হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code

পরিচ্ছেদঃ

بِسم الله الرَّحْمَن الرَّحِيم

মূল গ্রন্থকারের ভূমিকা

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্যই। আমরা তাঁরই প্রশংসা করছি, তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করছি এবং তাঁর নিকট ক্ষমা চাচ্ছি। আমরা আমাদের মনের কুমন্ত্রণা ও মন্দ কাজ হতে তাঁর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আল্লাহ যাকে হিদায়াত দান করেন তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না এবং তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন কেউ তাকে হিদায়াত করার সামর্থ্য রাখে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, ’’আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোন মা’বূদ নেই’’। এটা আমার নাজাতের ওয়াসীলাহ্ এবং মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ হবে। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রসূল। মহান আল্লাহ তা’আলা তাঁকে এমন সময় দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, যখন ঈমানের পথের সমস্ত নিশানা মুছে গিয়েছিল, ঈমানী আলোসমূহ নিভে গিয়েছিল, তার স্তম্ভসমূহ দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং মানুষ সে সবের স্থান পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এসে ঐসব জিনিসকে মজবুতভাবে প্রতিষ্ঠা করলেন এবং ঈমানের মশালকে উঁচু করে ধরলেন। যারা গুমরাহীর রোগে মরতে বসেছিল, তাদেরকে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাওহীদের কালিমাহ্ দ্বারা আরোগ্য করলেন, যারা হিদায়াতের পথ খুঁজছিল তাদেরকে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পথ দেখালেন এবং যারা সৌভাগ্য ভান্ডারের মালিক হতে চেয়েছিল, তাদের জন্য তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সে পথ পরিষ্কার করে দিলেন।

অতঃপর নিশ্চয়ই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বক্ষ থেকে প্রকাশিত বিষয়াবলীর অনুসরণ ব্যতীত তাঁর আদর্শকে আঁকড়ে ধরাটা পরিপূর্ণ হবে না এবং আল্লাহর রজ্জু তথা কুরআনকে মজবুত করে ধারণ করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যাখ্যা ব্যতীত পূর্ণতা লাভ করবে না। ইমাম মুহয়্যিইউস্ সুন্নাহ্ আবূ মুহাম্মাদ হুসায়ন ইবনু মাস্’ঊদ ফাররা বাগাবী (মৃঃ ১৫৬ হিঃ) কর্তৃক রচিত ’’মাসা-বীহ’’ শীর্ষক গ্রন্থটি বিরল হাদীসসমূহকে অন্তর্ভুক্তধারী হাদীস বিষয়ক একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ। সংকলক (রহঃ) সানাদসমূহ বিলুপ্ত করার মাধ্যমে হাদীস সংকলনে সংক্ষিপ্ততার পথ অবলম্বন করলে কতিপয় সমালোচক এতে সমালোচনা করেন। যদিও তাঁর মতো একজন নির্ভরশীল (সিক্বাহ্) ব্যক্তির হাদীস বর্ণনা করাই ’সানাদতুল্য’। কিন্তু সানাদবিহীন গ্রন্থ সানাদবিশিষ্ট গ্রন্থের মতো নয়। তাই আল্লাহর নিকট সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রার্থনা করে তিনি (ইমাম বাগাবী) যেগুলো সানাদবিহীন অবস্থায় উল্লেখ করেছেন আমি সে হাদীসগুলোতে সানাদ তথা সাহাবীর নাম সংযুক্ত করেছি, যেমনভাবে

(১) আবূ ’আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ইসমা’ঈল বুখারী,[1]

(২) আবুল হাসান মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল কুশায়রী,[2]

(৩) আবূ ’আবদুল্লাহ মালিক ইবনু আনাস আল আসবাহী,[3]

(৪) আবূ ’আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ইদ্রীস আশ্ শাফি’ঈ,[4]

(৫) আবূ ’আবদুল্লাহ আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু হাম্বাল আশ্ শায়বানী,[5]

(৬) আবূ ’ঈসা মুহাম্মাদ ইবনু ’ঈসা আত্ তিরমিযী,[6]

(৭) আবূ দাঊদ সুলায়মান ইবনুল আশ্’আস আস্ সিজিস্তানী,[7]

(৮) আবূ ’আবদুর রহমান আহমাদ ইবনু শু’আয়ব আন্ নাসায়ী,[8]

(৯) আবূ ’আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াযীদ ইবনু মাজাহ্ আল্ কাযভিত্নী,[9]

(১০) আবূ মুহাম্মাদ ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আবদুর রহমান আদ্ দারিমী,[10]

(১১) আবুল হাসান ’আলী ইবনু ’উমার আদ্ দারাকুত্বনী,[11]

(১২) আবূ বকর আহমাদ ইবনুল হুসায়ন আল বায়হাক্বী,[12]

(১৩) আবুল হাসান রযীন ইবনু মু’আবিয়াহ্ আল্ ’আবদারী (রহিমাহুমুল্লাহ)[13] প্রমুখ ন্যায়, দক্ষ ও বিশ্বস্ত ইমামগণ বর্ণনা করেছেন। সুতরাং আমি কোন হাদীসের শেষে ইমামের নাম উল্লেখ করলে মনে করতে হবে যে, আমি হাদীসের পূর্ণ সানাদ বর্ণনা করছি। কারণ, তাঁরা তাঁদের কিতাবে এ (পূর্ণ সানাদ বর্ণনা করার) কাজ সম্পন্ন করে এর দায়িত্ব থেকে আমাদেরকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

তিনি (মাসা-বীহ গ্রন্থকার) তাঁর কিতাবকে যেভাবে বিভিন্ন ’বাব’ বা অধ্যায়ে সাজিয়েছেন, আমিও তা-ই করেছি এবং এ ব্যাপারে তারই পথ অনুসরণ করেছি। তবে আমি প্রায় ’বাব’কেই তিনটি ’ফাস্‌ল’ বা অনুচ্ছেদে ভাগ করেছি (অবশ্য তিনি করেছিলেন দু’ ভাগ)।

প্রথম ভাগ : যা বুখারী ও মুসলিম (শায়খায়ন) উভয়ে অথবা তাঁদের কোন একজন বর্ণনা করেছেন। তবে, যেহেতু হাদীস বর্ণনার ব্যাপারে শায়খায়নের মর্যাদা অনেক ঊর্ধ্বে, তাই তাঁদের নামের সাথে অন্য নাম উল্লেখের প্রয়োজন হয় না, এজন্য আমি তাঁদের নামের সাথে অন্য কারো নাম উল্লেখ করিনি, যদিও সে সকল হাদীস অন্যরাও বর্ণনা করেছেন।

দ্বিতীয় ভাগ : এতে রয়েছে বুখারী, মুসলিম ব্যতীত অন্যান্য ইমামগণের বর্ণিত হাদীস।

তৃতীয় ভাগ : (আমার পরিবর্ধিত এ ভাগে) বাবের (অধ্যায়ের) বিষয় সংশ্লিষ্ট কিছু নতুন হাদীস সংগ্রহ করেছি।[14] যার কোন কোনটি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী নয়; বরং কোন সাহাবী অথবা তাবি’ঈর বাণী।[15]

যদি [ইমাম বাগাবী (রহঃ)-এর সংগৃহীত] কোন হাদীস কোন বাব বা অধ্যায়ে না পাওয়া যায়, তাহলে মনে করতে হবে যে, অন্য কোন অধ্যায়ে এরূপ হাদীস রয়েছে বলেই আমি তাকে বাদ দিয়েছি। এমনিভাবে যদি কোন হাদীসের কোন অংশবিশেষকে বাদ দিয়ে থাকি অথবা কোন অংশ বৃদ্ধি করে থাকি, তাহলে বুঝতে হবে যে, প্রয়োজনবোধেই আমি এরূপ করেছি। এছাড়া ইমাম বাগাবী (রহঃ)-এর সাথে আমার যদি এরূপ কোন মতভেদ দেখা যায় যে, আমি প্রথম ফাসলে শায়খায়ন ব্যতীত অন্য কারো নামের উদ্ধৃতি দিয়েছি অথবা দ্বিতীয় ফাসলে শায়খায়নের মধ্যে কারো নাম উল্লেখ করেছি। তার কারণ এই যে, আমি হুমায়দী’র[16] ’’আল জাম্’উ বায়নাস্ সহীহায়ন’’ (যাতে তিনি শায়খায়নের হাদীস একত্র করেছেন) ও ’’জা-মি’উল উসূল’’[17] গ্রন্থদ্বয় পর্যবেক্ষণের পরই কেবল শায়খায়নের মূল কিতাবের উপরই নির্ভর করেছি।

এতদ্ব্যতীত যদি কোন হাদীসের কোন বিষয়ে এরূপ মতভেদ দেখা যায় যে, তিনি (মাসা-বীহ গ্রন্থকার) তাকে এক শব্দে বর্ণনা করেছেন, আর আমি বর্ণনা করেছি ভিন্ন শব্দে, তার কারণ হলো, হাদীসের সানাদ বিভিন্ন। তিনি যে সানাদে বর্ণনা করেছেন সে সানাদ আমার হস্তগত হয়নি; আমি যে সানাদে যে শব্দ পেয়েছি তা-ই বর্ণনা করেছি। এরূপ স্থান খুব কমই দেখা যাবে যে, যেখানে আমি বলেছিঃ ’এটা হাদীসের কোন প্রসিদ্ধ কিতাবে পাওয়া যায়নি অথবা আমি এর বিপরীত পেয়েছি।’ যদি কোথাও এরূপ দেখা যায় তাহলে মনে করবেন, এটা আমার অনুসন্ধানেরই ত্রুটি; ইমাম বাগাবী (রহঃ)-এর নয়। আল্লাহ সে বান্দার প্রতি অনুগ্রহ করুন যে এরূপ সানাদ অবগত হয়ে আমাকে তা’ অবহিত করবে। অবশ্য আমিও আমার সাধ্যানুযায়ী অনুসন্ধানে চেষ্টার ত্রুটি করিনি। তিনি যেখানে (কোন হাদীস বা শব্দ সম্পর্কে) বর্ণনার বিভিন্নতা দেখিয়েছেন, আমিও সেখানে তা-ই করেছি।

এছাড়া তিনি যে সকল হাদীসকে ’গরীব’ বা ’য’ঈফ’ বলে অভিহিত করেছেন, অধিকাংশ স্থলে আমি তার কারণ ও ব্যাখ্যা দিয়েছি। আর যেখানে কোন হাদীসকে কোন প্রসিদ্ধ ইমাম গরীব বা ’য’ঈফ’ প্রভৃতি বলা সত্ত্বেও তিনি তার প্রতি ইঙ্গিত করেননি, আমিও সেখানে সেরূপই রেখে দিয়েছি। অবশ্য কোন কোন জায়গায় আবশ্যকবোধে এর ব্যতিক্রমও করেছি। কোন কোন জায়গায় এরূপও পাওয়া যাবে যে, সেখানে আমি কারো উদ্বৃতি দেইনি; বরং হাদীসের শেষে স্থান শূন্য রেখে দিয়েছি। তার কারণ এই যে, আমি তার সন্ধান কোথাও পাইনি। যদি কেউ কোথাও তার সন্ধান পান, তাহলে দয়া করে উদ্ধৃতি দিয়ে দিবেন [অবশ্য পরবর্তী মুহাদ্দিসগণ উদ্ধৃতি দিয়ে এ সকল শূন্যতা পূর্ণ করে দিয়েছেন]। আল্লাহ আপনাদেরকে এর জাযা (প্রতিদান) দিবেন। অবশেষে আমি এ কিতাবের নামকরণ করলাম ’মিশকা-তুল মাসা-বীহ’। আমরা আল্লাহর নিকট তাওফীক্ব, সাহায্য, হিদায়াত, নিরাপত্তা ও আমাদের উদ্দেশ্যের সহজতা প্রার্থনা করছি, তিনি যেন এর দ্বারা আমার এবং সমস্ত মুসলিম নর-নারীর ইহ ও পরজগতে উপকার সাধন করেন। আমীন!

