পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - (কুরআন অধ্যয়ন ও তিলাওয়াতের আদব)
২১৯৬-[১০] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-কে বললেন, তোমাকে কুরআন তিলাওয়াত শুনাতে আল্লাহ আমাকে হুকুম দিয়েছেন। উবাই জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ কি আমার নাম ধরে আপনাকে এ কথা বলেছেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। এবার উবাই বললেন, রব্বুল ’আলামীনের কাছে আমি কী উত্থাপিত হয়েছি? রব্বুল ’আলামীনের কাছে আমার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে? বা আমার নাম নেয়া হয়েছে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ। এ কথা শুনে উবাই-এর দু’ চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরতে লাগল। অন্য এক বর্ণনায় আছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ ’’আমাকে আল্লাহ তা’আলা হুকুম দিয়েছেন তোমাকে ’লাম ইয়াকুনিল্লাযীনা কাফারূ’ সূরা পাঠ শুনাতে। উবাই বললেন, আল্লাহ কি আমার নাম বলেছেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। শুনে উবাই কেঁদে ফেললেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابٌ [اٰدٰبُ التِّلَاوَةِ وَدُرُوْسُ الْقُرْاٰنِ]
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ: «إِنَّ اللَّهَ أَمَرَنِي أَنْ أَقْرَأَ عَلَيْكَ الْقُرْآنَ» قَالَ: آللَّهُ سَمَّانِي لَكَ؟ قَالَ: «نَعَمْ» . قَالَ: وَقَدْ ذُكِرْتُ عِنْدَ رَبِّ الْعَالَمِينَ؟ قَالَ: «نَعَمْ» . فَذَرَفَتْ عَيْنَاهُ. وَفِي رِوَايَةٍ: إِنَّ اللَّهَ أَمَرَنِي أَنْ أَقْرَأَ عَلَيْكَ (لَمْ يَكُنِ الَّذِينَ كَفَرُوا) قَالَ: وَسَمَّانِي؟ قَالَ: «نَعَمْ» . فَبَكَى
ব্যাখ্যা: আবূ ‘উবায়দ বলেছেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে উবাই বিন কা‘ব কর্তৃক তিলাওয়াত উপস্থাপনের উদ্দেশ্য হলো, যে এটা দ্বারা কিরাআত শিক্ষা করতে পারবে এবং কুরআনের হিফয স্মৃতিপটে স্থির হয়ে যাবে। আর এর কারণে এটি একটি সুন্নাতে পরিণত হয়। কা‘ব (রাঃ) এর নিকটে কুরআন পাঠ করার দ্বারা তার শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করা হয়েছে এবং কুরআন সংরক্ষণে তার ভূমিকার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। আর যেহেতু তিনি কুরআন মুখস্থকরণে প্রচেষ্টা ব্যয় করেছেন সেহেতু তিনি এর জন্য বিশেষিত হয়েছেন। আর এজন্যই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (أقرؤكم أبي) অর্থাৎ- উবাই তোমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ পাঠক। উবাই বিন কা‘ব আল্লাহর নিকটে তার আলোচনার কথা শুনে খুশিতে আনন্দিত হয়ে কেঁদে ফেলেছেন এই ভয়ে যে, তিনি এত বড় মর্যাদার অধিকারী হয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে কমতি হয়েছে নাকি? এ সূরাটি বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ হলো এতে তাওহীদ, রিসালাত, নিয়্যাতের বিশুদ্ধতা, মুসহাফ, কিতাবসমূহ, নাবীদের মর্যাদা, সালাত, যাকাত, বিচার দিবস, জান্নাত-জাহান্নামের বর্ণনা রয়েছে।