পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৫১৭০-[১৬] আবু হুরায়রাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: সম্পদের প্রাচুর্যতা ধনাঢ্যতা নয় বরং প্রকৃত ধনাঢ্যতা অন্তরের ধনাঢ্যতা। (বুখারী ও মুসলিম)
الفصل الاول
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ الْغِنَى عَنْ كَثْرَةِ الْعَرَضِ وَلَكِنَّ الْغِنَى غِنَى النَّفس» مُتَّفق عَلَيْهِ. متفق علیہ ، رواہ البخاری (6446) و مسلم (120 / 1051)، (2420) ۔ (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা : (لَيْسَ الْغِنَى عَنْ كَثْرَةِ الْعَرَضِ وَلَكِنَّ الْغِنَى غِنَى النَّفس) উল্লেখিত হাদীসে (الْعَرَضُ) শব্দটি যদি ‘হরকত’ যোগে পড়া হয় তবে অর্থ হবে টাকা-পয়সা যাবতীয় সম্পদ। আর ‘সাকীন’ যোগে পড়া হলে অর্থ হবে টাকা-পয়সা ব্যতীত অন্যান্য সকল সম্পদ।
আবূ ‘উবায়দ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,(الْعَرَضُ) হলো সব ধরনের ভোগ্য সামগ্রী। তবে জীবজন্তু জমি জমা আর ঐ সমস্ত বস্তু যেগুলো ওযন বা পরিমাপ করা যায় না এগুলো(الْعَرَضُ) -এর অন্তর্ভুক্ত নয়।
(إِنَّمَا الْغِنَى غِنَى النَّفس) ইবনু বাত্বল (রহিমাহুল্লাহ) বলেন : প্রকৃত ধনী অধিক সম্পদ থাকলেই হওয়া যায় না। কারণ অধিকাংশ সম্পদশালী লোক তাদের সম্পদে আত্মতৃপ্ত হতে পারে না। সম্পদের প্রতি চরম মোহ থাকায় আরো বেশি সম্পদশালী হবার জন্য চেষ্টা চালায়। এজন্য সে সম্পদশালী হয়েও ফকীর থেকে যায়। তার স্বভাব ফকীরদের মতো ভিক্ষুক।
পক্ষান্তরে কোন ব্যক্তির বাহ্যিক অবস্থা যাই হোক সে যদি প্রশস্ত মনের অধিকারী হয় এবং অল্পেই তার মন থেকে অভাব দূর হয় তবে সেই হবে প্রকৃত ধনী। কারণ সে ভিক্ষুকের মতো মনের মধ্যে আরো বেশি পাওয়ার স্বপ্ন দেখে না।
ইমাম কুরতুবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন : মনের প্রাচুর্যতাই হলো প্রশংসনীয় মহান এবং উপকারী ধনী।
ইবনু হাজার ‘আসক্বালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, মনের ধনাঢ্যতা অর্জন হয় অন্তর তথা কলবের ধনাঢ্যতা থেকে। অর্থাৎ সে সকল বিষয়ে তার রবের মুখাপেক্ষী হবে। আর সে নিশ্চিতভাবে জানবে যে তার রবই তাকে দান করে থাকেন। আর না দিলেও তিনি দেন না। বিধায় তার রবের ফায়সালার উপর সে রাজি খুশি থাকে। তাই নিআমাত পেয়ে সে তার রবের শুকরিয়া আদায় করে। আর বিপদে পতিত হয়ে সে তার রবেরই অভিমুখী হয়। অতএব রবের মুখাপেক্ষিতাই তাকে অন্যের দ্বারস্থ হওয়া থেকে যথেষ্ট করে দেয়। (মিক্বাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ১১শ খণ্ড, হা, ৬৪৪৬)