পরিচ্ছেদঃ ৭. সালাত সম্পাদনের পদ্ধতি - বিতরের কুনূতে যা পড়তে হয়
৩০৮. হাসান ইবনু ’আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিতর সালাতের কুনূতে পড়ার জন্য কতগুলো বাক্য শিক্ষা দিয়েছেন যা আমি বিতর সালাতের কুনূতে পড়ে থাকি।
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাহদিনী ফীমান হাদায়তা, ওয়া আফিনী ফীমান আফায়তা, ওয়া তাওয়াল-লানী ফীমান তাওয়াল্লায়তা, ওয়া বারিক লী ফীমা আ’তায়তা, ওয়া কিনী শাররা মা কাদায়তা, ফাইন্নাকা তাকদী ওয়া লা ইয়ুকদা আলায়কা ইন্নাহু লা ইয়াদিল্লু মান ওয়ালায়তা, তাবারাকতা রাব্বানা ওয়া তা’আলায়তা।
অর্থঃ “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হিদায়াত দান কর, যাদের তুমি হিদায়াত করেছ তাদের সাথে। আমাকে মাফ করে দাও, যাদের মাফ করেছ তাদের সাথে। আমার অভিভাবক হও, যাদের অভিভাবক হয়েছে তাদের সাথে। তুমি আমাকে যা দান করেছ তাতে বরকত দাও। আর আমাকে ঐ অনিষ্ট হ’তে বাঁচাও, যা তুমি নির্ধারণ করেছ। তুমি ফায়সালা কর কিন্তু তোমার উপরে কেউ ফায়সালা করতে পারে না। তুমি যার সাথে শত্রুতা রাখ, সে সম্মান লাভ করতে পারে না। নিশ্চয়ই অপমান হয়না সেই যাকে তুমি মিত্র হিসাবে গ্রহণ করেছ। হে আমাদের রব! তুমি বরকতময়, তুমি উচ্চ এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামমুং-এর উপর রহমত অবতীর্ণ হোক’।
তাবারানী ও বাইহাকী বৃদ্ধি করেছেন: উচ্চারণ : ওয়ালা ইয়াউযযু মান ’আদাইতা “তুমি যার সাথে শক্ৰতা পোষণ কর সে কখনো ইজ্জত লাভ করতে পারে না।” নাসায়ীতে ভিন্ন সূত্রে আরো রয়েছে : উচ্চারণ: ওয়া সল্লাল্লাহু ’আলান নাবিয়্যি। “আর নবীর প্রতি আল্লাহর সালাত (দরুদ) বর্ষিত হোক।[1]
কুনূতের শেষে وَصَلَّى اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ শব্দগুলো বলা সম্পর্কিত বৰ্ণনার ব্যাপারে ইমাম নববী তাঁর আল মাজমূ’ (৩/৪৯৯) গ্রন্থে এবং ইমাম সাখাবী তাঁর আল কাওলুল বাদী’ (২৬১) গ্রন্থে বলেন, এর সানাদ হাসান অথবা সহীহ ও আল আযকার (৮৭) গ্রন্থে এর সানাদকে হাসান বলেছেন। ইবনুল মুলকিন তাঁর তুহফাতুল মুহতাজ (১/৪১০) গ্রন্থে এর সানাদকে হাসান বলেছেন। পক্ষান্তরে ইবনু হাজার আসকালানী তাঁর নাতায়িজুল আফকার (২/১৫৩) গ্রন্থে বলেন, এই অতিরিক্ত অংশটির সানাদ গরীব, সাব্যস্ত নয়, কেননা আবদুল্লাহ বিন আলী পরিচিত নয়। ইবনু হাজার আত তালখীসুল হাবীব (১/৪০৫) গ্রন্থে উপরোক্ত ইমাম নববীর মন্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, তিনি যে সহীহ অথবা হাসান বলেছেন, তা সঠিক নয়, কেননা, হাদীসটি মুনকাতি’ বা বিচ্ছিন্ন। শাইখ আলবানী তামামুল মিন্নাহ (২৪৩) গ্রন্থে বলেন, কুনূতের শেষে যে অতিরিক্ত শব্দগুলো রয়েছে সেটি দুর্বল। কেননা, এর সানাদে অজ্ঞতা ও বিচ্ছিন্নতা রয়েছে। শাইখ আলবানী যঈফ নাসায়ী (১৭৪৫) গ্রন্থে দুর্বল ও ইরওয়াউল গালীল (২/১৭৬), সিফাতুস সালাত (১৮০) গ্রন্থে এর সানাদকে দুর্বল বলেছেন।
وَعَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا - قَالَ: عَلَّمَنِي رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - كَلِمَاتٍ أَقُولُهُنَّ فِي قُنُوتِ الْوِتْرِ: اللَّهُمَّ اهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ, وَعَافِنِي فِيمَنْ عَافَيْتَ, وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ, وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ, وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ, فَإِنَّكَ تَقْضِي وَلَا يُقْضَى عَلَيْكَ, إِنَّهُ لَا يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ, تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ. رَوَاهُ الْخَمْسَةُ
وَزَادَ الطَّبَرَانِيُّ وَالْبَيْهَقِيُّ: «وَلَا يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ
زَادَ النَّسَائِيُّ مِنْ وَجْهٍ آخَرَ فِي آخِرِهِ: «وَصَلَّى اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ*
-
صحيح. رواه أبو داود (1425)، والنسائي (3/ 248)، والترمذي (464)، وابن ماجه (1178)، وأحمد (1/ 199 و 200)
*ضعيف. رواه النسائي (3/ 248) وزاد: «محمد» وسنده منقطع كما صرح بذلك الحافظ في التلخيص
পরিচ্ছেদঃ ৭. সালাত সম্পাদনের পদ্ধতি - বিতরের কুনূতে যা পড়তে হয়
৩০৯. বাইহাক্বীতে ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস রয়েছে, তিনি বলেন- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে দু’আ শিখিয়ে দিতেন, যার দ্বারা আমরা ফজরের কুনূতের সময় দু’আ করতাম। এর সানাদে দুর্বলতা রয়েছে।[1]
ইবনু উসাইমিন শারহু বুলুগুল মারামে (২/১৪০) نَدْعُو بِهِ فِي صَلَاةِ الصُّبْحِ অংশটুকুকে দুর্বল বলেছেন। তবে ফজরের স্বালাতে কুনূত করতে নিষেধ সংক্রান্ত হাদীস গুলো বিশুদ্ধ নয়। আয যূয়াফা আল কাবীর লিল উকাইলী (৩/৩৬৭) গ্রন্থে উকাইলী বলেন, আর ইমাম বুখারী বলেছেন মুহাদ্দীসগণ তার হাদীস বর্জন করেছে। বায়হাক্বী সুনানে আল কুবরা (২/২/১৪) গ্রন্থে ফজরের স্বালাতে কুনূত পড়া বিদআত সম্পর্কিত হাদীসটি সহীহ নয় বলে মন্তব্য করেছেন। কেননা এর সানাদে রয়েছে আবূ লায়লা আল কুফী, আর সে হচ্ছে মাতরুক। মিযানুল ই’তিদাল (৪/৫৬৬) গ্রন্থে ইমাম যাহাবী বলেন, ফজরের স্বালাতে কুনূত পড়া বিদআত সম্পর্কিত হাদীসের এক জন রাবী আবূ লায়লাকে দুর্বল বলেছেন।
وَلِلْبَيْهَقِيِّ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ -رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - يُعَلِّمُنَا دُعَاءً نَدْعُو بِهِ فِي الْقُنُوتِ مِنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ. وَفِي سَنَدِهِ ضَعْفٌ
-
ضعيف. رواه البيهقي (2/ 210)