পরিচ্ছেদঃ ১৭. গর্ভবতী মহিলা যখন ব্যভিচারের স্বীকারোক্তি করে

২৩৬৩. বুরাইদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর নিকট বসেছিলাম। এমতাবস্থায় গামিদ গোত্রের জনৈক মহিলা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললো, ইয়া নবীয়াল্লাহ! আমি তো যিনা করেছি আর আমি আশা করছি, আপনি আমাকে (এ পাপ হতে) পবিত্র করবেন। তখন তিনি তাকে বলেনঃ “তুমি ফিরে যাও।” (এরপর সে মহিলা চলে যায়,) কিন্তু পরদিন আবার সে মহিলা হাযির হয়ে তার যিনার স্বীকারোক্তি করে বলেঃ ইয়া নবীয়াল্লাহ! আপনি আমাকে (এ পাপ হতে) পবিত্র করুন। সম্ভবত আপনি আমাকে সেরুপভাবে ফিরিয়ে দিতে চান, যেভাবে আপনি মায়িয ইবনু মালিককে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আল্লাহর শপথ! আমি তো গর্ভবতী। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “তুমি ফিরে যাও, যতক্ষণ না তুমি তোমার সন্তান প্রসব করছ।” এরপর সন্তান প্রসবের পর সে নব-জাতককে একটি কাপড়ে জড়িয়ে নিয়ে তাঁর নিকট হাযির হয় এবং বলেঃ ইয়া নবীয়াল্লাহ! আমি একে প্রসব করেছি। তখন তিনি বলেনঃ “তুমি ফিরে যাও এবং এ সন্তানকে ততদিন দুধপান করাও, যতদিন সে দুধ না ছাড়ে।” এরপর সে মহিলা (চলে যায় এবং) দুধ ছাড়াবার পর পুনরায় তার সন্তানকে নিয়ে তাঁর কাছে হাযির হয়।

এ সময় তার সন্তানের হাতে রুটির একটি টুকরা ছিল। তখন সে বললো, ইয়া নবীয়াল্লাহ! সে দুধ ছেড়েছে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিলে সেই সন্তানকে কোন মুসলিমের হাতে সোপর্দ করা হলো এবং তিনি সে মহিলাকে (’রজম’ করার) হুকুম দেন। তখন একটি গর্ত খুঁড়ে তাকে সেখানে বুক পর্যন্ত পোঁতা হয়, অতঃপর লোকদেরকে তাকে পাথর মেরে হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর খালিদ ইবনু ওয়ালিদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু উপস্থিত হয়ে সে মহিলার মাথায় একটি পাথর দিয়ে আঘাত করলো। সে মহিলার দেহের রক্তের ফোঁটা তার গালের উপর এসে পড়ে, ফলে তিনি (রাগান্বিত হয়ে) সে মহিলা সম্পর্কে কটুক্তি করেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলার প্রতি খালিদের কটুক্তি শুনে ফেলেন। তখন তিনি তাকে বলেনঃ “হে খালিদ! তুমি থামো । আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার জীবন; এ মহিলা এমন তাওবা করেছে, যদি কোন জালিম ব্যক্তি এরুপ তাওবা করতো, তবে অবশ্যই তার সমস্ত গুনাহ মাফ করা হতো। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশে সে মহিলার জানাযার নামায আদায়ের পর তাকে দাফন করা হয়।[1]

بَاب الْحَامِلِ إِذَا اعْتَرَفَتْ بِالزِّنَا

أَخْبَرَنَا أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا بَشِيرُ بْنُ الْمُهَاجِرِ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ كُنْتُ جَالِسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَجَاءَتْهُ امْرَأَةٌ مِنْ بَنِي غَامِدٍ فَقَالَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ إِنِّي قَدْ زَنَيْتُ وَإِنِّي أُرِيدُ أَنْ تُطَهِّرَنِي فَقَالَ لَهَا ارْجِعِي فَلَمَّا كَانَ مِنْ الْغَدِ أَتَتْهُ أَيْضًا فَاعْتَرَفَتْ عِنْدَهُ بِالزِّنَا فَقَالَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ طَهِّرْنِي فَلَعَلَّكَ أَنْ تَرْدُدَنِي كَمَا رَدَدْتَ مَاعِزَ بْنَ مَالِكٍ فَوَاللَّهِ إِنِّي لَحُبْلَى فَقَالَ لَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ارْجِعِي حَتَّى تَلِدِي فَلَمَّا وَلَدَتْ جَاءَتْ بِالصَّبِيِّ تَحْمِلُهُ فِي خِرْقَةٍ فَقَالَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ هَذَا قَدْ وَلَدْتُ قَالَ فَاذْهَبِي فَأَرْضِعِيهِ ثُمَّ افْطِمِيهِ فَلَمَّا فَطَمَتْهُ جَاءَتْ بِالصَّبِيِّ فِي يَدِهِ كِسْرَةُ خُبْزٍ فَقَالَتْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَدْ فَطَمْتُهُ فَأَمَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالصَّبِيِّ فَدُفِعَ إِلَى رَجُلٍ مِنْ الْمُسْلِمِينَ وَأَمَرَ بِهَا فَحُفِرَ لَهَا حُفْرَةٌ فَجُعِلَتْ فِيهَا إِلَى صَدْرِهَا ثُمَّ أَمَرَ النَّاسَ أَنْ يَرْجُمُوهَا فَأَقْبَلَ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ بِحَجَرٍ فَرَمَى رَأْسَهَا فَتَلَطَّخَ الدَّمُ عَلَى وَجْنَةِ خَالِدِ بْنِ الْوَلِيدِ فَسَبَّهَا فَسَمِعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَبَّهُ إِيَّاهَا فَقَالَ مَهْ يَا خَالِدُ لَا تَسُبَّهَا فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ تَابَهَا صَاحِبُ مَكْسٍ لَغُفِرَ لَهُ فَأَمَرَ بِهَا فَصُلِّيَ عَلَيْهَا وَدُفِنَتْ

