হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২৯৬৫

পরিচ্ছেদঃ ১২. প্রথম অনুচ্ছেদ - শুফ্‘আহ্

২৯৬৫-[৫] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমরা কোনো রাস্তার (প্রস্থের) ব্যাপারে মতভেদ করবে, তখন তার প্রস্থ ধরবে সাত হাত। (মুসলিম)[1]

بَابُ الشُّفْعَةِ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا اخْتَلَفْتُمْ فِي الطَّرِيقِ جُعِلَ عرضه سَبْعَة أَذْرع» . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: (إِذَا اخْتَلَفْتُمْ فِي الطَّرِيقِ فَاجْعَلُوهُ سَبْعَةَ أَذْرُعٍ) অর্থাৎ- ‘‘তোমরা যখন পথের ক্ষেত্রে মতানৈক্য করবে তখন তোমরা তাকে সাত হাতে পরিণত করবে’’ এ শব্দে বর্ণনা করেন। অনুরূপ ইবনু মাজাহতে ইবনু ‘আব্বাস-এর হাদীস রয়েছে।

(فِي الطَّرِيقِ) অর্থাৎ মৃত রাস্তা (পরিত্যক্ত)। মুসতাম্লী তার বর্ণনাতে الْمِيتَاءَ শব্দ বৃদ্ধি করেছেন এবং এর কোনো সমর্থন নিয়ে আসা হয়নি, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণনার ক্ষেত্রে তা সংরক্ষিতও না। স্বভাবত হাদীসের কতিপয় সানাদে যা বর্ণিত হয়েছে, এ বর্ণনাকে সেদিকে ইঙ্গিত করতে লেখক একে তরজমাতে উল্লেখ করেছেন। আর ওটা ‘আব্দুর রাযযাক ইবনু ‘আব্বাস হতে যা সংকলন করেছেন তার অন্তর্ভুক্ত। ইবনু ‘আব্বাস নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, (الْمِيتَاءِ فَاجْعَلُوهَا سَبْعَةَ أَذْرُعٍ) অর্থাৎ- ‘‘তোমরা যখন মৃত পথের ক্ষেত্রে মতানৈক্য করবে তখন তোমরা তাকে সাত হতে পরিণত কর।’’

‘আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ যিয়াদাতুস্ সানাদে বর্ণনা করেন, ত্ববারী ‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, (إِذَا اخْتَلَفْتُمْ فِي الطَّرِيقِ الْمِيتَاءِ فَاجْعَلُوهَا سَبْعَةَ أَذْرُعٍ) অতঃপর তিনি একে দীর্ঘ হাদীসের মাঝে উল্লেখ করেন। ইবনু ‘আদীতে আনাস-এর হাদীসে আছে, (قَضٰى رَسُولُ اللَّهِ ﷺ فِي الطَّرِيقِ الْمِيتَاءِ) ‘‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ মৃত পথের ব্যাপারে ফায়সালা দিয়েছেন যেখানে প্রত্যেক স্থান হতে আসা হয়।’’ তিনটি সানাদেই সমালোচনা রয়েছে।

(بِسَبْعَةِ أَذْرُعٍ) যা প্রকাশ পাচ্ছে তা হলো- এখানে ذِرَاعُ দ্বারা আদাম সন্তানের হাত উদ্দেশ্য। সুতরাং তা মাঝারি পন্থার মাধ্যমে বিবেচনা করা হবে। একমতে বলা হয়েছে- এখানে ذِرَاعُ দ্বারা বিল্ডিংয়ের সুপরিচিত গজ উদ্দেশ্য। ত্ববারী বলেন, এর অর্থ- অংশীদারপূর্ণ পথের পরিমাণ সাত হাত করা। অতঃপর জমিনে অংশীদারদের প্রত্যেকের জন্য ঐ পরিমাণ অবশিষ্ট থাকা যার মাধ্যমে সে উপকৃত হয় এবং অন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। পথকে সাত হাতে পরিণত করাতে হিকমাত হলো- প্রবেশ করা ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে বোঝাসমূহ যেন পথে প্রবেশ করতে পারে। গেইটসমূহের নিকট রাস্তা যে পরিমাণ তাদের জন্য আবশ্যক রাস্তা সে পরিমাণ তাদের জন্য প্রশস্ত হতে পারে। যে পথের কিনারাতে বেচাকেনার জন্য বসবে সে পথ যদি সাত হাত অপেক্ষা বেশী হয় তাহলে অতিরিক্ত অংশে বসা হতে নিষেধ করা যাবে না। আর যদি কম হয় তাহলে নিষেধ করা হবে যাতে অন্যের পথ সংকীর্ণ হয়ে না যায়। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৪৭৩)

কোনো ব্যক্তি যদি তার মালিকানাধীন কোনো ভূখণ্ডকে পথিকদের অবলম্বনের পথ হিসেবে নির্ধারণ করে তাহলে সে পথের পরিমাণ হবে তার ইচ্ছামাফিক এবং উত্তম হলো রাস্তা প্রশস্ত হওয়া। আর রাস্তাটি যদি কোনো সম্প্রদায়ের ভূমিতে হয় এবং তারা তা শস্য ফলানোর উপযুক্ত করার ইচ্ছা করে, অতঃপর তারা কোনো পথের পরিমাণের (প্রশস্ততার ক্ষেত্রে) উপর ঐকমত্য হলে সেটাই ধর্তব্য। পক্ষান্তরে তার পরিমাণের ক্ষেত্রে মতানৈক্য করলে তা হবে সাত হাত। এটাই হাদীসের উদ্দেশ্য। আর আমরা যখন কোনো চলার পথকে সাত হাত হতে বেশী পাবো, তাহলে কারো জন্য সে পথের কোনো অংশের উপর কর্তৃত্ব করা বৈধ হবে না, যদিও তা পরিমাণে কম হয় তবে তার জন্য তার আশেপাশের জমি আবাদ করার অধিকার রয়েছে। সে তাকে এমনভাবে আবাদ করার ক্ষমতা রাখবে যা পথিকদের ক্ষতিসাধন করবে না। (শারহে মুসলিম ১১/১২শ খন্ড, হাঃ ১৬১৩)