পরিচ্ছেদঃ ১০. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জিহ্বার হিফাযাত, গীবত এবং গালমন্দ প্রসঙ্গে
৪৮৭৩-[৬২] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’জন সায়িম (রোযাদার) ব্যক্তি যুহর কিংবা ’আসর সালাত আদায় করল। যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত সমাপন করে বললেনঃ তোমরা যাও পুনরায় উযূ করো এবং সালাত আদায় করো, আর তোমাদের সওম (রোযা) পূর্ণ করে অন্য কোনদিন সেটা কাযা করো। তারা জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রসূল! কেন কাযা করব? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ কেননা তোমরা অমুক ব্যক্তির পরোক্ষ নিন্দা-রটনা করেছ।[1]
وَعَن ابنِ عبَّاسٍ أَنَّ رَجُلَيْنِ صَلَّيَا صَلَاةَ الظُّهْرِ أَوِ الْعَصْرِ وَكَانَا صَائِمَيْنِ فَلَمَّا قَضَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الصَّلَاةَ قَالَ: «أَعِيدَا وُضُوءَكُمَا وَصَلَاتَكُمَا وامْضِيا فِي صومكما واقضيا يَوْمًا آخَرَ» . قَالَا: لِمَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «اغتبتم فلَانا»
ব্যাখ্যাঃ (أَنَّ رَجُلَيْنِ صَلَّيَا صَلَاةَ الظُّهْرِ أَوِ الْعَصْرِ) দুই ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে যুহর অথবা ‘আসরের সালাত আদায় করল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষ করে বললেনঃ তোমরা দু’জন পুনরায় তোমাদের উযূ করা এবং সালাত আদায় কর, আর ইফত্বারের মাধ্যমে সওম ভঙ্গ করো না এবং অন্য আরেকদিন সওমকে পুনরায় আদায় করে নিও।
‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সিয়ামের ক্ষেত্রে পুনরায় আদায় করার নির্দেশ আল্লাহ তা‘আলার এ বাণীর আলোকে أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا ‘‘...তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে?...’’- (সূরাহ্ আল হুজুরাত ৪৯ : ১২)। আর সালাতের ক্ষেত্রে কারণ হলো যেহেতু সে তার ভাইয়ে রক্ত ও গোশত ভক্ষণের মাধ্যমে অপবিত্র হয়ে গেছে।
মূল কথা হলো- ভালো কাজ করার পূর্বে মন্দ কাজ সম্পাদন করলে তার পূর্ণতা হ্রাস পায়। যেমনভাবে অন্যায়ের পর ভালো কাজ করলে তা দূরীভূত হয়। যেহেতু আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ‘‘...পুণ্যরাজি অবশ্যই পাপরাশিকে দূর করে দেয়...’’- (সূরাহ্ হূদ ১১ : ১৪)।
সম্ভবত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখানে বান্দার হক নষ্ট করে গীবত করার কঠোরতা উল্লেখ করেছেন। কখনো সম্পূর্ণ ‘ইবাদাত নষ্ট হয়ে যায়, যেহেতু গীবতকারীর ‘আমল থেকে গীবতকৃত ব্যক্তিকে সাওয়াবে দিয়ে দেয়া হয়, ফলে অপরাধী ব্যক্তি সালাত ও সওম শূন্য হয়ে যায়। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে সালাত ও সিয়াম পুনরায় আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এটা ছিল ঐ ব্যক্তিদ্বয়ের জন্য খাস ফাতাওয়া অন্যের জন্য এ বিধানটি ব্যাপকভাবে প্রযোজ্য নয়।
(قَالَا) তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, (اغتبتم فلَانا) ‘‘তোমরা অমুক বান্দার গীবত করেছ।’’ অর্থাৎ সালাত আদায়ের পূর্বে এবং উযূর পরে ও সওম শুরুর পূর্বে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)