পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - নতুন চাঁদ দেখার বর্ণনা
১৯৭৩-[৫] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন রমাযান (রমজান) মাস আসার এক কি দু’দিন আগে থেকে সওম (রোযা) না রাখে। তবে যে ব্যক্তি কোন দিনে সওম রাখতে অভ্যস্ত সে ওসব দিনে সওম রাখতে পারে। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ رُؤْيَةِ الْهِلَالِ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَتَقَدَّمَنَّ أَحَدُكُمْ رَمَضَانَ بِصَوْمِ يَوْمٍ أَوْ يَوْمَيْنِ إِلَّا أَنْ يَكُونَ رَجُلٌ كَانَ يَصُوم صوما فليصم ذَلِك الْيَوْم»
ব্যাখ্যা: (...لَا يَتَقَدَّمَنَّ أَحَدُكُمْ رَمَضَانَ بِصَوْمِ) ‘‘তোমাদের কেউ যেন রমাযানের মাস শুরু হওয়ার এক দিন বা দু’দিন আগেই সিয়াম পালন করে না।’’ অর্থাৎ- রমাযান (রমজান) শুরু হলো কিনা এ সন্দেহের বশবর্তী হয়ে রমাযান (রমজান) মাসের চাঁদ দেখা না গেলে অথবা শা‘বান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ না হলে রমাযানের সিয়ামের নিয়্যাতে সিয়াম পালন করবে না। হাদীসে (أَوْ يَوْمَيْنِ) অথবা দু’দিন আগের জন্য বলা হয়েছে যে, সন্দেহ দুই দিনের মধ্যেও হতে পারে। পরস্পর দুই-তিন মাস যদি আকাশে মেঘ থাকার কারণে মাসের শুরুতে চাঁদ দেখা না যায় এবং প্রতিটি মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ করে পরবর্তী মাস গণনা করা হয়, তাহলে রমাযান (রমজান) মাস দু’দিন আগে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই সন্দেহ দুই দিনেরও হতে পারে। তাই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সন্দেহের বশবর্তী হয়ে রমাযান (রমজান) শুরু হওয়ার এক বা দুই দিন আগেই রমাযানের সিয়াম শুরু করবে না।
তবে কোন ব্যক্তি যদি রমাযান (রমজান) শুরু হওয়ার আগের দিনে নিয়মিত কোন সিয়াম পালন করার অভ্যাস থাকে এবং সেই নিয়্যাতে সিয়াম পালন করে তবে তার জন্য তা বৈধ। যেমন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বৃহস্পতিবার এবং সোমবার সিয়াম পালন করতেন। কোন ব্যক্তি নিয়মিত এ দুই দিন সিয়াম পালন করে থাকেন এবার এমন হল যে, আকাশে মেঘ থাকার কারণে চাঁদ দেখা না যাওয়ায় সোমবার ত্রিশে শা‘বান হওয়ার সম্ভাবনা যে রকম এ রকম ১লা রমাযান (রমজান) হওয়ার সম্ভাবনাও বিদ্যমান। এখন ঐ ব্যক্তি এই সোমবার যদি রমাযানের সিয়াম পালনের নিয়্যাত না করে তার অভ্যাসগত নিয়মিত সিয়াম পালনের নিয়্যাতে সিয়াম পালন করে তবে তা বৈধ।
হাদীসের শিক্ষাঃ রমাযান (রমজান) শুরু হওয়ার একদিন বা দু’দিন পূর্বে সিয়াম পালন করা হারাম। এ নিষেধাজ্ঞার কারণ কি তা নিয়ে ‘উলামাগণের মাঝে মতভেদ রয়েছে।
১. রমাযানের মধ্যে ঐ সিয়াম বৃদ্ধি করার আশংকা যা মূলত রমাযানের সিয়াম নয়।
২. রমাযানের সিয়াম পালনের জন্য শক্তি অর্জন। কেননা পূর্ব থেকেই ধারাবাহিকভাবে সিয়াম পালন করার ফলে ফরয সিয়াম পালনে দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
৩. ফরয ও নফল সিয়ামের মধ্যে সংমিশ্রণের আশংকা।
৪. আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশের উপর বাড়াবাড়ি করা। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযান (রমজান) শুরু করার জন্য চাঁদ দেখা শর্ত করেছেন। যিনি চাঁদ না দেখেই রমাযানের সিয়াম শুরু করলেন তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ নির্দেশ অমান্য করলেন এবং তা যথেষ্ট মনে করলেন না। তাই তিনি যেন এ নির্দেশের উপর দোষারোপ করলেন। হাফেয ইবনু হাজার বলেন, সর্বশেষ এ অভিমতটিই গ্রহণযোগ্য।