পরিচ্ছেদঃ ১৮০. যে ব্যক্তি যুহর বা আসরের দুই রাক’আত আদায় করে সালাম ফিরায়

৩৯৯। আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই রাকাআত নামায আদায় করে সালাম ফিরালেন। যুল-ইয়াদাইন (রাঃ) তাকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! নামায কি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে না আপনি ভুলে গেছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (লোকদের) প্রশ্ন করলেনঃ যুল-ইয়াদাইন কি ঠিক বলছে? লোকেরা বলল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে দাড়ালেন, বাকী দুই রাকাআত আদায় করালেন, তারপর সালাম ফিরালেন, তারপর তাকবীর বললেন, এবং আগের সিজদার সমান অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সময় সিজদায় থাকলেন, তারপর তাকবীর বলে মাথা তুললেন। তিনি আবার সিজদা্য় গিয়ে আগের সিজদার সমান বা তার চেয়ে বেশি সময় সিজদায় কাটালেন। —সহীহ। ইবনু মাজাহ– (১২১৪), বুখারী ও মুসলিম।

এ অনুচ্ছেদে ইমরান ইবনু হুসাইন, ইবনু উমার ও যুল-ইয়াদাইন (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ আবু হুরাইরা হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসকে কেন্দ্র করে বিদ্বানদের মধ্যে মত পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। কুফাবাসীদের একদল বলেছেন, যদি ভুলে অথবা অজ্ঞতাবশত অথবা যে কোন প্রকারে নামাযের মধ্যে কথা বলা হয় তবে আবার নামায আদায় করতে হবে। কেননা এ হাদীসটি নামাযের মধ্যে কথাবার্তা হারাম হওয়ার পূর্বেকার। ইমাম শাফিঈর মতে উল্লেখিত হাদীসটি সহীহ। তিনি এ হাদীসের সমর্থক। তিনি বলেছেন, “রোযাদার যদি ভুলক্রমে পানাহার করে ফেলে তবে তাকে এ রোযা আর রাখতে হবে না (কাযা করতে হবে না)। কেননা আল্লাহ তা’আলাই তাকে এ রিযক দিয়েছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ হাদীসটির তুলনায় পূর্বোল্লেখিত হাদীসটি বেশি সহীহ। তিনি আরো বলেছেন, ফাকীহগণ আবু হুরাইরার হাদীস অনুযায়ী রোযা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করা এবং ভুলে পানাহার করার মধ্যে পার্থক্য করেছেন।

আবু হুরাইরার হাদীস প্রসঙ্গে ইমাম আহমাদ বলেন, নামায পূর্ণ হয়েছে এই মনে করে যদি ইমাম নামাযের মধ্যে কথা বলে এবং পরে জানতে পারে যে, নামায এখনও বাকী রয়েছে-এ অবস্থায় সে বাকী নামায পূর্ণ করবে (কথা বলায় নামায বাতিল হয়নি)। নামায এখনো বাকী রয়েছে একথা জেনেও মুক্তাদী যদি কথা বলে তবে তাকে আবার নামায আদায় করতে হবে। তিনি এ যুক্তি প্রদান করেন যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ফরয নামাযে (ওহীর মাধ্যমে) কম বেশি করা হত। এজন্য যুল-ইয়াদাইনের বিশ্বাস ছিল হয়ত নামায পূর্ণ হয়েছে। তাই তিনি কথা বলেছেন, কিন্তু আজকাল এরূপ কথা চলবে না, কেননা এখন আর নামাযের কম-বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এজন্য আজকাল আর যুল-ইয়াদাইনের মত (নামায কি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে?) প্রশ্ন করা চলবে না। ইমাম ইসহাকও এ ব্যাপারে ইমাম আহমাদের সাথে একমত।

باب مَا جَاءَ فِي الرَّجُلِ يُسَلِّمُ فِي الرَّكْعَتَيْنِ مِنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ

حَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ أَبِي تَمِيمَةَ، وَهُوَ أَيُّوبُ السَّخْتِيَانِيُّ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم انْصَرَفَ مِنَ اثْنَتَيْنِ فَقَالَ لَهُ ذُو الْيَدَيْنِ أَقُصِرَتِ الصَّلاَةُ أَمْ نَسِيتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ أَصَدَقَ ذُو الْيَدَيْنِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ النَّاسُ نَعَمْ ‏.‏ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى اثْنَتَيْنِ أُخْرَيَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ كَبَّرَ فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ ثُمَّ كَبَّرَ فَرَفَعَ ثُمَّ سَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَابْنِ عُمَرَ وَذِي الْيَدَيْنِ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْكُوفَةِ إِذَا تَكَلَّمَ فِي الصَّلاَةِ نَاسِيًا أَوْ جَاهِلاً أَوْ مَا كَانَ فَإِنَّهُ يُعِيدُ الصَّلاَةَ وَاعْتَلُّوا بِأَنَّ هَذَا الْحَدِيثَ كَانَ قَبْلَ تَحْرِيمِ الْكَلاَمِ فِي الصَّلاَةِ ‏.‏ قَالَ وَأَمَّا الشَّافِعِيُّ فَرَأَى هَذَا حَدِيثًا صَحِيحًا فَقَالَ بِهِ وَقَالَ هَذَا أَصَحُّ مِنَ الْحَدِيثِ الَّذِي رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الصَّائِمِ إِذَا أَكَلَ نَاسِيًا فَإِنَّهُ لاَ يَقْضِي وَإِنَّمَا هُوَ رِزْقٌ رَزَقَهُ اللَّهُ ‏.‏ قَالَ الشَّافِعِيُّ وَفَرَّقُوا هَؤُلاَءِ بَيْنَ الْعَمْدِ وَالنِّسْيَانِ فِي أَكْلِ الصَّائِمِ بِحَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ ‏.‏ وَقَالَ أَحْمَدُ فِي حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ إِنْ تَكَلَّمَ الإِمَامُ فِي شَيْءٍ مِنْ صَلاَتِهِ وَهُوَ يَرَى أَنَّهُ قَدْ أَكْمَلَهَا ثُمَّ عَلِمَ أَنَّهُ لَمْ يُكْمِلْهَا يُتِمُّ صَلاَتَهُ وَمَنْ تَكَلَّمَ خَلْفَ الإِمَامِ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّ عَلَيْهِ بَقِيَّةً مِنَ الصَّلاَةِ فَعَلَيْهِ أَنْ يَسْتَقْبِلَهَا ‏.‏ وَاحْتَجَّ بِأَنَّ الْفَرَائِضَ كَانَتْ تُزَادُ وَتُنْقَصُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِنَّمَا تَكَلَّمَ ذُو الْيَدَيْنِ وَهُوَ عَلَى يَقِينٍ مِنْ صَلاَتِهِ أَنَّهَا تَمَّتْ وَلَيْسَ هَكَذَا الْيَوْمَ لَيْسَ لأَحَدٍ أَنْ يَتَكَلَّمَ عَلَى مَعْنَى مَا تَكَلَّمَ ذُو الْيَدَيْنِ لأَنَّ الْفَرَائِضَ الْيَوْمَ لاَ يُزَادُ فِيهَا وَلاَ يُنْقَصُ ‏.‏ قَالَ أَحْمَدُ نَحْوًا مِنْ هَذَا الْكَلاَمِ ‏.‏ وَقَالَ إِسْحَاقُ نَحْوَ قَوْلِ أَحْمَدَ فِي الْبَابِ ‏.‏

حدثنا الانصاري، حدثنا معن، حدثنا مالك، عن ايوب بن ابي تميمة، وهو ايوب السختياني عن محمد بن سيرين، عن ابي هريرة، ان النبي صلى الله عليه وسلم انصرف من اثنتين فقال له ذو اليدين اقصرت الصلاة ام نسيت يا رسول الله فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ اصدق ذو اليدين ‏"‏ ‏.‏ فقال الناس نعم ‏.‏ فقام رسول الله صلى الله عليه وسلم فصلى اثنتين اخريين ثم سلم ثم كبر فسجد مثل سجوده او اطول ثم كبر فرفع ثم سجد مثل سجوده او اطول ‏.‏ قال ابو عيسى وفي الباب عن عمران بن حصين وابن عمر وذي اليدين ‏.‏ قال ابو عيسى وحديث ابي هريرة حديث حسن صحيح ‏.‏ واختلف اهل العلم في هذا الحديث فقال بعض اهل الكوفة اذا تكلم في الصلاة ناسيا او جاهلا او ما كان فانه يعيد الصلاة واعتلوا بان هذا الحديث كان قبل تحريم الكلام في الصلاة ‏.‏ قال واما الشافعي فراى هذا حديثا صحيحا فقال به وقال هذا اصح من الحديث الذي روي عن النبي صلى الله عليه وسلم في الصاىم اذا اكل ناسيا فانه لا يقضي وانما هو رزق رزقه الله ‏.‏ قال الشافعي وفرقوا هولاء بين العمد والنسيان في اكل الصاىم بحديث ابي هريرة ‏.‏ وقال احمد في حديث ابي هريرة ان تكلم الامام في شيء من صلاته وهو يرى انه قد اكملها ثم علم انه لم يكملها يتم صلاته ومن تكلم خلف الامام وهو يعلم ان عليه بقية من الصلاة فعليه ان يستقبلها ‏.‏ واحتج بان الفراىض كانت تزاد وتنقص على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم فانما تكلم ذو اليدين وهو على يقين من صلاته انها تمت وليس هكذا اليوم ليس لاحد ان يتكلم على معنى ما تكلم ذو اليدين لان الفراىض اليوم لا يزاد فيها ولا ينقص ‏.‏ قال احمد نحوا من هذا الكلام ‏.‏ وقال اسحاق نحو قول احمد في الباب ‏.‏


Abu Hurairah narrated:
"The Prophet (S) turned (finished the prayer) after two (Rak'ah), so Dhul-Yadain said: 'Has the prayer been shortened or have you forgotten O Messenger of Allah?" The Prophet (S) said: 'Is what Dhul-Yadain said the truth?' The people said yes, so Allah's Messenger (S) stood to perform the last two (Rakah) of Salat, then he said the Taslim. Then he said the Takbir and prostrated in a manner the same or longer than his (normal) prostrations."


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
২/ রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে নামাযের সময়সূচী (كتاب الصلاة عن رسول الله ﷺ) 2. The Book on Salat (Prayer)