পরিচ্ছেদঃ ২৯. (গ্রহণকারীর চাইতে প্রদানকারী উত্তম)
২৪৬৩। হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আমি কিছু ধন-সম্পদ চাইলাম। তিনি আমাকে (সেটা) দিলেন। আমি আবার চাইলে তিনি আবারো দিলেন। আমি আবার চাইলে তিনি আবারো দিলেন, তারপর বললেন, হে হাকীম! ধন-দৌলত হলো সবুজ-শ্যামল ও লোভনীয় বস্তু। সুতরাং যে লোক এটাকে উদার মনে গ্রহণ করবে, তার জন্য এতেই মঙ্গল ও রহমত প্রদান করা হবে। আর যে লোক তা লোভাতুর মনোভাব নিয়ে গ্রহণ করবে, সে তাতে বারকাত ও মঙ্গলপ্রাপ্ত হবে না। সে এমন লোকের সাথে তুলনীয়, যে খাদ্য গ্রহণ করে প্রচুর কিন্তু তৃপ্ত হয় না। উপরের হাত (দাতার হাত) নিচের (প্রার্থনাকারীর) হাত হতে উত্তম।
হাকীম (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! সেই মহান সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্যসহকারে প্রেরণ করেছেন। আমি মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত আপনার পর আর কারো নিকট প্রার্থনা করে তার সম্পদে কমতি করবো না। তারপর আবূ বকর (রাঃ) তার আমলে হাকীম (রাঃ)-কে কিছু দেয়ার জন্য ডেকে পাঠান। কিন্তু তিনি তা নিতে অসম্মতি জানান। তারপর উমর (রাঃ)-ও তাকে কিছু দেয়ার জন্য ডেকে আনেন। কিন্তু তিনি কিছু নিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। অতঃপর উমার (রাঃ) বললেন, হে মুসলিম সমাজ! আমি হাকীমের ব্যাপারে তোমাদেরকে সাক্ষী করছি যে, আমি তাকে গানীমাতের সম্পদ হতে তার প্রাপ্য উপস্থাপন করেছি, কিন্তু তিনি তা নিতে অসম্মতি জানান। তারপর হাকীম (রাঃ) মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পরে আর কারো নিকট হতে কোন কিছুই নেননি।
সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ।
حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، وَابْنِ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ حَكِيمَ بْنَ حِزَامٍ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَعْطَانِي ثُمَّ سَأَلْتُهُ فَأَعْطَانِي ثُمَّ سَأَلْتُهُ فَأَعْطَانِي ثُمَّ قَالَ " يَا حَكِيمُ إِنَّ هَذَا الْمَالَ خَضِرَةٌ حُلْوَةٌ فَمَنْ أَخَذَهُ بِسَخَاوَةِ نَفْسٍ بُورِكَ لَهُ فِيهِ وَمَنْ أَخَذَهُ بِإِشْرَافِ نَفْسٍ لَمْ يُبَارَكْ لَهُ فِيهِ وَكَانَ كَالَّذِي يَأْكُلُ وَلاَ يَشْبَعُ وَالْيَدُ الْعُلْيَا خَيْرٌ مِنَ الْيَدِ السُّفْلَى " . فَقَالَ حَكِيمٌ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لاَ أَرْزَأُ أَحَدًا بَعْدَكَ شَيْئًا حَتَّى أُفَارِقَ الدُّنْيَا . فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يَدْعُو حَكِيمًا إِلَى الْعَطَاءِ فَيَأْبَى أَنْ يَقْبَلَهُ ثُمَّ إِنَّ عُمَرَ دَعَاهُ لِيُعْطِيَهُ فَأَبَى أَنْ يَقْبَلَ مِنْهُ شَيْئًا فَقَالَ عُمَرُ إِنِّي أُشْهِدُكُمْ يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِينَ عَلَى حَكِيمٍ أَنِّي أَعْرِضُ عَلَيْهِ حَقَّهُ مِنْ هَذَا الْفَىْءِ فَيَأْبَى أَنْ يَأْخُذَهُ . فَلَمْ يَرْزَأْ حَكِيمٌ أَحَدًا مِنَ النَّاسِ شَيْئًا بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى تُوُفِّيَ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
'Urwah bin Az-Zubair and Ibn Musayyab narrated that Hakim bin Hizam said:
"I (once) asked the Messenger of Allah (s.a.w) (for something) and he gave it to me. Then I asked him (again) and he gave it to me. Then I asked him (again) and he gave it to me. Then I asked him (again), so he gave it to me. Then he said: 'O Hakim! Indeed this wealth is green and sweet, so whoever takes it without asking for it, he will be blessed in it. And whoever takes it, insisting upon it, he will not be blessed in it. He is like the one who eats but does not get satisfied and contended. And the upper hand (giving) is better than the lower hand (receiving)." So Hakim said: "I said: 'O Messenger of Allah! By the One who sent you with the Truth! I shall not ask anyone for anything after you until I depart the world.'"So Abu Bakr used to call Hakim to give him something, but he refused to accept it. Then 'Umar called him to give to him, but he refused to accept it. So 'Umar said: "O you Muslims! I would like you to bear witness that I presented Hakim with his due of these spoils of war but he refused to accept it." So Hakim never asked anyone of the people for anything after the Messenger of Allah, until he died.
পরিচ্ছেদঃ ২৯. (গ্রহণকারীর চাইতে প্রদানকারী উত্তম)
২৪৬৪। ’আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ -এর সঙ্গে আমাদেরকে বিপদাপদ দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। আমরা এতে ধৈর্য ধারণ করেছি। তাঁর মৃত্যুর পরে সুখ-স্বাচ্ছন্দ ও আরাম-আয়িশ দ্বারা আমাদেরকে পরীক্ষা করা হলে আমরা ধৈর্য ও সহনশীলতার স্বাক্ষর রাখতে পারিনি।
সনদ সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান।
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو صَفْوَانَ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، قَالَ ابْتُلِينَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالضَّرَّاءِ فَصَبَرْنَا ثُمَّ ابْتُلِينَا بِالسَّرَّاءِ بَعْدَهُ فَلَمْ نَصْبِرْ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
'Abdur-Rahman bin 'Awf said:
"We were tested along with the Messenger of Allah(s.a.w) by adversity, so we were patient, then we were tested after him with prosperity, but we were not patient."
পরিচ্ছেদঃ ২৯. (গ্রহণকারীর চাইতে প্রদানকারী উত্তম)
২৪৬৫। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তির একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে পরকাল, আল্লাহ তা’আলা সেই ব্যক্তির অন্তরকে অভাবমুক্ত করে দিবেন এবং তার যাবতীয় বিচ্ছিন্ন কাজ একত্রিত করে সুসংযত করে দিবেন, তখন তার নিকট দুনিয়াটা নগণ্য হয়ে দেখা দিবে।
আর যে ব্যক্তির একমাত্র চিন্তার বিষয় হবে দুনিয়া, আল্লাহ তা’আলা সেই ব্যক্তির গরীবি ও অভাব-অনটন দুচোখের সামনে লাগিয়ে রাখবেন এবং তার কাজগুলো এলোমেলো ও ছিন্নভিন্ন করে দিবেন। তার জন্য যা নির্দিষ্ট রয়েছে, দুনিয়াতে সে এর চাইতে বেশি পাবে না।
সহীহঃ সহীহা (৯৪৯-৯৫০)।
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ صَبِيحٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبَانَ، وَهُوَ الرَّقَاشِيُّ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ كَانَتِ الآخِرَةُ هَمَّهُ جَعَلَ اللَّهُ غِنَاهُ فِي قَلْبِهِ وَجَمَعَ لَهُ شَمْلَهُ وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا وَهِيَ رَاغِمَةٌ وَمَنْ كَانَتِ الدُّنْيَا هَمَّهُ جَعَلَ اللَّهُ فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ وَفَرَّقَ عَلَيْهِ شَمْلَهَ وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ الدُّنْيَا إِلاَّ مَا قُدِّرَ لَهُ " .
Anas bin Malik narrated that the Messenger of Allah(s.a.w) said:
"Whoever makes the Hereafter his goal, Allah makes his heart rich, and organizes his affairs, and the world comes to him whether it want to or not. And whoever makes the world his goal, Allah puts his poverty right before his eyes, and disorganizes his affairs, and the world does not come to him, except what has been decreed for him."
পরিচ্ছেদঃ ২৯. (গ্রহণকারীর চাইতে প্রদানকারী উত্তম)
২৪৬৬। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ হে আদম সন্তান! তুমি আমার ইবাদাতের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা কর, আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যে পূর্ণ করে দিব এবং তোমার অভাব দূর করে দিব। তুমি তা না করলে আমি তোমার দুইহাত কর্মব্যস্ততায় পরিপূর্ণ করে দিব এবং তোমার অভাব-অনটন রহিত করবো না।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪১০৭)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান গারীব। আবূ খালিদ আল-ওয়ালিবীর নাম হুরমুয।
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ زَائِدَةَ بْنِ نَشِيطٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي خَالِدٍ الْوَالِبِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ تَفَرَّغْ لِعِبَادَتِي أَمْلأْ صَدْرَكَ غِنًى وَأَسُدَّ فَقْرَكَ وَإِلاَّ تَفْعَلْ مَلأْتُ يَدَيْكَ شُغْلاً وَلَمْ أَسُدَّ فَقْرَكَ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَأَبُو خَالِدٍ الْوَالِبِيُّ اسْمُهُ هُرْمُزُ .
Abu Hurairah narrated that the Messenger of Allah(s.a.w) said:
"Indeed Allah, Most High said: 'O son of Adam! Devote yourself to My worship, I will fill your chest with riches and alleviate your poverty. And if you do not do so, then I will fill your hands with problems and not alleviate your poverty.'"