পরিচ্ছেদঃ ১০) বিদ্বান হওয়া ও কুরআন সম্পর্কে জ্ঞানী হওয়ার দাবী করার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১৩৪. (সহীহ্) উবাই বিন কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
’’একদা মূসা (আঃ) বনী ইসরাঈলের সামনে বক্তৃতা করছিলেন। এমন সময় তাঁকে প্রশ্ন করা হল: সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষ কে? তিনি বললেন, আমি সবচেয়ে বেশী জ্ঞানী। একথার জন্য আল্লাহ্ তাঁকে তিরস্কার করলেন। কেননা তিনি জ্ঞানকে আল্লাহর দিকে সম্পর্কীত করেননি। (অর্থাৎ বলেননি যে, আল্লাহই ভাল জানেন কে বেশী জ্ঞানী) আল্লাহ্ তাঁর কাছে ওহী করলেন: আমার জনৈক বান্দা ’দু’সমুদ্রের সঙ্গমস্থলে’ আছে সে তোমার চেয়ে বেশী জ্ঞানী। তিনি বললেন, হে আমার পালনকর্তা! কিভাবে আমি তার নিকট পৌঁছতে পারি? তাঁকে বলা হল: থলের মধ্যে একটি মাছ নিয়ে বের হয়ে পড়। যে স্থানে পৌঁছার পর মাছটি নিরুদ্দেশ হয়ে যাবে সেখানেই তাকে পাওয়া যাবে। (এরপর মূসার সথে খিযিরের সাক্ষাতের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন:) তাঁরা উভয়ে সমুদ্রের পাড় ধরে চলতে লাগলেন। তাঁরা নৌকা পাচ্ছিলেন না। ইতোমধ্যে একটি নৌকা সেখান দিয়ে অতিক্রম করছিল। তাঁরা নৌকায় আরোহনের ব্যাপারে কথাবার্তা বললেন। মাঝিরা খিযিরকে চিনে ফেলল। তাই কোন পারিশ্রমিক ছাড়াই তাঁদেরকে নৌকায় তুলে নিল। ইতোমধ্যে একটি চড়ুই পাখী নৌকার একপ্রান্তে এসে বসল এবং সমুদ্র থেকে এক বা দু’চঞ্চু পানি তুলে নিল। খিযির বললেন: হে মূসা (আঃ)! আমার জ্ঞান ও আপনার জ্ঞান উভয়ে মিলে আল্লাহর জ্ঞানের মোকাবেলায় এমন তুলনাও হয় না, যেমনটি এ চড়ুইয়ের চঞ্চুর পানির সাথে রয়েছে সমুদ্রের পানির।’’ এরপর তিনি হাদীছটি পূর্ণরূপে বর্ণনা করেন।
অপর বর্ণনায় আছে:
একদা মূসা (আঃ) বনী ইসরাঈলের এক জামাত লোকের মাঝ দিয়ে চলছিলেন। এমন সময় জনৈক লোক এসে তাঁকে বললঃ আপনার চেয়ে অধিক জ্ঞানী এমন কাউকে কি আপনি জানেন? মূসা বললেন: না। তখন আল্লাহ্ মূসার কাছে ওহী করলেনঃ বরং আমার বান্দা খিযির (তোমার চেয়ে বেশী জ্ঞানী)। তখন মূসা (আঃ) তাঁর কাছে যাওয়ার উপায় সম্পর্কে আল্লাহর কাছে জানতে চাইলেন...।’’
(বুখারী ১২২ ও মুসলিম ২৩৮০ প্রমূখ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترهيب من الدعوى في العلم والقرآن
