পরিচ্ছেদঃ ২. জান্নাত ও এর উপকরণাদির বর্ণনা

২৫২৬। আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল আমাদের কি হলো যে, আমরা দুনিয়ার প্রতি উদাসীন হয়ে যাই এবং আমাদেরকে পরকালবাসীদের অন্তর্ভুক্ত মনে করতে থাকি। তারপর আপনার কাছ থেকে সরে গিয়ে পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে গিয়ে দুনিয়াবী কাজে জড়িয়ে পড়ি এবং সন্তানাদির সুগন্ধ পেতে থাকি, তখন আমাদের অবস্থা সম্পূর্ণ উল্টো হয়ে যায়।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা যে অবস্থায় আমার নিকট হতে বেরিয়ে যাও, সবসময় যদি সেই অবস্থায় থাকতে তাহলে ফেরেশতারা তোমাদের বাড়ীতে গিয়ে তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করতো। আর তোমরা অপরাধ না করলে আল্লাহ তা’আলা নতুন প্রাণী সৃষ্টি করতেন। যাতে তারা অপরাধ করে আর তিনি তাদেরকে ক্ষমা করেন।

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলামঃ হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! কি দিয়ে প্রাণী সৃষ্টি করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ পানি দিয়ে। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, কি দিয়ে জান্নাত তৈরি করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ সোনা-রুপার ইট দিয়ে। একটি রূপার ইট, তারপর একটি সোনার ইট, এভাবে গাথা হয়েছে। এর গাথুনির উপকরণ (চুন-সুরকি-সিমেন্ট) সুগন্ধি মৃগনাভি এবং কংকরসমূহ মণি-মুক্তার ও মাটি হলো জাফরান। জান্নাতে প্রবেশকারী লোক অত্যন্ত সুখ-স্বাচ্ছন্দে থাকবে, কোন দুঃখ-কষ্ট ও অভাব-অনটন তাকে স্পর্শ করবে না। সে অনন্তকাল এতে অবস্থান করবে আর মৃত্যুবরণ করবে না। না তার পরনের পোশাক পুরাতন হবে আর না তার যৌবনকাল শেষ হবে (অনন্তযৌবনা হবে)।

তিনি পুনরায় বললেনঃ তিনজনের দু’আ ফিরিয়ে দেয়া হয়নাঃ ন্যায়পরায়ণ শাসকের দু’আ, রোযাদারের ইফতারের সময়কালীন দু’আ এবং মাযলুমের দু’আ আল্লাহ তা’আলা একে (মায়ালুমের দু’আ) মেঘমালার উপর তুলে নেন, তার জন্য আকাশের দরজাসমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমার ইজ্জাত ও সম্মানের শপথ! কিছু দেরিতে হলেও আমি তোমাকে সাহায্য করবো।

“কি দিয়ে প্রাণী সৃষ্টি করা হয়েছে" অংশটুকু ব্যতীত হাদীসটি সহীহ, সহীহাহ (২/৬৯২-৬৯৩), গাইয়াতুল মারাম (৩৭৩)।

আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসের সনদ খুব একটা মজবুত নয়। আর আমার মতে এর সনদসূত্র মুত্তাসিল (পরস্পর সংযুক্ত) নয়। এই হাদীসটি অন্য সনদেও আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ)-এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত হয়েছে।

حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ حَمْزَةَ الزَّيَّاتِ، عَنْ زِيَادٍ الطَّائِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا لَنَا إِذَا كُنَّا عِنْدَكَ رَقَّتْ قُلُوبُنَا وَزَهِدْنَا فِي الدُّنْيَا وَكُنَّا مِنْ أَهْلِ الآخِرَةِ فَإِذَا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِكَ فَآنَسْنَا أَهَالِيَنَا وَشَمَمْنَا أَوْلاَدَنَا أَنْكَرْنَا أَنْفُسَنَا ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ لَوْ أَنَّكُمْ تَكُونُونَ إِذَا خَرَجْتُمْ مِنْ عِنْدِي كُنْتُمْ عَلَى حَالِكُمْ ذَلِكَ لَزَارَتْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ فِي بُيُوتِكُمْ وَلَوْ لَمْ تُذْنِبُوا لَجَاءَ اللَّهُ بِخَلْقٍ جَدِيدٍ كَىْ يُذْنِبُوا فَيَغْفِرَ لَهُمْ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مِمَّ خُلِقَ الْخَلْقُ قَالَ ‏"‏ مِنَ الْمَاءِ ‏"‏ ‏.‏ قُلْنَا الْجَنَّةُ مَا بِنَاؤُهَا قَالَ ‏"‏ لَبِنَةٌ مِنْ فِضَّةٍ وَلَبِنَةٌ مِنْ ذَهَبٍ وَمِلاَطُهَا الْمِسْكُ الأَذْفَرُ وَحَصْبَاؤُهَا اللُّؤْلُؤُ وَالْيَاقُوتُ وَتُرْبَتُهَا الزَّعْفَرَانُ مَنْ يَدْخُلْهَا يَنْعَمْ وَلاَ يَبْأَسْ وَيُخَلَّدْ وَلاَ يَمُوتْ لاَ تَبْلَى ثِيَابُهُمْ وَلاَ يَفْنَى شَبَابُهُمْ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ ثَلاَثَةٌ لاَ تُرَدُّ دَعْوَتُهُمُ الإِمَامُ الْعَادِلُ وَالصَّائِمُ حِينَ يُفْطِرُ وَدَعْوَةُ الْمَظْلُومِ يَرْفَعُهَا فَوْقَ الْغَمَامِ وَتُفَتَّحُ لَهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَيَقُولُ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ وَعِزَّتِي لأَنْصُرَنَّكِ وَلَوْ بَعْدَ حِينٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِذَاكَ الْقَوِيِّ وَلَيْسَ هُوَ عِنْدِي بِمُتَّصِلٍ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ بِإِسْنَادٍ آخَرَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏

حدثنا ابو كريب، حدثنا محمد بن فضيل، عن حمزة الزيات، عن زياد الطاىي، عن ابي هريرة، قال قلنا يا رسول الله ما لنا اذا كنا عندك رقت قلوبنا وزهدنا في الدنيا وكنا من اهل الاخرة فاذا خرجنا من عندك فانسنا اهالينا وشممنا اولادنا انكرنا انفسنا ‏.‏ فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏"‏ لو انكم تكونون اذا خرجتم من عندي كنتم على حالكم ذلك لزارتكم الملاىكة في بيوتكم ولو لم تذنبوا لجاء الله بخلق جديد كى يذنبوا فيغفر لهم ‏"‏ ‏.‏ قال قلت يا رسول الله مم خلق الخلق قال ‏"‏ من الماء ‏"‏ ‏.‏ قلنا الجنة ما بناوها قال ‏"‏ لبنة من فضة ولبنة من ذهب وملاطها المسك الاذفر وحصباوها اللولو والياقوت وتربتها الزعفران من يدخلها ينعم ولا يباس ويخلد ولا يموت لا تبلى ثيابهم ولا يفنى شبابهم ‏"‏ ‏.‏ ثم قال ‏"‏ ثلاثة لا ترد دعوتهم الامام العادل والصاىم حين يفطر ودعوة المظلوم يرفعها فوق الغمام وتفتح لها ابواب السماء ويقول الرب عز وجل وعزتي لانصرنك ولو بعد حين ‏"‏ ‏.‏ قال ابو عيسى هذا حديث ليس اسناده بذاك القوي وليس هو عندي بمتصل وقد روي هذا الحديث باسناد اخر عن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم ‏.‏


Abu Hurairah narrated:
"We said: 'O Messenger of Allah! What is wrong with us that when we are with you our hearts are softened and we feel free of desire for this world, and we are of the people of the Hereafter. But when we depart from you and socialize with our families and our children, we do not recognize ourselves(i.e., we are changed persons)?' So the Messenger of Allah (s.a.w) said: 'If you were to be in that condition when you depart from me, the angels would have surely visited you in your houses. And if you did not sin, Allah would surely have brought anew creation that they may sin, so that then He may forgive them.'"He said: "I said: 'O Messenger of Allah! From what was the creation created?' He said: 'From water.' We said: 'Paradise, what is it constructed of?' He said,'Bricks of silver and bricks of gold. Its mortar is musk of a strong fragrance, and its pebbles are pearls and rubies, and its earth is saffron. Whoever enters it shall live and shall not suffer, and shall feel joy and shall not die, nor shall their clothes wear out, nor shall their youth come to an end.' Then he said: 'Three persons , their supplication is not rejected: The just ruler, the fasting person when he breaks his fast, and the supplication of the wronged person. It is raised up above the clouds, and the gates of Heaven are opened up for it, and the Lord, Blessed and Exalted says: I shall surely come to your aid, even if after a time.'"


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৩৬/ জান্নাতের বিবরণ (كتاب صفة الجنة عن رسول الله ﷺ) 36. Chapters on the description of Paradise