পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আযান
৬৪৫-[৫] উক্ত রাবী [আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে আযানের নিয়ম শিখিয়ে দিন। তিনি [আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ)] বলেন, (আমার কথা শুনে) তিনি আমার অথবা এবং বললেন, বলোঃ আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার। এ বাক্যগুলো তুমি খুব উচ্চস্বরে বলবে। এরপর তুমি নিম্নস্বরে বলবে, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ এবং আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ। তুমি পুনরায় উচ্চস্বরে শাহাদাত বাক্য বলবেঃ আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ, হাইয়্যা ’আলাস্ সলা-হ্, হাইয়্যা ’আলাস্ সলা-হ্; হাইয়া ’আলাল ফালা-হ, হাইয়্যা ’আলাল ফালা-হ। এ আযান ফজরের (ফজরের) সালাতের জন্য হলে বলবে, আস্সলা-তু খয়রুম মিনান্ নাওম, আস্সলা-তু খয়রুম মিনান্ নাওম। আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হু আকবার। লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْهُ قَالَ: قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ عَلِّمْنِي سنة الْأَذَان قَالَ: فَمسح مقدم رَأسه. وَقَالَ: وَتقول اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ تَرْفَعُ بِهَا صَوْتَكَ ثُمَّ تَقُولَ: أَشْهَدُ أَن لَا إِلَه إِلَّا الله أشهد أَن لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ تَخْفِضُ بِهَا صَوْتَكَ ثُمَّ تَرْفَعُ صَوْتَكَ بِالشَّهَادَةِ: أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ أَشْهَدُ أَن لَا إِلَه إِلَّا الله أشهد أَن مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ فَإِنْ كَانَ صَلَاةُ الصُّبْحِ قُلْتَ: الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ)-এর এ হাদীস ‘আমল না করার পিছনে ওযর পেশ করে ‘‘হিদায়া’’ গ্রন্থকার বলেন, এরূপ করা হয়েছিল প্রশিক্ষণের জন্য। আর প্রশিক্ষণকে আবূ মাহযূরাহ্ (রাঃ) তারজী' হিসেবে ধারণা করে নিয়েছেন। ইমাম ত্বহাবী (রহঃ) তাঁর ‘শারহুল আসার’ গ্রন্থে বলেছেন, আবূ মাহযূরাকে তারজী' শিক্ষা দেয়া হয়েছিল এজন্য যে, তিনি এ দু’ বাক্যে তার স্বরকে উচ্চ করেননি। সেজন্যই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘‘তুমি ফিরে যাও এবং তোমার স্বরকে টেনে ও উচ্চ করে বলো’’।
ইবনুল জাওযী বলেন, আবূ মাহযূরাহ্ ইসলাম গ্রহণের পূর্বে কাফির ছিলেন। তিনি যখন ইসলাম গ্রহণ করেছেন তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আযান শিক্ষা দিচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি শাহাদার বাক্যগুলো পুনরাবৃত্তি করিয়েছিলেন। এটা এজন্য করেছিলেন যে, যাতে শাহাদার ব্যাপারটি তার অন্তরে গেঁথে যায়.....।
ইমাম যায়লা‘ঈ তার নাসবুর্ রায়াহ গ্রন্থে উপর্যুক্ত তিনটি মত উল্লেখ করে বলেছেন, মর্মের দিক থেকে এ তিনটি মতই নিকটবর্তী (অর্থাৎ- প্রায় একই)। এরপর তিনি এ মতগুলোর প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, আবূ দাঊদে বর্ণিত অত্র হাদীস এ মতগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে। এ হাদীসে সাহাবী ও বর্ণনাকারী আবূ মাহযূরাহ্ বলেছেন, ‘‘আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে আযানের পদ্ধতি বা নিয়ম শিক্ষা দিন। অতঃপর এ হাদীসের মধ্যেই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তারজী' সহ আযান শিক্ষা দিলেন এবং এ তারজী'কে আযানের নিয়মের অন্তর্ভুক্ত করলেন। তাছাড়া এ মতগুলো প্রত্যাখ্যান করার আরো অনেক কারণ রয়েছে। যা সত্যানুসন্ধানী, ন্যায়নিষ্ঠ চিন্তাশীল ব্যক্তির নিকট অজ্ঞাত বা গোপন নয়।