(صحيح) عن أبي بن كعب رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال قَامَ مُوسَى عَلَيْهِ السَّلَام خَطِيبًا فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ فَسُئِلَ أَيُّ النَّاسِ أَعْلَمُ فَقَالَ أَنَا أَعْلَمُ قَالَ فَعَتَبَ اللَّهُ عَلَيْهِ إِذْ لَمْ يَرُدَّ الْعِلْمَ إِلَيْهِ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ أَنَّ عَبْدًا مِنْ عِبَادِي بِمَجْمَعِ الْبَحْرَيْنِ هُوَ أَعْلَمُ مِنْكَ قَالَ يا رَبِّ كَيْفَ بِهِ فَقِيلَ لَهُ احْمِلْ حُوتًا فِي مِكْتَلٍ فإذَا فَقَدْتَهُ فَهُوَ ثَمَّ ... فذكر الحديث في اجتماعه بالخضر إلى أن قال فَانْطَلَقَا يَمْشِيَانِ عَلَى سَاحِلِ الْبَحْرِ لَيْسَ لَهُمَا سَفِينَةٌ فَمَرَّتْ بِهِمَا سَفِينَةٌ فَكَلَّمُوهُمْ أَنْ يَحْمِلُوهُمَا فَعُرِفَ الْخَضِرُ فَحَمَلُوهُمَا بِغَيْرِ نَوْلٍ فَجَاءَ عُصْفُورٌ فَوَقَعَ عَلَى حَرْفِ السَّفِينَةِ فَنَقَرَ نَقْرَةً أَوْ نَقْرَتَيْنِ فِي الْبَحْرِ فَقَالَ الْخَضِرُ يَا مُوسَى مَا نَقَصَ عِلْمِي وَعِلْمُكَ مِنْ عِلْمِ اللَّهِ إِلَّا كَنَقْرَةِ هَذَا الْعُصْفُورِ فِي هذا الْبَحْرِ. فذكر الحديث بطوله
وفي رواية: بَيْنَمَا مُوسَى يَمْشِيْ فِي مَلَإٍ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ لَهُ هَلْ تَعْلَمُ أَحَدًا أَعْلَمَ مِنْكَ قَالَ مُوسَى لَا فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَى مُوسَى بَلْ عَبْدُنَا الْخَضِرُ ، فَسَأَلَ مُوسَى السَّبِيلَ إِلَيهِ.
الحديث رواه البخاري ومسلم وغيرهما
পরিচ্ছেদঃ ১০) বিদ্বান হওয়া ও কুরআন সম্পর্কে জ্ঞানী হওয়ার দাবী করার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১৩৫. (হাসান লি গাইরিহী) ওমার বিন খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
’’ইসলাম বিজয় লাভ করবে। অতঃপর এমন একটা পর্যায় আসবে যখন ব্যবসায়িকগণ সমুদ্র পথে সফর করবে, অশ্বারোহী বাহিনী আল্লাহর পথে (লড়াইয়ে) নিমগ্ন হবে। তারপর একদল লোক বের হবে যারা কুরআন পড়বে এবং বলবেঃ কে আছে আমাদের চেয়ে বেশী কুরআন পড়তে পারে? কে আছে আমাদের চেয়ে অধিক জ্ঞানী? কে আমাদের চেয়ে অধিক বুঝে?
এরপর তিনি (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদেরকে বললেনঃ ’’ওদের মধ্যে কি কোন কল্যাণ আছে?’’
তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল অধিক জ্ঞান রাখেন।
তিনি বললেনঃ ’’ওরা তোমাদের মধ্যে থেকে এই উম্মতেরই অন্তর্ভুক্ত। ওরা জাহান্নামের ইন্ধন।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ত্বাবরানী [আওসাত গ্রন্থে] ৬২৪২ ও বায্যার ১৭৩)
الترهيب من الدعوى في العلم والقرآن
) (حسن لغيره) وَعَنْ عمر بن الخطاب رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : يظهر الإسلام حتى تختلف التجار في البحر وحتى تخوض الْخَيْلُ فِي سَبِيلِ اللهِ ، ثُمَّ يَظْهَرُ قَوْمٌ يَقْرَؤُونَ الْقُرْآنَ ، يَقُولُونَ : مَنْ أَقْرَأُ مِنَّا ؟ مَنْ أَعْلَمُ مِنَّا ؟ من أفقه منا؟ ثُمَّ قال لاصحابه: هَلْ فِي أُولَئِكَ مِنْ خَيْرٍ؟ قَالُوْا : اللهُ وَرَسُوْلُهُ أعْلَمُ ، قَالَ : أُولَئِكَ منكم مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ ، أُولَئِكَ هم وَقُودُ النَّارِ.. رواه الطبراني في الأوسط والبزار
পরিচ্ছেদঃ ১০) বিদ্বান হওয়া ও কুরআন সম্পর্কে জ্ঞানী হওয়ার দাবী করার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১৩৬. (হাসান লি গাইরিহী) উক্ত হাদীছটি আবু ইয়া’লা, বায্যার ও ত্বাবরানী আব্বাস বিন আবদুল মুত্তালিব থেকে বর্ণনা করেছেন।
الترهيب من الدعوى في العلم والقرآن
-
পরিচ্ছেদঃ ১০) বিদ্বান হওয়া ও কুরআন সম্পর্কে জ্ঞানী হওয়ার দাবী করার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
১৩৭. (হাসান লি গাইরিহী) আবদুল্লাহ বিন আব্বাসের মাতা উম্মে ফাযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করে বলেন: একদা কোন এক রাতে তিনি মক্কায় দন্ডায়মান হয়ে বললেনঃ ’’হে আল্লাহ্ আমি কি পৌঁছিয়েছি?’’ কথাটি তিনি তিনবার বললেন।
তখন ওমার বিন খাত্তাব দাঁড়িয়ে গেলেন। তিনি ছিলেন অধিক বিনয়ী। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ্! হ্যাঁ, আপনি পৌঁছিয়েছেন, আপনি উদ্বুদ্ধ করেছেন, জিহাদ করেছেন এবং নসীহত করেছেন।
তখন তিনি বললেনঃ
’’অবশ্যই ইসলাম বিজয় লাভ করবে, এমনকি কুফরীকে তার ঠিকানায় ফেরত পাঠানো হবে। নাবিকগণ ইসলামের বাণী নিয়ে সাগর পাড়ি দিবে। এমন এক যুগ আসবে যখন মানুষ কুরআন শিক্ষা করবে। তারা কুরআন শিক্ষা করবে ও পাঠ করবে তারপর বলবেঃ আমরা পড়লাম ও জানলাম। অতএব আমাদের চেয়ে উত্তম আর কে আছে? এসকল লোকের মধ্যে কি কোন কল্যাণ আছে?
তাঁরা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! ওরা কারা?
তিনি বললেনঃ ’’ওরা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত। ওরা হবে জাহান্নামের ইন্ধন।’’
(ত্বাবরানী [কাবীর গ্রন্থে] ১৩০১৯ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
الترهيب من الدعوى في العلم والقرآن
(حسن لغيره) وَعَنْ أُمِّ الْفَضْلِ أم عَبْدِ اللَّهِ بن عَبَّاسِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا, عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , أَنَّهُ قَامَ لَيْلَةً بِمَكَّةَ مِنَ اللَّيْلِ , فَقَالَ:اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ؟ ثَلاثَ مَرَات ,
فَقَامَ عُمَرُ بن الْخَطَّابِ وَكَانَ أَوَّاهًا , فَقَالَ: اللَّهُمَّ نَعَمْ , وَحَرَّضْتَ , وَجَهَدْتَ , وَنَصَحْتَ. فَقَالَ:
لَيَظْهَرَنَّ الإِيمَانُ حَتَّى يَرُدَّ الْكُفْرَ إِلَى مَوَاطِنِهِ , وَلَيُخَاضَنَّ الْبِحَارُ بِالإِسْلامِ , وَلَيَأْتِيَنَّ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ يَتَعَلَّمُونَ فِيهِ الْقُرْآنَ، يَتَعَلَّمُونَهُ وَيْقَرَءُونَهُ , ثُمَّ يَقُولُونَ قَدْ قَرَأْنَا وَعَلِمْنَا , فَمَنَ ذَا الَّذِي هُوَ خَيْرٌ مِنَّا؟ فَهَلْ فِي أُولَئِكَ مِنْ خَيْرٍ؟ قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ, مَنْ أُولَئِكَ؟ قَالَ:أُولَئِكَ مِنْكُمْ , وَأُولَئِكَ هُمْ وَقُودُ النَّارِ. رواه الطبراني في الكبير