পরিচ্ছেদঃ যে সব আমলের মাধ্যমে দুনিয়ায় বিপদমুক্তির আশা করা যায়
৯৬৭. আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের পূর্ববর্তী জাতীর তিনজন লোক তাদের পরিবারের জীবিকা অনুসন্ধানের জন্য বের হন, অতঃপর তাদেরকে বৃষ্টি পেয়ে বসে ফলে তারা একটি পাহাড়ে আশ্রয় নেন অতঃপর তাদের উপর একটি পাথর পড়ে যায়। তখন তারা একে অন্যকে বললো, “আমাদের পদচিহ্নগুলো মুছে গেছে, আমাদের উপর পাথর এসে পড়েছে, আর তোমাদের অবস্থান আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না, অতএব তোমরা তোমাদের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আমলের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে দু‘আ করো।
অতঃপর তাদের একজন বললো, “হে আল্লাহ, যদি আপনি জানেন যে, একজন নারী আমার খুবই প্রিয় ছিল, অতঃপর আমি তার কাছে (খারাপ) প্রস্তাব করি, কিন্তু সে তাতে অস্বীকৃতি জানায়, অতঃপর আমি তার জন্য বিনিময় নির্ধারণ করি। অতঃপর যখন সে নিজেকে আমার কাছে সোপর্দ করে, তখন আমি তাকে ছেড়ে (কুকর্ম না করেই) চলে আসি। যদি আপনি জানেন যে, আমি সেই কাজটি আপনার রহমতের আশায় এবং আপনার ভয়ে করেছি, তবে আমাদের থেকে বিপদ উঠিয়ে নিন। ফলে পাথরের এক তৃতীয়াংশ সরে যায়।
তাদের আরেকজন বললো, “হে আল্লাহ, যদি আপনি জানেন যে, আমার পিতামাতা ছিলেন আর আমি তাদেরকে তাদের পাত্রে দুধ পান করাতাম। অতঃপর একদিন তাদের কাছে দুধ নিয়ে আসলাম এমন অবস্থায় যে তারা ঘুমিয়ে গেছেন, তখন আমি তাদের জাগ্রত না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলাম। অতঃপর যখন তারা জাগ্রত হলেন, তখন তারা দুধ পান করেন। যদি আপনি জানেন যে, আমি সেই কাজটি আপনার রহমতের আশায় এবং আপনার ভয়ে করেছি, তবে আমাদের থেকে বিপদ উঠিয়ে নিন। ফলে পাথরের আরেক তৃতীয়াংশ সরে যায়।
তৃতীয় জন বললো, “ হে আল্লাহ, যদি আপনি জানেন যে, আমি একদিন একজন মজুর নিয়োগ করেছিলাম, সে আমার জন্য অর্ধেক দিন কাজ করে, অতঃপর আমি তাকে তার মজুরী দিয়ে দেই কিন্তু সে তাতে অনীহা প্রকাশ করে এবং তা গ্রহন করে না। অতঃপর তা আমি কাজে লাগিয়ে বৃদ্ধি করতে থাকি, ফলে তা বিশাল সম্পদে পরিণত হয়ে যায়। তারপর সে ব্যক্তি আমার কাছে তার মাল চাইতে আসে, আমি তাকে বলি, “তুমি এসব সম্পদের সবগুলোই নিয়ে যাও “ আমি যদি চাইতাম, তবে তাকে শুধু মজুরীটুকুই দিতে পারতাম। যদি আপনি জানেন যে, আমি সেই কাজটি আপনার রহমতের আশায় এবং আপনার ভয়ে করেছি, তবে আমাদের থেকে বিপদ উঠিয়ে নিন। ফলে পুরো পাথরটি সরে যায়। আর তারা (গুহা থেকে) বের হয়ে হেঁটে চলে যায়।”[1]
আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বক্তব্য “فَوَفَّرْتُهَا عَلَيْهِ (অতঃপর আমি তা তার উপর বৃদ্ধি করি) এর অর্থ হলো فَوَفَّرْتُهَا لَهُ (আমি তার জন্য তা বৃদ্ধি করি) আরবরা তাদের ভাষায় عَلَيْهِ (তার উপর) কে لَهُ (তার জন্য ) এই অর্থে ব্যবহার করে থাকে।
সা‘ঈদ বিন হাসান মদীনায় হাদীস শ্রবণ করেন। কেননা তিনি মদীনায় বেড়ে উঠেছেন আর হাসান শৈশব কালে মদীনা থেকে চলে যাওয়ার কারণে তার কাছ থেকে হাদীস শ্রবণ করেননি।”
