পরিচ্ছেদঃ ১২. (وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمْ الْكَافِرُونَ) এর তাফসীর

৫৩৯৯. হুসায়ন ইবন হুরায়স (রহঃ) ... ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ঈসা ইবন মারয়াম (আঃ)-এর পর এমন কয়েকজন বাদশাহ ছিলেন, যারা তাওরাত এবং ইঞ্জিলে পরিবর্তন সাধন করেন। তাদের মধ্যে এমন কিছু ঈমানদার লোকও ছিলেন, যারা তাওরাত পাঠ করতেন। তখন তাদের বাদশাহদেরকে বলা হলো—এ সকল লোক আমাদেরকে যে গালি দিচ্ছে, এর চেয়ে কঠিন গালি আর কি হতে পারে? তারা পাঠ করেঃ “যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান দ্বারা মীমাংসা করে না, তারা কাফির। তাদের পড়ার মধ্যে থাকে এই আয়াত এবং ঐ সকল আয়াত, যাতে আমাদের কর্মকাণ্ডের দোষ প্রকাশ পায়। তাদেরকে আহবান করুন, তারা যেন আমরা যেরূপ পাঠ করি, সেরূপ পাঠ করে, আর আমরা যেরূপ ঈমান এনেছি, সেরূপ ঈমান আনে।

বাদশাহ তাদের সকলকে ডেকে একত্র করলেন এবং তাদের সামনে পেশ করলেন যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে, যদিনা তারা তাওরাত ও ইঞ্জিল পাঠ ত্যাগ করে, তবে ঐ সকল আয়াত ব্যতীত, যা পরিবর্তন হয়েছে। তারা বললোঃ এর দ্বারা তোমাদের উদ্দেশ্য কী? আমাদেরকে আমাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দাও। তাদের একদল বললোঃ আমাদের জন্য একটি স্তম্ভ তৈরি কর, এরপর আমাদেরকে তাতে চড়িয়ে দাও এবং আমাদেরকে এমন কিছু দান কর, যা দ্বারা আমরা আমাদের খাদ্য ও পানীয় উঠিয়ে নিতে পারি, তা হলে আমরা আর তোমাদের নিকট আসবো না।

তাদের আর একদল বললোঃ আমাদেরকে ছেড়ে দাও, আমরা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াবে এবং বন্য পশুর ন্যায় আহার ও পান করবো। আর এরপর যদি তোমাদের দেশে আমাদেরকে পাও, তবে আমাদেরকে হত্যা করো। তাদের আর একদল বললোঃ মরুভূমিতে আমাদের জন্য গির্জা তৈরি করে দাও। আমরা কূপ খনন করবো এবং তরি-তরকারি ফলাব, আমরা তোমাদের কাছেও আসবাে না এবং তোমাদের পাশ দিয়ে কোথাও যাব না। আর এমন কোন গোত্র ছিল না, যাতে তাদের আত্মীয়-স্বজন না ছিল। পরে তারা এরূপই করলো। তখন আল্লাহ্ তা’আলা আয়াত নাযিল করেনঃ “তারা নিজেরাই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য সন্যাসবাদ প্রবর্তন করেছিল। আমি তাদেরকে এর বিধান দেইনি, অথচ তারা তাও যথাযথভাবে পালন করেনি” (হাদীদঃ ২৭)।

অন্যান্য লোকেরা বলতে লাগলোঃ আমরাও ইবাদত-বন্দেগী করব, যেমন অমুক করে থাকে, আমরাও ভ্রমণ করব, যেমন অমুক ভ্রমণ করে থাকে এবং আমরাও গির্জা তৈরি করব, যেমন অমুক লোকেরা করে থাকে। অথচ তারা শিরকে পতিত ছিল, তারা যাদের অনুকরণ করছিল, তাদের ঈমান সম্বন্ধেও অবহিত ছিল না। যখন আল্লাহ্ তা’আলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রেরণ করলেন, তখন তাদের মধ্যে কিছু লোক অবশিষ্ট ছিল। তাদের মধ্যে যে ইবাদতখানায় ছিল, সে ইবাদতখানা হতে নেমে আসলো, ভ্রমণকারী তার ভ্রমণ হতে ফিরে আসলো, গির্জাবাসী তার গিজা হতে নেমে আসলো। তারা তাঁর প্রতি ঈমান আনলো এবং তাকে বিশ্বাস করলো।

এ সম্পর্কে আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, “হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনয়ন কর, তা হলে তিনি তোমাদেরকে তাঁর রহমতে দ্বিগুণ দান করবেন (হাদীদঃ ২৮)। এক তো ঈসা (আঃ)-এর উপর ঈমান আনয়ন ও তাওরাত-ইঞ্জিলে বিশ্বাস স্থাপনের কারণে। আর দ্বিতীয়ত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর ঈমান আনা এবং তাঁকে সত্যবাদী জানার কারণে। আল্লাহ্ বলেন, “তিনি তোমাদেরকে দেবেন আলো, যার সাহায্যে তোমরা চলবে [অর্থাৎ কুরআন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ] যেন আহলে কিতাব জানতে পারে, আল্লাহর সামান্যতম অনুগ্রহের উপরও তাদের কোন অধিকার নেই। (হাদীদঃ ২৮), অর্থাৎ যেই কিতাবীগণ তোমাদের অনুকরণ করে, অথচ ঈমান আনে না, তারা ।

