পরিচ্ছেদঃ ৬৭/৩. বিয়ে করার যার সামর্থ্য নেই, সে সওম পালন করবে।
৫০৬৬. ’আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে আমরা কতক যুবক ছিলাম; আর আমাদের কোন কিছু ছিল না। এই হালতে আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে যুব সম্প্রদায় [1]! তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে। কেননা, বিয়ে তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করে এবং যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে। কেননা, সওম তার যৌনতাকে দমন করবে। [১৯০৫](আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৯৬)
আমাদের লোকেদের মতে যুবক-যুবতী বলতে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে যারা বালেগ [পূর্ণ বয়স্ক] হয়েছে এবং ত্রিশ বছর বয়স পার হয়ে যায়নি।
আর এ যুবক-যুবতীদের বিয়ের জন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকীদ করলেন কেন, তার কারণ সম্পর্কে আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী তার বিশ্ববিখ্যাত বুখারীর ভাষ্য গ্রন্থ ‘‘উমদাতুল ক্বারী’’ গ্রন্থে লিখেছেনঃ
‘‘হাদীসে কেবলমাত্র যুবক-যুবতীদের বিয়ে করতে বলার কারণ এই যে, বুড়োদের অপেক্ষা এ বয়সের লোকেদের মধ্যেই বিয়ে করার প্রবণতা ও দাবী অনেক বেশী বর্তমান দেখা যায়।
যুবক-যুবতীদের বিয়ে যৌন সম্ভোগের পক্ষে খুবই স্বাদপূর্ণ হয়। মুখের গন্ধ খুবই মিষ্টি হয়, দাম্পত্য জীবন যাপন খুবই সুখকর হয়, পারস্পরিক কথাবার্তা খুব আনন্দদায়ক হয়, দেখতে খুবই সৌন্দর্যমন্ডিত হয়, স্পর্শ খুব আরামদায়ক হয় এবং স্বামী বা স্ত্রী তার জুড়ির চরিত্রে এমন কতগুলো গুণ সৃষ্টি করতে পারে যা খুবই পছন্দনীয় হয়, আর এ বয়সের দাম্পত্য ব্যাপার প্রায়ই গোপন রাখা ভাল লাগে। যুবক বয়স যেহেতু যৌন সম্ভোগের জন্য মানুষকে উন্মুখ করে দেয়। এ কারণে তার দৃষ্টি যে কোন মেয়ের দিকে আকৃষ্ট হতে পারে এবং সে যৌন উচ্ছৃঙ্খলতায় পড়ে যেতে পারে। এজন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বয়সের ছেলেমেয়েকে বিয়ে করতে তাকীদ করেছেন এবং বলেছেনঃ বিয়ে করলে চোখ যৌন সুখের সন্ধানে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াবে না এবং বাহ্যত তার কোন ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এ কারণে রসল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদিও কথা শুরু করেছেন যুবক মাত্রকেই সম্বোধন করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ের এ তাকীদকে নির্দিষ্ট করেছেন কেবল এমন সব যুবক-যুবতীদের জন্য যাদের বিয়ের সামর্থ্য আছে। আর যারা বিয়ের ব্যয় বহনের সঙ্গতি রাখে না তারা সওম পালন করবে। সওম পালন তাদের যৌন উত্তেজনা দমন করবে। কারণ পানাহারের মাত্রা কম হলে যৌন চাহিদা প্রদমিত হয়।
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১- এই হাদীসটির মধ্যে (الْبَاءَة) শব্দটি ভরণপোষণের অর্থ নেওয়া হয়েছে। সুতরাং যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষমতা রাখবে সে ব্যক্তি বিবাহ করবে। আর যে ব্যক্তি বিবাহ করার সামর্থ্য রাখবে না, সে ব্যক্তি রোজা রাখবে। আর যে ব্যক্তির মধ্যে যৌন ক্ষমতা বা সঙ্গমের ক্ষমতা নেই সে ব্যক্তির রোজা রাখার প্রয়োজন নেই। যেহেতু তার যৌন ক্ষমতা দমন করার দরকার নেই। এই ক্ষেত্রে (الْبَاءَة) শব্দটির ভরণপোষণের অর্থে নেওয়া অপরিহার্য হয়ে যাবে। তবে ইসলাম ধর্মের কতকগুলি বিদ্বান (আল্লাহ তাঁদের প্রতি দয়া করুন) বলেছেন:
বিবাহ করার সামর্থ্য বলতে দুইটি বিষয় বুঝানো হয়:
প্রথম বিষযটি হলো: বিবাহ করার সামর্থ্য এবং নিজের স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষমতা।
দ্বিতীয় বিষযটি হলো: যৌন ক্ষমতা বা সংগমের ক্ষমতা।
সুতরাং যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষমতা রাখবে এবং যৌন ক্ষমতা বা সঙ্গমের ক্ষমতা রাখবে, সে ব্যক্তি বিবাহ করবে।
এই হাদীসটির মধ্যে (وِجَاءٌ) শব্দটির দ্বারা যৌন ক্ষমতা দমন ও যৌন কুপ্রবৃত্তির অমঙ্গল এবং অশালীন কর্ম নিয়ন্ত্রণ করার অর্থ নেওয়া হয়েছে।
২- যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষমতা রাখবে এবং যৌন ক্ষমতা বা সংগমের ক্ষমতা রাখবে, সে ব্যক্তি যেন বিবাহ করে, তার প্রতি এই হাদীসটি গভীরভাবে উৎসাহ প্রদান করে।
৩- মানব জীবনে বিবাহের প্রভাব অতি গভীর; তাই এর দ্বারা লজ্জাস্থান এবং দৃষ্টির অমঙ্গল হতে সুন্দর ও সঠিক পন্থায় রক্ষা পাওয়া যায়। আর আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির চর্চা হয় এবং যৌন কুপ্রবৃত্তির অমঙ্গল হতে পরিত্রাণও পাওয়া যায়।
بَاب مَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ الْبَاءَةَ فَلْيَصُمْ.
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِي عُمَارَةُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ دَخَلْتُ مَعَ عَلْقَمَةَ وَالأَسْوَدِ عَلٰى عَبْدِ اللهِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَبَابًا لاَ نَجِدُ شَيْئًا فَقَالَ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّه“ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّه“ لَه“ وِجَاءٌ.
Narrated `Abdullah:
We were with the Prophet (ﷺ) while we were young and had no wealth whatever. So Allah's Messenger (ﷺ) said, "O young people! Whoever among you can marry, should marry, because it helps him lower his gaze and guard his modesty (i.e. his private parts from committing illegal sexual intercourse etc.), and whoever is not able to marry, should fast, as fasting diminishes his sexual power."