পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১০২) আবূ কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আরাফার দিনে রাযা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, তার পূর্বের এক বছর ও পরের এক বছরের গোনাহ মোচন করে দেয়।
وَعَنْ أَبي قَتَادَةَ قَالَ : سُئِلَ رَسُولُ اللهِ ﷺ عَنْ صَومِ يَوْمِ عَرَفَةَ قَالَيُكَفِّرُ السَّنَةَ المَاضِيَةَ وَالبَاقِيَةَ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১০৩) সাহল বিন সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আরাফার দিন সিয়াম রাখে তার উপর্যুপরি দুই বৎসরের পাপরাশি মাফ হয়ে যায়।
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ صَامَ يَوْمَ عَرَفَةَ غُفِرَ لَهُ ذَنْبُ سَنَتَيْنِ مُتَتابِعَتَيْنِ
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১০৪) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মাহে রমযানের পর সর্বোত্তম সিয়াম, আল্লাহর মাস মুহার্রাম। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায রাতের (তাহাজ্জুদ) নামায।
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ : شَهْرُ اللهِ المُحَرَّمُ وَأَفْضَلُ الصَّلاَةِ بَعدَ الفَرِيضَةِ : صَلاَةُ اللَّيْلِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১০৫) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশূরার (মুহার্রম মাসের দশম) দিনে স্বয়ং সিয়াম রেখেছেন এবং ঐ দিনে সিয়াম রাখতে আদেশ করেছেন।
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ صَامَ يَومَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيامِهِ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১০৬) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় এলেন, তখন দেখলেন, ইয়াহুদীরা আশূরার দিনে সিয়াম পালন করছে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কী এমন দিন যে, তোমরা এ দিনে সিয়াম রাখছ? ইয়াহুদীরা বলল, এ এক উত্তম দিন। এ দিনে আল্লাহ বনী ইসরাঈলকে তাদের শত্রু থেকে পরিত্রাণ দিয়েছিলেন। তাই মূসা এরই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে এই দিনে সিয়াম পালন করেছিলেন। (আর সেই জন্যই আমরাও এ দিনে সিয়াম রেখে থাকি।) এ কথা শুনে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মূসার স্মৃতি পালন করার ব্যাপারে তোমাদের চাইতে আমি অধিক হকদার। সুতরাং তিনি ঐ দিনে সিয়াম রাখলেন এবং সকলকে সিয়াম রাখতে আদেশ দিলেন।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهما أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَدِمَ الْمَدِينَةَ فَوَجَدَ الْيَهُودَ صِيَامًا يَوْمَ عَاشُورَاءَ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَا هَذَا الْيَوْمُ الَّذِى تَصُومُونَهُ فَقَالُوا هَذَا يَوْمٌ عَظِيمٌ أَنْجَى اللهُ فِيهِ مُوسَى وَقَوْمَهُ وَغَرَّقَ فِرْعَوْنَ وَقَوْمَهُ فَصَامَهُ مُوسَى شُكْرًا فَنَحْنُ نَصُومُهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ فَنَحْنُ أَحَقُّ وَأَوْلَى بِمُوسَى مِنْكُمْ فَصَامَهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১০৭) ইবনে আব্বাস (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের সিয়ামের পর আশুরার দিন ছাড়া কোন দিনকে অন্য দিন অপেক্ষা মাহাত্ম্যপূর্ণ মনে করতেন না।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِي اللهُ تَعَالَى عَنْهُمَا، أَنّ النَّبِيَّ ﷺ لَمْ يَكُنْ يَتَوَخَّى فَضْلَ يَوْمٍ عَلَى يَوْمٍ بَعْدَ رَمَضَانَ إِلا يَوْمَ عَاشُورَاءَ
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১০৮) আবূ কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আশূরার দিনে সিয়াম রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেন, তা বিগত এক বছরের গুনাহ মোচন করে দেয়।
وَعَنْ أَبي قَتَادَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ سُئِلَ عَنْ صِيامِ يَوْمِ عَاشُورَاءَ، فَقَالَ يُكَفِّرُ السَّنَةَ المَاضِيَةَ
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১০৯) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আগামী বছর যদি আমি বেঁচে থাকি, তাহলে মুহার্রম মাসের নবম তারীখে অবশ্যই সিয়াম রাখব। (অর্থাৎ, নবম ও দশম দু’দিন ব্যাপী সিয়াম রাখব।)
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لَئِنْ بَقِيتُ إِلَى قَابِلٍ لأَصُومَنَّ التَّاسِعَ
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১১০) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আশূরার সিয়াম রাখলেন এবং সকলকে রাখার আদেশ দিলেন, তখন লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রসূল! এ দিনটিকে তো ইয়াহুদ ও নাসারারা তা’যীম করে থাকে। তিনি বললেন, তাহলে আমরা আগামী বছরে ৯ তারীখেও সিয়াম রাখব ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আগামী বছর আসার আগেই আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকাল হয়ে গেল।
عَنِ ابْنِ عَبَّاس قَالَ: حِينَ صَامَ النَّبِىُّ ﷺ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَنَا بِصِيَامِهِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّهُ يَوْمٌ تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ فَإِذَا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ صُمْنَا يَوْمَ التَّاسِعِ فَلَمْ يَأْتِ الْعَامُ الْمُقْبِلُ حَتَّى تُوُفِّىَ رَسُولُ اللهِ ﷺ
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১১১) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, তোমরা ৯ ও ১০ তারীখে সিয়াম রাখ এবং ইয়াহুদীদের বৈপরীত্য কর।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: صُومُوا التَّاسِعَ وَالْعَاشِرَ وَخَالِفُوا الْيَهُودَ
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১১২) রুবাইয়ে’ বিনতে মুআউবিয বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশূরার সকালে মদীনার আশেপাশে আনসারদের বস্তিতে বস্তিতে খবর পাঠিয়ে দিলেন যে, যে সিয়াম অবস্থায় সকাল করেছে, সে যেন তার সিয়াম পূর্ণ করে নেয়। আর যে ব্যক্তি সিয়াম না রাখা অবস্থায় সকাল করেছে সেও যেন তার বাকী দিন পূর্ণ করে নেয়।
রুবাইয়ে’ বলেন, আমরা তার পর হতে ঐ সিয়াম রাখতাম এবং আমাদের ছোট ছোট বাচ্চাদেরকেও রাখাতাম। তাদের জন্য তুলোর খেলনা তৈরী করতাম এবং তাদেরকে মসজিদে নিয়ে যেতাম। অতঃপর তাদের মধ্যে কেউ খাবারের জন্য কাঁদতে শুরু করলে তাকে ঐ খেলনা দিতাম। আর এইভাবে ইফতারের সময় এসে পৌঁছত।
عَنِ الرُّبَيِّعِ بِنْتِ مُعَوِّذِ بْنِ عَفْرَاءَ قَالَتْ أَرْسَلَ رَسُولُ اللهِ ﷺ غَدَاةَ عَاشُورَاءَ إِلَى قُرَى الأَنْصَارِ الَّتِى حَوْلَ الْمَدِينَةِ مَنْ كَانَ أَصْبَحَ صَائِمًا فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ وَمَنْ كَانَ أَصْبَحَ مُفْطِرًا فَلْيُتِمَّ بَقِيَّةَ يَوْمِهِ فَكُنَّا بَعْدَ ذَلِكَ نَصُومُهُ وَنُصَوِّمُ صِبْيَانَنَا الصِّغَارَ مِنْهُمْ إِنْ شَاءَ اللهُ وَنَذْهَبُ إِلَى الْمَسْجِدِ فَنَجْعَلُ لَهُمُ اللُّعْبَةَ مِنَ الْعِهْنِ فَإِذَا بَكَى أَحَدُهُمْ عَلَى الطَّعَامِ أَعْطَيْنَاهَا إِيَّاهُ عِنْدَ الإِفْطَارِ
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১১৩) আয়েশা (রাঃ) বলেন, ’কুরাইশরা জাহেলিয়াতের যুগে আশূরার সিয়াম পালন করত। আর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও জাহেলিয়াতে ঐ সিয়াম রাখতেন। (ঐ দিন ছিল কাবায় গিলাফ চড়াবার দিন।) অতঃপর তিনি যখন মদীনায় এলেন, তখনও তিনি ঐ সিয়াম রাখলেন এবং সকলকে রাখতে আদেশ দিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে যখন রমযানের সিয়াম ফরয হল, তখন আশূরার সিয়াম ছেড়ে দিলেন। তখন অবস্থা এই হল যে, যার ইচ্ছা হবে সে রাখবে এবং যার ইচ্ছা হবে সে রাখবে না।
عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْها قَالَتْ كَانَتْ قُرَيْشٌ تَصُومُ عَاشُورَاءَ فِى الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَصُومُهُ فَلَمَّا هَاجَرَ إِلَى الْمَدِينَةِ صَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ شَهْرُ رَمَضَانَ قَالَ مَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ
পরিচ্ছেদঃ আরাফা ও আশুরার সিয়াম রাখার ফযীলত
(১১১৪) মুআবিয়া বিন আবূ সুফিয়ান (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আজকে আশূরার দিন; এর সিয়াম আল্লাহ তোমাদের উপর ফরয করেননি। তবে আমি সিয়াম রেখেছি। সুতরাং যার ইচ্ছা সে সিয়াম রাখবে, যার ইচ্ছা সে রাখবে না।
مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِى سُفْيَانَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ هَذَا يَوْمُ عَاشُورَاءَ وَلَمْ يَكْتُبِ اللهُ عَلَيْكُمْ صِيَامَهُ وَأَنَا صَائِمٌ فَمَنْ أَحَبَّ مِنْكُمْ أَنْ يَصُومَ فَلْيَصُمْ وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُفْطِرَ فَلْيُفْطِرْ