পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪৭-[৬০] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে জিহাদ সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, হে ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আমর! তুমি যদি ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের প্রত্যাশায় জিহাদ কর, তবে আল্লাহ তা’আলা তোমাকে কিয়ামতের দিন ধৈর্যশীল ও সাওয়াব অর্জনকারীরূপে উঠাবেন। পক্ষান্তরে তুমি যদি সুনাম-সুখ্যাতি ও অহংকারবশে জিহাদ কর, তবে আল্লাহ তা’আলা তোমাকে লোক দেখানো ও অহংকারকারীরূপে চিহ্নিত করে উঠাবেন। হে ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আমর! তুমি উত্তমরূপে জেনে নাও, তুমি যে অভিপ্রায় ও উদ্দেশে জিহাদ কর অথবা নিহত হও; আল্লাহ তা’আলা তোমাকে ঐরূপে উত্থিত করবেন। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَن عبد الله بن عَمْرو أَنَّهُ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي عَنِ الْجِهَادِ فَقَالَ: «يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو إِنْ قَاتَلْتَ صَابِرًا مُحْتَسِبًا بَعَثَكَ اللَّهُ صَابِرًا مُحْتَسِبًا وَإِنْ قَاتَلْتَ مُرَائِيًا مُكَاثِرًا بَعَثَكَ اللَّهُ مُرَائِيًا مُكَاثِرًا يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو عَلَى أَيِّ حَالٍ قَاتَلْتَ أَوْ قُتِلْتَ بَعَثَكَ اللَّهُ عَلَى تِلْكَ الْحَالِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
ব্যাখ্যা: এ হাদীসেও পূর্বোল্লিখিত হাদীসের ধারাবাহিকতায় মুজাহিদদের উদ্দেশ্যগত পার্থক্যের কারণে তাদের প্রতিদানের ভিন্নতার কথা আলোচনা করা হয়েছে।
হাদীসে বর্ণিত দু’টি শব্দ (صَابِرًا مُحْتَسِبًا) বলতে বুঝানো হয়েছে, মুজাহিদ যেন তার প্রতিদান আল্লাহর নিকট থেকেই কামনা করে। মুল্লা ‘আলী কারী বলেনঃ এখানো উদ্দেশ্য হলো, ‘‘তুমি যুদ্ধ করবে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য’’। এ শব্দ দু’টি অবস্থাগত দিক থেকে সমার্থবোধক। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫১৬)
(وَإِنْ قَاتَلْتَ مُرَائِيًا مُكَاثِرًا) বাক্যে مُرَائِيًا বলতে লোক দেখানোর জন্য জিহাদ করা এবং مكاثرا বলতে সম্পদের লোভে যুদ্ধ করাকে বুঝানো হয়েছে। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ ‘তাকাসুর’ বলা হয় সম্পদের আধিক্যের প্রতিযোগিতা করা এবং তা নিয়ে গর্ব-অহংকার করাকে। আর ‘তাকাসুর’ কখনো সম্পদের মাধ্যমে করা হয়, আবার কখনো সন্তান-সন্ততির মাধ্যমেও করা হয়। যেমন কুরআনের বাণী : অর্থাৎ- ‘‘আর ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র’’। (সূরা আল হাদীদ ৫৭ : ২০)
সুতরাং কেউ জিহাদ করে গনীমাতের মাধ্যমে অনেক সম্পদের মালিক হয়ে তা নিয়ে মানুষের মাঝে গর্ব করার জন্য এবং প্রভাব বিস্তার করার জন্য; আবার অনেকেই জিহাদ করে আল্লাহর তাওহীদের কালিমাহ্ ও তাঁর দীনকে জমিনে সুউচ্চ ও সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য। (মিরকাতুল মাফাতীহ)