পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জ্যোতিষীর গণনা
৪৫৯৯-[৮] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন জ্যোতিষের কাছে যায় এবং সে যা কিছু বলে তা বিশ্বাস করে অথবা যে ব্যক্তি ঋতুমতী অবস্থায় নিজের স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করে কিংবা যে ব্যক্তি স্ত্রীর পিছন দ্বার দিয়ে সহবাস করে, সে ঐ জিনিস হতে সম্পর্কহীন হয়ে গেল, যা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর অবতীর্ণ করা হয়েছে। (আহমাদ ও আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَتَى كَاهِنًا فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ أَوْ أَتَى امْرَأَتَهُ حَائِضًا أَو أَتَى امْرَأَته من دُبُرِهَا فَقَدْ بَرِئَ مِمَّا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ» . رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যাঃ লিসান-এর মধ্যে এসেছে, যে দুনিয়াতে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সংবাদ বলে দেয় এবং গোপন বিষয় জানার দাবী করে তাকে كاهن ( জ্যোতিষী) বলে। জাহিলী যুগে ‘আরবে জ্যোতিষী পাওয়া যেত।
আর যে দাবী করে যে, তাকে জিনে সংবাদ দিয়ে যায়। যে বিশ্বাস করে যে, সে কতিপয় কারণ থেকে অনেক কিছু বলে দিতে পারে, সে (তার কাছে আগমনকারীর) কাজ, তার অবস্থা দেখে অনেক কিছু বলে দিতে পারে। আর এ শ্রেণীকে বলে عراف বা গণক। যে দাবী করে হারানোর জিনিস কোথায় আছে, চুরি হয়ে যাওয়া জিনিস কোথায় আছে তা বলে দিতে পারে।
‘আল্লামা আযহারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমনের পূর্বে আরবে كهانة জ্যোতির্বিদ ছিল। যখন আল্লাহ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নবী করে পাঠালেন, আর আসমান উল্কাপি- দ্বারা পাহারা নিযুক্ত করেন, আর জীন-শয়তানদেরকে সংবাদ চুরি করে জ্যোতির্বিদদের কাছে পৌঁছাতে নিষেধ করেন, তখন জ্যোতির্বিদ্যা বাতিল হয়ে গেল। আর মহান আল্লাহ সেই কুরআনের মাধ্যমে জ্যোতির্বিদ্যাকে নিশ্চিহ্ন করে দিলেন যা দিয়ে তিনি হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য করেছেন। আর তার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ওয়াহীর মাধ্যমে যা ইচ্ছা গায়বের কোন জ্ঞান জানিয়ে দিলেন যা আয়ত্ব করতে জানতে জ্যোতির্বিদগণ ব্যর্থ হল। সুতরাং প্রশংসা ও অনুগ্রহে বর্তমানে জ্যোতির্বিদ্যা নেই। আল কুরআন তার অভাব পূরণ করে দিয়েছে (তাকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে)।
ইবনুল ‘আসীর (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ (مَنْ أَتٰى كَاهِنًا) অর্থাৎ জ্যোতিষী, গণক এবং জ্যোতির্বিদ যে কারো কাছে আসুক না কেন। (أَوْ أَتَى امْرَأَتَهٗ) অর্থাৎ সহবাস করতে। (من دُبُرِهَا) অর্থাৎ হায়য অবস্থায় হোক বা পবিত্র অবস্থায় হোক। (فَقَدْ بَرِئَ) অর্থাৎ কুফরী করল। এটি ধমক ও শাস্তির ভয় দেখানোর জন্য।
(‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৯০০; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)