হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২২

পরিচ্ছেদঃ ২: তওবার বিবরণ

৯/২২। কা’ব ইবনু মালেকের পুত্র আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, এই আব্দুল্লাহ কা’ব রাদিয়াল্লাহু ’আনহু-এর ছেলেদের মধ্যে তাঁর পরিচালক ছিলেন, যখন তিনি অন্ধ হয়ে যান। তিনি (আব্দুল্লাহ) বলেন, আমি (আমার পিতা) কা’ব ইবনু মালেককে ঐ ঘটনা বর্ণনা করতে শুনেছি, যখন তিনি তাবূকের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে থেকে যান। তিনি বলেন, ’আমি তাবূক যুদ্ধ ছাড়া যে যুদ্ধই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেছেন তাতে কখনোই তাঁর পিছনে থাকিনি। অবশ্য বদরের যুদ্ধ থেকে আমি পিছনে রয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু বদরের যুদ্ধে যে অংশগ্রহণ করেনি, তাকে ভৎর্সনা করা হয়নি। আসল ব্যাপার ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমগণ কুরাইশের কাফেলার পশ্চাদ্ধাবনে বের হয়েছিলেন। (শুরুতে যুদ্ধের নিয়ত ছিল না।)

পরিশেষে আল্লাহ তা’আলা তাঁদেরকে ও তাঁদের শত্রুকে (পূর্বঘোষিত) ওয়াদা ছাড়াই একত্রিত করেছিলেন। আমি আক্বাবার রাতে (মিনায়) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে উপস্থিত ছিলাম, যখন আমরা ইসলামের উপর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম। আক্বাবার রাত অপেক্ষা আমার নিকটে বদরের উপস্থিতি বেশী প্রিয় ছিল না। যদিও বদর (অভিযান) লোক মাঝে ওর চাইতে বেশী প্রসিদ্ধ। (কা’ব বলেন,) আর আমার তাবূকের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে থাকার ঘটনা এরূপ যে, এই যুদ্ধ হতে পিছনে থাকার সময় আমি যতটা সমর্থ ও সচ্ছল ছিলাম অন্য কোন সময় ছিলাম না। আল্লাহর কসম! এর পূর্বে আমার নিকট কখনো দু’টি সওয়ারী (বাহন) একত্রিত হয়নি। কিন্তু এই (যুদ্ধের) সময়ে একই সঙ্গে দু’টি সওয়ারী আমার নিকট মউজুদ ছিল।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিয়ম ছিল, যখন তিনি কোন যুদ্ধে বের হওয়ার ইচ্ছা করতেন, তখন ’তাওরিয়া’ করতেন (অর্থাৎ সফরের গন্তব্যস্থলের নাম গোপন রেখে সাধারণ অন্য স্থানের নাম নিতেন, যাতে শত্রুরা টের না পায়)। এই যুদ্ধ এইভাবে চলে এল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীষণ গরমে এই যুদ্ধে বের হলেন এবং দূরবর্তী সফর ও দীর্ঘ মরুভূমির সম্মুখীন হলেন। আর বহু সংখ্যক শত্রুরও সম্মুখীন হলেন। এই জন্য তিনি মুসলিমদের সামনে বিষয়টি স্পষ্ট করে দিলেন; যাতে তাঁরা সেই অনুযায়ী যথোচিত প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। ফলে তিনি সেই দিকও বলে দিলেন, যেদিকে যাবার ইচ্ছা করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে অনেক মুসলিম ছিলেন এবং তাদের কাছে কোন হাজিরা বহি ছিল না, যাতে তাদের নামসমূহ লেখা হবে। এই জন্য যে ব্যক্তি (যুদ্ধে) অনুপস্থিত থাকত সে এই ধারণাই করত যে, আল্লাহর অহী অবতীর্ণ ছাড়া তার অনুপস্থিতির কথা গুপ্ত থাকবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই যুদ্ধ ফল পাকার মৌসুমে করেছিলেন এবং সে সময় (গাছের) ছায়াও উৎকৃষ্ট (ও প্রিয়) ছিল, আর আমার টানও ছিল সেই ফল ও ছায়ার দিকে।

সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমরা (যুদ্ধের জন্য) প্রস্তুতি নিলেন। আর (আমার এই অবস্থা ছিল যে,) আমি সকালে আসতাম, যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে আমিও (যুদ্ধের) প্রস্তুতি নই। কিন্তু কোন ফায়সালা না করেই আমি (বাড়ী) ফিরে আসতাম এবং মনে মনে বলতাম যে, আমি যখনই ইচ্ছা করব, যুদ্ধে শামিল হয়ে যাব। কেননা, আমি এর ক্ষমতা রাখি। আমার এই গড়িমসি অবস্থা অব্যাহত রইল এবং লোকেরা জিহাদের আয়োজনে প্রবৃত্ত থাকলেন।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমরা একদিন সকালে জিহাদে বেরিয়ে পড়লেন এবং আমি প্রস্তুতির ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তেই উপনীত হতে পারলাম না। আমি আবার সকালে এলাম এবং বিনা সিদ্ধান্তেই (বাড়ী) ফিরে গেলাম। সুতরাং আমার এই অবস্থা অব্যাহত থেকে গেল। ওদিকে মুসলিম সেনারা দ্রুতগতিতে আগে বাড়তে থাকল এবং যুদ্ধের ব্যাপারও ক্রমশঃ এগুতে লাগল। আমি ইচ্ছা করলাম যে, আমিও সফরে রওয়ানা হয়ে তাদের সঙ্গ পেয়ে নই। হায়! যদি আমি তাই করতাম (তাহলে কতই না ভাল হত)। কিন্তু এটা আমার ভাগ্যে হয়ে উঠল না। এদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চলে যাওয়ার পর যখনই আমি লোকের মাঝে আসতাম, তখন এ জন্যই দুঃখিত ও চিন্তিত হতাম যে, এখন (মদ্বীনায়) আমার সামনে কোন আদর্শ আছে তো কেবলমাত্র মুনাফিক কিংবা এত দুর্বল ব্যক্তিরা যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমার্হ বা অপারগ বলে গণ্য করেছেন।

সম্পূর্ণ রাস্তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে স্মরণ করলেন না। তাবূক পৌঁছে যখন তিনি লোকের মাঝে বসেছিলেন, তখন আমাকে স্মরণ করলেন এবং বললেন, ’’কা’ব ইবনু মালেকের কী হয়েছে?’’ বানু সালেমাহ (গোত্রের) একটি লোক বলে উঠল, ’’হে আল্লাহর রাসূল! তার দুই চাদর এবং দুই পার্শ্ব দর্শন (অর্থাৎ ধন ও তার অহঙ্কার) তাকে আটকে দিয়েছে।’’ (এ কথা শুনে) মু’আয ইবনু জাবাল রাদিয়াল্লাহু ’আনহু বললেন, ’’বাজে কথা বললে তুমি। আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তার ব্যাপারে ভাল ছাড়া অন্য কিছু জানি না।’’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকলেন।

এসব কথাবার্তা চলছিল এমতাবস্থায় তিনি একটি লোককে সাদা পোশাক পরে (মরুভূমির) মরীচিকা ভেদ করে আসতে দেখলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’তুমি যেন আবূ খাইসামাহ হও।’’ (দেখা গেল,) সত্যিকারে তিনি আবূ খাইসামাহ আনসারীই ছিলেন। আর তিনি সেই ব্যক্তি ছিলেন, যিনি একবার আড়াই কিলো খেজুর সদকাহ করেছিলেন বলে মুনাফিকরা (তা অল্প মনে করে) তাঁকে বিদ্রূপ করেছিল।’

কা’ব বলেন, ’অতঃপর যখন আমি সংবাদ পেলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূক থেকে ফিরার সফর শুরু করে দিয়েছেন, তখন আমার মনে কঠিন দুশ্চিন্তা এসে উপস্থিত হল এবং মিথ্যা অজুহাত পেশ করার চিন্তা করতে লাগলাম এবং মনে মনে বলতে লাগলাম যে, আগামী কাল যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরবেন, সে সময় আমি তাঁর রোষানল থেকে বাঁচব কি উপায়ে? আর এ ব্যাপারে আমি পরিবারের প্রত্যেক বুদ্ধিমান মানুষের সহযোগিতা চাইতে লাগলাম। অতঃপর যখন বলা হল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমন একদম নিকটবর্তী, তখন আমার অন্তর থেকে বাতিল (পরিকল্পনা) দূর হয়ে গেল। এমনকি আমি বুঝতে পারলাম যে, মিথ্যা বলে আমি কখনই বাঁচতে পারব না। সুতরাং আমি সত্য বলার দৃঢ় সঙ্কল্প করে নিলাম।

এদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে (মদ্বীনায়) পদার্পণ করলেন। তাঁর অভ্যাস ছিল, যখন তিনি সফর থেকে (বাড়ি) ফিরতেন, তখন সর্বপ্রথম তিনি মসজিদে দু’ রাকআত নামায পড়তেন। তারপর (সফরের বিশেষ বিশেষ খবর শোনাবার জন্য) লোকেদের জন্য বসতেন। সুতরাং এই সফর থেকে ফিরেও যখন পূর্ববৎ কাজ করলেন, তখন মুনাফেকরা এসে তাঁর নিকট ওজর-আপত্তি পেশ করতে লাগল এবং কসম খেতে আরম্ভ করল। এরা সংখ্যায় আশি জনের কিছু বেশী ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বাহ্যিক ওজর গ্রহণ করে নিলেন, তাদের বায়আত নিলেন, তাদের জন্য (আল্লাহর কাছে) ক্ষমা প্রার্থনা করলেন এবং তাদের গোপনীয় অবস্থা আল্লাহকে সঁপে দিলেন। অবশেষে আমিও তাঁর খিদমতে হাজির হলাম।

অতঃপর যখন আমি তাঁকে সালাম দিলাম, তখন তিনি রাগান্বিত ব্যক্তির হাসির মত মুচকি হাসলেন। অতঃপর তিনি বললেন, ’’সামনে এসো!’’ আমি তাঁর সামনে এসে বসে পড়লাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ’’তুমি কেন জিহাদ থেকে পিছনে রয়ে গেলে? তুমি কি বাহন ক্রয় করনি?’’ আমি বললাম, ’’হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কসম! আমি যদি আপনি ছাড়া দুনিয়ার অন্য কোন লোকের কাছে বসতাম, তাহলে নিশ্চিতভাবে কোন মিথ্যা ওজর পেশ করে তার অসন্তুষ্টি থেকে বেঁচে যেতাম। বাকচাতুর্য (বা তর্ক-বিতর্ক করা)র অভিজ্ঞতা আমার যথেষ্ট রয়েছে। কিন্তু আল্লাহর কসম! আমি জানি যে, যদি আজ আপনার সামনে মিথ্যা বলি, যাতে আপনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন, তাহলে অতি সত্বর আল্লাহ তা’আলা (অহী দ্বারা সংবাদ দিয়ে) আপনাকে আমার উপর অসন্তুষ্ট করে দেবেন।

পক্ষান্তরে আমি যদি আপনাকে সত্য কথা বলি, তাহলে আপনি আমার উপর অসন্তুষ্ট হবেন। কিন্তু আমি আল্লাহর নিকট এর সুফলের আশা রাখি। (সেহেতু আমি সত্য কথা বলছি যে,) আল্লাহর কসম! (আপনার সাথে জিহাদে যাওয়ার ব্যাপারে) আমার কোন অসুবিধা ছিল না। আল্লাহর কসম! আপনার সাথ ছেড়ে পিছনে থাকার সময় আমি যতটা সমর্থ ও সচ্ছল ছিলাম ততটা কখনো ছিলাম না।’’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’এই লোকটি নিশ্চিতভাবে সত্য কথা বলেছে। বেশ, তুমি এখান থেকে চলে যাও, যে পর্যন্ত তোমার ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা কোন ফায়সালা না করবেন।’’

আমার পিছনে পিছনে বনু সালেমাহ (গোত্রের) কিছু লোক এল এবং আমাকে বলল যে, ’’আল্লাহর কসম! আমরা অবগত নই যে, তুমি এর পূর্বে কোন পাপ করেছ। অন্যান্য পিছনে থেকে যাওয়া লোকেদের ওজর পেশ করার মত তুমিও কোন ওজর পেশ করলে না কেন? তোমার পাপ মোচনের জন্য এটাই যথেষ্ট ছিল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার জন্য (আল্লাহর নিকট) ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।’’ কা’ব বলেন, ’আল্লাহর কসম! লোকেরা আমাকে আমার সত্য কথা বলার জন্য তিরস্কার করতে থাকল। পরিশেষে আমার ইচ্ছা হল যে, আমি দ্বিতীয়বার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে গিয়ে প্রথম কথা অস্বীকার করি (এবং কোন মিথ্যা ওজর পেশ করে দেই।) আবার আমি তাদেরকে বললাম, ’’আমার এ ঘটনা কি অন্য কারো সাথে ঘটেছে?’’ তাঁরা বললেন, ’’হ্যাঁ। তোমার মত আরো দু’জন সমস্যায় পড়েছে। (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে) তারাও সেই কথা বলেছে, যা তুমি বলেছ এবং তাদেরকে সেই কথাই বলা হয়েছে, যা তোমাকে বলা হয়েছে।’’

আমি তাদেরকে বললাম, ’’তারা দু’জন কে?’’ তারা বলল, ’’মুরারাহ ইবনু রাবী’ আমরী ও হিলাল ইবনু উমাইয়্যাহ ওয়াক্বেফী।’’ এই দু’জন যাঁদের কথা তারা আমার কাছে বর্ণনা করল, তাঁরা সৎলোক ছিলেন এবং বদর যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন; তাঁদের মধ্যে আমার জন্য আদর্শ ছিল। যখন তারা সে দু’জন ব্যক্তির কথা বলল, তখন আমি আমার পূর্বেকার অবস্থার (সত্যের) উপর অনড় থেকে গেলাম (এবং আমার কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা দূরীভূত হল। যাতে আমি তাদের ভৎর্সনার কারণে পতিত হয়েছিলাম)। (এরপর) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদেরকে পিছনে অবস্থানকারীদের মধ্যে আমাদের তিনজনের সাথে কথাবার্তা বলতে নিষেধ করে দিলেন।’

কা’ব রাদিয়াল্লাহু ’আনহু বলেন, ’লোকেরা আমাদের থেকে পৃথক হয়ে গেল।’ অথবা বললেন, ’লোকেরা আমাদের জন্য পরিবর্তন হয়ে গেল। পরিশেষে পৃথিবী আমার জন্য আমার অন্তরে অপরিচিত মনে হতে লাগল। যেন এটা সেই পৃথিবী নয়, যা আমার পরিচিত ছিল। এইভাবে আমরা ৫০টি রাত কাটালাম। আমার দুই সাথীরা তো নরম হয়ে ঘরের মধ্যে কান্নাকাটি আরম্ভ করে দিলেন। কিন্তু আমি দলের মধ্যে সবচেয়ে যুবক ও বলিষ্ঠ ছিলাম। ফলে আমি ঘর থেকে বের হয়ে মুসলিমদের সাথে নামাযে হাজির হতাম এবং বাজারসমূহে ঘোরাফেরা করতাম। কিন্তু কেউ আমার সঙ্গে কথা বলত না।

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমতে হাজির হতাম এবং তিনি যখন নামাযের পর বসতেন, তখন তাঁকে সালাম দিতাম, আর আমি মনে মনে বলতাম যে, তিনি আমার সালামের জওয়াবে ঠোঁট নড়াচ্ছেন কি না? তারপর আমি তাঁর নিকটেই নামায পড়তাম এবং আড়চোখে তাঁকে দেখতাম। (দেখতাম,) যখন আমি নামাযে মনোযোগী হচ্ছি, তখন তিনি আমার দিকে তাকাচ্ছেন এবং যখন আমি তাঁর দিকে দৃষ্টি ফিরাচ্ছি, তখন তিনি আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন!

অবশেষে যখন আমার সাথে মুসলিমদের বিমুখতা দীর্ঘ হয়ে গেল, তখন একদিন আমি আবূ ক্বাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু ’আনহু-এর বাগানে দেওয়াল ডিঙিয়ে (তাতে প্রবেশ করলাম।) সে (আবূ ক্বাতাদাহ) আমার চাচাতো ভাই এবং আমার সর্বাধিক প্রিয় লোক ছিল। আমি তাকে সালাম দিলাম। কিন্তু আল্লাহর কসম! সে আমাকে সালামের জওয়াব দিল না। আমি তাকে বললাম, ’’হে আবূ ক্বতাদাহ! আমি তোমাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তুমি কি জান যে, আমি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভালবাসি?’’

সে নিরুত্তর থাকল। আমি দ্বিতীয়বার কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। এবারেও সে চুপ থাকল। আমি তৃতীয়বার কসম দিয়ে প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করলে সে বলল, ’’আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই বেশী জানেন।’’ এ কথা শুনে আমার চক্ষুদ্বয় থেকে অশ্রু বইতে লাগল এবং যেভাবে গিয়েছিলাম, আমি সেইভাবেই দেওয়াল ডিঙিয়ে ফিরে এলাম।

এরই মধ্যে একদিন মদ্বীনার বাজারে হাঁটছিলাম। এমন সময় শাম দেশের কৃষকদের মধ্যে একজন কৃষককে---যে মদ্বীনায় খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করতে এসেছিল---বলতে শুনলাম, কে আমাকে কা’ব ইবনু মালেককে দেখিয়ে দেবে? লোকেরা আমার দিকে ইঙ্গিত করতে লাগল। ফলে সে ব্যক্তি আমার নিকটে এসে আমাকে ’গাসসান’-এর বাদশার একখানি পত্র দিল। আমি লিখা-পড়া জানতাম তাই আমি পত্রখানি পড়লাম। পত্রে লিখা ছিলঃ-

’--- অতঃপর আমরা এই সংবাদ পেয়েছি যে, আপনার সঙ্গী (মুহাম্মাদ) আপনার প্রতি দুর্ব্যবহার করেছে। আল্লাহ আপনাকে লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত অবস্থায় থাকার জন্য সৃষ্টি করেননি। আপনি আমাদের কাছে চলে আসুন; আমরা আপনার প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করব।

পত্র পড়ে আমি বললাম, ’’এটাও অন্য এক বালা (পরীক্ষা)।’’ সুতরাং আমি ওটাকে চুলোয় ফেলে জ্বালিয়ে দিলাম। অতঃপর যখন ৫০ দিনের মধ্যে ৪০ দিন গত হয়ে গেল এবং অহী আসা বন্ধ ছিল এই অবস্থায় আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একজন দূত আমার নিকট এসে বলল, ’’রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে তোমার স্ত্রী থেকে পৃথক থাকার আদেশ দিচ্ছেন!’’ আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ’’আমি কি তাকে তালাক দেব, না কী করব?’’ সে বলল, ’’তালাক নয় বরং তার নিকট থেকে আলাদা থাকবে, মোটেই ওর নিকটবর্তী হবে না।’’ আমার দুই সাথীর নিকটেও এই বার্তা পৌঁছে দিলেন। আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, ’’তুমি পিত্রালয়ে চলে যাও এবং সেখানে অবস্থান কর---যে পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা এ ব্যাপারে কোন ফায়সালা না করেন।’’

(আমার সাথীদ্বয়ের মধ্যে একজন সাথী) হিলাল ইবনু উমাইয়ার স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, ’’ইয়া রাসূলাল্লাহ! হিলাল ইবনু উমাইয়াহ খুবই বৃদ্ধ মানুষ, তার কোন খাদেমও নেই, সেহেতু আমি যদি তার খিদমত করি, তবে আপনি কি এটা অপছন্দ করবেন?’’ তিনি বললেন, ’’না, (অর্থাৎ তুমি তার খিদমত করতে পার।) কিন্তু সে যেন তোমার (মিলন উদ্দেশ্যে) নিকটবর্তী না হয়।’’ (হিলালের স্ত্রী বলল, ’’আল্লাহর কসম! (দুঃখের কারণে এ ব্যাপারে) তার কোন সক্রিয়তা নেই। আল্লাহর কসম! যখন থেকে এ ব্যাপার ঘটেছে তখন থেকে আজ পর্যন্ত সে সর্বদা কাঁদছে।’’

(কা’ব বলেন,) ’আমাকে আমার পরিবারের কিছু লোক বলল যে, ’’তুমিও যদি নিজ স্ত্রীর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অনুমতি চাইতে, (তাহলে তা তোমার পক্ষে ভাল হত।) তিনি হিলাল ইবনু উমাইয়ার স্ত্রীকে তো তার খিদমত করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছেন।’’ আমি বললাম, ’’এ ব্যাপারে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অনুমতি চাইব না। জানি না, যখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে অনুমতি চাইব, তখন তিনি কী বলবেন। কারণ, আমি তো যুবক মানুষ।’’

এভাবে আরও দশদিন কেটে গেল। যখন থেকে লোকদেরকে আমাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে নিষেধ করা হয়েছে, তখন থেকে এ পর্যন্ত আমাদের পঞ্চাশ রাত পূর্ণ হয়ে গেল। আমি পঞ্চাশতম রাতে আমাদের এক ঘরের ছাদের উপর ফজরের নামায পড়লাম। নামায পড়ার পর আমি এমন অবস্থায় বসে আছি যার বর্ণনা আল্লাহ তা’আলা আমাদের ব্যাপারে দিয়েছেন- আমার জীবন আমার জন্য দুর্বিষহ হয়ে পড়েছিল এবং পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও আমার প্রতি সংকীর্ণ হয়ে উঠেছিল---এমন সময় আমি এক চিৎকারকারীর আওয়ায শুনতে পেলাম, সে সাল’আ পাহাড়ের উপর চড়ে উচ্চস্বরে বলছে, ’’হে কা’ব ইবনু মালেক! তুমি সুসংবাদ নাও!’’ আমি তখন (খুশীতে শুকরিয়ার) সিজদায় পড়ে গেলাম এবং বুঝতে পারলাম যে, (আল্লাহর পক্ষ থেকে) মুক্তি এসেছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামায পড়ার পর লোকদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, আল্লাহ আয্যা অজাল্ল্ আমাদের তওবা কবূল করে নিয়েছেন। সুতরাং লোকেরা আমাদেরকে সুসংবাদ দেওয়ার জন্য আসতে আরম্ভ করল। এক ব্যক্তি আমার দিকে অতি দ্রুত গতিতে ঘোড়া ছুটিয়ে এল। সে ছিল আসলাম (গোত্রের) এক ব্যক্তি। আমার দিকে সে দৌড়ে এল এবং পাহাড়ের উপর চড়ে (আওয়াজ দিল)। তার আওয়াজ ঘোড়ার চেয়েও দ্রুতগামী ছিল। সুতরাং যখন সে আমার কাছে এল, যার সুসংবাদের আওয়াজ আমি শুনেছিলাম, তখন আমি তার সুসংবাদ দানের বিনিময়ে আমার দেহ থেকে দু’খানি বস্ত্র খুলে তাকে পরিয়ে দিলাম।

আল্লাহর কসম! সে সময় আমার কাছে এ দু’টি ছাড়া আর কিছু ছিল না। আর আমি নিজে দু’খানি কাপড় অস্থায়ীভাবে ধার নিয়ে পরিধান করলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। পথে লোকেরা দলে দলে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাকে মুবারকবাদ জানাতে লাগল এবং বলতে লাগল, ’’আল্লাহ তা’আলা তোমার তওবা কবুল করেছেন, তাই তোমাকে ধন্যবাদ।’’ অতঃপর আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম। (দেখলাম,) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে আছেন এবং তাঁর চারপাশে লোকজন আছে। ত্বালহা ইবনু উবাইদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ’আনহু উঠে ছুটে এসে আমার সঙ্গে মুসাফাহা করলেন এবং আমাকে মুবারকবাদ দিলেন। আল্লাহর কসম! মুহাজিরদের মধ্যে তিনি ছাড়া আর কেউ উঠলেন না।’

সুতরাং কা’ব ত্বালহা রাদিয়াল্লাহু ’আনহু-এর এই ব্যবহার কখনো ভুলতেন না। কা’ব বলেন, ’যখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম জানালাম, তখন তিনি তাঁর খুশীময় উজ্জ্বল চেহারা নিয়ে আমাকে বললেন, ’’তোমার মা তোমাকে যখন প্রসব করেছে, তখন থেকে তোমার জীবনের বিগত সর্বাধিক শুভদিনের তুমি সুসংবাদ নাও!’’ আমি বললাম, ’’হে আল্লাহর রাসূল! এই শুভসংবাদ আপনার পক্ষ থেকে, না কি আল্লাহর পক্ষ থেকে?’’ তিনি বললেন, ’’না, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে।’’

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খুশি হতেন, তখন তাঁর চেহারা উজ্জ্বল হয়ে যেত, মনে হত যেন তা একফালি চাঁদ এবং এতে আমরা তাঁর এ (খুশী হওয়ার) কথা বুঝতে পারতাম। অতঃপর যখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে বসলাম, তখন আমি বললাম, ’’হে আল্লাহর রাসূল! আমার তওবা কবুল হওয়ার দরুন আমি আমার সমস্ত মাল আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের রাস্তায় সাদকাহ করে দিচ্ছি।’’ তিনি বললেন, ’’তুমি কিছু মাল নিজের জন্য রাখ, তোমার জন্য তা উত্তম হবে।’’ আমি বললাম, ’’যাই হোক! আমি আমার খায়বারের (প্রাপ্ত) অংশ রেখে নিচ্ছি।’’

আর আমি এ কথাও বললাম যে, ’’হে আল্লাহর রাসূল! নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা আমাকে সত্যবাদিতার কারণে (এই বিপদ থেকে) উদ্ধার করলেন। আর এটাও আমার তওবার দাবী যে, যতদিন আমি বেঁচে থাকব, সর্বদা সত্য কথাই বলব।’’ সুতরাং আল্লাহর কসম! যখন থেকে আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে সত্য কথা বলার প্রতিজ্ঞা করলাম আমি জানি না যে, আল্লাহ তা’আলা কোন মুসলিমকে সত্য কথার বলার প্রতিদান স্বরূপ উৎকৃষ্ট পুরস্কার দিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমি যেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এ কথা বলেছি, সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি মিথ্যা কথা বলার ইচ্ছা করিনি। আর আশা করি যে, বাকী জীবনেও আল্লাহ তা’আলা আমাকে এ থেকে নিরাপদ রাখবেন।’

কা’ব বলেন, ’আল্লাহ তা’আলা (আমাদের ব্যাপারে আয়াত) অবতীর্ণ করেছেন, (যার অর্থ), ’’আল্লাহ ক্ষমা করলেন নবীকে এবং মুহাজির ও আনসারদেরকে যারা সংকট মুহূর্তে নবীর অনুগামী হয়েছিল, এমন কি যখন তাদের মধ্যকার এক দলের অন্তর বাঁকা হওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তারপর আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করলেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের প্রতি বড় স্নেহশীল, পরম করুণাময়। আর ঐ তিন ব্যক্তিকেও ক্ষমা করলেন, যাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছিল; পরিশেষে পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদের প্রতি সংকীর্ণ হয়ে উঠেছিল এবং তাদের জীবন তাদের জন্য দুর্বিষহ হয়ে পড়েছিল আর তারা উপলব্ধি করেছিল যে, আল্লাহ ছাড়া আল্লাহর পাকড়াও হতে বাঁচার অন্য কোন আশ্রয়স্থল নেই। পরে তিনি তাদের প্রতি অনুগ্রহপরায়ণ হলেন, যাতে তারা তওবা করে। নিশ্চয় আল্লাহই হচ্ছেন তওবা গ্রহণকারী, পরম করুণাময়। হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও।’’ (সূরাহ তওবা ১১৭-১১৯ আয়াত)

কা’ব ইবনু মালেক বলেন, ’আল্লাহ আমাকে ইসলামের জন্য হিদায়াত করার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সত্য কথা বলা অপেক্ষা বড় পুরস্কার আমার জীবনে আল্লাহ আমাকে দান করেননি। ভাগ্যে আমি তাঁকে মিথ্যা কথা বলিনি। নচেৎ তাদের মত আমিও ধ্বংস হয়ে যেতাম, যারা মিথ্যা বলেছিল। আল্লাহ তা’আলা যখন অহী অবতীর্ণ করলেন, তখন নিকৃষ্টভাবে মিথ্যুকদের নিন্দা করলেন। সুতরাং আল্লাহ তা’আলা তাদের ব্যাপারে বললেন, ’’যখন তোমরা তাদের কাছে ফিরে যাবে, তারা তখন অচিরেই তোমাদের সামনে শপথ করে বলবে, যেন তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা কর; অতএব তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা কর; তারা হচ্ছে অতিশয় ঘৃণ্য, আর তাদের ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম, তা হল তাদের কৃতকর্মের প্রতিফল। তারা এ জন্য শপথ করবে যেন তোমরা তাদের প্রতি রাজী হয়ে যাও, অনন্তর যদি তোমরা তাদের প্রতি রাজী হয়ে যাও, তবে আল্লাহ তো এমন দুষ্কর্মকারী লোকদের প্রতি রাজী হবেন না।’’ (ঐ ৯৫-৯৬ আয়াত)

কা’ব রাদিয়াল্লাহু ’আনহু বলেন, ’হে তিনজন! আমাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত পিছিয়ে রাখা হয়েছিল তাদের থেকে যাদের মিথ্যা কসম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (অজান্তে) গ্রহণ করলেন, তাদের বায়’আত নিলেন এবং তাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ব্যাপারটা পিছিয়ে দিলেন। পরিশেষে মহান আল্লাহ সে ব্যাপারে ফায়সালা দিলেন। মহান আল্লাহ বলেন, ’’আর ঐ তিন ব্যক্তিকেও ক্ষমা করলেন, যাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’’ পিছনে রাখার যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে তার অর্থ যুদ্ধ থেকে আমাদের পিছনে থাকা নয়। বরং (এর অর্থ) আমাদের ব্যাপারটাকে ঐ লোকদের ব্যাপার থেকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যারা তাঁর কাছে শপথ করেছিল এবং ওযর পেশ করেছিল। ফলে তিনি তা কবূল করে নিয়েছিলেন।’[1]

আর একটি বর্ণনায় আছে, ’নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূকের যুদ্ধে বৃহস্পতিবার বের হয়েছিলেন। আর তিনি বৃহস্পতিবার সফরে বের হওয়া পছন্দ করতেন। অন্য এক বর্ণনায় আছে, তিনি সফর থেকে কেবল দিনে চাশতের (সূর্য একটু উপরে উঠার) সময় আসতেন এবং এসে সর্বপ্রথম মসজিদে প্রবেশ করে দু’রাকাত নামায পড়তেন অতঃপর সেখানেই বসে যেতেন (এবং লোকের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলার পর বাসায় যেতেন।)।

(2) - باب التوبة

وعَنْ عبْدِ اللَّهِ بنِ آَعْبِ بنِ مَالكٍ ، وآانَ قائِدَ آعْبٍ رضِيَ االله عنه مِنْ بَنِيهِ حِينَ عَمِي،َ قال : سَمِعْتُ آعْبَبن مَالكٍ رضِي االله عنه يُحَدِّثُ بِحدِيِثِهِ حِين تخَلَّف عَنْ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، في غزوةِ تبُوكَ .قَال آعْبٌ : لمْ أَتخلَّفْ عَنْ رسولِ االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، في غَزْوَةٍ غَزَاها إِلاَّ في غزْوَةِ تَبُوكَ ، غَيْر أَنِّيقدْ تخلَّفْتُ في غَزْوةِ بَدْرٍ ، ولَمْ يُعَاتَبْ أَحد تَخلَّف عنْهُ ، إِنَّما خَرَجَ رسولُ االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّموالمُسْلِمُونَ يُريُدونَ عِيرَ قُريْش حتَّى جَمعَ االله تعالَى بيْنهُم وبيْن عَدُوِّهِمْ عَلَى غيْرِ ميعادٍ . وَلَقَدْ شهدْتُ مَعَرسولِ اللَّهِ صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ليْلَةَ العَقبَةِ حِينَ تَوَاثَقْنَا عَلَى الإِسْلامِ ، ومَا أُحِبُّ أَنَّ لِي بِهَا مَشهَدَ بَدْرٍ ،وإِن آَانتْ بدْرٌ أَذْآَرَ في النَّاسِ مِنهَا وآان من خبري حِينَ تخلَّفْتُ عَنْ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، فيغَزْوَةِ تبُوك أَنِّي لَمْ أَآُنْ قَطُّ أَقْوَى ولا أَيْسَرَ مِنِّي حِينَ تَخلَّفْتُ عَنْهُ في تِلْكَ الْغَزْوَة ، واللَّهِ ما جَمعْتُ قبْلهارَاحِلتيْنِ قطُّ حتَّى جَمَعْتُهُما في تلك الْغَزوَةِ ، ولَمْ يكُن رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يُريدُ غَزْوةً إِلاَّ ورَّىبغَيْرِهَا حتَّى آَانَتْ تِلكَ الْغَزْوةُ ، فغَزَاها رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم في حَرٍّ شَديدٍ ، وَاسْتَقْبَلَ سَفراً بَعِيداًوَمَفَازاً. وَاسْتَقْبَلَ عَدداً آَثيراً ، فجَلَّى للْمُسْلمِينَ أَمْرَهُمْ ليَتَأَهَّبوا أُهْبَةَ غَزْوِهِمْ فَأَخْبَرَهُمْ بوَجْهِهِمُ الَّذي يُريدُ ،وَالْمُسْلِمُون مَع رسول االله آثِيرٌ وَلاَ يَجْمَعُهُمْ آِتَابٌ حَافِظٌ » يُريدُ بذلكَ الدِّيَوان « قال آَعْبٌ : فقلَّ رَجُلٌ يُريدُ أَنْيَتَغَيَّبَ إِلاَّ ظَنَّ أَنَّ ذلكَ سَيَخْفى بِهِ مَالَمْ يَنْزِلْ فيهِ وَحْىٌ مِن اللَّهِ ، وغَزَا رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم تلكَالغزوةَ حين طَابت الثِّمَارُ والظِّلالُ ، فَأَنا إِلَيْهَا أَصْعرُ ، فتجهَّز رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم وَالْمُسْلِمُونمعهُ ، وطفِقْت أَغدو لِكىْ أَتَجَهَّزَ معهُ فأَرْجعُ ولمْ أَقْض شيئاً ، وأَقُولُ في نَفْسى: أَنا قَادِرٌ علَى ذلك إِذا أَرَدْت،ُفلمْ يَزلْ يتمادى بي حتَّى اسْتمَرَّ بالنَّاسِ الْجِدُّ ، فأَصْبَحَ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم غَادياً والْمُسْلِمُونَمعَهُ ، وَلَمْ أَقْضِ مِنْ جهازي شيْئاً ، ثُمَّ غَدَوْتُ فَرَجَعْتُ وَلَم أَقْض شَيْئاً ، فَلَمْ يزَلْ يَتَمادَى بِي حَتَّى أَسْرعُواوتَفَارَط الْغَزْوُ ، فَهَمَمْتُ أَنْ أَرْتَحِل فأَدْرآَهُمْ ، فَيَاليْتَني فَعلْتُ ، ثُمَّ لَمْ يُقَدَّرْ ذلك لي ، فَطفقتُ إِذَا خَرَجْتُ فيالنَّاسِ بَعْد خُرُوجِ رسُول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يُحْزُنُنِي أَنِّي لا أَرَى لِي أُسْوَةً ، إِلاَّ رَجُلاً مَغْمُوصاً عَلَيْه فيالنِّفاقِ ، أَوْ رَجُلاً مِمَّنْ عَذَرَ اللَّهُ تعالَى مِن الضُّعَفَاءِ ، ولَمْ يَذآُرني رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم حتَّى بَلَغتَبُوكَ ، فقالَ وَهُوَ جَالِسٌ في القوْمِ بتَبُوك : ما فَعَلَ آعْبُ بْنُ مَالكٍ ؟ فقالَ رَجُلٌ مِن بَنِي سلمِة : يا رسول االلهحَبَسَهُ بُرْدَاهُ ، وَالنَّظرُ في عِطْفيْه . فَقال لَهُ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ رضيَ اللَّهُ عنه . بِئس ما قُلْتَ ، وَاللَّهِ يا رسول االلهمَا عَلِمْنَا علَيْهِ إِلاَّ خَيْراً ، فَسكَت رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم. فبَيْنَا هُوَ علَى ذلك رَأَى رَجُلاً مُبْيِضاً يَزُولُبه السَّرَابُ ، فقالَ رسولُ االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : آُنْ أَبَا خَيْثمَةَ ، فَإِذا هوَ أَبُو خَيْثَمَةَ الأَنْصَاريُّ وَهُوَ الَّذيتَصَدَّقَ بصاع التَّمْر حين لمَزَهُ المنافقون قَالَ آَعْبٌ : فَلَّما بَلَغني أَنَّ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قَدْ توَجَّهَقَافلا منْ تَبُوكَ حَضَرَني بَثِّي ، فطفقتُ أَتذآَّرُ الكذِبَ وَأَقُولُ: بِمَ أَخْرُجُ من سَخطه غَداً وَأَسْتَعينُ عَلَى ذلكَ بِكُلِّذِي رَأْي مِنْ أَهْلي ، فَلَمَّا قِيلَ : إِنَّ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قدْ أَظِلَّ قادماً زاحَ عَنِّي الْبَاطِلُ حَتَّىعَرَفتُ أَنِّي لم أَنج مِنْهُ بِشَيءٍ أَبَداً فَأَجْمَعْتُ صِدْقَةُ ، وأَصْبَحَ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قَادماً ، وآان إِذاقدمَ مِنْ سَفَرٍ بَدَأَ بالْمَسْجد فرَآعَ فيه رَآْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلس للنَّاس ، فلمَّا فعل ذَلك جَاءَهُ الْمُخلَّفُونَ يعْتذرُون إِليْهوَيَحْلفُون لَهُ ، وآانوا بضعاً وثمَانين رَجُلا فقبل منْهُمْ عَلانيَتهُمْ وَاسْتغفَر لهُمْ وَوَآلَ سَرَائرَهُمْ إِلى االله تعَالى .حتَّى جئْتُ ، فلمَّا سَلَمْتُ تبسَّم تبَسُّم الْمُغْضب ثمَّ قَالَ : تَعَالَ، فجئتُ أَمْشي حَتى جَلَسْتُ بيْن يَدَيْهِ ، فقالَ لِي :مَا خَلَّفَكَ ؟ أَلَمْ تكُنْ قد ابْتَعْتَ ظَهْرَك، قَالَ قُلْتُ : يَا رَسُولَ االله إِنِّي واللَّه لَوْ جلسْتُ عنْد غيْركَ منْ أَهْلِ الدُّنْيَالَرَأَيْتُ أَني سَأَخْرُج منْ سَخَطه بعُذْرٍ ، لقدْ أُعْطيتُ جَدَلا ، وَلَكنَّي وَاللَّه لقدْ عَلمْتُ لَئن حَدَّثْتُكَ الْيَوْمَ حديث آَذبٍترْضى به عنِّي لَيُوشكَنَّ اللَّهُ يُسْخطك عليَّ ، وإنْ حَدَّثْتُكَ حَديث صدْقٍ تجدُ علَيَّ فيه إِنِّي لأَرْجُو فِيه عُقْبَى االلهعَزَّ وَجلَّ ، واللَّه ما آان لِي من عُذْرٍ ، واللَّهِ مَا آُنْتُ قَطُّ أَقْوَى وَلا أَيْسر مِنِّي حِينَ تَخلفْتُ عَنك قَالَ : فقالَرسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : » أَمَّا هذَا فقَدْ صَدَقَ ، فَقُمْ حَتَّى يَقْضيَ اللَّهُ فيكَ « وسَارَ رِجَالٌ مِنْ بَنِيسَلمة فاتَّبعُوني ، فقالُوا لِي : واللَّهِ مَا عَلِمْنَاكَ أَذنْبتَ ذَنْباً قبْل هذَا ، لقَدْ عَجَزتَ في أن لا تَكُون اعتذَرْت إِلَىرسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم بمَا اعْتَذَرَ إِلَيهِ الْمُخَلَّفُون فقَدْ آَانَ آافِيَكَ ذنْبكَ اسْتِغفارُ رسول االله صَلّى االلهُعَلَيْهِ وسَلَّم لَك . قَالَ : فواالله ما زَالُوا يُؤنِّبُوننِي حتَّى أَرَدْت أَنْ أَرْجِعَ إِلى رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّمفأَآْذِب نفسْي ، ثُمَّ قُلتُ لهُم : هَلْ لَقِيَ هَذا معِي مِنْ أَحدٍ ؟ قَالُوا : نَعَمْ لقِيَهُ معك رَجُلان قَالا مِثْلَ مَا قُلْتَ ،وقيل لَهمَا مِثْلُ مَا قِيلَ لكَ ، قَال قُلْتُ : مَن هُمَا ؟ قالُوا : مُرارةُ بْنُ الرَّبِيع الْعَمْرِيُّ ، وهِلال ابْن أُميَّةَ الْوَاقِفِيُّ؟ قَالَ : فَذآَروا لِي رَجُلَيْنِ صَالِحَيْن قدْ شَهِدا بدْراً فِيهِمَا أُسْوَةٌ . قَالَ : فَمَضيْت حِينَ ذَآَروهُمَا لِي .وَنهَى رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم عن آَلامِنَا أَيُّهَا الثلاثَةُ مِن بَين من تَخَلَّف عَنهُ ، قالَ : فاجْتَنبَنا النَّاسأَوْ قَالَ: تَغَيَّرُوا لَنَا حَتَّى تَنَكَّرت لِي في نفسي الأَرْضُ ، فَمَا هيَ بالأَرْضِ التي أَعْرِفُ ، فَلَبثْنَا عَلَى ذَلكَخمْسِينَ ليْلَةً . فأَمَّا صَاحبايَ فَاستَكَانَا وَقَعَدَا في بُيُوتهمَا يَبْكيَانِ وأَمَّا أَنَا فَكُنتُ أَشَبَّ الْقَوْمِ وَأَجْلَدَهُمْ ، فَكُنتُأَخْرُج فَأَشهَدُ الصَّلاة مَعَ الْمُسْلِمِينَ، وَأَطُوفُ في الأَسْوَاقِ وَلا يُكَلِّمُنِي أَحدٌ ، وآتِي رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِوسَلَّم فأُسَلِّمُ عَلَيْهِ ، وَهُو في مجْلِسِهِ بعدَ الصَّلاةِ ، فَأَقُولُ في نفسِي : هَل حَرَّكَ شفتَيهِ بردِّ السَّلامِ أَم لاَ ؟ ثُمَّأُصلِّي قريباً مِنهُ وأُسَارِقُهُ النَّظَرَ ، فَإِذَا أَقبَلتُ على صلاتِي نَظر إِلَيَّ ، وإِذَا الْتَفَتُّ نَحْوَهُ أَعْرَضَ عَنِّي ، حَتىإِذا طَال ذلكَ عَلَيَّ مِن جَفْوَةِ الْمُسْلمينَ مشَيْت حَتَّى تَسوَّرْت جدارَ حَائط أبي قَتَادَةَ وَهُوَا ابْن عَمِّي وأَحبُّالنَّاسَ إِلَيَّ ، فَسلَّمْتُ عَلَيْهِ فَواللَّهِ مَا رَدَّ عَلَيَّ السَّلامَ ، فَقُلْت لَه : يا أَبَا قتادَة أَنْشُدكَ باللَّه هَلْ تَعْلَمُني أُحبُّ االلهوَرَسُولَه صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ؟ فَسَكَت،َ فَعُدت فَنَاشَدتُه فَسكَتَ ، فَعُدْت فَنَاشَدْته فَقَالَ : االله ورَسُولُهُ أَعْلَمُ .فَفَاضَتْ عَيْنَايَ ، وَتَوَلَّيْتُ حَتَّى تَسَوَّرتُ الْجدَارَفبَيْنَا أَنَا أَمْشي في سُوقِ المدينةِ إِذَا نَبَطيُّ منْ نبطِ أَهْلِ الشَّام مِمَّنْ قَدِمَ بالطَّعَامِ يبيعُهُ بالمدينةِ يَقُولُ : مَنْ يَدُلُّعَلَى آعْبِ بْنِ مَالكٍ ؟ فَطَفقَ النَّاسُ يشيرون له إِلَى حَتَّى جَاءَني فَدَفَعَ إِلى آتَاباً منْ مَلِكِ غَسَّانَ ، وآُنْتُ آَاتِباً .فَقَرَأْتُهُ فَإِذَا فيهِ : أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّهُ قَدْ بلَغَنَا أَن صاحِبَكَ قدْ جَفاكَ ، ولمْ يجْعلْك اللَّهُ بدَارِ هَوَانٍ وَلا مَضْيعَةٍ ، فَالْحقْبِنا نُوَاسِك ، فَقلْت حِين قرأْتُهَا: وَهَذِهِ أَيْضاً من الْبَلاءِ فَتَيمَّمْتُ بِهَا التَّنُّور فَسَجرْتُهَا .حَتَّى إِذَا مَضَتْ أَرْبَعُون مِن الْخَمْسِينَ وَاسْتَلْبَثِ الْوَحْىُ إِذَا رسولِ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يَأْتِينِي ،فَقَالَ: إِنَّ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يَأَمُرُكَ أَنْ تَعْتزِلَ امْرأَتكَ ، فقُلْتُ: أُطَلِّقُهَا ، أَمْ مَاذا أَفعْلُ ؟ قَالَ: لا بَلْاعتْزِلْهَا فلا تقربَنَّهَا ، وَأَرْسلَ إِلى صَاحِبيَّ بِمِثْلِ ذلِكَ . فَقُلْتُ لامْرَأَتِي : الْحقِي بِأَهْلكِ فَكُونِي عِنْدَهُمْ حَتَّىيَقْضِيَ اللُّهُ في هذَا الأَمر ، فَجَاءَت امْرأَةُ هِلالِ بْنِ أُمَيَّةَ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم فقالتْ لَهُ : يا رسولاالله إِنَّ هِلالَ بْنَ أُميَّةَ شَيْخٌ ضَائعٌ ليْسَ لَهُ خادِمٌ ، فهلْ تَكْرهُ أَنْ أَخْدُمهُ ؟ قال : لا، وَلَكِنْ لا يَقْربَنَّك . فَقَالَتْ :إِنَّهُ وَاللَّه مَا بِهِ مِنْ حَرآةٍ إِلَى شَيءٍ ، وَوَاللَّه ما زَالَ يَبْكِي مُنْذُ آَانَ مِنْ أَمْرِهِ مَا آَانَ إِلَى يَوْمِهِ هَذَا . فَقَال لِيبعْضُ أَهْلِي: لَو اسْتأَذنْت رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم في امْرَأَتِك ، فقَدْ أَذن لامْرأَةِ هِلالِ بْنِ أُمَيَّةَ أَنْتَخْدُمَهُ؟ فقُلْتُ: لا أَسْتَأْذِنُ فِيهَا رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، ومَا يُدْريني مَاذا يَقُولُ رسولُ االله صَلّى االلهُعَلَيْهِ وسَلَّم إِذَا اسْتَأْذَنْتُهُ فِيهَا وَأَنَا رَجُلٌ شَابٌّ فلَبِثْتُ بِذلك عشْر ليالٍ ، فَكَمُلَ لَنا خمْسُونَ لَيْلَةً مِنْ حينَ نُهيعَنْ آَلامنا .ثُمَّ صَلَّيْتُ صَلاَةَ الْفَجْرِ صباحَ خمْسينَ لَيْلَةً عَلَى ظهْرِ بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِنَا ، فَبينَا أَنَا جَالسٌ عَلَى الْحال التي ذآَراللَّهُ تعالَى مِنَّا ، قَدْ ضَاقَتْ عَلَيَّ نَفْسِى وَضَاقَتْ عَليَّ الأَرضُ بمَا رَحُبَت،ْ سَمعْتُ صَوْتَ صَارِخٍ أوفي عَلَى سَلْعٍيَقُولُ بأَعْلَى صَوْتِهِ : يَا آَعْبُ بْنَ مَالِكٍ أَبْشِر،ْ فخرَرْتُ سَاجِداً ، وَعَرَفْتُ أَنَّهُ قَدْ جَاءَ فَرَجٌ فَآذَنَ رسول االلهصَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم النَّاس بِتوْبَةِ االله عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْنَا حِين صَلَّى صَلاة الْفجْرِ فذهَبَ النَّاسُ يُبَشِّرُوننا ، فذهَبَقِبَلَ صَاحِبَيَّ مُبَشِّرُونَ ، ورآض رَجُلٌ إِليَّ فرَساً وَسَعَى ساعٍ مِنْ أَسْلَمَ قِبَلِي وَأَوْفَى عَلَى الْجَبلِ ، وآَانالصَّوْتُ أَسْرَعَ مِنَ الْفَرَسِ ، فلمَّا جَاءَنِي الَّذي سمِعْتُ صوْتَهُ يُبَشِّرُنِي نَزَعْتُ لَهُ ثَوْبَيَّ فَكَسَوْتُهُمَا إِيَّاهُ ببشارَتهواللَّه ما أَمْلِكُ غَيْرَهُمَا يوْمَئذٍ ، وَاسْتَعَرْتُ ثَوْبَيْنِ فَلَبسْتُهُمَا وانْطَلَقتُ أَتَأَمَّمُ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّميَتَلَقَّانِي النَّاسُ فَوْجاً فَوْجاً يُهَنِّئُونني بِالتَّوْبَةِ وَيَقُولُون لِي : لِتَهْنِكَ تَوْبَةُ االله عَلَيْك،َ حتَّى دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ فَإِذَارسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم جَالِسٌ حَوْلَهُ النَّاسُ ، فَقَامَ طلْحَةُ بْنُ عُبَيْد االله رضي االله عنه يُهَرْوِل حَتَّىصَافَحَنِي وهَنَّأَنِي ، واللَّه مَا قَامَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهاجِرِينَ غَيْرُهُ ، فَكَان آَعْبٌ لا يَنْساهَا لِطَلحَة . قَالَ آَعْبٌ : فَلَمَّاسَلَّمْتُ عَلَى رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، قال: وَهوَ يَبْرُقُ وَجْهُهُ مِنَ السُّرُور أَبْشِرْ بِخَيْرِ يَوْمٍ مَرَّ عَلَيْكَ ،مُذْ ولَدَتْكَ أُمُّكَ ، فقُلْتُ : أمِنْ عِنْدِكَ يَا رَسُول اللَّهِ أَم مِنْ عِنْد االله ؟ قَالَ : لاَ بَلْ مِنْ عِنْد االله عَز وجَلَّ ، وآانَرسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم إِذَا سُرَّ اسْتَنارَ وَجْهُهُ حتَّى آَأنَّ وجْهَهُ قِطْعَةُ قَمر، وآُنَّا نعْرِفُ ذلِكَ مِنْه،ُ فلَمَّاجلَسْتُ بَيْنَ يدَيْهِ قُلتُ: يَا رسول اللَّهِ إِنَّ مِنْ تَوْبَتِي أَنْ أَنْخَلِعَ مِن مَالي صدَقَةً إِلَى اللَّهِ وإِلَى رَسُولِهِ .فَقَالَ رَسُول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : أَمْسِكْ عَلَيْكَ بَعْضَ مَالِكَ فَهُوَ خَيْر لَكَ ، فَقُلْتُ إِنِّي أُمْسِكُ سَهْمِي الَّذيبِخيْبَر . وَقُلْتُ : يَا رَسُولَ االله إِن االله تَعَالىَ إِنَّما أَنْجَانِي بالصدق ، وَإِنْ مِنْ تَوْبَتي أَن لا أُحدِّثَ إِلاَّ صِدْقاً مابَقِيتُ ، فوا الله ما علِمْتُ أحداً مِنَ المسلمِين أَبْلاْهُ اللَّهُ تَعَالَى في صدْق الْحَديث مُنذُ ذَآَرْتُ ذَلكَ لرِسُولِ االلهصَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم أَحْسَنَ مِمَّا أَبْلاَنِي اللَّهُ تَعَالَى ، وَاللَّهِ مَا تَعمّدْت آِذْبَةً مُنْذُ قُلْت ذَلِكَ لرَسُولِ اللَّهِ صَلّى االلهُعَلَيْهِ وسَلَّم إِلَى يَوْمِي هَذَا ، وَإِنِّي لأَرْجُو أَنْ يَحْفظني اللَّهُ تَعَالى فِيمَا بَقِي ، قَالَ : فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : } لَقَدْتَابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ والأَنْصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ في سَاعَةِ الْعُسْرةِ { حَتَّى بَلَغَ : } إِنَّه بِهِمْ رَءُوفٌرَحِيمٌ صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم وَعَلَى الثَّلاَثةِ الَّذينَ خُلِّفُوا حَتَّى إِذَا ضَاقَتْ عَلَيْهِمُ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ { حتى بلغ: }اتَّقُوا اللَّهَ وَآُونُوا مَعَ الصَّادقين { ] التوبة : . [ 119 ، 117قالَ آعْبٌ : واللَّهِ مَا أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيَّ مِنْ نِعْمَةٍ قَطُّ بَعْدَ إِذْ هَدانِي اللَّهُ لِلإِسْلام أَعْظمَ في نَفسِي مِنْ صِدْقي رَسُولَاللَّهِ صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم أَن لاَّ أَآُونَ آَذَبْتُهُ ، فأهلكَ آَمَا هَلَكَ الَّذِينَ آَذَبُوا إِن االله تَعَالَى قَالَ للَّذِينَ آَذَبُوا حِينَأَنزَلَ الْوَحْيَ شَرَّ مَا قَالَ لأحدٍ ، فَقَالَ اللَّهُ تَعَالَى : }سيَحلِفون بِاللَّه لَكُمْ إِذَا انْقَلَبْتُم إِليْهِم لتُعْرِضوا عَنْهُمْفأَعْرِضوا عَنْهُمْ إِنَّهُمْ رِجْس ومَأواهُمْ جَهَنَّمُ جَزاءً بِمَا آَانُوا يكْسبُون . يَحْلِفُونَ لَكُمْ لِتَرْضَوْا عَنْهُمْ فَإِنْ ترْضَوْاعَنْهُمْ فَإِن االله لاَ يَرْضَى عَنِ الْقَوْم الفاسقينَ { ] التوبة . [ 96 ، 95قال آَعْبٌ : آنَّا خُلِّفْنَا أَيُّهَا الثَّلاَثَةُ عَنْ أَمْر أُولِئَكَ الَّذِينَ قَبِلَ مِنْهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم حِينَ حَلَفوالَهُ ، فبايعَهُمْ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمْ ، وِأرْجَأَ رَسولُ اللَّهِ صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم أمْرَنا حَتَّى قَضَى اللَّهُ تَعَالَى فِيهِ بِذَلكَ ،قَالَ اللُّه تَعَالَى : } وَعَلَى الثَّلاَثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا { .وليْسَ الَّذي ذَآَرَ مِمَّا خُلِّفنا تَخَلُّفُنا عَن الغزو ، وَإِنََّمَا هُوَ تَخْلَيفهُ إِيَّانَا وإرجاؤُهُ أَمْرَنَا عَمَّنْ حَلَفَ لَهُ واعْتذَرَإِليْهِ فَقَبِلَ مِنْهُ . مُتَّفَقٌ عليه .وفي رواية » أَنَّ النَّبِيَّ صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم خَرَجَ في غَزْوةِ تَبُوك يَوْمَ الخميسِ ، وَآَان يُحِبُّ أَنْ يَخْرُجَ يَوْمَالخميس « .وفي رِوَايةٍ : » وَآَانَ لاَ يَقدُمُ مِنْ سَفَرٍ إِلاَّ نهَاراً في الضُّحَى . فَإِذَا قَدِم بَدَأَ بالمْسجدِ فصلَّى فِيهِ رآْعتيْنِ ثُمَّجَلَس فِيهِ

(2) Chapter: Repentance


Abdullah bin Ka'b, who served as the guide of Ka'b bin Malik (May Allah be pleased with him) when he became blind, narrated:
I heard Ka'b bin Malik (May Allah be pleased with him) narrating the story of his remaining behind instead of joining Messenger of Allah (ﷺ) when he left for the battle of Tabuk. Ka'b said: "I accompanied Messenger of Allah (ﷺ) in every expedition which he undertook excepting the battle of Tabuk and the battle of Badr. As for the battle of Badr, nobody was blamed for remaining behind as Messenger of Allah (ﷺ) and the Muslims, when they set out, had in mind only to intercept the caravan of the Quraish. Allah made them confront their enemies unexpectedly. I had the honour of being with Messenger of Allah (ﷺ) on the night of 'Aqabah when we pledged our allegiance to Islam and it was dearer to me than participating in the battle of Badr, although Badr was more well-known among the people than that. And this is the account of my staying behind from the battle of Tabuk. I never had better means and more favourable circumstances than at the time of this expedition. And by Allah, I had never before possessed two riding-camels as I did during the time of this expedition. Whenever Messenger of Allah (ﷺ) decided to go on a campaign, he would not disclose his real destination till the last moment (of departure). But on this expedition, he set out in extremely hot weather; the journey was long and the terrain was waterless desert; and he had to face a strong army, so he informed the Muslims about the actual position so that they should make full preparation for the campaign. And the Muslims who accompanied Messenger of Allah (ﷺ) at that time were in large number but no proper record of them was maintained." Ka'b (further) said: "Few were the persons who chose to remain absent believing that they could easily hide themselves (and thus remain undetected) unless Revelation from Allah, the Exalted, and Glorious (revealed relating to them). And Messenger of Allah (ﷺ) set out on this expedition when the fruit were ripe and their shade was sought. I had a weakness for them and it was during this season that Messenger of Allah (ﷺ) and the Muslims made preparations. I also would set out in the morning to make preparations along with them but would come back having done nothing and said to myself: 'I have means enough (to make preparations) as soon as I like'. And I went on doing this (postponing my preparations) till the time of departure came and it was in the morning that Messenger of Allah (ﷺ) set out along with the Muslims, but I had made no preparations. I would go early in the morning and come back, but with no decision. I went on doing so until they (the Muslims) hastened and covered a good deal of distance. Then I wished to march on and join them. Would that I had done that! But perhaps it was not destined for me. After the departure of Messenger of Allah (ﷺ) whenever I went out, I was grieved to find no good example to follow but confirmed hypocrites or weak people whom Allah had exempted (from marching forth for Jihad). Messenger of Allah (ﷺ) made no mention of me until he reached Tabuk. While he was sitting with the people in Tabuk, he said, 'What happened to Ka'b bin Malik?' A person from Banu Salimah said: "O Messenger of Allah, the (beauty) of his cloak and an appreciation of his finery have detained him.' Upon this Mu'adh bin Jabal (MatAllah be pleased with him) admonished him and said to Messenger of Allah (ﷺ): "By Allah, we know nothing about him but good.' Messenger of Allah (ﷺ), however, kept quiet. At that time he (the Prophet (ﷺ)) saw a person dressed in white and said, 'Be Abu Khaithamah.' And was Abu Khaithamah Al- Ansari was the person who had contributed a Sa' of dates and was ridiculed by the hypocrites." Ka'b bin Malik further said: "When the news reached me that Messenger of Allah (ﷺ) was on his way back from Tabuk, I was greatly distressed. I thought of fabricating an excuse and asked myself how I would save myself from his anger the next day. In this connection, I sought the counsels of every prudent member of my family. When I was told that Messenger of Allah (ﷺ) was about to arrive, all the wicked ideas vanished (from my mind) and I came to the conclusion that nothing but the truth could save me. So I decided to tell him the truth. It was in the morning that Messenger of Allah (ﷺ) arrived in Al-Madinah. It was his habit that whenever he came back from a journey, he would first go to the mosque and perform two Rak'ah (of optional prayer) and would then sit with the people. When he sat, those who had remained behind him began to put forward their excuses and take an oath before him. They were more than eighty in number. Messenger of Allah (ﷺ) accepted their excuses on the very face of them and accepted their allegiance and sought forgiveness for them and left their insights to Allah, until I appeared before him. I greeted him and he smiled and there was a tinge of anger in that. He then said to me, 'Come forward'. I went forward and I sat in front of him. He said to me, 'What kept you back? Could you not afford to go in for a ride?' I said, 'O Messenger of Allah, by Allah, if I were to sit before anybody else, a man of the world, I would have definitely saved myself from his anger on one pretext or the other and I have a gifted skill in argumentation, but, by Allah, I am fully aware that if I were to put forward before you a lame excuse to please you, Allah would definitely provoke your wrath upon me. In case, I speak the truth, you may be angry with me, but I hope that Allah would be pleased with me (and accept my repentance). By Allah, there is no valid excuse for me. By Allah, I never possessed so good means, and I never had such favourable conditions for me as I had when I stayed behind.' Thereupon, Messenger of Allah (ﷺ) said, 'This man spoke the truth, so get up (and wait) until Allah gives a decision about you.' I left and some people of Banu Salimah followed me. They said to me, 'By Allah, we do not know that you committed a sin before. You, however, showed inability to put forward an excuse before Messenger of Allah (ﷺ) like those who stayed behind him. It would have been enough for the forgiveness of your sin that Messenger of Allah (ﷺ) would have sought forgiveness for you.' By Allah, they kept on reproaching me until I thought of going back to Messenger of Allah (ﷺ) and retract my confession. Then I said to them, 'Has anyone else met the same fate?' They said, 'Yes, two persons have met the same fate. They made the same statement as you did and the same verdict was delivered in their case.' I asked, 'Who are they?' They said, 'Murarah bin Ar-Rabi' Al-'Amri and Hilal bin Umaiyyah Al- Waqifi.' They mentioned these two pious men who had taken part in the battle of Badr and there was an example for me in them. I was confirmed in my original resolve. Messenger of Allah (ﷺ) prohibited the Muslims to talk to the three of us from amongst those who had stayed behind. The people began to avoid us and their attitude towards us changed and it seemed as if the whole atmosphere had turned against us, and it was in fact the same atmosphere of which I was fully aware and in which I had lived (for a fairly long time). We spent fifty nights in this very state and my two friends confined themselves within their houses and spent (most of their) time weeping. As I was the youngest and the strongest, I would leave my house, attend the congregational Salat, move about in the bazaars, but none would speak to me. I would come to Messenger of Allah (ﷺ) as he sat amongst (people) after the Salat, greet him and would ask myself whether or not his lips moved in response to my greetings. Then I would perform Salat near him and look at him stealthily. When I finish my Salat, he would look at me and when I would cast a glance at him he would turn away his eyes from me. When the harsh treatment of the Muslims to me continued for a (considerable) length of time, I walked and I climbed upon the wall of the garden of Abu Qatadah, who was my cousin, and I had a great love for him. I greeted him but, by Allah, he did not answer to my greeting. I said to him, 'O Abu Qatadah, I adjure you in the Name of Allah, are you not aware that I love Allah and His Messenger (ﷺ)?' I asked him the same question again but he remained silent. I again adjured him, whereupon he said, 'Allah and His Messenger (ﷺ) know better.' My eyes were filled with tears, and I came back climbing down the wall.

As I was walking in the bazaars of Al-Madinah, a man from the Syrian peasants, who had come to sell food grains in Al-Madinah, asked people to direct him to Ka'b bin Malik. People pointed towards me. He came to me and delivered a letter from the King of Ghassan, and as I was a scribe, I read that letter whose purport was: 'It has been conveyed to us that your friend (the Prophet (ﷺ)) was treating you harshly. Allah has not created you for a place where you are to be degraded and where you cannot find your right place; so come to us and we shall receive you graciously.' As I read that letter I said: 'This is too a trial,' so I put it to fire in an oven. When forty days had elapsed and Messenger of Allah (ﷺ) received no Revelation, there came to me a messenger of the Messenger of Allah and said, 'Verily, Messenger of Allah (ﷺ) has commanded you to keep away from your wife.' I said, 'Should I divorce her or what else should I do?' He said, 'No, but only keep away from her and don't have sexual contact with her.' The same message was sent to my companions. So, I said to my wife: 'You better go to your parents and stay there with them until Allah gives the decision in my case.' The wife of Hilal bin Umaiyyah came to Messenger of Allah (ﷺ) and said: 'O Messenger of Allah, Hilal bin Umaiyyah is a senile person and has no servant. Do you disapprove if I serve him?' He said, 'No, but don't let him have any sexual contact with you.' She said, 'By Allah, he has no such desire left in him. By Allah, he has been in tears since (this calamity) struck him.' Members of my family said to me, 'You should have sought permission from Messenger of Allah (ﷺ) in regard to your wife. He has allowed the wife of Hilal bin Umaiyyah to serve him.' I said, 'I would not seek permission from Messenger of Allah (ﷺ) for I do not know what Messenger of Allah might say in response to that, as I am a young man'. It was in this state that I spent ten more nights and thus fifty days had passed since people boycotted us and gave up talking to us. After I had offered my Fajr prayer on the early morning of the fiftieth day of this boycott on the roof of one of our houses, and had sat in the very state which Allah described as: 'The earth seemed constrained for me despite its vastness', I heard the voice of a proclaimer from the peak of the hill Sal' shouting at the top of his voice: 'O Ka'b bin Malik, rejoice.' I fell down in prostration and came to know that there was (a message of) relief for me. Messenger of Allah (ﷺ) had informed the people about the acceptance of our repentance by Allah after he had offered the Fajr prayer. So the people went on to give us glad tidings and some of them went to my companions in order to give them the glad tidings. A man spurred his horse towards me (to give the good news), and another one from the tribe of Aslam came running for the same purpose and, as he approached the mount, I received the good news which reached me before the rider did. When the one whose voice I had heard came to me to congratulate me, I took off my garments and gave them to him for the good news he brought to me. By Allah, I possessed nothing else (in the form of clothes) except these garments, at that time. Then I borrowed two garments, dressed myself and came to Messenger of Allah (ﷺ) On my way, I met groups of people who greeted me for (the acceptance of) repentance and they said: 'Congratulations for acceptance of your repentance.' I reached the mosque where Messenger of Allah (ﷺ) was sitting amidst people. Talhah bin 'Ubaidullah got up and rushed towards me, shook hands with me and greeted me. By Allah, no person stood up (to greet me) from amongst the Muhajirun besides him." Ka'b said that he never forgot (this good gesture of) Talhah. Ka'b further said: "I greeted Messenger of Allah (ﷺ) with 'As-salamu 'alaikum' and his face was beaming with pleasure. He (ﷺ) said, 'Rejoice with the best day you have ever seen since your mother gave you birth. 'I said: 'O Messenger of Allah! Is this (good news) from you or from Allah?' He said, 'No, it is from Allah.' And it was common with Messenger of Allah (ﷺ) that when ever he was happy, his face would glow as if it were a part of the moon and it was from this that we recognized it (his delight). As I sat before him, I said, I have placed a condition upon myself that if Allah accepts my Taubah, I would give up all of my property in charity for the sake of Allah and His Messenger (ﷺ)!' Thereupon Messenger of Allah (ﷺ) said, 'Keep some property with you, as it is better for you.' I said, 'I shall keep with me that portion which is in Khaibar'. I added: 'O Messenger of Allah! Verily, Allah has granted me salvation because of my truthfulness, and therefore, repentance obliges me to speak nothing but the truth as long as I am alive." Ka'b added: "By Allah, I do not know anyone among the Muslims who has been granted truthfulness better than me since I said this to the Prophet (ﷺ). By Allah! Since the time I made a pledge of this to Messenger of Allah (ﷺ), I have never intended to tell a lie, and I hope that Allah would protect me (against telling lies) for the rest of my life. Allah, the Exalted, the Glorious, revealed these Verses:

'Allah has forgiven the Prophet (ﷺ), the Muhajirun (Muslim Emigrants who left their homes and came to Al-Madinah) and the Ansar (Muslims of Al- Madinah) who followed him (Muhammad (ﷺ)) in the time of distress (Tabuk expedition), after the hearts of a party of them had nearly deviated (from the Right Path), but He accepted their repentance. Certainly, He is unto them full of kindness, Most Merciful. And (He did forgive also) the three who did not join [the Tabuk expedition and whose case was deferred (by the Prophet (ﷺ)) for Allah's Decision] till for them the earth, vast as it is, was straitened and their ownselves were straitened to them, and they perceived that there is no fleeing from Allah, and no refuge but with Him. Then, He forgave them (accepted their repentance), that they might beg for His Pardon [repent (unto Him)]. Verily, Allah is the One Who forgives and accepts repentance, Most Merciful. O you who believe! Be afraid of Allah, and be with those who are true (in word and deeds)." (9:117,118).

Ka'b said: "By Allah, since Allah guided me to Islam, there has been no blessing more significant for me than this truth of mine which I spoke to Messenger of Allah (ﷺ), and if I were to tell a lie I would have been ruined as were ruined those who had told lies, for Allah described those who told lies with the worst description He ever attributed to anybody else, as He sent down the Revelation:

They will swear by Allah to you (Muslims) when you return to them, that you may turn away from them. So turn away from them. Surely, they are Rijsun [i.e., Najasun (impure) because of their evil deeds], and Hell is their dwelling place - a recompense for that which they used to earn. They (the hypocrites) swear to you (Muslims) that you may be pleased with them, but if you are pleased with them, certainly Allah is not pleased with the people who are Al- Fa'siqun (rebellious, disobedient to Allah)". (9:95,96)

Ka'b further added: "The matter of the three of us remained pending for decision apart from the case of those who had made excuses on oath before Messenger of Allah (ﷺ) and he accepted those, took fresh oaths of allegiance from them and supplicated for their forgiveness. The Prophet (ﷺ) kept our matter pending till Allah decided it. The three whose matter was deferred have been shown mercy. The reference here is not to our staying back from the expedition but to his delaying our matter and keeping it pending beyond the matter of those who made their excuses on oath which he accepted".

[Al- Bukhari and Muslim]

Another version adds: "Messenger of Allah (ﷺ) set out for Tabuk on Thursday. He used to prefer to set out on journey on Thursday." Another version says: "Messenger of Allah (ﷺ) used to come back from a journey in the early forenoon and went straight to the mosque where he would perform two Rak'ah prayer. Afterwards he would seat himself there".

Commentary: This Hadith contains many aspects of warnings and advices, some of which are given below:
1. A Muslim should always speak the truth even if he has to face troubles and turmoil for it because the Pleasure of Allah lies in truth.
2. One must avoid at all costs the attitude of hypocrites because eventually one is ruined by it.
3. In spite of hardship and stringency, one must take part in Jihad.
4. For the admonition and exhortation of others, it gives justification for the economic boycott of even sincere Muslims who adopt wrong methods.
5. One must face with forbearance the difficulties which come in the way of Deen.
6. It is not praiseworthy that one gives in charity all the property he has. One must keep what is needed for the lawful needs.
7. It is lawful to give something by way of gift and reward to a person who congratulates in the events of happiness.
8.The ability to seek pardon is a gift from Allah for which one must express gratitude to Him.
9.Any promise that one makes must be kept, etc. etc.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