تَأْوِيلُ قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمْ الْكَافِرُونَ

أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ قَالَ أَنْبَأَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى عَنْ سُفْيَانَ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَتْ مُلُوكٌ بَعْدَ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ عَلَيْهِ الصَّلَاة وَالسَّلَامُ بَدَّلُوا التَّوْرَاةَ وَالْإِنْجِيلَ وَكَانَ فِيهِمْ مُؤْمِنُونَ يَقْرَءُونَ التَّوْرَاةَ قِيلَ لِمُلُوكِهِمْ مَا نَجِدُ شَتْمًا أَشَدَّ مِنْ شَتْمٍ يَشْتِمُونَّا هَؤُلَاءِ إِنَّهُمْ يَقْرَءُونَ وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمْ الْكَافِرُونَ وَهَؤُلَاءِ الْآيَاتِ مَعَ مَا يَعِيبُونَّا بِهِ فِي أَعْمَالِنَا فِي قِرَاءَتِهِمْ فَادْعُهُمْ فَلْيَقْرَءُوا كَمَا نَقْرَأُ وَلْيُؤْمِنُوا كَمَا آمَنَّا فَدَعَاهُمْ فَجَمَعَهُمْ وَعَرَضَ عَلَيْهِمْ الْقَتْلَ أَوْ يَتْرُكُوا قِرَاءَةَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ إِلَّا مَا بَدَّلُوا مِنْهَا فَقَالُوا مَا تُرِيدُونَ إِلَى ذَلِكَ دَعُونَا فَقَالَتْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ ابْنُوا لَنَا أُسْطُوَانَةً ثُمَّ ارْفَعُونَا إِلَيْهَا ثُمَّ اعْطُونَا شَيْئًا نَرْفَعُ بِهِ طَعَامَنَا وَشَرَابَنَا فَلَا نَرِدُ عَلَيْكُمْ وَقَالَتْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ دَعُونَا نَسِيحُ فِي الْأَرْضِ وَنَهِيمُ وَنَشْرَبُ كَمَا يَشْرَبُ الْوَحْشُ فَإِنْ قَدَرْتُمْ عَلَيْنَا فِي أَرْضِكُمْ فَاقْتُلُونَا وَقَالَتْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ ابْنُوا لَنَا دُورًا فِي الْفَيَافِي وَنَحْتَفِرُ الْآبَارَ وَنَحْتَرِثُ الْبُقُولَ فَلَا نَرِدُ عَلَيْكُمْ وَلَا نَمُرُّ بِكُمْ وَلَيْسَ أَحَدٌ مِنْ الْقَبَائِلِ إِلَّا وَلَهُ حَمِيمٌ فِيهِمْ قَالَ فَفَعَلُوا ذَلِكَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَرَهْبَانِيَّةً ابْتَدَعُوهَا مَا كَتَبْنَاهَا عَلَيْهِمْ إِلَّا ابْتِغَاءَ رِضْوَانِ اللَّهِ فَمَا رَعَوْهَا حَقَّ رِعَايَتِهَا وَالْآخَرُونَ قَالُوا نَتَعَبَّدُ كَمَا تَعَبَّدَ فُلَانٌ وَنَسِيحُ كَمَا سَاحَ فُلَانٌ وَنَتَّخِذُ دُورًا كَمَا اتَّخَذَ فُلَانٌ وَهُمْ عَلَى شِرْكِهِمْ لَا عِلْمَ لَهُمْ بِإِيمَانِ الَّذِينَ اقْتَدَوْا بِهِ فَلَمَّا بَعَثَ اللَّهُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَمْ يَبْقَ مِنْهُمْ إِلَّا قَلِيلٌ انْحَطَّ رَجُلٌ مِنْ صَوْمَعَتِهِ وَجَاءَ سَائِحٌ مِنْ سِيَاحَتِهِ وَصَاحِبُ الدَّيْرِ مِنْ دَيْرِهِ فَآمَنُوا بِهِ وَصَدَّقُوهُ فَقَالَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَآمِنُوا بِرَسُولِهِ يُؤْتِكُمْ كِفْلَيْنِ مِنْ رَحْمَتِهِ أَجْرَيْنِ بِإِيمَانِهِمْ بِعِيسَى وَبِالتَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ وَبِإِيمَانِهِمْ بِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَصْدِيقِهِمْ قَالَ يَجْعَلْ لَكُمْ نُورًا تَمْشُونَ بِهِ الْقُرْآنَ وَاتِّبَاعَهُمْ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِئَلَّا يَعْلَمَ أَهْلُ الْكِتَابِ يَتَشَبَّهُونَ بِكُمْ أَنْ لَا يَقْدِرُونَ عَلَى شَيْءٍ مِنْ فَضْلِ اللَّهِ الْآيَةَ