আল্লাহর সাহায্যই যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম অভিভাবক। তিনি ছাড়া কারো কোন শক্তি বা সামর্থ্য নেই, তিনি সুউচ্চ ও সুমহান।


১। ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিয়্যাতের উপরই কাজের ফলাফল নির্ভরশীল। মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী ফল পাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার স্বার্থপ্রাপ্তির জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহের জন্য হিজরত করবে সে হিজরত তার নিয়্যাত অনুসারেই হবে যে নিয়্যাতে সে হিজরত করেছে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

[1] সহীহ : বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭, তিরমিযী ১৬৩৭, নাসায়ী ৭৫, আবূ দাঊদ ২২০১, ইবনু মাজাহ্ ৪২২৭, আহমাদ ১৬৯, ৩০২।

بِسم الله الرَّحْمَن الرَّحِيم وَبِه نستعين الْحَمد لله، ونحمده وَنَسْتَعِينُهُ وَنَسْتَغْفِرُهُ، وَنَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ شُرُورِ أَنْفُسِنَا وَمن سيئات أَعمالنَا، من ييهده اللَّهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ، وَمَنْ يُضْلِلْ فَلَا هَادِيَ لَهُ. وَأَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ شَهَادَةً تَكُونُ لِلنَّجَاةِ وَسِيلَةً، وَلِرَفْعِ الدَّرَجَاتِ كَفِيلَةً، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، الَّذِي بَعثه وطرق الْإِيمَانِ قَدْ عَفَتْ آثَارُهَا، وَخَبَتْ أَنْوَارُهَا، وَوَهَنَتْ أَرْكَانهَا، وَجَهل مَكَانهَا، فشيد صلوَات الله وسلامة عَلَيْهِ من معالمها مَا عَفا، وشفى من الغليل فِي تَأْيِيدِ كَلِمَةِ التَّوْحِيدِ مَنْ كَانَ عَلَى شفى، وأوضح سَبِيل الهادية لِمَنْ أَرَادَ أَنْ يَسْلُكَهَا، وَأَظْهَرَ كُنُوزَ السَّعَادَةِ لِمَنْ قَصَدَ أَنْ يَمْلِكَهَا. أَمَّا بَعْدُ؛ فَإِنَّ التَّمَسُّكَ بِهَدْيهِ لَا يَسْتَتِبُّ إِلَّا بِالِاقْتِفَاءِ لِمَا صَدَرَ مِنْ مِشْكَاتِهِ، وَالِاعْتِصَامُ بِحَبْلِ اللَّهِ لَا يَتِمُّ إِلَّا بِبَيَانِ كَشْفِهِ، وَكَانَ «كِتَابُ الْمَصَابِيحِ» - الَّذِي صَنَّفَهُ الْإِمَامُ مُحْيِي السُّنَّةِ، قَامِعُ الْبِدْعَةِ، أَبُو مُحَمَّد الْحُسَيْن بن مَسْعُود الْفراء الْبَغَوِيُّ، رَفَعَ اللَّهُ دَرَجَتَهُ - أَجْمَعَ كِتَابٍ صُنِّفَ فِي بَابِهِ، وَأَضْبَطَ لِشَوَارِدِ الْأَحَادِيثِ وَأَوَابِدِهَا. وَلَمَّا سلك - رَضِي الله عَنهُ - طَرِيق الِاخْتِصَارَ، وَحَذَفَ الْأَسَانِيدَ؛ تَكَلَّمَ فِيهِ بَعْضُ النُّقَّادِ، وَإِنْ كَانَ نَقْلُهُ - وَإِنَّهُ مِنَ الثِّقَاتِ - كَالْإِسْنَادِ، لَكِنْ لَيْسَ مَا فِيهِ أَعْلَامٌ كالأغفال، فاستخرت الله تَعَالَى، واستوفقت مِنْهُ، فأعلمت مَا أغفله، فأودعت كل حَدِيث مِنْهُ فِي مقره كَمَا رَوَاهُ الْأَئِمَّة المنقنون، وَالثِّقَاتُ الرَّاسِخُونَ؛ مِثْلُ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ الْبُخَارِيِّ، وَأَبِي الْحُسَيْنِ مُسْلِمِ بْنِ الْحَجَّاجِ الْقُشَيْرَيِّ، وَأَبِي عَبْدِ اللَّهِ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ الْأَصْبَحِيِّ، وَأَبِي عَبْدِ اللَّهِ مُحَمَّدِ بْنِ إِدْرِيسَ الشَّافِعِيِّ، وَأَبِي عَبْدِ اللَّهِ أَحْمَدَ بْنِ مُحَمَّد بن حَنْبَل الشَّيْبَانِيّ، وَأبي عِيسَى مُحَمَّد بن عِيسَى التِّرْمِذِيِّ، وَأَبِي دَاوُدَ سُلَيْمَانَ بْنِ الْأَشْعَثِ السِّجِسْتَانِيِّ، وَأَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَحْمَدَ بْنِ شُعَيْبٍ النَّسَائِيِّ، وَأبي عبد الله مُحَمَّد بن يزِيد بن مَاجَهْ الْقَزْوِينِيِّ، وَأَبِي مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيِّ، وَأَبِي الْحَسَنِ عَلِيِّ بْنِ عمر الدَّارَقُطْنِيِّ، وَأَبِي بَكْرٍ أَحْمَدَ بْنِ الْحُسَيْنِ الْبَيْهَقِيِّ، وَأَبِي الْحَسَنِ رَزِينِ بْنِ مُعَاوِيَةَ الْعَبْدَرِيِّ، وَغَيْرِهِمْ وَقَلِيلٌ مَا هُوَ. وَإِنِّي إِذَا نَسَبْتُ الْحَدِيثَ إِلَيْهِمْ كَأَنِّي أَسْنَدْتُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم؛ لأَنهم قدفرغوا مِنْهُ، وَأَغْنَوْنَا عَنْهُ. وَسَرَدْتُ الْكُتُبَ وَالْأَبْوَابَ كَمَا سَرَدَهَا، وَاقْتَفَيْتُ أَثَرَهُ فِيهَا، وَقَسَّمْتُ كُلَّ بَابٍ غَالِبًا عَلَى فُصُولٍ ثَلَاثَةٍ: أَوَّلُهَا: مَا أَخْرَجَهُ الشَّيْخَانِ أَوْ أَحَدُهُمَا، وَاكْتَفَيْتُ بِهِمَا وَإِنِ اشْتَرَكَ فِيهِ الْغَيْرُ؛ لِعُلُوِّ دَرَجَتِهِمَا فِي الرِّوَايَةِ. وَثَانِيهَا: مَا أَوْرَدَهُ غَيْرُهُمَا مِنَ الْأَئِمَّةِ الْمَذْكُورِينَ. وَثَالِثُهَا: مَا اشْتَمَلَ عَلَى مَعْنَى الْبَابِ مِنْ محلقات مُنَاسِبَةٍ مَعَ مُحَافَظَةٍ عَلَى الشَّرِيطَةِ، وَإِنْ كَانَ مَأْثُورًا عَنِ السَّلَفِ وَالْخَلَفِ. ثُمَّ إِنَّكَ إِنْ فَقَدْتَ حَدِيثًا فِي بَابٍ؛ فَذَلِكَ عَنْ تَكْرِيرٍ أُسْقِطُهُ. وَإِنْ وَجَدْتَ آخَرَ بَعْضَهُ مَتْرُوكًا عَلَى اخْتِصَارِهِ، أَوْ مَضْمُومًا إِلَيْهِ تَمَامُهُ؛ فَعَنْ دَاعِي اهْتِمَامٍ أَتْرُكُهُ وَأُلْحِقُهُ. وَإِنْ عَثَرْتَ عَلَى اخْتِلَافٍ فِي الْفَصْلَيْنِ مِنْ ذِكْرِ غَيْرِ الشَّيْخَيْنِ فِي الْأَوَّلِ، وَذِكْرِهِمَا فِي الثَّانِي؛ فَاعْلَمْ أَنِّي بَعْدَ تتبعي كتابي «الْجمع بَين الصحيحن» لِلْحُمَيْدِيِّ، وَ «جَامِعَ الْأُصُولِ» ؛ اعْتَمَدْتُ عَلَى صَحِيحَيِ الشَّيْخَيْنِ وَمَتْنَيْهِمَا. وَإِنْ رَأَيْتَ اخْتِلَافًا فِي نَفْسِ الْحَدِيثِ؛ فَذَلِكَ مِنْ تَشَعُّبِ طُرُقِ الْأَحَادِيثِ، وَلَعَلِّي مَا أطلعت على تِلْكَ الرِّوَايَة التس سَلَكَهَا الشَّيْخُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ. وَقَلِيلًا مَا تَجِدُ أَقُولُ: مَا وَجَدْتُ هَذِهِ الرِّوَايَةَ فِي كتب وَجَدْتُ خِلَافَهَا فِيهَا. فَإِذَا وَقَفْتَ عَلَيْهِ فَانْسِبِ الْقُصُورَ إِلَيَّ لِقِلَّةِ الدِّرَايَةِ، لَا إِلَى جَنَابِ الشَّيْخِ رَفَعَ اللَّهُ قَدْرَهُ فِي الدَّارَيْنِ، حَاشَا لِلَّهِ مِنْ ذَلِكَ. رَحِمَ اللَّهُ مَنْ إِذَا وَقَفَ عَلَى ذَلِكَ نَبَّهَنَا عَلَيْهِ، وَأَرْشَدَنَا طَرِيقَ الصَّوَابِ. وَلَمْ آلُ جُهْدًا فِي التَّنْقِيرِ وَالتَّفْتِيشِ بِقَدْرِ الْوُسْعِ وَالطَّاقَةِ، وَنَقَلْتُ ذَلِكَ الِاخْتِلَافَ كَمَا وجدت. وَمَا أَشَارَ إِلَيْهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ مِنْ غَرِيبٍ أَوْ ضَعِيفٍ أَوْ غَيْرِهِمَا؛ بَيَّنْتُ وَجْهَهُ غَالِبًا، وَمَا لَمْ يُشِرْ إِلَيْهِ مِمَّا فِي الْأُصُولِ؛ فَقَدْ قَفَّيْتُهُ فِي تَرْكِهِ، إِلَّا فِي مَوَاضِع لغَرَض. وَرُبمَا تَجِد مَوَاضِع مهملهة، وَذَلِكَ حَيْثُ لم أطلع على رِوَايَة فَتَرَكْتُ الْبَيَاضَ، فَإِنْ عَثَرْتَ عَلَيْهِ فَأَلْحِقْهُ بِهِ، أَحْسَنَ اللَّهُ جَزَاءَكُ. وَسَمَّيْتُ الْكِتَابَ. بِ «مِشْكَاةِ الْمَصَابِيحِ» وَأَسْأَلُ اللَّهَ التَّوْفِيقَ وَالْإِعَانَةَ وَالْهِدَايَةَ وَالصِّيَانَةَ، وَتَيْسِيرَ مَا أَقْصِدُهُ، وَأَنْ يَنْفَعَنِي فِي الْحَيَاةِ وَبَعْدَ الْمَمَاتِ، وَجَمِيعَ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ. حَسْبِيَ اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ. وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ الْعَزِيزِ الْحَكِيمِ. عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُولِه وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ اِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهٗ إِلٰى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ


Author's Introduction

In the name of God, the Compassionate, the Merciful.

Praise be to God. We praise Him and ask His help and forgiveness, and we seek refuge in God from the evils within us and from our wicked deeds. He whom God guides has no one to lead him astray, and he whom He leads astray has no guide. I testify that there is no god but God, a testimony which is a means of attaining salvation and a guarantee of the exalting of men’s degrees., And I testify that Muhammad is His servant and messenger whom He sent when the traces of the paths of faith were obliterated, their lights were extinguished, their strength was weakened, and their position was unknown. Then he, to whom be granted the blessings and safe-keeping of God, raised the landmarks which had been cast down, healed by upholding the statement of God's Unity those among the sick who were upon the brink of destruction, made clear the paths of guidance for those who wished to tread them, and displayed the treasures of bliss to those who aimed at possessing them.

To proceed: Only by following what has emanated from his mind can one effectively hold fast to his guidance, and only by means of the explanation of what he disclosed can a perfect grip of God's revelation be attained. Kitab al-Masabih, which was composed by the imam, the reviver of the Sunna (Muhyi as-Sunnah is a title given to Baghawi) and subduer of innovation, Abu Muhammad al-Husain b. Mas'ud al-Farra', al-Baghawi, whose degree may God exalt, is the most comprehensive book written on its subject and the one which most effectively deals with unfamiliar and unusual traditions. But he, for whom we pray for God’s good pleasure, was found fault with by some critics for adopting the method of abridgement and omitting the isnads, even though his transmission, he being a reliable authority, is equivalent to an isnad; so because districts with landmarks are not like those which have none, having asked God most high to bless and help me, I marked what he had left unmarked as it was transmitted by the thoroughly versed imams and well-grounded reliable authorities, such as Abu ‘Abdallah Muhammad b. Isma'il al-Bukhari, Abul Husain Muslim b. al-Hajjaj al-Qushairi, Abu ‘Abdallah Malik b. Anas al-Asbahi, Abu ‘Abdallah Muhammad b. Idris al-Shafi‘i, Abu ‘Abdallah Ahmad b. Hanbal ash-Shaibani, Abu ‘Isa Muhammad b. ‘Isa at-Tirmidhi, Abu Dawud Sulaiman b. al-Ash‘ath as-Sijistani, Abu ‘Abd ar-Rahman Ahmad, b. Shu'aib an-Nasa’i, Abu ‘Abdallah Muhammad b. Yazid Ibn Majah al-Qazwini, Abu Muhammad ‘Abdallah b. ‘Abd ar-Rahman ad-Darimi, Abul Hasan ‘Ali b. ‘Umar ad-Daraqutni, Abu Bakr Ahmad b. al-Husain al-Baihaqi, Abul Hasan Razin b. Mu'awiya al-‘Abdari, and a few others. When I attribute a tradition to them, it is as though I trace it back to the Prophet for whom God’s blessing and safe-keeping is asked, because they have completed the isnad and made it unnecessary for us to do so. I have kept his order of the books and the chapters, following his course regarding them, and I have generally divided every chapter into three sections. The first is what the two shaikhs (i.e. Bukhari and Muslim) or one of them rendered, contenting myself with them because of their high rank in transmission, even if others transmitted the same tradition. The second is what other notable imams cited.

