আমাদের দেশে আকীকার ক্ষেত্রে বেশ কিছু কুসংস্কার রয়েছে, যেমন:
আকিকার মাংস পিতা-মাতা খেতে পারে না। ঐ দিন প্রচলিত মিলাদ পড়ানো এবং মিলাদ পাঠকারীদেরকে এর বিনিময়ে টাকা-পয়সা দেওয়া, আকিকার দিন রাত্রে বাচ্চার দীর্ঘায়ূর জন্য এবং সম্পদের উন্নতির জন্য, তার হাতে কলম দেওয়া এবং এবং কিছু টাকা ও রৌপ্য ইত্যাদি দিয়ে তাকে লেখানো চেষ্টা করা হয়। অথচ এসব আকিদা বা বিশ্বাস পোষণ করা সম্পূর্ণ নাজায়েয এবং এমন আকিদা রাখা কখনও কখনও শির্ক হয়ে যায় আবার কখনও কখনও নিরেট বিদ‘আত।
আকিকার মাংস কুরবানীর মাংসের ন্যায়। তাই ধনী-দরিদ্র সকলেই তা ভক্ষণ করতে পারে। তবে চামড়া ছদকা করা ওয়াজিব। আকিকা করা সুন্নত জন্মের সপ্তম দিবসে, ছেলে হলে দুটি বকরি, আর মেয়ে হলে একটি বকরি দ্বারা আকিকা করতে হয়। আর যদি সম্ভব না হয় ছেলের জন্য একটি বকরি দ্বারা আকিকা করলেও তা আদায় হয়ে যাবে। আকীকার দিনই মাথার চুল কামানো সুন্নত। চুলের ওজর পরিমাণ রৌপ্য ছদকা করা মুস্তাহাব। আকীকার প্রাণী যে কোনো সময় জবেহ করা যায়, তবে চুল কামানোর পর জবেহ করাই উত্তম।
জন্ম তারিখ হিসাবে প্রতি বছর ঐ তারিখে মিলাদ মাহফিল করা এবং মানুষকে খানা খাওয়ানো যেমন কুসংস্কার, এ জাতীয় খানা খাওয়াও ঠিক না। যেমন মৃত ব্যক্তির নামে প্রতি বছর আয়োজনকৃত খানা খাওয়া ঠিক নয়। যা মারাত্মক বিদ‘আত এবং মাকরূহ। যা ওরুস নামে প্রসিদ্ধ।
এমনিভাবে মানুষের নিকট থেকে চাল, ডাল, টাকা-পয়সা, গরু-ছাগল ইত্যাদি ফকিরের মত ভিক্ষা করে খানা পাকানো, শিরনি পাকানো এবং মানুষকে খাওয়ানো। আর এ সব কাজ করাকে বালা মছিবত দূরীভূত হওয়ার বিশ্বাস রাখা। এ জাতীয় শরীয়ত গর্হিত কাজের দ্বারা বালা মসিবত বিদূরীত হয় না; বরং তা শরীয়ত বিরোধী কাজ হওয়ার কারণে বালা-মুছিবত আনার বড় কারণ। বালা, মুছিবত, বিদুরীত হওয়ার ব্যাপারে হাদীস শরীফের বর্ণনা হল-অধিক পরিমাণে এস্তেগফার পড়া, দরূদ শরীফ পড়া, নফল ছদকা করা, অধিক নফল নামায পড়া, খালেছ তওবা করা ইত্যাদি।