পরিচ্ছেদঃ ৯৫/৪. নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমীর ও দূতদেরকে একজনের পর একজন করে পাঠাতেন।
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: بَعَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دِحْيَةَ الْكَلْبِيَّ بِكِتَابِهِ إِلَى عَظِيمِ بُصْرَى أَنْ يَدْفَعَهُ إِلَى قَيْصَرَ
ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাহইয়া কালবী (রাঃ)-কে তাঁর চিঠি দিয়ে বসরার গভর্নরের নিকট পাঠিয়েছিলেন, যাতে সেটি সে (রোমের বাদশাহ) কায়সারের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়।
৭২৬৪. ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (পারস্যের বাদশাহ) কিসরার নিকট তাঁর চিঠি পাঠালেন। তিনি দূতকে নির্দেশ দিলেন, সে যেন এ চিঠি নিয়ে বাহরাইনের শাসকের নিকট দেয়। আর বাহরাইনের শাসক যেন তা কিসরার কাছে পৌঁছিয়ে দেয়। কিসরা এ চিঠি পড়ে তা টুকরা টুকরা করে ফেলল। ইবনু শিহাব বলেন, আমার ধারণা ইবনু মুসাইয়্যেব বলেছেন যে, তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উপর বদ্ দু’আ করলেন, যেন আল্লাহ তাদেরকেও একেবারে টুকরো টুকরো করে দেন।[1] [৬৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৬৮)
আল্লাহর রসূল মোহাম্মদের পক্ষ থেকে পারস্য সম্রাট কেসরার নামে।
সালাম সে ব্যক্তির প্রতি যিনি হেদায়াতের আনুগত্য করেন এবং আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাসস্থাপন করেন এবং সাক্ষ্য দেন, আল্লাহ ছাড়া এবাদতের যোগ্য কেউ নেই। তিনি এক অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই, মোহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রসূল। আমি আপনাকে আল্লাহর প্রতি আহবান জানাচ্ছি। কারণ আমি সকল মানুষের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত। যারা বেঁচে আছে তাদের পরিণাম সম্পর্কে ভয় দেখানো এবং কাফেরদের ওপর সত্য কথা প্রমাণিত করাই আমার কাজ। কাজেই আপনি ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তিতে থাকবেন, যদি এতে অস্বীকৃতি জানান, তবে সকল অগ্নি উপাসকের পাপও আপনার ওপর বর্তাবে।
এ চিঠি নিয়ে যাওয়ার জন্যে আবদুল্লাহ ইবনে হোযাফা সাহমী (রাঃ)-কে মনোনীত করা হয়। তিনি চিঠিখানি বাহরাইনের শাসনকর্তার হাতে দেন। বাহরাইনের শাসনকর্তা দূতের মাধ্যমে নাকি আবদুল্লাহ ইবনে হোযাফার মাধ্যমেই এ চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তা জানা যায়নি। মোট কথা, চিঠিখানি কেসরা পারভেযকে পড়ে শোনানোর পর সে তা ছিঁড়ে ফেলে অহংকারের সাথে বলে, আমার প্রজাদের মধ্যে একজন সাধারণ প্রজা নিজের নাম আমার নামের আগে লিখেছে। রসূলুল্লাহ (সাঃ) এ খবর পাওয়ার পর বলেছিলেন, আল্লাহ তা‘আলা তার বাদশাহী ছিন্নভিন্ন করে দিন। এরপর তাই হয়েছিলো, যা রসূল (সাঃ) বলেছিলেন।
পারস্য সম্রাট ইয়েমেনের গভর্নর বাযানকে লিখে পাঠায়, তোমার ওখান থেকে তাগড়া দু’জন লোককে পাঠাও, তারা যেন হেজাযে গিয়ে সে লোককে আমার কাছে ধরে নিয়ে আসে। বাযান সম্রাটের নির্দেশ পালনের জন্যে দু’জন লোককে তার চিঠিসহ আল্লাহর রসূলের কাছে প্রেরণ করে। সে চিঠিতে প্রেরিত লোকদ্বয়ের সাথে কেসরার কাছে হাযির হওয়ার জন্যে রসূল (সাঃ)-কে নির্দেশ দেয়া হয়। তাদের একজন বললো, শাহানশাহ এক চিঠিতে বাযানকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন আপনাকে তার নিকটে হাযির করা হয়। বাযান আমাদের আপনার কাছে পাঠিয়েছেন। কাজেই আপনি আমাদের সঙ্গে পারস্যে চলুন। সাথে সাথে উভয় আগন্তুক হুমকিপূর্ণ কিছু কথাও বলে। রসূল (সাঃ) শান্তভাবে তাদের বললেন, তোমরা আগামীকাল দেখা করো।
এদিকে মদীনায় যখন এ মনোজ্ঞ ঘটনা চলছে, ঠিক তখন পারস্যে খসরু পারভেযের পারিবারিক বিদ্রোহ কলহ তীব্র রূপ ধারণ করে। কায়সারের সৈন্যদের হাতে পারস্যের সৈন্যরা একের পর এক পরাজয় স্বীকার করে যাচ্ছিলো। এমতাবস্থায় পারস্য সম্রাট কেসরার পুত্র শেরওয়ায়হ পিতাকে হত্যা করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে। সময় ছিল মঙ্গলবার রাত, সপ্তম হিজরীর ১০ই জমাদিউল আউয়াল (ফতহুল বারী, ৮ম খন্ড,পৃ. ১২৭)। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ওহীর মাধ্যমে এ খবর পেয়ে যান। পর দিন সকালে পারস্য সম্রাটের প্রতিনিধিদ্বয় আল্লাহর রসূলের নিকটে এলে তিনি তাদের এ খবর জানান। তারা বললো, আপনি এসব আবোল-তাবোল কী বলছেন? এর চেয়ে মামুলি কথাও আমরা আপনার অপরাধ হিসাবে গণ্য করছি। আমরা কি আপনার এ কথা বাদশাহর কাছে লিখে পাঠাবো! রসূল (সাঃ) বললেন, হাঁ, লিখে দাও। সাথে সাথে একথাও লিখে দাও, আমার দ্বীন এবং আমার হুকুমত সেখানেও পৌছবে, যেখানে তোমাদের বাদশাহ পৌঁছেছে। শুধু তাই নয়; বরং এমন জায়গায় গিয়ে থামবে, যার আগে উট বা ঘোড়া যেতে পারে না। তোমরা তাকে একথাও জানিয়ে দিয়ো, যদি তোমরা মুসলিম হয়ে যাও, তবে যা কিছু তোমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সেসব আমি তোমাদের দিয়ে দেবো এবং তোমাদেরকেই কওমের বাদশাহ করে দেবো।
উভয় দূত এরপর মদীনা থেকে ইয়েমেনে বাযানের কাছে গিয়ে তাকে কথা জানায়। কিছুক্ষণ পরই ইয়েমেনে এক চিঠি এসে পৌঁছায়, শেরওয়ায়হ তার পিতাকে হত্যা করে সিংহাসনে আরোহণ করেছেন। নতুন সম্রাট তার চিঠিতে ইয়েমেনের গভর্নর বাযানকে এ নির্দেশও দিয়েছেন, আমার পিতা যার সম্পর্কে লিখেছিলেন, পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তাকে বিরক্ত করবে না।
এ ঘটনায় বাযান এবং তার পারস্যের বন্ধু-বান্ধব, যারা সে সময় ইয়েমেনে উপস্থিত ছিলো, সকলেই মুসলিম হয়ে যান। (মোহাদারাতে খেযরী, ১ম খন্ড, পৃ. ১৪৭; ফাতহুল বারী, ৮ম খন্ড, পৃ. ১২৭-১২৮; রাহমাতুল লিল আলামীন)।
بَاب مَا كَانَ يَبْعَثُ النَّبِيُّ مِنْ الأُمَرَاءِ وَالرُّسُلِ وَاحِدًا بَعْدَ وَاحِدٍ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّهُ قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ بِكِتَابِهِ إِلَى كِسْرَى، فَأَمَرَهُ أَنْ يَدْفَعَهُ إِلَى عَظِيمِ الْبَحْرَيْنِ، يَدْفَعُهُ عَظِيمُ الْبَحْرَيْنِ إِلَى كِسْرَى، فَلَمَّا قَرَأَهُ كِسْرَى مَزَّقَهُ، فَحَسِبْتُ أَنَّ ابْنَ الْمُسَيَّبِ قَالَ فَدَعَا عَلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُمَزَّقُوا كُلَّ مُمَزَّقٍ.
Narrated `Abdullah bin `Abbas:
Allah's Messenger (ﷺ) sent a letter to Khosrau and told his messenger to give it first to the ruler of Bahrain, and tell him to deliver it to Khosrau. When Khosrau had read it, he tore it into pieces. (Az-Zuhri said: I think Ibn Al-Musaiyab said, "Allah's Messenger (ﷺ) invoked Allah to tear them (Khosrau and his followers) into pieces."
পরিচ্ছেদঃ ৯৫/৪. নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমীর ও দূতদেরকে একজনের পর একজন করে পাঠাতেন।
৭২৬৫. সালামাহ ইবনু আক্ওয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার দিন আসলাম কবীলার এক লোককে বললেনঃ তোমার কওমের মধ্যে ঘোষণা কর, কিংবা বলেছিলেনঃ লোকের মাঝে ঘোষণা কর যে, যারা আহার করেছে তারা যেন অবশিষ্ট দিন পূর্ণ করে, আর যারা আহার করেনি তারা যেন সওম রাখে। [১৯২৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৬৯)
بَاب مَا كَانَ يَبْعَثُ النَّبِيُّ مِنْ الأُمَرَاءِ وَالرُّسُلِ وَاحِدًا بَعْدَ وَاحِدٍ
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ الأَكْوَعِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِرَجُلٍ مِنْ أَسْلَمَ أَذِّنْ فِي قَوْمِكَ أَوْ فِي النَّاسِ يَوْمَ عَاشُورَاءَ أَنَّ مَنْ أَكَلَ فَلْيُتِمَّ بَقِيَّةَ يَوْمِهِ وَمَنْ لَمْ يَكُنْ أَكَلَ فَلْيَصُمْ.
Narrated Salama bin Al-Akwa`:
Allah's Messenger (ﷺ) said to a man from the tribe of Al-Aslam, "Proclaim among your people (or the people) on the day of 'Ashura' (tenth of Muharram), 'Whosoever has eaten anything should fast for the rest of the day; and whoever has not eaten anything, should complete his fast.' "