اخبرنا الحسين بن حريث قال انبانا الفضل بن موسى عن سفيان بن سعيد عن عطاء بن الساىب عن سعيد بن جبير عن ابن عباس قال كانت ملوك بعد عيسى ابن مريم عليه الصلاة والسلام بدلوا التوراة والانجيل وكان فيهم مومنون يقرءون التوراة قيل لملوكهم ما نجد شتما اشد من شتم يشتمونا هولاء انهم يقرءون ومن لم يحكم بما انزل الله فاولىك هم الكافرون وهولاء الايات مع ما يعيبونا به في اعمالنا في قراءتهم فادعهم فليقرءوا كما نقرا وليومنوا كما امنا فدعاهم فجمعهم وعرض عليهم القتل او يتركوا قراءة التوراة والانجيل الا ما بدلوا منها فقالوا ما تريدون الى ذلك دعونا فقالت طاىفة منهم ابنوا لنا اسطوانة ثم ارفعونا اليها ثم اعطونا شيىا نرفع به طعامنا وشرابنا فلا نرد عليكم وقالت طاىفة منهم دعونا نسيح في الارض ونهيم ونشرب كما يشرب الوحش فان قدرتم علينا في ارضكم فاقتلونا وقالت طاىفة منهم ابنوا لنا دورا في الفيافي ونحتفر الابار ونحترث البقول فلا نرد عليكم ولا نمر بكم وليس احد من القباىل الا وله حميم فيهم قال ففعلوا ذلك فانزل الله عز وجل ورهبانية ابتدعوها ما كتبناها عليهم الا ابتغاء رضوان الله فما رعوها حق رعايتها والاخرون قالوا نتعبد كما تعبد فلان ونسيح كما ساح فلان ونتخذ دورا كما اتخذ فلان وهم على شركهم لا علم لهم بايمان الذين اقتدوا به فلما بعث الله النبي صلى الله عليه وسلم ولم يبق منهم الا قليل انحط رجل من صومعته وجاء ساىح من سياحته وصاحب الدير من ديره فامنوا به وصدقوه فقال الله تبارك وتعالى يا ايها الذين امنوا اتقوا الله وامنوا برسوله يوتكم كفلين من رحمته اجرين بايمانهم بعيسى وبالتوراة والانجيل وبايمانهم بمحمد صلى الله عليه وسلم وتصديقهم قال يجعل لكم نورا تمشون به القران واتباعهم النبي صلى الله عليه وسلم قال لىلا يعلم اهل الكتاب يتشبهون بكم ان لا يقدرون على شيء من فضل الله الاية


It was narrated that Ibn 'Abbas said:
"There were kings after 'Isa bin Mariam who altered the Tawrah and the Injil, but there were among them believers who read the Tawrah. It was said to their kings: 'We have never heard of any slander worse than that of those (believers) who slander us and recite: "And whosoever does not judge by what Allah has revealed, such are the disbelievers." In these Verses, they are criticizing us for our deeds when they recite them.' So he called them together and gave them the choice between being put to death, or giving up reading the Tawrah and Injil, except for what had been altered. They said: 'Why do you want us to change? Leave us alone.' Some of them said: 'Build us a tower and let us go up there, and give us something to lift up our food and drink so we do not have to mix with you.'

Others said: 'Let us go and wander throughout the land, and we will drink as the wild animals drink, and if you capture us in your land, you may kill us.' Others said: 'Build houses for us in the wilderness, and we will dig wells and grow vegetables, and we will not mix with you or pass by you, for there is no one of the tribes among whom we do not have close relatives.' So they did that, and Allah revealed the words: 'But the monasticism which they invented for themselves, We did not prescribe for them, but (they sought it) only to please Allah therewith, but that they did not observe it with the right observance.' Then others said: 'We will worship as so-and-so worshipped, and we will wander as so-and-so wandered, and we will adopt houses (in the wilderness) as so-and-so did.' But they were still following their Shirk with no knowledge of the faith of those whom they claimed to be following.

When Allah sent the Prophet [SAW], and they were only a few of them left, a man came down from his cell, and a wanderer came from his travels, and a monk came from his monastery, and they believed in him. And Allah said: 'O you who believe! Fear Allah, and believe in His Messenger (Muhammad), He will give you a double portion of His mercy - meaning, two rewards, because of their having believed in 'Isa and in the Tawrah and Injil, and for having believing in Muhammad [SAW]; and He will give you a light by which you shall walk (straight), - meaning, the Qur'an, and their following the Prophet [SAW]; and He said: 'So that the people of the Scripture (Jews and Christians) may know that they have no power whatsoever over the Grace of Allah.'"


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আন-নাসায়ী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫০/ বিচারকের নীতিমালা (كتاب آداب القضاة) 50/ The Book of the Etiquette of Judges