আল্লামা শুআইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (আয য‘ঈফা: ৬৫০৫ ।)
ذِكْرُ الْخِصَالِ الَّتِي يُرْتَجَى لِلْمَرْءِ بِاسْتِعْمَالِهَا زَوَالُ الْكَرْبِ فِي الدُّنْيَا عَنْهُ
967 - أَخْبَرَنَا الْفَضْلُ بْنُ الْحُبَابِ الْجُمَحِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مَرْزُوقٍ قَالَ: حَدَّثَنَا عِمْرَانُ الْقَطَّانُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي الْحَسَنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (خَرَجَ ثَلَاثَةٌ فِيمَنْ كان قبلكم يرتادون لأهلهم فأصابتهم السماء فلجأوا إِلَى جَبَلٍ فَوَقَعَتْ عَلَيْهِمْ صَخْرَةٌ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ: عَفَا الْأَثَرُ وَوَقَعَ الْحَجَرُ وَلَا يَعْلَمُ مَكَانَكُمْ إِلَّا اللَّهُ ادْعُوا اللَّهَ بِأَوْثَقِ أَعْمَالِكُمْ فَقَالَ أَحَدُهُمُ: اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَتِ امْرَأَةٌ تُعْجِبُنِي فَطَلَبْتُهَا فَأَبَتْ عَلَيَّ فَجَعَلْتُ لَهَا جُعْلًا فَلَمَّا قرَّبت نَفْسَهَا تَرَكْتُهَا فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي إِنَّمَا فَعَلْتُ ذَلِكَ رَجَاءَ رَحْمَتِكَ وَخَشْيَةَ عَذَابِكَ فَافْرُجْ عَنَّا فَزَالَ ثُلُثُ الْجَبَلِ فَقَالَ الْآخَرُ: اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَ لِي وَالِدَانِ وَكُنْتُ أَحْلُبُ لَهُمَا في إنائهما فإذا أتيهما وَهُمَا نَائِمَانِ قُمْتُ قَائِمًا حَتَّى يَسْتَيْقِظَا فَإِذَا اسْتَيْقَظَا شَرِبَا فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي فَعَلْتُ ذَلِكَ رَجَاءَ رَحْمَتِكَ وَخَشْيَةَ عَذَابِكَ فَافْرُجْ عَنَّا فَزَالَ ثُلُثُ الْحَجَرِ فَقَالَ الثَّالِثُ: اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي اسْتَأْجَرْتُ أَجِيرًا يَوْمًا فَعَمِلَ لِي نِصْفَ النَّهَارِ فَأَعْطَيْتُهُ أَجْرَهُ فَتَسَخَّطَهُ وَلَمْ يَأْخُذْهُ فوفَّرتها عَلَيْهِ حَتَّى صَارَ مِنْ كُلِّ الْمَالِ ثُمَّ جَاءَ يَطْلُبُ أَجْرَهُ فَقُلْتُ: خُذْ هَذَا كُلَّهُ وَلَوْ شئتُ لَمْ أُعطه إِلَّا أَجْرَهُ فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي فَعَلْتُ ذَلِكَ رَجَاءَ رَحْمَتِكَ وَخَشْيَةَ عَذَابِكَ فَافْرُجْ عَنَّا قَالَ: فزال الحجر وخرجوا يتماشون)
الراوي : أَبُو هُرَيْرَةَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 967 | خلاصة حكم المحدث:. صحيح.
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ ـ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ـ: قَوْلُهُ (فَوَفَّرْتُهَا عَلَيْهِ) بِمَعْنَى قَوْلِهِ: فَوَفَّرْتُهَا لَهُ وَالْعَرَبُ فِي لُغَتِهَا تُوقِعُ (عَلَيْهِ) بِمَعْنَى (لَهُ)
وَسَعِيدُ بْنُ أَبِي الْحَسَنِ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ بِالْمَدِينَةِ لِأَنَّهُ بِهَا نَشَأَ وَالْحَسَنُ لَمْ يَسْمَعْ مِنْهُ لخروجه عنها في يفاعته.