পরিচ্ছেদঃ ১০. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জিহ্বার হিফাযাত, গীবত এবং গালমন্দ প্রসঙ্গে
৪৮৩৩-[২২] বিলাল ইবনু হারিস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ মুখ দিয়ে ভালো কথা বলে; কিন্তু সে এর মর্যাদা জানে না। আল্লাহ তা’আলা তার জন্য তাঁর সন্তুষ্টি লিপিবদ্ধ করেন, যাবৎ না সে আল্লাহ তা’আলার সাথে সাক্ষাৎ করে। অপরদিকে মানুষ মুখ দিয়ে মন্দ কথা বলে; কিন্তু সে জানে না তার পরিণাম কী। আল্লাহ তা’আলা এ কারণে তার ওপর নিজের ক্রোধ ও অসন্তুষ্টি লিপিবদ্ধ করতে থাকেন, যতক্ষণ না সে আল্লাহ তা’আলার সাথে সাক্ষাৎ করে। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]
ইমাম মালিক, তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ (রহিমাহুল্লাহ) অনুরূপ অর্থে বর্ণনা করেছেন।
وَعَن بلالِ بن الحارثِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الرَّجُلَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنَ الْخَيْرِ مَا يَعْلَمُ مَبْلَغَهَا يَكْتُبُ اللَّهُ لَهُ بِهَا رِضْوَانَهُ إِلَى يَوْمِ يَلْقَاهُ. وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنَ الشَّرِّ مَا يَعْلَمُ مَبْلَغَهَا يَكْتُبُ اللَّهُ بِهَا عَلَيْهِ سَخَطَهُ إِلَى يَوْمِ يَلْقَاهُ» . رَوَاهُ فِي شَرْحِ السُّنَّةِ وَرَوَى مَالِكٌ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْن مَاجَه نَحوه
ব্যাখ্যাঃ অত্র হাদীসের ব্যাখ্যা অনেকাংশে ৪৮১৩ নং হাদীসের ব্যাখ্যানুরূপ। মানুষ অনেক সময় মুখে এমন কথা উচ্চারণ করে যা খুবই কল্যাণকর কথা এবং আল্লাহর কাছে অতীব পছন্দনীয় বাক্য। কিন্তু সে জানে না আল্লাহ তার ঐ কথার কি মূল্য ও মর্যাদা। উচ্চারণকারী তাকে ক্ষীণ বা ছোট করেই দেখেছে, কিন্তু আল্লাহর নিকট ঐ কথার সাওয়াব তার জন্য দীর্ঘায়িত করে দেন এবং আল্লাহর সাথে তার সাক্ষাত পর্যন্ত স্বীয় সন্তষ্টি তার জন্য অবধারিত করে নেন।
পক্ষান্তরে আল্লাহর অতীব অপছন্দনীয় এবং অসন্তুষ্টির কিছু কথা রয়েছে, যা তার বান্দা উচ্চারণ করে থাকে। উচ্চারণকারী সে নিজেও জানে না যে ঐ কথা আল্লাহর কত অপ্রিয় এবং অনিষ্টকর, ফলে কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহ তার ওপর অসন্তুষ্টির সিদ্ধান্ত লিখে নেন।
আল্লাহর সাথে সাক্ষাত পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি সন্তষ্টি লিখে নেন, এর অর্থ হলো আল্লাহ তা‘আলা তাকে নেক কাজের তাওফীক দান করেন, আর কল্যাণকর কাজে তিনি অগ্রণী হয়ে যান, ফলে তিনি জীবদ্দশায় প্রশংসনীয় জীবন পান এবং মৃত্যুর পর বারযাখী জীবনে কবরের ‘আযাব থেকে নিষ্কৃতি লাভ করে থাকেন। তার কবর হয়ে যায় প্রশস্ত এবং আরামদায়ক। তাকে বলা হয় তুমি নব দুলহার ন্যায় ঘুমাও, যাকে পরিবারের সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি ছাড়া কেউ জাগাতে সাহস করে না। কিয়ামতের দিন সে নেককার সৌভাগ্যশীলদের সাথে উঠবে ফলে আল্লাহ তাকে তার ছায়ায় আশ্রয় দান করবেন। এরপর তাকে চিরস্থায়ী নি‘আমাতের ঘর জান্নাতে স্থান দিবেন, অতঃপর মহান আল্লাহর দীদারে তাকে ধন্য করবেন। এর বিপরীতটাও অনুরূপ, অর্থাৎ খারাপ কথার খারাপ প্রতিদান সে পাবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৩১৯)