَّهِ وَلَا فَخْرَ وَأَنَا حَامِلُ لِوَاءِ الْحَمْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تَحْتَهُ آدَمُ فَمَنْ دُونَهُ وَلَا فَخْرَ وَأَنَا أَوَّلُ شَافِعٍ وَأَوَّلُ مُشَفَّعٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا فَخْرَ وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ يُحَرِّكُ حَلَقَ الْجَنَّةِ فَيَفْتَحُ اللَّهُ لِي فَيُدْخِلُنِيهَا وَمَعِي فُقَرَاءُ الْمُؤْمِنِينَ وَلَا فَخْرَ وَأَنَا أَكْرَمُ الْأَوَّلِينَ وَالْآخَرِينَ عَلَى اللَّهِ وَلَا فَخر» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ والدارمي اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3616 وقال : غریب) و الدارمی (1 / 26 ح 48) * فیہ زمعۃ بن صالح : ضعیف ، و حدیثہ عند مسلم مقرون ۔ (ضَعِيف)

ব্যাখ্যা: (يَتَذَاكَرُونَ) ব্যাকরণে বাক্যটি (سمعهم) এর সর্বনাম (هم) থেকে হাল। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদেরকে আলোচনার অবস্থায় পেলেন। তারা পরস্পর নবীদের একেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এগুলো শুনে রাসূল (সা.)-এর ভালো লেগেছে। কেননা রাসূল (সা.) -এর মাধ্যমেই তারা নবীদের এসব বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হওয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তাই রাসূল (সা.) প্রথমে তাদেরকে আলোচনার স্বীকৃতি দেন। পরবর্তীতে নিজের কয়েকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন যা ইতোপূর্বে কয়েকটি হাদীসে অতিবাহিত হয়েছে। তাদের আলোচনার সময় নিজের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরার উদ্দেশ্য এই হতে পারে যে, কারো দু একটি বিশেষ গুণ দেখে তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করার সুযোগ নেই এ কথা বুঝানো। কেননা যার কাছে অন্যের গুণাবলি আড়াল রয়েছে সে কারো একটি গুণ দেখেই তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করে নিতে পারে। তাই রাসূল (সা.) তাদের এই সন্দেহ দূর করেন। সাথে সাথে (ولا فخر) বলে এ কথার ইঙ্গিত করেন যে, আমি অহংকারবশত তোমাদের সামনে আমার বৈশিষ্ট্য তুলে ধরছি না। বরং তোমাদেরকে জানানোর জন্য তা তুলে ধরছি; যাতে সবার প্রকৃত মর্যাদা তোমাদের সামনে থাকে।
(وَمَعِي فُقَرَاءُ الْمُؤْمِنِينَ) “আর আমার সাথে দরিদ্র মু'মিনেরা থাকবে।" অর্থাৎ আনসার ও মুহাজিরদের যারা দরিদ্র ছিল তারা আমার সাথে থাকবে। যেমন পূর্বে বর্ণিত হয়েছে -
(يد خل الفقر اء الجنة قبل الأ غنياء بخمسمائة عام نصف يوم) “দরিদ্ররা ধনীদের পাঁচশত বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এতে প্রমাণিত হয় যে, কৃতজ্ঞ ধনীর চেয়ে ধৈর্যশীল দরিদ্র অধিক মর্যাদাবান। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।