পরিচ্ছেদঃ ২২১৯. আওতাসের যুদ্ধ

৩৯৮৭। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) ... আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুনায়ন যুদ্ধ থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবসর হওয়ার পর তিনি আবূ আমির (রাঃ) কে একটি সৈন্যবাহিনীর আমীর নিযুক্ত করে আওতাস গোত্রের প্রতি পাঠালেন। যুদ্ধে তিনি (আবূ আমির) দুরায়দ ইবনু সিম্মার সাথে মুকাবিলা করলে দুরায়দ নিহত হয় এবং আল্লাহ্ তার সহযোগী যোদ্ধাদেরকেও পরাজিত করেন। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ আমির (রাঃ)-এর সাথে আমাকেও পাঠিয়েছিলেন। এ যুদ্ধে আবূ আমির (রাঃ) এর হাঁটুতে একটি তীর নিক্ষিপ্ত হয়। জুশাম গোত্রের এক লোক তীরটি নিক্ষেপ করে তাঁর হাঁটুর মধ্যে বসিয়ে দিয়েছিল। তখন আমি তাঁর কাছে গিয়ে বললাম, চাচাজান! কে আপনার উপর তীর ছুঁড়েছে? তখন তিনি আবূ মূসা (রাঃ)-কে ইশারার মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়ে বললেন, ঐ যে, ঐ ব্যাক্তি আমাকে তীর মেরেছে। আমাকে হত্যা করেছে। আমি লোকটিকে লক্ষ্য করে তার কাছে গিয়ে পৌঁছলাম আর সে আমাকে দেখামাত্র ভাগতে শুরু করলো।

আমি এ কথা বলতে বলতে তার পশ্চাদ্ধাবন করলাম, (পালাচ্ছো কেন,) বেহায়া দাঁড়াও না, দাঁড়াও। লোকটি থেমে গেলো। এবার আমরা দু’জনে তরবারি দিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করলাম এবং শেষ পর্যন্ত আমি ওকে হত্যা করে ফেললাম। তারপর আমি আবূ আমির (রাঃ) কে বললাম, আল্লাহ্ আপনার আঘাতকারীকে হত্যা করেছেন। তিনি বললেন, (ঠিক আছে, এবার তুমি আমার হাঁটু থেকে) তীরটি বের করে দাও। আমি তীরটি বের করে দিলাম। তখন ক্ষতস্থান থেকে কিছু পানিও বেরিয়ে আসলো। তিনি আমাকে বললেন, হে ভাতিজা! (আমি হয়তো বাঁচবো না) তাই তুমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমার সালাম জানাবে এবং আমার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে বলবে। আবূ আমির (রাঃ) তাঁর স্থলে আমাকে সেনাবাহিনীর আমীর নিযুক্ত করলেন। এরপর তিনি কিছুক্ষণ বেঁচেছিলেন, তারপর ইন্তেকাল করলেন।

(যুদ্ধ শেষে) আমি ফিরে এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাড়ি প্রবেশ করলাম। তিনি তখন পাকানো দড়ির তৈরি একটি খাটিয়ায় শায়িত ছিলেন। খাটিয়ার উপর (নামেমাত্র) একটি বিছানা ছিল। কাজেই তাঁর পিঠে এবং পার্শ্বদেশে পাকানো দড়ির দাগ পড়ে গিয়েছিল। আমি তাঁকে আমাদের এবং আবূ আমির (রাঃ) এর সংবাদ জানালাম। (তাঁকে এ কথাও বললাম যে) তিনি (মৃত্যুর পূর্বে) বলে গিয়েছেন, তাঁকে [নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে] আমার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে বলবে। এ কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি আনতে বললেন এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর তাঁর দু’হাত উপরে তুলে তিনি দোয়া করে বললেন, হে আল্লাহ্! তোমার প্রিয় বান্দা আবূ আমিরকে মাগফিরাত দান করো।

[নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়ার মুহূর্তে হাতদ্বয় এত উপরে তুললেন যে] আমি তাঁর বগলদ্বয়ের শুভ্রাংশ পর্যন্ত দেখতে পেয়েছি। তারপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ্! কিয়ামত দিবসে তুমি তাঁকে তোমার অনেক মাখলুকের উপর, অনেক মানুষের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করো। আমি বললামঃ আমার জন্যও (দোয়া করুন)। তিনি দোয়া করলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্! ’আবদুল্লাহ ইবনু কায়সের গুনাহ্ ক্ষমা করে দাও এবং কিয়ামত দিবসে তুমি তাঁকে সম্মানিত স্থানে প্রবেশ করাও। বর্ণনাকারী আবূ বুরদা (রাঃ) বলেন, দু’টি দোয়ার একটি ছিল আবূ আমির (রাঃ) এর জন্য আর অপরটি ছিলো আবূ মূসা (আশআরী) (রাঃ) এর জন্য।

باب غَزَاةِ أَوْطَاسٍ

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى ـ رضى الله عنه ـ قَالَ لَمَّا فَرَغَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ حُنَيْنٍ بَعَثَ أَبَا عَامِرٍ عَلَى جَيْشٍ إِلَى أَوْطَاسٍ فَلَقِيَ دُرَيْدَ بْنَ الصِّمَّةِ، فَقُتِلَ دُرَيْدٌ وَهَزَمَ اللَّهُ أَصْحَابَهُ‏.‏ قَالَ أَبُو مُوسَى وَبَعَثَنِي مَعَ أَبِي عَامِرٍ فَرُمِيَ أَبُو عَامِرٍ فِي رُكْبَتِهِ، رَمَاهُ جُشَمِيٌّ بِسَهْمٍ فَأَثْبَتَهُ فِي رُكْبَتِهِ، فَانْتَهَيْتُ إِلَيْهِ فَقُلْتُ يَا عَمِّ مَنْ رَمَاكَ فَأَشَارَ إِلَى أَبِي مُوسَى فَقَالَ ذَاكَ قَاتِلِي الَّذِي رَمَانِي‏.‏ فَقَصَدْتُ لَهُ فَلَحِقْتُهُ فَلَمَّا رَآنِي وَلَّى فَاتَّبَعْتُهُ وَجَعَلْتُ أَقُولُ لَهُ أَلاَ تَسْتَحِي، أَلاَ تَثْبُتُ‏.‏ فَكَفَّ فَاخْتَلَفْنَا ضَرْبَتَيْنِ بِالسَّيْفِ فَقَتَلْتُهُ ثُمَّ قُلْتُ لأَبِي عَامِرٍ قَتَلَ اللَّهُ صَاحِبَكَ‏.‏ قَالَ فَانْزِعْ هَذَا السَّهْمَ فَنَزَعْتُهُ فَنَزَا مِنْهُ الْمَاءُ‏.‏ قَالَ يَا ابْنَ أَخِي أَقْرِئِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم السَّلاَمَ، وَقُلْ لَهُ اسْتَغْفِرْ لِي‏.‏ وَاسْتَخْلَفَنِي أَبُو عَامِرٍ عَلَى النَّاسِ، فَمَكَثَ يَسِيرًا ثُمَّ مَاتَ، فَرَجَعْتُ فَدَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي بَيْتِهِ عَلَى سَرِيرٍ مُرْمَلٍ وَعَلَيْهِ فِرَاشٌ قَدْ أَثَّرَ رِمَالُ السَّرِيرِ بِظَهْرِهِ وَجَنْبَيْهِ، فَأَخْبَرْتُهُ بِخَبَرِنَا وَخَبَرِ أَبِي عَامِرٍ، وَقَالَ قُلْ لَهُ اسْتَغْفِرْ لِي، فَدَعَا بِمَاءٍ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِعُبَيْدٍ أَبِي عَامِرٍ ‏"‏‏.‏ وَرَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَوْقَ كَثِيرٍ مِنْ خَلْقِكَ مِنَ النَّاسِ ‏"‏‏.‏ فَقُلْتُ وَلِي فَاسْتَغْفِرْ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ ذَنْبَهُ وَأَدْخِلْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مُدْخَلاً كَرِيمًا ‏"‏‏.‏ قَالَ أَبُو بُرْدَةَ إِحْدَاهُمَا لأَبِي عَامِرٍ وَالأُخْرَى لأَبِي مُوسَى‏.‏

حدثنا محمد بن العلاء، حدثنا ابو اسامة، عن بريد بن عبد الله، عن ابي بردة، عن ابي موسى ـ رضى الله عنه ـ قال لما فرغ النبي صلى الله عليه وسلم من حنين بعث ابا عامر على جيش الى اوطاس فلقي دريد بن الصمة، فقتل دريد وهزم الله اصحابه‏.‏ قال ابو موسى وبعثني مع ابي عامر فرمي ابو عامر في ركبته، رماه جشمي بسهم فاثبته في ركبته، فانتهيت اليه فقلت يا عم من رماك فاشار الى ابي موسى فقال ذاك قاتلي الذي رماني‏.‏ فقصدت له فلحقته فلما راني ولى فاتبعته وجعلت اقول له الا تستحي، الا تثبت‏.‏ فكف فاختلفنا ضربتين بالسيف فقتلته ثم قلت لابي عامر قتل الله صاحبك‏.‏ قال فانزع هذا السهم فنزعته فنزا منه الماء‏.‏ قال يا ابن اخي اقرى النبي صلى الله عليه وسلم السلام، وقل له استغفر لي‏.‏ واستخلفني ابو عامر على الناس، فمكث يسيرا ثم مات، فرجعت فدخلت على النبي صلى الله عليه وسلم في بيته على سرير مرمل وعليه فراش قد اثر رمال السرير بظهره وجنبيه، فاخبرته بخبرنا وخبر ابي عامر، وقال قل له استغفر لي، فدعا بماء فتوضا ثم رفع يديه فقال ‏"‏ اللهم اغفر لعبيد ابي عامر ‏"‏‏.‏ ورايت بياض ابطيه ثم قال ‏"‏ اللهم اجعله يوم القيامة فوق كثير من خلقك من الناس ‏"‏‏.‏ فقلت ولي فاستغفر‏.‏ فقال ‏"‏ اللهم اغفر لعبد الله بن قيس ذنبه وادخله يوم القيامة مدخلا كريما ‏"‏‏.‏ قال ابو بردة احداهما لابي عامر والاخرى لابي موسى‏.‏


Narrated Abu Musa:

When the Prophet (ﷺ) had finished from the battle of Hunain, he sent Abu Amir at the head of an army to Autas He (i.e. Abu Amir) met Duraid bin As Summa and Duraid was killed and Allah defeated his companions. The Prophet (ﷺ) sent me with Abu 'Amir. Abu Amir was shot at his knee with an arrow which a man from Jushm had shot and fixed into his knee. I went to him and said, "O Uncle! Who shot you?" He pointed me out (his killer) saying, "That is my killer who shot me (with an arrow)." So I headed towards him and overtook him, and when he saw me, he fled, and I followed him and started saying to him, "Won't you be ashamed? Won't you stop?" So that person stopped, and we exchanged two hits with the swords and I killed him. Then I said to Abu 'Amir. "Allah has killed your killer." He said, "Take out this arrow" So I removed it, and water oozed out of the wound. He then said, "O son of my brother! Convey my compliments to the Prophet (ﷺ) and request him to ask Allah's Forgiveness for me." Abu Amir made me his successor in commanding the people (i.e. troops). He survived for a short while and then died. (Later) I returned and entered upon the Prophet (ﷺ) at his house, and found him lying in a bed made of stalks of date-palm leaves knitted with ropes, and on it there was bedding. The strings of the bed had their traces over his back and sides. Then I told the Prophet (ﷺ) about our and Abu Amir's news and how he had said "Tell him to ask for Allah's Forgiveness for me." The Prophet (ﷺ) asked for water, performed ablution and then raised hands, saying, "O Allah's Forgive `Ubaid, Abu Amir." At that time I saw the whiteness of the Prophet's armpits. The Prophet (ﷺ) then said, "O Allah, make him (i.e. Abu Amir) on the Day of Resurrection, superior to many of Your human creatures." I said, "Will you ask Allah's Forgiveness for me?" (On that) the Prophet (ﷺ) said, "O Allah, forgive the sins of `Abdullah bin Qais and admit him to a nice entrance (i.e. paradise) on the Day of Resurrection." Abu Burda said, "One of the prayers was for Abu 'Amir and the other was for Abu Musa (i.e. `Abdullah bin Qais).


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান) (كتاب المغازى) 51/ Military Expeditions led by the Prophet (pbuh) (Al-Maghaazi)