পরিচ্ছেদঃ ৭৪. জাওরাব ও জুতার উপর মাসাহ করা
৯৯। মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওযু করলেন এবং জাওরাব ও জুতার উপর মাসাহ করলেন। —সহীহ। ইবনু মাজাহ– (৫৫৯)।
আবু ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ। একাধিক বিশেষজ্ঞ যেমন, সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক বলেছেন, জাওরাবের উপর মাসিহ করা যাবে, তার সাথে জুতা না পরা হলেও। এটা যখন মোটা বস্ত্রের হবে। এ অনুচ্ছেদে আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসও রয়েছে।
আবু ঈসা বলেনঃ আমি সালিহ ইবনু মুহাম্মাদ আত-তিরমিয়ীর নিকট শুনেছি, তিনি বলেন, আমি আবু মুকাতিল সামার কান্দীকে বলতে শুনেছি, আমি ইমাম আবু হানীফার নিকট ঐ অসুখের সময় উপস্থিত হলাম যে অসুখে তিনি ইনতিকাল করেছেন। তিনি পানি আনতে বললেন, অতঃপর ওযু করলেন তার পায়ে জাওরাবা ছিল, তিনি তার উপর মাসাহ করলেন আর বললেন, আজ আমি এমন একটি কাজ করলাম, যা আমি পূর্বে করিনি। আমি জাওরাবার উপর মাসাহ করেছি অথচ তার সাথে জুতা ছিল না।
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। আরবী ভাষায় সুতো বা কাপড় কিংবা কার্পাসের তৈরি পায়ের আবরণকে বা মোজাকে (জাওরাব) বলা হয়।
২। এই হাদীসটির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সুতো বা কাপড় কিংবা কার্পাসের তৈরি পায়ের আবরণ বা মোজার উপরে মাসাহ করা প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা সম্মত একটি বিধান। তাই এই ধরণের পায়ের আবরণ বা মোজার উপরে বাসস্থানে বাস করার অবস্থায় এবং মুসাফির অবস্থায় গ্রীষ্মকালে এবং শীতকালে মাসাহ করা বৈধ। তবে এই ধরণের পায়ের আবরণ বা মোজা যেন পুরু হয়, ঘন সুতা দিয়ে তৈরি করা হয়, যাতে উপর থেকে পায়ের চামড়া প্রকাশ না পায়, এবং পায়ের উপরে সঠিকভাবে স্থাপিত হয়, বেঁধে রাখার প্রয়োজন না হয়। তাই বলা যেতে পারে যে, উল্লিখিত দুই প্রকারের পায়ের আবরণ বা মোজার মধ্যে খুব বেশি তফাত নেই। কেননা দুই প্রকারের পায়ের আবরণের মধ্যে মোজা বা খুফ এর অর্থ পাওয়া যায়। তাই সুতো বা কাপড় কিংবা কার্পাসের তৈরি পায়ের আবরণ বা মোজার উপরে মাসাহ করার শর্ত হলো এই যে, কার্পাসের তৈরি পায়ের আবরণ বা মোজা যেন পুরু হয়, ঘন সুতা দিয়ে তৈরি করা হয়, যাতে উপর থেকে পায়ের চামড়া প্রকাশ না পায়, এবং পায়ের উপরে সঠিকভাবে স্থাপিত হয়, বেঁধে রাখার প্রয়োজন না হয়। তাই উক্ত পায়ের আবরণ বা মোজা যদি পাতলা হয় পায়ের চাম আবৃত না করে, তাহলে তার উপরে মাসাহ করা বৈধ নয়। কেননা এই অবস্থায় পা যেন অনাবৃতই রয়েছে, আর অনাবৃত পায়ের উপরে মাসাহ করা বৈধ নয়। সুতো বা কাপড় কিংবা কার্পাসের তৈরি পায়ের আবরণ বা মোজার উপরে মাসাহ করার অন্য একটি শর্ত হলো: পরিপূর্ণ পবিত্র অবস্থায় ওজু অথবা গোসল করার পর পায়ের আবরণ বা মোজার উপর মাসাহ করা। আর এটাই হলো অধিকাংশ ইমাম ও পণ্ডিতদের অভিমত। মহান আল্লাহ তাঁদের প্রতি দয়া করুন।
৩। সুতো বা কাপড় কিংবা কার্পাসের তৈরি পায়ের আবরণ (জাওরাব) বা মোজার উপরে মাসাহ করার সময় শুরু হবে ওজু ভেঙ্গে যাওয়ার পর প্রথম মাসাহ করা থেকে। সুতরাং বাসস্থানে বাস করা অবস্থায় প্রথম মাসাহ থেকে একদিন একরাত এবং মুসাফির অবস্থায় প্রথম মাসাহ থেকে তিনদিন তিনরাত মাসাহ করা বৈধ।
باب مَا جَاءَ فِي الْمَسْحِ عَلَى الْجَوْرَبَيْنِ وَالنَّعْلَيْنِ
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي قَيْسٍ، عَنْ هُزَيْلِ بْنِ شُرَحْبِيلَ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، قَالَ تَوَضَّأَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَمَسَحَ عَلَى الْجَوْرَبَيْنِ وَالنَّعْلَيْنِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ قَوْلُ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ قَالُوا يَمْسَحُ عَلَى الْجَوْرَبَيْنِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ نَعْلَيْنِ إِذَا كَانَا ثَخِينَيْنِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي مُوسَى . قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ صَالِحَ بْنَ مُحَمَّدٍ التِّرْمِذِيَّ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا مُقَاتِلٍ السَّمَرْقَنْدِيَّ يَقُولُ دَخَلْتُ عَلَى أَبِي حَنِيفَةَ فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ فَدَعَا بِمَاءٍ فَتَوَضَّأَ وَعَلَيْهِ جَوْرَبَانِ فَمَسَحَ عَلَيْهِمَا ثُمَّ قَالَ فَعَلْتُ الْيَوْمَ شَيْئًا لَمْ أَكُنْ أَفْعَلُهُ مَسَحْتُ عَلَى الْجَوْرَبَيْنِ وَهُمَا غَيْرُ مُنَعَّلَيْنِ .
Al-Mughirah bin Shu`bah narrated:
"The Prophet performed Wudu' and wiped over his socks and sandals."