اخبرنا ابو نعيم حدثنا بشير بن المهاجر حدثني عبد الله بن بريدة عن ابيه قال كنت جالسا عند النبي صلى الله عليه وسلم فجاءته امراة من بني غامد فقالت يا نبي الله اني قد زنيت واني اريد ان تطهرني فقال لها ارجعي فلما كان من الغد اتته ايضا فاعترفت عنده بالزنا فقالت يا نبي الله طهرني فلعلك ان ترددني كما رددت ماعز بن مالك فوالله اني لحبلى فقال لها النبي صلى الله عليه وسلم ارجعي حتى تلدي فلما ولدت جاءت بالصبي تحمله في خرقة فقالت يا نبي الله هذا قد ولدت قال فاذهبي فارضعيه ثم افطميه فلما فطمته جاءت بالصبي في يده كسرة خبز فقالت يا نبي الله قد فطمته فامر النبي صلى الله عليه وسلم بالصبي فدفع الى رجل من المسلمين وامر بها فحفر لها حفرة فجعلت فيها الى صدرها ثم امر الناس ان يرجموها فاقبل خالد بن الوليد بحجر فرمى راسها فتلطخ الدم على وجنة خالد بن الوليد فسبها فسمع النبي صلى الله عليه وسلم سبه اياها فقال مه يا خالد لا تسبها فوالذي نفسي بيده لقد تابت توبة لو تابها صاحب مكس لغفر له فامر بها فصلي عليها ودفنت

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)
১৩. শাস্তি অধ্যায় (كتاب الحدود)

পরিচ্ছেদঃ ১৭. গর্ভবতী মহিলা যখন ব্যভিচারের স্বীকারোক্তি করে

২৩৬৪. ইমরান ইবনু হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা জুহায়না গোত্রের জনৈক মহিলা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়। আর সে যিনার দ্বারা গর্ভবতী হয়েছিল। তখন সে বললো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি হাদ (নির্ধারিত শাস্তি)-এর যোগ্য হয়েছি। ফলে আপনি আমার উপর হাদ কায়িম করুন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার অভিভাবকদের ডেকে বলেনঃ “তোমরা একে নিয়ে গিয়ে এর সাথে সদ্ব্যবহার করবে, আর যখন সে বাচ্চা প্রসব করবে, তখন তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে।” এরপর তারা তা করলে (সন্তান প্রসবের পর তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হাযির করলে) তিনি তার শরীরে ভালভাবে কাপড় পেঁচিয়ে, তাকে পাথর মেরে হত্যার নির্দেশ দেন।

ফলে তাকে পাথর মেরে হত্যা করার পর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত আদায় করেন। তখন উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনি কি তার জানাযার নামায পড়বেন, অথচ সে যিনা করেছে? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার জীবন; সে মহিলা এমন তাওবা করেছে, যদি তা মদীনার সত্তর জন ব্যক্তির মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়, তবে তা-ই যথেষ্ট হবে । এর চাইতে উত্তম আর কি হতে পারে যে, সে তো আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা’র উদ্দেশ্যে তার জীবনটাই উৎসর্গ করে দিয়েছে!”[1]

بَاب الْحَامِلِ إِذَا اعْتَرَفَتْ بِالزِّنَا

حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ أَبِي قِلَابَةَ عَنْ أَبِي الْمُهَلَّبِ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ أَنَّ امْرَأَةً مِنْ جُهَيْنَةَ أَتَتْ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهِيَ حُبْلَى مِنْ الزِّنَا فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَصَبْتُ حَدًّا فَأَقِمْهُ عَلَيَّ فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلِيَّهَا فَقَالَ اذْهَبْ فَأَحْسِنْ إِلَيْهَا فَإِذَا وَضَعَتْ حَمْلَهَا فَأْتِنِي بِهَا فَفَعَلَ فَأَمَرَ بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَشُكَّتْ عَلَيْهَا ثِيَابُهَا ثُمَّ أَمَرَ بِهَا فَرُجِمَتْ ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهَا فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَتُصَلِّي عَلَيْهَا وَقَدْ زَنَتْ فَقَالَ لَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ قُسِمَتْ بَيْنَ سَبْعِينَ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ لَوَسِعَتْهُمْ وَهَلْ وَجَدْتَ أَفْضَلَ مِنْ أَنْ جَادَتْ بِنَفْسِهَا لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ

حدثنا وهب بن جرير حدثنا هشام عن يحيى عن ابي قلابة عن ابي المهلب عن عمران بن حصين ان امراة من جهينة اتت النبي صلى الله عليه وسلم وهي حبلى من الزنا فقالت يا رسول الله اني اصبت حدا فاقمه علي فدعا رسول الله صلى الله عليه وسلم وليها فقال اذهب فاحسن اليها فاذا وضعت حملها فاتني بها ففعل فامر بها رسول الله صلى الله عليه وسلم فشكت عليها ثيابها ثم امر بها فرجمت ثم صلى عليها فقال عمر يا رسول الله اتصلي عليها وقد زنت فقال لقد تابت توبة لو قسمت بين سبعين من اهل المدينة لوسعتهم وهل وجدت افضل من ان جادت بنفسها لله عز وجل

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)
১৩. শাস্তি অধ্যায় (كتاب الحدود)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে