পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - থালা-বাসন ইত্যাদি ঢেকে রাখা প্রসঙ্গে
৪৩০২-[৯] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন তোমরা রাতে কুকুরের চিৎকার এবং গাধার ডাক শুনতে পাবে, তখন আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তান হতে আশ্রয় চাইবে। কেননা তারা এমন এমন কিছু দেখতে পায়, যা তোমরা দেখতে পাও না। আর রাতে যখন মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তখন তোমরাও বাইরে যাওয়া কমিয়ে দাও। কেননা মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তা’আলা তাঁর সৃষ্ট কিছু জীবকে রাত্রিকালে ছেড়ে দেন। তোমরা ঘরের দরজা বন্ধ রাখো, আর আল্লাহর নাম স্মরণ করো। কারণ শয়তান এমন দরজা খুলতে পারে না যা আল্লাহর নাম নিয়ে বন্ধ করা হয়। আর তোমরা ঘটি, মটকা (খাদ্য-পাত্রসমূহ) ঢেকে রাখো, শূন্য পাত্র উপুড় করে রাখ এবং মশকের মুখ বেঁধে রাখো। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]
عَنْ جَابِرٍ قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِذَا سَمِعْتُمْ نُبَاحَ الْكِلَابِ وَنَهِيقَ الْحَمِيرِ مِنَ اللَّيْلِ فَتَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ فَإِنَّهُنَّ يَرَيْنَ مَا لَا تَرَوْنَ. وَأَقِلُّوا الْخُرُوجَ إِذَا هَدَأَتِ الْأَرْجُلُ فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَبُثُّ مِنْ خَلْقِهِ فِي لَيْلَتِهِ مَا يَشَاءُ وَأَجِيفُوا الْأَبْوَابَ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهِ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَفْتَحُ بَابًا إِذَا أُجِيفَ وَذُكِرَ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ وَغَطُّوا الْجِرَارَ وَأَكْفِئُوا الْآنِيَةَ وأوكوا الْقرب» . رَوَاهُ فِي شرح السّنة
ব্যাখ্যাঃ (مِنَ اللَّيْلِ) দ্বারা উদ্দেশ্য রাতের কোন এক অংশে। আর হাকিম-এর বর্ণনায় إِذَا سَمِعْتُمْ نُبَاحَ الْكِلَابِ যখন তোমরা কুকুরের আওয়াজ শুনবে।
(فَإِنَّهُنَّ يَرَيْنَ مَا لَا تَرَوْنَ) তারা যা দেখে তোমরা তা দেখতে পাও তা হলো তারা শয়তানকে দেখতে পায়। আর আবূ হুরায়রা -এর বর্ণনায় এসেছে যা বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত-
وَإِذَا سَمِعَ صِيَاحَ الدِّيَكَةِ، فَلْيَسْأَلِ اللهَ مِنْ فَضْلِه ; فَإِنَّهَا رَأَتْ مَلَكًا যখন কোন মুরগীর আওয়াজ শুনবে সে যেন আল্লাহর কাছে অনুগ্রহ চায়, কেননা সে মালাক (ফেরেশতা)-কে দেখেছে।
কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ কারণ হলো মালায়িকার (ফেরেশতাগণের) ‘আমীন’ দু‘আতে তাদের ক্ষমা প্রার্থনা কামনা তাদের শাহাদাত বিনয়-নম্রপূর্ণ এবং একনিষ্ঠতা। আর তাতে সৎলোকেদের উপস্থিতির সময় দু‘আ কামনা করা ভালো।
অনুরূপ দু‘আ করা ভালো যালিম ও ফাসিককে দর্শনের সময়। মদ্য কথা হলো, নেককার ও ফাসিকদেরকে দেখা ওয়া‘দা ও শাস্তির নিদর্শন শুনার পর্যায়। এমনটি হলে প্রথমে চাইবে দ্বিতীয়তে আশ্রয় প্রার্থনা করবে। যেমন অন্য সহীহ হাদীসে এসেছে,
إِذَا سَمِعْتُمْ أَصْوَاتَ الدِّيَكَةِ فَاسْأَلُوا اللهَ مِنْ فَضْلِه؟ فَإِنَّهَا رَأَتْ مَلَكًا، وَإِذَا سَمِعْتُمْ نَهِيقَ الْحَمِيرِ فَتَعَوَّذُوا بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ؟ فَإِنَّهَا رَأَتْ شَيْطَانًا.
যখন তোমরা মোরগের আওয়াজ শুনবে আল্লাহর নিকট অনুগ্রহ কামনা করবে, কারণ সে মালাক (ফেরেশতা)-কে দেখ আর যখন গাধার আওয়াজ শুনবে আল্লাহর কাছে শয়তান হতে আশ্রয় চাইবে, কেননা সে শয়তানকে দেখেছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - থালা-বাসন ইত্যাদি ঢেকে রাখা প্রসঙ্গে
৪৩০৩-[১০] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন একটি ইঁদুর জ্বলন্ত একটি সলতে টেনে আনল এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মুখের চাটাইয়ের উপর রেখে দিলো, যার উপরে তিনি উপবিষ্ট ছিলেন। ফলে তার এক দিরহামের জায়গা পরিমাণ জ্বলে গেল। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ (রাতে) যখন তোমরা ঘুমাবে, তখন চেরাগ, বাতি ইত্যাদি নিভিয়ে ফেলবে। কেননা শয়তান এ জাতীয় অনিষ্টকর প্রাণীকে উদ্বুদ্ধ করে, ফলে তারা তোমাদের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেয়। (আবূ দাঊদ)[1]
-
বিঃ দ্রঃ এ অধ্যায়ে তৃতীয় অনুচ্ছেদ নেই।
وَعَن ابنِ عبَّاسٍ قَالَ: جَاءَتْ فَأْرَةٌ تَجُرُّ الْفَتِيلَةَ فَأَلْقَتْهَا بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْخَمْرَةِ الَّتِي كَانَ قَاعِدًا عَلَيْهَا فَأَحْرَقَتْ مِنْهَا مِثْلَ مَوْضِعِ الدِّرْهَمِ فَقَالَ: «إِذَا نِمْتُمْ فَأَطْفِئُوا سُرُجَكُمْ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَدُلُّ مِثْلَ هَذِهِ عَلَى هَذَا فَيَحْرِقُكُمْ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
وَهَذَا الْبَاب خَال من الْفَصْل الثَّالِث
ব্যাখ্যাঃ (إِذَا نِمْتُمْ) যখন তোমরা ঘুমাও ঘুমকে নির্দিষ্টের কারণ হলো অধিকাংশ সময় উদাসীনতা ঘুমের মাধ্যমে অর্জিত হয়। আর এজন্য বলা হয় যখন উদাসীনতা আসে বিবেকবর্জিত কাজ সংঘটিত হয়।
(فَيَحْرِقُكُمْ) তোমাদের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেয়, এর কারণ শয়তানই। যেমন আল্লাহ বলেন,
(إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا) ‘‘নিশ্চয় শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু তাকে প্রকাশ্য শত্রু হিসেবে গ্রহণ কর’’- (সূরাহ্ আল ফাত্বির ৩৪ : ৬)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)