পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাম
৪৬৫৯-[৩২] উক্ত রাবী [যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আদেশ করলেন যেন আমি সুরইয়ানিয়্যাহ্ ভাষা শিক্ষা করি। অন্য এক বর্ণনায় আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে আদেশ করলেন, যেন আমি ইয়াহূদীদের পত্রলিখন পদ্ধতি শিক্ষা করি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেন যে, পত্রালাপ সংক্রান্ত ব্যাপারে ইয়াহূদীদের দিক থেকে আমার সন্তুষ্টি আসে না। যায়দ ইবনু সাবিত(রাঃ) বলেনঃ অর্ধ মাসের মধ্যে আমি (সুরইয়ানিয়্যাহ্ ভাষা) শিখে ফেললাম। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখনই কোন ইয়াহূদীকে চিঠি লিখতেন, তা আমি লিখতাম। আর কোন ইয়াহূদী যখন তাঁর কাছে চিঠি পাঠাত, তাদের চিঠি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সমীপে আমিই পাঠ করতাম। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْهُ قَالَ: أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ أَتَعَلَّمَ السُّرْيَانِيَّةَ. وَفِي رِوَايَةٍ: إِنَّهُ أَمَرَنِي أَنْ أَتَعَلَّمَ كِتَابَ يَهُودَ وَقَالَ: «إِنِّي مَا آمَنُ يَهُودَ عَلَى كِتَابٍ» . قَالَ: فَمَا مَرَّ بِيَ نِصْفُ شَهْرٍ حَتَّى تَعَلَّمْتُ فَكَانَ إِذَا كَتَبَ إِلَى يَهُودَ كَتَبْتُ وَإِذَا كَتَبُوا إِلَيْهِ قَرَأْتُ لَهُ كِتَابَهُمْ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
ব্যাখ্যাঃ কারী (রহিমাহুমাল্লাহ) বলেনঃ সতর্কতার স্বার্থে ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইসলামী শারী‘আতে যা হারাম তা শিক্ষা গ্রহণ করার বৈধতার দলীল এ হাদীসে বিদ্যমান।
অনুরূপভাবে ইমাম ত্বীবী (রহিমাহুমাল্লাহ) উক্ত মত পেশ করেন। কারণ শারী‘আয় ভাষা শিক্ষা করা হারাম বলে কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায় না। যেমন সুরইয়ানিয়্যাহ্, হিব্রু, হিন্দী, তুর্কী, ফার্সী প্রভৃতি ভাষা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمِنْ آيَاتِه خَلْقُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافُ أَلْسِنَتِكُمْ অর্থাৎ ‘‘তার নিদর্শনাবলীর অন্যতম হলো আকাশমণ্ডলী ও জমিন সৃষ্টি এবং বিভিন্ন ভাষা।’’ (সূরাহ্ আর্ রূম ৩০ : ২২)
বরং সমস্ত ভাষাই বৈধ। তবে হ্যাঁ যেগুলো অনর্থক-বেকার সেগুলো পূর্ণ জ্ঞানী লোকেদের নিকটে নিন্দনীয়, কিন্তু যেগুলোর উপকার রয়েছে সেগুলো শিক্ষা করা মুস্তাহাব। যেমনটি আলোচ্য হাদীস থেকে বুঝা যায়।
‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ যিনাদ-এর বর্ণনায় আছে, أَنْ أَتَعَلَّمَ لَهٗ كَلِمَاتٍ مِنْ كِتَابِ يَهُود, আর আ‘মাশ-এর বর্ণনায় রয়েছে أَنْ أَتَعَلَّمَ السُّرْيَانِيَّةَ। হাফিয ইবনু হাজার ‘আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সম্ভবত সাবিত-এর ঘটনাটি খারিজার ঘটনার সাথে যুক্ত। কারণ, যে ব্যক্তি ইয়াহূদী লেখ্যরীতি সম্পর্কে অবগত হতে চাইবে তাকে তাদের ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা জরুরী। আর তাদের ভাষা সুর্ইয়ানিয়্যাহ্ কিন্তু প্রসিদ্ধ আছে তাদের ভাষা হলো হিব্রু। সুতরাং এক্ষেত্রে বলা যায়, হয়ত বর্ণনাকারী যায়দ প্রয়োজনের তাকীদে উভয় ভাষা শিক্ষা লাভ করেছিলেন। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৭ম খন্ড, হাঃ ২৭১৫)