হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৭০৪

পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭০৪-[১৬] আবূ ক্বাতাদাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন বসার আগে দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে নেয়। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَسَاجِدِ وَمَوَاضِعِ الصَّلَاةِ

وَعَنْ أَبِي قَتَادَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يجلس»

ব্যাখ্যা: (إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمْ الْمَسْجِدَ) যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তখন সে যেন বসার পূর্বে দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করে নেয়। এখানে নিষিদ্ধ সময়সমূহও এর অন্তর্ভুক্ত। আবার কেউ কেউ বলেছেন, এ হাদীসটি নিষিদ্ধ সময় ছাড়া অন্য সময়ের সাথে নির্দিষ্ট।

কারো মতে হাদীসটি ব্যাপক। কোন কারণ ছাড়া নিষিদ্ধ সময়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা নিষেধ। কেননা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আসরের পরে যুহরের সুন্নাত সালাত বাযা করেছেন। অথচ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিষিদ্ধ সময়কে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন ‘আসরের পর, কিন্তু তিনি যুহরের সুন্নাত সালাত আদায় করেছিলেন কারণবশত। অতএব জানা গেল যে, কারণবশত নিষিদ্ধ সময়ে সালাত আদায় করা বৈধ। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন অবস্থাতেই তাহিয়্যাতুল মাসজিদ সালাত ছাড়েননি। বরং জুমু‘আর দিনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খুতবাহ্ অবস্থায় এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে বসে পড়লে তাকে তিনি দাঁড়িয়ে দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করতে বললেন।

খুতবাহ্ অবস্থায় তাহিয়্যাতুল মাসজিদ সালাত ব্যতীত অন্য কোন সালাত আদায় করা নিষিদ্ধ। আর যদি তাহিয়্যাতুল মাসজিদ সালাত ত্যাগ করা যেত তাহলে এ অবস্থায় তা ত্যাগ করা যেত। কেননা লোকটি বসে পড়েছিল, আর এটা পড়তে হয় বসার পূর্বেই। লোকটি ভুলবশত এ রকম করেছিলেন। যদি তাহিয়্যাতুল মসজিদের বেশী গুরুত্ব না হত তাহলে তিনি এরূপ গুরুত্ব সহকারে নির্দেশ দিতেন না। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর খুতবাহ্ বন্ধ করে তার সাথে কথা বলেছিলেন এবং তাহিয়্যাতুল মাসজিদ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

(فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ) দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করবে তথা তাহিয়্যাতুল মাসজিদ আদায় করবে। অথবা তার স্থলাভিষিক্ত সালাতও হতে পারে। যেমন ফরয ও সুন্নাহ সালাত, আর এ সালাত মসজিদের সম্মানার্থে।

নাবাবী (রহঃ) বলেনঃ তাহিয়্যাহ্’র নিয়্যাত শর্ত নয়, বরং যথেষ্ট হবে ফরয সালাত অথবা সুন্নাতে রাতেবা।

যদি নিয়্যাত করে তাহিয়্যাহ্’র সালাত এবং ফরয সালাতের, তাহলে এক সাথে দু’টো অর্জিত হবে।

জাহিরীদের মতে তাহিয়্যাতুল সালাত আদায় করা ওয়াজিব, আবার কারো মতে ওয়াজিব নয়; দলীল যায়দ ইবনু আসলাম সূত্রে ইবনু আবী শায়বাহ্ বর্ণিত হাদীস সাহাবীগণ মসজিদে প্রবেশ করতেন ও বের হতেন এবং সালাত আদায় করতেন না।

সুতরাং তাহিয়্যাতুল মাসজিদ সুন্নাহ্ তার জন্য যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করবে। খাত্ত্বাবী বলেনঃ ক্বাতাদার হাদীসে সাব্যস্ত হয় যখন কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তার ওপর কর্তব্য হলো সে দু’ রাক্‘আত তাহিয়্যাতুল মসজিদে সালাত আদায় করবে বসার পূর্বে চাই জুমু‘আতে হোক বা অন্য কোন সময় হোক, ইমাম মিম্বারে থাকুক অথবা না থাকুক। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আমভাবে বলেছেন এবং নির্দিষ্ট করেননি।

আমি (ভাষ্যকার) বলি, এটাই সহীহ; তবে জাবির (রাঃ)-এর হাদীস আরো সুস্পষ্ট করেছে এটা, এক ব্যক্তি মসজিদে আসলো এমতাবস্থায় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবাহ্ (খুতবা) দিচ্ছিলেন, অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করেছো? জবাব দিলো না, তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দাঁড়াও এবং দু’ রাক্‘আত আদায় করো।

তারা ইখতিলাফ করেছে ঐ লোকগুলোর ব্যাপারে যে লোকেরা ফাজরের (ফজরের) দু’ রাক্‘আত সুন্নাত সালাত মসজিদে আসার পূর্বেই বাড়িতে আদায় করেছিল। এখন সে-কি মসজিদে প্রবেশকালে দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করতে পারবে কি-না?

ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) বলেনঃ সে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে নিবে।

ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেনঃ সে সালাত আদায় করবে না।

ইমাম রুশদ (রহঃ) বলেনঃ ইখতিলাফের কারণ হলো রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী ‘‘ফাজরের (ফজরের) পর সকালের সালাত ব্যতীত কোন সালাত নেই’’।

ইবনু হিব্বান তাঁর সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন আবূ যার-এর হাদীস থেকে। তিনি মসজিদে প্রবেশ করলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কি দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করেছো। তিনি বললেনঃ না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ দাঁড়াও, অতঃপর দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করে নাও।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