The third is what is relevant to the subject of the chapter from corresponding additional material, even if it goes back only to the Companions (people who met and believed in the Prophet) and the Followers (people of the next generation after the companions) regard being paid to the condition laid down. If you miss a tradition in a chapter, it is because I omit it owing to its being repeated; and if you find another tradition part of which is omitted through abridging it, or one to which the full text has been added, I have made such omissions and additions for some important reason. If you find a discrepancy between two sections through someone other than the two shaikhs being mentioned in the first and their being mentioned in the second, know that after I studied the two books, Al-Jam‘ Bain as-Sahihain by al-Humaidi, and Jami‘ al-Usul (by Ibn al-Athir, 544-606 A.H.) relied on the Sahihs of the two shaikhs and their texts. And if you see a discrepancy in the tradition itself, that is because of the variety of the lines of transmission of traditions and the possibility that I may not have examined that version which was followed by the shaikh, for whom God’s good pleasure is prayed. You will find me saying a few times, "I did not find this version in the originals” or, “I found something different from it.” When you come upon such matters, attribute the shortcoming to me, owing to the small extent of my knowledge. God forbid that you should attribute it to the revered shaikh for whom we pray that God may exalt his rank in this world and the next. May God bless him who, when he finds any information about that, draws our attention to it and guides us to the right path. I have not been remiss in energetically examining and investigating to the limit of my powers, and I have handed on that discrepancy as I found it. I have generally explained the aspect of the traditions called gharib, da'if, etc., which he, for whom God’s good pleasure is prayed, indicated. And I have followed him in omitting matters in the originals which he did not indicate, except in some places when I had a purpose in view. You will often find places unmarked, that being where I did not come upon the transmitter, so I left a blank; but if you stumble upon him, put his name in and may God give you a good reward.

I have called the book Mishkat al-Masabih, and I ask God to help, aid, guide, guard and facilitate what I purpose and to bestow benefit on me in life and after death, as well as on all men and women who are Muslims. God is my sufficiency, and good is the Trustee. There is no power or strength except in God, the Mighty, the Wise.

---
‘Umar b. al-Khattab, for whom God’s good pleasure is prayed, reported God’s Messenger, to whom may God’s blessings and safe-keeping be granted, as saying:

“Deeds are to be judged only by intentions, and a man will have only what he intended. When one’s emigration is to God and His Messenger, his emigration is to God and His Messenger; but when his emigration is to a worldly end at which he aims, or to a woman whom he marries, his emigration is to that to which he emigrated.”

(Bukhari and Muslim.)

ব্যাখ্যা : ঈমান হলো ‘‘অন্তরে বিশ্বাস করা মুখে স্বীকার করা এবং ‘আমল দ্বারা তা বাস্তবে পরিণত করা।’’ অতএব ঈমান কতকগুলো অংশের সমন্বয়ে গঠিত সমষ্টি। সুতরাং কর্ম বা ‘আমল প্রকৃতপক্ষে ঈমানের অন্তর্ভুক্ত। এতে প্রমাণিত হয় যে, ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি আছে। তবে ঈমানের সকল অংশ সমান মর্যাদাপূর্ণ নয়। কর্ম ঈমানের অংশ হলেও তা সালাতের মধ্যে ওয়াজিবসমূহের অনুরূপ, সালাতের রুকনের অনুরূপ নয়। ফলে ‘আমলের অনুপস্থিতির কারণে ঈমান সমূলে ধ্বংস হয় না, বরং অবশিষ্ট থাকে। ফলে কর্মপরিত্যাগকারী তথা কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ সম্পাদনকারী মু’মিন ফাসিক্ব। তার অন্য দু’টি শাখা মুখে স্বীকার ও অন্তরে বিশ্বাস পরিত্যাগ করার ন্যায় কাফির নয়। শুধু অন্তরের বিশ্বাস পরিত্যাগকারী মুনাফিক্ব। শুধুমাত্র মুখের স্বীকৃতি দানে অস্বীকারকারী কাফির। আর কর্মসম্পাদনের ত্রুটি দ্বারা ফাসিক্ব জাহান্নামে চিরস্থায়ী হওয়া থেকে অব্যাহতি পাবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে।