পরিচ্ছেদঃ ১২/৬৪. সন্তানের সম্পদে পিতার হক
১/২২৯০। আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যা ভোগ-ব্যবহার করো তার মধ্যে উত্তম হলো তোমাদের নিজস্ব শ্রমের উপার্জন। আর তোমাদের সন্তানও তোমাদের উপার্জনের অন্তর্ভুক্ত।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। হাদিসটি সহীহ কিন্তু উমারাহ বিন উমায়র এর চাচার জাহালাতের কারণে সানাদটি দুর্বল। কেননা তাকে কেউ তাওসীক করেন নি (সিকাহ বলেনি)।
بَاب مَا لِلرَّجُلِ مِنْ مَالِ وَلَدِهِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَمَّتِهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ أَطْيَبَ مَا أَكَلْتُمْ مِنْ كَسْبِكُمْ وَإِنَّ أَوْلاَدَكُمْ مِنْ كَسْبِكُمْ " .
It was narrated from 'Aishah that the Messenger of Allah (ﷺ) said:
"The best of your provision is what you earn, and your children are part of what you earn. "
পরিচ্ছেদঃ ১২/৬৪. সন্তানের সম্পদে পিতার হক
৩/২২৯১। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি বললো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার সম্পদও আছে, সন্তানও আছে। আমার পিতা আমার সম্পদের মুখাপেক্ষী। তিনি বলেনঃ তুমি ও তোমার সম্পদ সবই তোমার পিতার।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। এই হাদীসটির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সন্তানের উপার্জিত মাল হতে পিতা ভক্ষণ করতে পারে; কেননা প্রকৃত ইসলামের শিক্ষার আলোকে সন্তানের উপার্জিত মাল পিতার পবিত্র উপার্জিত মালের অন্তর্ভুক্ত সম্পদ বলেই বিবেচিত। তবে জেনে রাখতে হবে যে, ছেলের উপার্জিত মালের প্রকৃত মালিক তার পিতাকে করা হয় নি। যেহেতু ছেলের উপার্জিত মালের প্রকৃত মালিক হলো স্বয়ং ছেলে নিজেই। তাই তাকেই তার মালের জাকাতও প্রদান করতে হবে এবং সে মৃত্যুবরণ করলে তার ত্যাজ্য সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বন্টন করতে হবে। অতএব এই হাদীসটি ওই সমস্ত পিতামাতার প্রতি প্রযোজ্য, যে সমস্ত পিতামাতা প্রকৃতপক্ষে বিত্তহীন বা অভাবগ্রস্ত। তাই বিত্তহীন পিতামাতার ভরণপোষণ বহন করা সন্তানের অপরিহার্য একটি কর্তব্য।
২। সন্তানের প্রয়োজনীয় সম্পদ পিতার জন্য নেওয়া জায়েজ নয়। কিংবা ছেলের ওই সমস্ত সম্পদ পিতা নিতে পারবে না, যে সমস্ত সম্পদ নিলে ছেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। অনুরূপভাবে পিতা একটি ছেলের সম্পদ নিয়ে অকারণে অন্য আরেকটি ছেলেকে প্রদান করতে পারে না। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:
(وَلِأَبَوَيْهِ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِنْ كَانَ لَهُ وَلَدٌ؛ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ وَلَدٌ وَوَرِثَهُ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ الثُّلُثُ) ...، سورة النساء، جزء من الآية 11.
ভাবার্থের অনুবাদ: “মৃতের পিতামাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্য ত্যাজ্য সম্পত্তির মধ্যে মাত্র ছয় ভাগের এক ভাগ রয়েছে, যদি মৃতের পুত্র থাকে তবেই। তাই যদি মৃতের পুত্র না থাকে এবং পিতামাতাই ওয়ারিস ও উত্তরাধিকারী হয়, তাহলে মাতা পাবে মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ”। ...
(সূরা সুরা আন্নিসা, আয়াত নং ১১ এর অংশবিশেষ)।
সুতরাং এই আয়াতটির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ছেলের উপার্জিত মালের প্রকৃত মালিক স্বয়ং ছেলে নিজেই, তার পিতা তার মালের প্রকৃত মালিক নয়। আর উত্তরাধিকারী হিসেবে পিতা সেই পরিমাণে ছেলের ত্যাজ্য মালের অধিকারী হতে পারবে, যেই পরিমাণের কথা এই আয়াতের মধ্যে নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই নির্দিষ্ট অংশ ছাড়া পিতার জন্য অন্য কোনো অংশ নেই। তাই এই হাদীসটির ভাবার্থ হলো এই যে, পিতা যদি বৈভবশালী না হয়, তাহলে সে তার ছেলের মাল থেকে প্রয়োজন মত কিছু মাল নিতে পারে এমন একটি পদ্ধতিতে, যেই পদ্ধতিতে ছেলের ক্ষতি সাধন হবে না।
৩। এই হাদীসটির মধ্যে যে লাম অক্ষরটি ব্যবহার করা হয়েছে لأبيك শব্দটির মধ্যে, সেই লাম অক্ষরটি পিতাকে তার ছেলের মালের মালিকানা প্রদান করার জন্য ব্যবহার করা হয় নি। কিন্তু ছেলের মালের দ্বারা পিতাকে তার প্রয়োজন বোধে এমন পদ্ধতিতে উপকৃত হওয়ার অধিকার প্রদান করা হয়েছে, যেই পদ্ধতিতে ছেলের কোনো প্রকারের ক্ষতি সাধন হবে না। এর প্রমাণ হলো এই যে, ছেলে যখন মৃত্যুবরণ করবে, তখন তার উত্তরাধিকারী হবে তার সন্তানসন্ততি, তার স্ত্রী, তার মাতা এবং তার পিতা । তাই এখানে বলা যায় যে, যদি ছেলের মালের মালিক তার পিতাই হতো, তাহলে তার পিতা ছাড়া অন্য কোনো মানুষ তার মালের উত্তরাধিকারী হতে পারতো না, সমস্ত মালের মালিক কেবল তার পিতাই হয়ে যেত, কিন্তু তা হয় নি বরং তার উত্তরাধিকারী হিসেবে অন্য লোকও নির্দিষ্ট রয়েছে।
بَاب مَا لِلرَّجُلِ مِنْ مَالِ وَلَدِهِ
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَجُلاً، قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ لِي مَالاً وَوَلَدًا وَإِنَّ أَبِي يُرِيدُ أَنْ يَجْتَاحَ مَالِي فَقَالَ " أَنْتَ وَمَالُكَ لأَبِيكَ " .
It was narrated from Jabir bin 'Abdullah that a man said:
"O Messenger of Allah, I have wealth and a son, and my father wants to take all my wealth." He said: "You and your wealth belong to your father."
পরিচ্ছেদঃ ১২/৬৪. সন্তানের সম্পদে পিতার হক
৪/২২৯২। আমর ইবনে শুআইব (রহঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললো, আমার পিতা আমার সম্পদ শেষ করে দিয়েছে প্রায়। তিনি বলেনঃ তুমি ও তোমার সম্পদ তোমার পিতার জন্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ তোমাদের সন্তান তোমাদের উত্তম উপার্জন। অতএব তোমরা তাদের সম্পদ থেকে ভোগ করতে পারো।
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
بَاب مَا لِلرَّجُلِ مِنْ مَالِ وَلَدِهِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، وَيَحْيَى بْنُ حَكِيمٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَنْبَأَنَا حَجَّاجٌ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ إِنَّ أَبِي اجْتَاحَ مَالِي . فَقَالَ " أَنْتَ وَمَالُكَ لأَبِيكَ " . وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِنَّ أَوْلاَدَكُمْ مِنْ أَطْيَبِ كَسْبِكُمْ فَكُلُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ " .
It was narrated from 'Amr bin Shu'aib, from his father, that his grandfather said:
"A man came to the Messenger of Allah (ﷺ), and said: 'My father is taking all my wealth.' He said: 'You and your wealth belong to your father.' And the Messenger of Allah (ﷺ) said: 'Your children are among the best of your earnings, so eat from your wealth.’”