পরিচ্ছেদঃ ২৫. (দু’টি অভ্যাস জান্নাতে যাবার উপায়)
৩৪১০। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিম ব্যক্তি দুইটি অভ্যাসে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হতে পারলে সে নিশ্চিয় জান্নাতে প্রবেশ করবে। জেনে রাখ! উক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো আয়ত্ত করা সহজ। সে অনুসারে অনেক অল্প সংখ্যক ব্যক্তিই তা আমল করে থাকে।
(এক) প্রতি ওয়াক্তের (ফরয) নামাযের পর দশবার সুবহানাল্লাহ, দশবার "আলহামদুলিল্লাহ ও দশবার আল্লাহু আকবার বলবে। আবদুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি নামাযের পর স্বীয় হস্তে গণনা করতে দেখেছি। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ (পাঁচ ওয়াক্তে) মুখের উচ্চারণে একশত পঞ্চাশ বার এবং মীযানে (দাড়িপাল্লায়) দেড় হাজার হবে।
(দুই) আর (ঘুমাতে) শয্যা গ্রহণকালে তুমি “সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার ও আলহামদু লিল্লাহ" এক শত বার বলবে, ফলে তা মীযানে এক হাজারে রূপান্তর হবে। তোমাদের মাঝে কে এক দিন ও এক রাতে দুই হাজার পাঁচশত গুনাহে লিপ্ত হয়? (অর্থাৎ এতগুলো পাপও ক্ষমাযোগ্য হবে)।
সাহাবীগণ বলেন, কোন ব্যক্তি সব সময় এরূপ একটি ইবাদাত কেন করবে না! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদের কেউ নামাযে অবস্থানরত থাকাকালে তার কাছে শাইতান এসে বলতে থাকে, এটা মনে কর ওটা মনে কর। ফলে সেই নামায়ী (শাইতানের ধোকাবাজির মাঝেই রত থাকা অবস্থায়) নামায শেষ করে। আর উক্ত তাসবীহ আমল করার সে সুযোগ পায় না। পুনরায় তোমাদের কেউ শোয়ার জন্য শয্যা গ্রহণ করলে শাইতান তার নিকট এসে তাকে ঘুম পাড়ায় এবং সে তাসবীহ না পাঠ করেই ঘুমিয়ে পড়ে।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ৯২৬)।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীস শুবাহ ও সাওরী (রাহঃ) আতা ইবনুস সায়িব (রহঃ) হতে রিওয়ায়াত করেছেন। এ হাদীস আমাশ (রাহঃ) আতা ইবনুস সায়িব হতে সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করেছেন। এ অনুচ্ছেদে যাইদ ইবনু সাবিত, আনাস ও ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
باب مِنْهُ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، حَدَّثَنَا عَطَاءُ بْنُ السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، رضى الله عنهما قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " خَلَّتَانِ لاَ يُحْصِيهِمَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ إِلاَّ دَخَلَ الْجَنَّةَ أَلاَ وَهُمَا يَسِيرٌ وَمَنْ يَعْمَلُ بِهِمَا قَلِيلٌ يُسَبِّحُ اللَّهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ عَشْرًا وَيَحْمَدُهُ عَشْرًا وَيُكَبِّرُهُ عَشْرًا " . قَالَ فَأَنَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْقِدُهَا بِيَدِهِ قَالَ " فَتِلْكَ خَمْسُونَ وَمِائَةٌ بِاللِّسَانِ وَأَلْفٌ وَخَمْسُمِائَةٍ فِي الْمِيزَانِ وَإِذَا أَخَذْتَ مَضْجَعَكَ تُسَبِّحُهُ وَتُكَبِّرُهُ وَتَحْمَدُهُ مِائَةً فَتِلْكَ مِائَةٌ بِاللِّسَانِ وَأَلْفٌ فِي الْمِيزَانِ فَأَيُّكُمْ يَعْمَلُ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ أَلْفَيْنِ وَخَمْسَمِائَةِ سَيِّئَةٍ " . قَالُوا وَكَيْفَ لاَ يُحْصِيهَا قَالَ " يَأْتِي أَحَدَكُمُ الشَّيْطَانُ وَهُوَ فِي صَلاَتِهِ فَيَقُولُ اذْكُرْ كَذَا اذْكُرْ كَذَا . حَتَّى يَنْفَتِلَ فَلَعَلَّهُ أَنْ لاَ يَفْعَلَ وَيَأْتِيهِ وَهُوَ فِي مَضْجَعِهِ فَلاَ يَزَالُ يُنَوِّمُهُ حَتَّى يَنَامَ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ وَالثَّوْرِيُّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ هَذَا الْحَدِيثَ . وَرَوَى الأَعْمَشُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ مُخْتَصَرًا . وَفِي الْبَابِ عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَأَنَسٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله عنهم .
Abdullah bin `Amr [may Allah be pleased with both of them] said:
“The Messenger of Allah said: ‘There are two characteristics over which a Muslim man does not guard, except that he enters Paradise. And indeed, they are easy, and those who act upon them are few: He glorifies Allah at the end of every prayer ten times (saying Subḥān Allāh) and praises Him ten times saying (Al-Ḥamdulillāh) and extols His greatness ten times (saying Allāhu Akbar).’”He said: “And I have seen the Messenger of Allah counting them with his hand. He said: ‘So this is one hundred and fifty with the tongue, and one thousand and five hundred on the Scale. When you go to bed, you glorify Him, extol His greatness, and praise Him a hundred times, so this is one hundred with the tongue and one thousand on the Scale. Which of you perform two thousand and five hundred evil deeds in a single day and night?’ They said: ‘How could we not guard over them?’ He said: ‘Shaitan comes to one of you when he is in his Salat and says: “Remember such and such, remember such and such” until he turns perhaps he will not do it. And he comes to him and he is lying down and makes him sleepy until he falls asleep.’”
পরিচ্ছেদঃ ২৫. (দু’টি অভ্যাস জান্নাতে যাবার উপায়)
৩৪১১। ’আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি গুনে গুনে তাসবীহ পাঠ করতে দেখেছি।
সহীহঃ প্রাগুক্ত
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং আ’মাশের বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে গারীব।
باب مِنْهُ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّنْعَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَثَّامُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، رضى الله عنهما قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْقِدُ التَّسْبِيحَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ الأَعْمَشِ .
Abdullah bin Amr [may Allah be pleased with him] said:
“I saw the Messenger of Allah counting At-Tasbīḥ.”
পরিচ্ছেদঃ ২৫. (দু’টি অভ্যাস জান্নাতে যাবার উপায়)
৩৪১২। কাব ইবনু উজরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নামাযের পরে তিলাওয়াত করার মত এমন কিছু বিষয় আছে যে, যার তিলাওয়াতকারী কখনো বঞ্চিত হয় না। প্রতি ওয়াক্তের নামাযের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার "আলহামদুলিল্লাহ’ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার’ পাঠ করবে।
সহীহঃ সহীহাহ (হাঃ ১০২), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমর ইবনু কাইস আল-মুলাঈ নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী এবং হাদীসের হাফিয। এ হাদীস শুবাহ (রহঃ) হাকাম (রহঃ) হতে রিওয়ায়াত করেছেন এবং তিনি তা মারফুরূপে রিওয়ায়াত করেননি। কিন্তু মানসূর ইবনুল মু’তামির (রহঃ) এ হাদীস হাকাম (রাহঃ) হতে মারফুরূপে বর্ণনা করেছেন।
باب مِنْهُ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ سَمُرَةَ الأَحْمَسِيُّ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَسْبَاطُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ قَيْسٍ الْمُلاَئِيُّ، عَنِ الْحَكَمِ بْنِ عُتَيْبَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مُعَقِّبَاتٌ لاَ يَخِيبُ قَائِلُهُنَّ يُسَبِّحُ اللَّهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَيَحْمَدُهُ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَيُكَبِّرُهُ أَرْبَعًا وَثَلاَثِينَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَعَمْرُو بْنُ قَيْسٍ الْمُلاَئِيُّ ثِقَةٌ حَافِظٌ . وَرَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الْحَكَمِ وَلَمْ يَرْفَعْهُ . وَرَوَاهُ مَنْصُورُ بْنُ الْمُعْتَمِرِ عَنِ الْحَكَمِ وَرَفَعَهُ .
Ka’b bin Ujrah narrated that:
The Prophet said: “There are Mu’aqqibat, he who says them shall not be miserable. Glorify Allah at the end of every prayer thirty-three times, and praise him thirty-three times, and extol His greatness thirty-four times.”
পরিচ্ছেদঃ ২৫. (দু’টি অভ্যাস জান্নাতে যাবার উপায়)
৩৪১৩। যাইদ ইবনু সাবিত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেক নামাযের পরে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার "আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করতে আদিষ্ট হলাম। এক আনসারী ব্যক্তি স্বপ্নে দেখতে পেলেন যে, কোন এক ব্যক্তি তাকে বলছে তোমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি প্রতি নামাযের পরে ৩৩ বার তাসবীহ, ৩৩ বার তাহমীদ ও ৩৪ বার তাকবীর পাঠ করতে আদেশ করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, এগুলো তোমরা ২৫ বার করে পাঠ কর। আর তার সাথে ২৫ বার তাহলীল অর্থাৎ “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ পাঠ কর। লোকটি সকাল বেলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে গিয়ে তা বর্ণনা করল। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আচ্ছা তাই কর।
সহীহঃ ইবনু খুযাইমাহ (৭৫২)।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি সহীহ।
باب مِنْهُ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ كَثِيرِ بْنِ أَفْلَحَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، رضى الله عنه قَالَ أُمِرْنَا أَنْ نُسَبِّحَ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَنَحْمَدَهُ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَنُكَبِّرَهُ أَرْبَعًا وَثَلاَثِينَ . قَالَ فَرَأَى رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فِي الْمَنَامِ فَقَالَ أَمَرَكُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ تُسَبِّحُوا فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَتَحْمَدُوا اللَّهَ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَتُكَبِّرُوا أَرْبَعًا وَثَلاَثِينَ قَالَ نَعَمْ . قَالَ فَاجْعَلُوا خَمْسًا وَعِشْرِينَ وَاجْعَلُوا التَّهْلِيلَ مَعَهُنَّ فَغَدَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَحَدَّثَهُ فَقَالَ " افْعَلُوا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
Zaid bin Thabit (ra) said:
“We were ordered to say the Tasbīḥ at the end of every Salat thirty-three times, and to say the Takbīr thirty-four times.” He said: “Then a man from the Ansar had a dream in which someone said: ‘The Messenger of Allah (ﷺ) ordered you to say the Tasbīḥ at the end of every Salat thirty-three times, and to say the Taḥmīd thirty-three times, and to say the Takbīr thirty-four times?’ He said: ‘Yes.’ He said: ‘Then make them twenty-five and add the Tahlīl (saying Lā ilāha illallāh) to them.’ The next day he went to the Prophet (ﷺ) and informed him, so he said: “Do it.”